somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জাফর ইকবাল স্যার সমীপেষু,

১৩ ই নভেম্বর, ২০১১ সকাল ১০:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম

কৃপণ হিসেবে আমার একটা বদনাম আছে। ঢাকা ভার্সিটির ছাত্র থাকাবস্থায় সোবহানবাগ থেকে কার্জন হল অবধি সাইকেল চালিয়ে যেতাম বলে বন্ধুরা এ মর্মে নির্দোষ টিটকারি মারত যে আমি যেন সাইকেলের বদলে রিকশা চালিয়ে যাই; এতে আমার ভার্সিটি যাওয়ার খরচ তো বাঁচবেই সাথে দু’পয়সা কামাইও হবে। বিদ্রুপ বন্ধুত্বসুলভ হলেও দাগ কিন্তু মনে একটু কাটেই। এই আমি যখন মুহাম্মদ জাফর ইকবাল স্যারের “তোমাদের প্রশ্ন আমার উত্তর”- পড়লাম তখন সেই সব দাগ মুছে অহংকারের আল্পনা আঁকলাম মনে – আমার ছোট বেলার হিরো সাইকেল চালিয়ে কার্জন হলে যেত, আমিও যাই – বড় হয়ে আমি নিশ্চয়ই তার মত হতে পারব! আমার এ হিরোভক্তি নিয়েও কথা শুনতে হয়েছে – আমরা নাকি জাফর ইকবাল জেনারেশন – তার মত লেখার চেষ্টা করি, তার মত করে কথা বলি। কথাটা সত্য বিধায় খারাপ লাগলেও আপত্তি করিনি।

আমার হিরোর অবস্থান থেকে জাফর ইকবাল স্যারের পতন শুরু হয় একটা সাক্ষাতকার পড়ার পর থেকে। তিনি এক প্রশ্নের উত্তরে বললেন “মানুষের উৎপত্তি ক্রমবিবর্তন থেকে তা মাধ্যাকর্ষণ শক্তির মত ধ্রুব সত্য” লেব্বাবা! আমি জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর ছাত্র হিসেবে ক্রমবিবর্তন নিয়ে অনেক ঘাটাঘাটি করেও তো কোন বড় মাপের বিজ্ঞানীকে নিঃসন্দেহ প্রমাণ দিতে দেখলাম না। এরপর স্যারের আরো সব আচরণে খটকা বাড়তেই থাকল। উনাকে মেইল করলাম – স্যার, আমি অধম আপনার বড় ভক্ত। আমার কটা প্রশ্নের উত্তর দেবেন দয়া করে –
১. আপনি কি আল্লাহকে একমাত্র উপাস্য হিসেবে বিশ্বাস করেন?
২. মুহাম্মদ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আল্লাহর প্রেরিত রসুল হিসেবে বিশ্বাস করেন?
৩. পরকালে সব কিছুর হিসাব নিকেশ হবে এটা মানেন?

তিনি আমার মেইলের উত্তরে বললেন তোমার যা খুশি ভেবে নাও। আমি তাজ্জব হয়ে উত্তর দিলাম – হ্যা না তো কিছু বলুন, আপনি যেটা সত্য মনে করেন সেটা স্বীকার করতে আপত্তি কোথায়? তিনি উত্তর দিলেন “আই লাভ হেট মেইলস, আই হ্যাভ আ লার্জ কালেকশন অফ দেম” যাচ্চলে! এটাই আমার আশৈশবলালিত মহাপুরুষের আসল চেহারা? এরপরে পদে পদে তার আদর্শের প্রতি আমার মনে ঘৃণা তৈরী হয়েছে, তিনি যা কিছু আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন তার মোহনী লেখনীর মাধ্যমে - তার প্রতি বিতৃষ্ণা জন্মেছে। ইসলামবিরোধীতাকে যারা শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছে তার মধ্যে প্রথম আলো অন্যতম। সেখানে জাফর ইকবাল স্যারের সাম্প্রতিক লেখাটা পড়ে মনে হল তিনি তার মুখোশ ছেড়ে বেরিয়ে আসছেন। ইসলামের ব্যাপারে তার যে চরম আপত্তি আছে সেটা বলার সৎ সাহস তিনি অর্জন করেছেন। তিনি আমার এ খোলা চিঠির উত্তর দেবেন এত বড় আশা করি না, কিন্তু তার বিবেকে যদি ন্যুনতম সৌজন্যতাবোধ অবশিষ্ট থাকে তবে হয়ত তিনি এ লেখাটা পড়ে একবার ভেবে দেখবেন -

