কুড়ি বছর পরে
আবার বছর কুড়ি পরে তার সাথে দেখা হয় যদি
আবার বছর কুড়ি পরে-
হয়তো ধানের ছড়ার পাশে
কার্তিকের মাসে-
তখন সন্ধ্যার কাক ঘরে ফেরে- তখন হলুদ নদী
নরম নরম হয় শর কাশ হোগলায়- মাঠের ভিতরে!
অথবা নাইকো ধান ক্ষেতে আর,
ব্যস্ততা নাইকো আর,
হাঁসের নীড়ের থেকে খড়
পাখির নীড়ের থেকে খড়
ছড়াতেছে; মনিয়ার ঘরে রাত, শীত আর শিশিরের জল!
জীবন গিয়েছে চলে আমাদের কুড়ি কুড়ি, বছরের পার,-
তখন হঠাৎ যদি মেঠো পথে পাই আমি তোমারে আবার!
হয়তো এসেছে চাঁদ মাঝরাতে একরাশ পাতার পিছনে
সরু-সরু কালো-কালো ডালপালা মুখে নিয়ে তার,
শিরীষের অথবা জামের,
ঝাউয়ের- আমেরঃ
কুড়ি বছরের পরে তখন তোমারে নাই মনে!
জীবন গিয়েছে চ’লে আমাদের কুড়ি-কুড়ি বছরের পার-
তখন আবার যদি দেখা হয় তোমার আমার!
তখন হয়তো মাঠ হামাগুড়ি দিয়ে পেঁচা নামে-
বাবলার গলির অন্ধকারে
অশ্বত্থের জানালার ফাঁকে
কোথায় লুকায় আপনাকে!
চোখের পাতার মতো নেমে চুপি কোথায় চিলের ডানা থামে-
সোনালি সোনালি চিল- শিশির শিকার ক’রে নিয়ে গেছে তারে-
কুড়ি বছরের পরে সেই কুয়াশায় পাই যদি হঠাৎ তোমারে।
না কবিতাটি আমার লেখা নয়।কবিতার স্রষ্টা রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশ, যার শব্দের তুলির আঁচড়ে সাধারন কথাও অসাধারন হয়ে ওঠে।
হঠাত করে বেশ চ্যালেঞ্জিং একটি কর্ম জীবনে প্রবেশ করায় অনেকদিন কিছু লেখা হয়না।অনেক অনেক কথা যদিও মাথার মাঝে ঘুরপাক খায় তবে তা লেখায় পরিনত হয়ে ওঠে না। ছাত্রজীবন থেকে কর্মজীবনে প্রবেশ করার পর যে টর্ণেডো সমস্ত জীবনটা এলোমেলো করে দিয়ে যায় তার আঘাত সামলাতে গিয়ে এতই ব্যাস্ত হয়ে পরেছি যে ব্লগ পড়ারও সময় হয়ে ওঠেনা যদিও মিস করি প্রিয় প্লাটফরমটিকে।
তাই হঠাত বেশি বেশি ভাল লেগে যাওয়া কবিতাটি সবার সাথে শেয়ার করছি।
সত্যিই তো! যদি কুড়ি বছর পর কোনো এক পড়ন্ত বিকেলে হঠাত দেখা হয়ে যায় ভুলে যাওয়া প্রিয় মুখটির সাথে।হয়ত তখন্ও ঝাউবনে বাতাস বইছে, পাখিরা নীড়ে ফিরছে সবই তেমন আছে শুধু আমরা বদলে গেছি। ভাবুন একবার কেমন হবে সে মুহূর্তটি!!
সবার জন্য শুভ কামনা।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১:০৩