ঢাকায় বেশ ছিলাম।
আড্ডায় মুখরিত দীর্ঘ দিবস দীর্ঘ রজনী। স্বপ্নমাখা সেই সময়।
তখন আমি সিকি বেকার, সিকি সাংবাদিক,সিকি স্বপ্নবাজ। আর এক সিকি হয়তো ভালোবাসার জন্যে বরাদ্দ ছিলো।যে পরিমাণ টাকা আয় হতো তা সিগারেটের আগুনে ভস্ম হয়ে যেতো।বাবার বদান্যতায় আর বন্ধুদের আশ্রয়ে-প্রশ্রয়ে আমার দিন কেটে যেতো জগতের আনন্দযজ্ঞে।
আজিজ সুপার মার্কেটে থাকতাম। এর পোষাকি নাম আকাশনীলা।লিফট বেয়ে বাসায় উঠতে মনে হতো- এই বুঝি আকাশ ছুঁয়ে ফেলবো!এতো উঁচুতে আমার গা ছমছম করতো। কখনও মাঝরাতে ভাবতাম-আকাশনীলা কী লুটিয়ে পড়বে ভূমিশয্যায়।
পাশেই পাবলিক লাইব্রেরি, যাদুগর, ব্রিটিশ কাউন্সিল, নীলক্ষেত, রমনা পার্ক, টিএসসি আর আমাদের তীর্থস্হান- রোকেয়া -শামসুন্নাহার হল।বিসিএসের স্বপ্নে মুখর পড়ুয়া তরুণদলে মিশে দলবেঁধে লাইব্রেরিতে যেতাম। আমার অবস্হা হতো- হংস মধ্যে বক যথা। সবাই পড়তো বিসিএস গাইড আর আমি মগ্ন হতাম সাহিত্যের সবুজ ভূবনে।
ক্যান্টিনের চায়ে শস্তা সিঙগাড়া ভিজিয়ে খেতাম। হঠাৎ আড্ডা শুরু হতো।ক্রিকেট, কবিতা, রাজনীতি, সংগীত -সব বিষয়বস্তু একসময় নারী বিষয়ক তর্কে গিয়ে থামতো।কেউ কেউ গান গেয়ে নিরস আলোচনার ইতি টানতো।
আহ্, কী বিচিত্র সেই স্হান। আজিজ সুপার। বইয়ের দোকান, খাবার দোকান, ফ্যাশন হাউস, লাক্সারি সেলুন, বারবণিতার আবাস, উকিলের চেম্বার, সুখি গৃহকোন আর স্বপ্নবাজদের আড্ডাস্হল। এখানকার আড্ডায় গিয়ে দেখেছি-গাঁজার নেশায় বুদ হওয়া তরুণ- তরুণীরা লেখালেখিতে নতুন বা্ঁক আনবার প্রচেষ্টায় মত্ত।
# কুইনমেরি ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন,২৭ মে ২০১২, ১৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪১৯
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মে, ২০১২ রাত ৯:০৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