১.
স্যার, ফতুয়া পড়া মেয়ে বিজ্ঞাপনের সুবাদে তরুন প্রজন্মের প্রতিচ্ছবি হল, আর যে মেয়েটা নিজেকে গুনহীন পণ্যের মত বিক্রি করতে চাইল না সে হল ঘরে বন্দী? কখনও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া কোন মুসলিমাকে জিজ্ঞাসা করে দেখেছেন সে কেন পর্দা করে? আমার স্ত্রী মুসলিম হবার পরে তার বিধর্মী মায়ের বাসায় পর্দা না করে যাবার চাইতে না যাওয়াই বেছে নিয়েছিল। আমাকে বোঝাতে পারবেন কেন সে জন্মদাত্রী মায়ের চেয়ে এই পর্দাকে অগ্রাধিকার দিল? ইসলামের প্রতি কতটা ভালবাসা থাকলে নিজের মায়ের ভালবাসাকে উপেক্ষা করা যায়? একজন মানুষের ভালোবাসাকে অপমান করার অধিকার আপনাকে কে দিল? আপনি তো আমাদের ছোটবেলা থেকে কেবল ঘৃণা করে শিখিয়েছেন, ভালোবাসার মূল্য আপনি কি বুঝবেন? পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ৭১ যা করেছিল সেই জন্য যদি সে সময়ে জন্ম না নেয়া পাকিস্তানীদেরও ঘৃণা করতে হয় তাহলে তো বাংলাদেশের মানুষ যত বাংলাদেশীকে মেরেছে সে কারণে সব বাংলাদেশীদেরও আমাদের ঘৃণা করতে হবে? কবে শেষ হবে এই ঘৃণার শৃঙ্খল বিক্রিয়া? যারা অপরাধ করেছিল তাদের তো আপনারা কিছু করতে পারেননি, সসম্মানে দেশে ফিরে যেতে দিয়েছিলেন। আমাদের প্রজন্মে বিদ্বেষের বীজ ছড়িয়ে আসলে কি আপনাদের ব্যর্থতার দায় মিটবে?

দুঃখিত স্যার, আমরা আপনার এই ঘৃণা-ব্যবসায় সঙ্গ দেব না। সৌদি আরবে বিচার করে দেয়া মৃত্যুদন্ডকে ‘হত্যাকান্ড’ বলা আমরা মেনে নেব না। কারণ যেদিন ১৬ বছরের আবদুর রহমান আল আওলাকিকে তার ১৭ বছরের ভাই সহ ড্রোন বিমান থেকে মিসাইল ছুড়ে মারা হয়েছিল সেটাকে আপনার হত্যাকান্ড মনে হয়নি। ফেলানিকে যখন মেরে কাটাতারের সাথে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল সেটাকে আপনার নিষ্ঠুর মনে হয়নি। যে নিজেকে মুসলিম বলে দাবী করে তাকে আমরা ভাই মনে করি। বাংলাদেশী মুসলিম যেমন আমার ভাই, আমেরিকান মুসলিম যেমন আমার ভাই, পাকিস্তানী মুসলিমও আমার ভাই, সৌদি মুসলিমও আমার ভাই। পাকিস্তানীরা বর্বর, সৌদিরা নিষ্ঠুর - এই ঘৃণার বীজ আমরা বুক থেকে বের করে ফেলেছি। আমাদের ভালবাসা আল্লাহর ওয়াস্তে, তাকে খুশী করার জন্য। এই ভালোবাসা কি যারা বুঝতে পেরেছে, তারা জানে একদিন এই মুসলিম ভাইরা আমাদের বিপদে পাশে এসে দাঁড়াবে। ইঙ্গ-মার্কিনীরা আমাদের গ্যাস তুলতে না পারলে আগুনে জালিয়ে দেবে, ভারতীয়রা আমাদের ফারাক্কা-তিস্তা-টিপাইমুখ বাঁধে, ফেনসিডিলের বন্যায় আমাদের তিলে তিলে হত্যা করবে। ওদের কাছে আগে আপনারা আকাশ বিক্রি করেছিলেন, এখন মাটি বিক্রি করছেন – আমরা কিন্তু ঠিকই বুঝি কে আমাদের ভালোবাসে আর কে আমাদের বাঁশ দেয়! আপনি যাদের ভালোবাসতে বলবেন আমরা তাদের ভালোবাসি না, আমরা বড় হয়েছি স্যার; কে বন্ধু কে শুত্রু সেটা আমরা চিনতে পারছি।

