somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নগর পুড়লে কি দেবালয় এড়িয়ে যায়?

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একসময় মাসুদ রানা সিরিজের কোনো একটা গল্পে একটা হত্যার বর্ননা পড়েছিলাম।
শত্রুর দলে অনুপ্রবেশ করেছে রানা সঙ্গী নিয়ে।আত্মগোপনে থেকে দেখছে কার্যকলাপ। সঙ্গী কে ফার্মের কর্মীর ছদ্মবেশে পাঠানো হয়েছে।হঠাৎ ফার্মের কর্মীরা হে ফর্ক ( কাঁটা চামচের মত দেখতে কিন্ত বড় জিনিস যা দিয়ে খড় বিচুলি পালা দেয়া হয় বা পরিস্কার করা হয়) দিয়ে নাচের তালে তালে গোল হয়ে ঘিরে আসে,রানার সঙ্গীকেও তাদের সাথে আসতে হয়।এটা তাদের হে ড্যান্স।নেচে নেচে ফর্ক দিয়ে বিচুলি তুলে তুলে তারা পালা করে রাখে।ঘিরে নাচতে নাচতেই তারা রানার ছদ্মবেশী সঙ্গীকে এটাক করে।গোল হয়ে ঘিরে নাচের তালে তালে হে ফর্ক দিয়ে খুঁচিয়ে তারা খুনটা করে ফেলে।ভিক্টিমের মৃত্যু চিৎকার চাপা পড়ে তাদের গানের শব্দে।খুন শেষে খড় দিয়ে তারা মৃতদেহ চাপা দিয়ে দেয়, তারপর কিছুই হয়নি এমন ভাব করে চলে যায়।সবার হাতে চকচকে অস্ত্র! লুকিয়ে থাকা রানা সঙ্গীর জন্য কিছুই করতে পারেনা।ঠিক মনে নেই,সেও হয়ত বন্দী ছিলো তখন।

বইটির নাম মনে না পড়লেও খুনের বর্ননা হিসাবে এটা আমার মনে থাকার কারন হচ্ছে খুনটা যথেষ্ট ভয়ংকর মনে হয়েছিল আমার কাছে।মেয়েটির অসহায়ত্ব, কিছু করতে না পেরে রানার অসহায়ত্ব খুবই টাচ করেছিলো।
ভাবিনি এমন কিছু বাস্তবে দেখতে হবে।একজনকে নাচ গান করে পিটিয়ে মারা হলো।আর আমরা অসহায়ের মত সেই দৃশ্য দেখলাম!এ যেন পরাবাস্তব কোনো দৃশ্য! মানুষকে অনেক ভাবেই মেরে ফেলা যায় তবে এত নিষ্ঠুরতা কেন?কেন তাতে নাচ গান করা প্রয়োজন হয়?এক সামান্য একটা প্রাণকে ঘিরে এত উল্লাস?জংলীরা তার শিকারকে খাওয়ার আগুনে ঝলসানোর সময় নাচ গান উৎসব করে বলে শুনেছি। একজন কে মেরে ফেলার জন্য নাচ গান করার প্রয়োজন হয় কিভাবে একটা সভ্য সমাজে?কি পরিমান অসুস্থ মানসিকতার জনতা আমাদের দেশে!

নগর পুড়লে দেবালয় যে এড়িয়ে যায় না তার এক কষ্টকর উদাহরণ তৈরি হলো আজকে।সেনাকর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট তানজিম সরোয়ার ডাকাতের এটাকে নিহত হলেন।একজন সেনাকর্মকর্তার গলায় ছুরি চালানোর মত সাহস হয় যাদের তারা কতটা ভয়ংকর হতে পারে!ক্লাস সেভেন থেকে বাড়ি ছেড়ে যে ছেলেটি পাবনা ক্যাডেট কলেজের কঠোর নিয়মতান্ত্রিক জীবন কাটিয়েছে ছয়টি বছর এবং বিএমএর কঠোরতম ট্রেনিংয়ের পর কেবল মাত্র জীবন শুরু করেছে তার জীবনপ্রদীপটি এভাবে নিভে গেল! অরাজকতা, মব কিলিং, সন্ত্রাসী ছেড়ে দেয়া বিষয়গুলোকে যারা জাস্টিফাই করেন তাদের একটু টনক নড়া উচিত। সন্ত্রাসী সব সময়েই সন্ত্রাসী। দুষ্ট লোক সবসময়ই দুষ্ট লোক। বিগত সরকারের দোষ দিয়ে, তার আগের সরকারের দোষ দিয়ে বা এই সরকারের দোষ দিয়ে এই মৃত মানুষের বাবা মা তাদের সন্তানকে ফিরে পাবে না।

