somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সর্বনাশা প্লাস্টিকঃ দ্বিতীয় পর্ব (যে কারনে জীববৈচিত্র্য ও মানুষের জন্য মারাত্মক হুমকি)

০১ লা মার্চ, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
প্রথম পর্ব



প্রথম পর্বের ছবিগুলো দেখে স্পষ্ট বোঝা যায় ফেলে দেয়া প্লাস্টিকের জিনিসগুলোর স্থান হয় মাটিতে নয়ত নানা হাত ঘুরে তা গিয়ে মেশে জলাশয়গুলোতে।এইসব পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের জিনিসগুলো গিয়ে অবশেষে জমা হচ্ছে সাগর,মহাসাগরের পানিতে।সেখানে শুধু যে মাছ ও জলজ প্রানীই ফাঁস লেগে মারা যাচ্ছেনা বরং অনেক ধরনের পাখিও শিকার হচ্ছে প্লাস্টিক দূষনের।এসকল প্রানীর প্রাকৃতিক আবাস যেমন ধ্বংস হচ্ছে তেমনি তাদের জীবনচক্রেও ভীষন প্রভাব ফেলছে নানা রকম প্লাস্টিক পন্য।







প্লাস্টিকপন্য সঠিক মানের না হলে খাদ্য ও পানীয় রাখার জন্য ব্যবহার করলে নানা রকম স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি তৈরি হতে পারে বিজ্ঞানীরা এমনটাই বলে থাকেন।তবে সহজলভ্যতা,হালকা ওজন এবং মনোমুগ্ধকর রং এর জন্য আমাদের নিত্যকার জীবনে প্লাস্টিকের থালাবাসন,কন্টেইনার আর অন্যান্য জিনিসের ব্যবহার বেড়েই চলেছে।(আমি নিজেও আর,এফ এল এর প্লাস্টিক পন্যের ভীষণ ভক্ত)।ফুডগ্রেড না হলে এসব জিনিস থেকে যে রাসায়নিক স্বাস্থ্য ঝুঁকি থাকছে তা নিয়ে এখানে আলোচনা করছি না।আলোচনা হচ্ছে সেসব পন্য নিয়ে যেগুলো এক বা দুইবার ব্যবহার করেই বাতিল করে দেয়া হয়।ওয়ান টাইম গ্লাস,কাপ,প্লেট,খাবারের মোড়ক,পলিথিন ইত্যাদি।


এসব জিনিস যেখানে সেখানে ফেললে তা যে মাটির সাথে মিশে যাবে সেটা সহজে হতে চায়না।ফলে মাটির উর্বরতা হ্রাস পায়,জলাশয়ের নাব্যতা হ্রাস পায়।সাধারন একটা পলিথিন ব্যাগের সম্পূর্ণভাবে মাটিতে মিশে যেতে সময় লাগতে পারে 450 বছর!অন্যান্য জিনিসগুলোর তালিকা মিলিয়ে নিন নিচের ছবিগুলো থেকে।




শুধু আমেরিকাতেই প্রতিবছর 5 মিলিয়ন টন প্লাস্টিক তৈরি হয় এর মাঝে 3.8 মিলিয়নই ফেলে দেয়া হয় অর্থাৎ রিসাইকেল করা হয়না।যার শেষ পরিনতি হয় মাটি,নদীনালা আর সাগর। সাগরতীরে বেড়াতে এসে পর্যটকদের খাওয়া ডাব বা কোল্ডড্রিংস এর স্ট্র দিয়েই যে পরিমান পরিবেশ দূষন হয় তা চিন্তিত করে তুলেছে বিজ্ঞানীদের,অন্যকিছুর কথা তো বাদই দিচ্ছি।



আমাদের সিভিক সেন্স কম।আমরা যেকোনো আবর্জনা ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলতে থাকি যত্রতত্র। কিন্ত অতি উন্নত দেশও এব্যাপারে খুব বেশি পিছিয়ে নেই।তারা হয়ত চারপাশে এগুলো ফেলেনা কিন্ত তাদের বাতিল করা প্লাটিকবর্জ্য শেষ পর্যায়ে গিয়ে ঐ সাগরেই মেশে।তারা তো আমাদের মত গরীব না,তাই তাদের বর্জ্যগুলো বেশ টেকসই উন্নতমানের।সেগুলো মাটিতে মিশে যেতে আরো অনেক বেশি সময় লাগে।



বিষয়টি শুধুমাত্র মাটির উর্বরতা ও নদীর নাব্যতাতেই থেমে থাকত যদি না।জলজ প্রানীর পেটে প্লাটিকের টুকরা পাওয়া যেত।ফেলে দেয়া প্লাস্টিক রোদের বৃষ্টিতে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে ছোট ছোট টুকরায় পরিনত হয় যা জলজ প্রানী খাবারের সাথে বা ভুল করে খেয়ে ফেলে।এর পরিনাম অবধারিত মৃত্যু।





জলজ পাখির দেহেও পাওয়া গেছে প্লাস্টিকের টুকরা।দেখা গেছে মা পাখি বাচ্চাদের প্লাস্টিকের ছোট ছোট টুকরা খাওয়াচ্ছে খাবারের সাথে।




মাইক্রোপ্লাস্টিকঃ
যেসকল মানুষ বলবেন কয়টা তিমি,পশুপাখি আর মাছ মরলে আমার কি?আমার তো কিছু হচ্ছে না।আমি এ ব্যাপারে সচেতন হবো না।তাদেরও বলছি আপনাদের জন্যেও দুঃসংবাদ আছে জনাব।আগেই বলেছি প্লাস্টিক সহজে মাটিতে মিশতে পারেনা কিন্ত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কনিকায় বিভক্ত হতে পারে। 5 মিলিমিটার এর চেয়ে ছোট প্লাস্টিক খন্ডকে বলা হয় মাইক্রোপ্লাস্টিক।বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যাচ্ছে এই মাইক্রোপ্লাস্টিক খাদ্য শৃংখলে প্রবেশ করছে।
ভিডিও 2
উদ্ভিদ মাটিতে থাকা মাইক্রোপ্লাস্টিক শোষণ করলে খাবারের সাথে তা আমাদের দেহে প্রবেশ করবে।
ধরুন পানির একটি ছোট পোকার পেটে এই প্লাস্টিকের ফাইবার কোনোভাবে গেছে,সেটাকে যেই মাছ খাবে তার শরীরেও এটা জমা হবে।সেই মাছটিকে যদি আমরা খাই আমাদের শরীরেও সেই প্লাস্টিক চলে যাবে।ভাবুনতো একবার হার্ট,লিভার, কিডনি, ব্রেনসহ কত সূক্ষ্ম অঙ্গ রয়েছে আমাদের।ভেবে দেখুন প্লাস্টিকের মাইক্রোফাইবার ইত্যাদির কারনে কতরকমে স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে শরীরে।

ভিডিও


তাই নদীনালা, গাছ,পাখি এদের খাতিরে না হলেও নিজেদের রক্ষার জন্য যত্রতত্র প্লাস্টিক বর্জ্য ফেলা বন্ধ করি।আসুন নিজেদের রক্ষার জন্যেই একটু সভ্য হই।


পরের পর্বে ইনশাআল্লাহ প্রতিকার নিয়ে আলোচনা করবো।

তথ্য ও ছবি- ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা মার্চ, ২০২০ রাত ৮:২২
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×