২.
কওমি মাদ্রাসা নিয়ে আপনার মায়াকান্না দেখে আমার শুকনো ঠোঁটে হাসতে গিয়ে রক্ত ঝরেছে। শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে না এবার মাদ্রাসার ছাত্রদের ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ না দেয়ার পায়তারা ছিল? শেষে মানবিক বিভাগের ভর্তিপরীক্ষায় এক মাদ্রাসা ছাত্র প্রথম হয়ে দেখিয়ে দিল যে মাদ্রাসা শিক্ষার যেটুকু সীমাবদ্ধতা আছে তা আপনার মত মানুষদের উন্নাসিকতার কারণে। শিক্ষার মূল্য আপনি বোঝেন টাকা কামাই করার মানদন্ডে – তাই একটা ছেলের কলা বিক্রিকে আপনার কাছে জীবনের অপচয় মনে হয়। আমার কাছে তাকে পাকা মানুষ মনে হয়, রিকশাওয়ালা তরুণকে খাঁটি মানুষ মনে হয়। এরা নিজেদের শরীরের ঘাম ঝরিয়ে টাকা কামাই করে বাসায় নিয়ে যায়, অভুক্ত ভাই-বোন দের মুখে তুলে দেয়। এরা মগজ বিক্রি করে দেশের ক্ষতি করে না, দেশের মানুষকে অন্যদের কাছে বিক্রি করে দেয় না। সৌদি শ্রমিকদের নিয়ে তো অনেক মায়াকান্না কাঁদলেন – এদের দেশে করার মত কাজের ব্যবস্থা করার তো কোন কথা বললেন না। পরিবার ছেড়ে মানুষ কি বিদেশে গতর খাটে নিজের সুখের জন্য? জানেন দেশে পাঠানো টাকায় আমার ১৬ মাসের ছেলেটাকে দেখার জন্য কতটা হাহাকার মিশে থাকে? আপনারা হিসাব করেন ‘ফরেন রেমিটেন্স’ – আমার স্ত্রীর, আমার মায়ের অশ্রুর দাম আছে আপনাদের কাছে? আমাদের জন্য আপনার কোন স্বপ্ন নেই – আমরা দেশে এসে যেন কিছু করতে পারি সেই ইচ্ছাও নেই। বিদেশে থাকুক, পিএইচডির কামলা খাটুক কিংবা আকাশ-ছোঁয়া দালানের মিস্ত্রী হোক – টাকা পেলেই তো আপনারা খুশি তাই না? সৌদি জল্লাদ এক কোপে কল্লা নামায় কি ভয়াবহ কথা! আপনারা সুশীল কসাই – টাকা কামানোর হাইড্রোলিক প্রেসে চিপে চ্যাপ্টা করে তিলে তিলে মারবেন – এই না হলে সুখের মৃত্যু!

স্যার, পারবেন কখনও আপনার পশ্চিমা শিক্ষার মোড়কটা ছেড়ে বেরিয়ে এসে দেখতে কেন একটা ছেলে কওমি মাদ্রাসায় যায়? কারণ – দুটো: হয় তাদের বাপেদের সরকারী প্রাইমারী স্কুলে পড়ানোরও সামর্থ্য থাকে না, নয়ত তাদের বাবারা চায় তাদের সন্তান আলিম হোক। আলিম মানে কি বোঝেন? যে মানুষকে আল্লাহর পাঠানো জ্ঞান শেখায়। এই জ্ঞান ‘থিওরি অফ রিলেটিভিটির’ মত কয়েকদিন পর পর হুমকির মুখে পড়ে না, ‘ সেন্ট্রাল ডগমা অফ লাইফের’ মত একদিন হঠাৎ উলটো পথে হাঁটা ধরে না। এটা বিবিএ ডিগ্রী না স্যার, যাতে মানুষকে ভুলিয়ে ‘গ্রোথ’ এর কার্ভ উর্ধমুখী রাখতে শেখান হবে। এটা বার-এট-ল না যাতে চোর-ছ্যাচ্চরকে মুক্তি দেয়ার রাস্তা বাতলানো শেখাবে। যেটা পড়লে টাকা আসে না সেটা পড়ে কি লাভ সেটা আমি আপনাকে বোঝাতে পারব না। যারা ইসলাম শিখেছে, বুঝেছে তাদের কাছে এই দুনিয়ার ব্যাংক ব্যালেন্সের কোন দাম নেই – এরা টাকা কামাই করার মেশিনের জায়গা থেকে মানুষের পর্যায়ে উঠতে পেরেছে। ইসলাম শেখা আর শেখানোর জন্য যে মানুষগুলো নিজেদের জীবনের পার্থিব সুখ-স্বচ্ছলতাকে পরিত্যাগ করল তাদের অপমান করার অধিকার কে দিল আপনাকে?