একটা উচ্চতর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বা একজন সেনা কর্মকর্তা তৈরি করতে পরিবারসহ আরও কতগুলো মানুষের ত্যাগ তিতিক্ষা আর পরিশ্রম যায় সেটা যারা এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত আছে তারাই জানে।এরা আমাদের দেশের এসেট।এদের জীবন এভাবে অকালে ঝরে যাওয়ার নয়।
যারা সমস্ত অরাজকতাকে সমর্থন যোগাচ্ছেন তারা যদি ভাবেন আপনি সেফ তবে আপনি মহামূর্খের মত ভাবছেন।এইরকম একটি দেশে কেউই সেফ না।কখন মৃত্যু এসে আপনার বা প্রিয়জনের ঘাড়ে নি:শ্বাস ফেলবে আপনি বুঝতেই পারবেন না।কারন আপনারও শত্রু আছে তা আপনি কিছু করেন বা না করেন। যে প্রানী নি:শ্বাস নেয় সে কারও না কারও শত্রু হবেই,সে যত নিরীহ তৃণভোজীই হোক না কেন।এটাই জীবনের রীতি।
তাই অন্যায়কে অন্যায় বলতে শিখুন।এইটা বলবেন না যে অমুক লোকে হেই করছিলো তখন আপনি কই ছিলেন?বরং এইটা বলুন যে তখনও অন্যায় হইছে,এখনো অন্যায় হচ্ছে।অন্যায় অরাজকতাকে বাহবা দিয়ে এটাকে আরও বাড়িয়ে দেবেন না।তাতে এই মৃত্যুগুলোর দায় আপনাদের ঘাড়েও আসবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:২২
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

= দাওয়াত বা কোন অনুষ্ঠানে খাবার গ্রহণের সময় যে কটি বিষয় আপনার বিবেচনায় রাখা দরকার =

লিখেছেন এমএলজি, ১৪ ই অক্টোবর, ২০২৪ ভোর ৪:২৩



১. দ্রুত খাবার গ্রহণের অভ্যাস থাকলে তা কিছুটা ধীর বা প্রলম্বিত করার চেষ্টা করুন যাতে অন্য সবার বেশ আগেই আপনার খাওয়া শেষ হয়ে না যায়।

২. কোন আইটেম খুব সুস্বাদু বা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ এবং কিছু কথা......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ১৪ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১০:৩০

আমাদের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ এবং কিছু কথা.........

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমাদের সফলতার চেয়ে ব্যর্থতার বিষাদময় গ্লানির সঙ্গেই বোধকরি বেশি সম্পর্ক। কদাচিৎ কোনো বড় দলকে পরাজিত করার পর আমরা পুরো বাংলাদেশ এখনো আবেগে আপ্লুত... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ্‌ সাহেবের ডায়রি ।। অন্য দেশে চলে যাচ্ছে গার্মেন্টসের অর্ডার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১২:২০




এবার বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের অর্ডারের একটি অংশ প্রতিবেশী ভারত, পাকিস্তানসহ অন্য দেশের বাজারে চলে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। রাজনৈতিক অস্থিরতা, সরকার পতন এবং শ্রমিক অসন্তোষের কারণে দেশের সবচেয়ে বড়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন ভারতের উদ্বেগ!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩


ভালোভাবেই শেষ হলো সনাতনীদের বৃহৎ উৎসব দুর্গাপূজা কিন্তু দুর্গাপূজা ভালো ভাবে শেষ হওয়ায় অনেকেই বড্ড হতাশ হয়েছে; পূজা নিয়ে তারা ট্রামকার্ড খেলতে চেয়েছিল কিন্তু ট্রামকার্ড খেলার পরও সফল হতে পারেনি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

উফ্! কি দারুণ!! WOW!!!

লিখেছেন মন থেকে বলি, ১৪ ই অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৩:০৬

চোখটা সবে যেই বুঁজেছি, ডাকল হুলো 'মিঁয়াও'।
মাথায় এলো আজিব টপিক - আরি সাবাশ! WOW!!

ল্যাংটাকালে 'আমার বই'-য়ে,
আঁকল ছবি কোন আঁকিয়ে?
তালগাছেতে উলটো ঝোলে কানাবগির ছাও।
সেটাই ছিল প্রথম অবাক, প্রথম বলা - WOW!!

আরও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×