৩.
স্যার, অর্থনীতিতে শ্রমবন্টনের কথা পড়েছেন নিশ্চয়ই। আমাদের দেহের কোষ আর টিস্যুর মত আল্লাহ সমাজেও শ্রমবন্টন করে রেখেছেন সমাজটা যাতে চালু থাকে। মেয়েরা কোমল তারা এক ধরণের কাজ করবে, পুরুষরা রুক্ষ তারা অন্য ধরণের কাজ করবে। গাড়ীর টায়ার থাকবে বাইরে, সে শক্ত রাস্তার ঘর্ষণ সহ্য করবে, টিউব থাকবে ভিতরে – সে টায়ারটাকে ফুলিয়ে সচল রাখবে। টিউব কেন সারাজীবন ভিতরে থাকবে – এই বৈষম্য মানি না বলে সে যদি রাস্তায় নামে তবে কতদূর চলবে গাড়ী? মেয়েরা অবশ্যই শিক্ষিত হবে কিন্তু টাকা কামাই তাকে করতেই হবে এ দিব্যি কে দিয়েছে? শিক্ষার উদ্দেশ্য কি কেবল ডিগ্রি নেয়া আর চাকরি করা? আমার স্ত্রী যদি আমার ছেলের সাথে আরো দশটা বাচ্চা পড়ায় আমার আপত্তি নেই, কিন্তু তাকে কেন আমি শতাব্দী বাসের দমবন্ধ ধাক্কাধাক্কির মধ্যে ঝুলতে ঝুলতে গুলশানে অফিস করতে পাঠাব? সে যে টাকা কামাই করে আনছে তা যদি ডে-কেয়ার আর রেডিমেড ফুডেই খরচ হয়ে যায় তাহলে লাভটা হল কি? আমার স্ত্রী যদি ব্যাংকে বা মোবাইল কোম্পানীর কাস্টমার কেয়ারে হাজারো অজানা মানুষের সেবা করার চেয়ে তার প্রিয়জনদের সেবা করা বেশী পছন্দ করে তাহলে কেন আমি তাকে ঘরের বাইরে যেতে বাধ্য করব? সামর্থ্যনুযায়ী আমি তাকে ডাল খাওয়ালে সে যদি খুশী থাকে তাহলে আমি প্রতিদিন মাংশ খাওয়ার লোভে কেন নটা-পাঁচটা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানীর দাসীগিরি করতে বাধ্য করব? সে ঘরে থাকবে এটা তার ‘চয়েস’ – এখানে আপনার এত গাত্রদাহ কেন?

পথে খালি পায়ে বের হলে পায়ে ময়লা লাগে, শক্ত নুড়িকণা পা ক্ষত-বিক্ষত করে। সারা পৃথিবী চামড়ায় না ঢেকে নিজের পাটা জুতোয় পুরে ফেলাই বুদ্ধিমানের কাজ। দেশ স্বাধীন হবার পরে আধুনিকতার জোয়ারে আপনারা সমাজকে যে স্রোতে চালিয়েছেন তাতে আত্মসম্মান রক্ষা করার সবচেয়ে ভাল উপায় পর্দা করা। একটা মেয়ে এই সরল যুক্তিটা বুঝে নিজেকে ঢেকে রাখতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করলে আপনার পরমতসহিষ্ণুতা হঠাৎ পালিয়ে যায় কেন? আপনাকে কেন আপনার ছাত্রীর চেহারা দেখে চিনতে হবে? চিনলে আপনার কটা পেপার বেশি পাবলিশ হবে? তার গ্রেড কত বাড়বে? সে তো দেহে পর্দা করেছে, মগজে না, তার মেধা দিয়ে তাকে পরিমাপ করতে আপনার কেন এত আপত্তি?

ভাষা আন্দোলনের বোরখার অনুপস্থিতি যদি নারী প্রগতি হয় তাহলে আজ কেন শাড়ির অনুপস্থিতি ক্ষয়িষ্ণু বাঙ্গালীত্ব না হয়ে আধুনিকতার চেহারা নিল? শাড়ি পড়া মেয়েরা আন্দোলন করে যে ভাষা আনল সেটাতে কেন জিন্স-ফতুয়া পড়া মেয়েরা কথা বলছে না? তারা যে ভাষায় কথা বলছে তার নাম কী? সুদূর আমেরিকাতে কেন বাংলাদেশের তরুন প্রজন্ম ভারতীয়দের সাথে হিন্দিতে কথা বলে? বাড়িতে বাড়িতে বিয়েতে হিন্দি গান বাজে, আপনাকেও সেই চটুল কথা-সুরের সাথে নাচতে দেখেছি। আপনার আপত্তি কি আসলে এখানে যে আমাদের হিন্দি গানের সাথে নাচতে রুচিতে বাধে? একটা মেয়ে স্বামীর বদলে হাজারো মানুষের সামনে বিকৃত অঙ্গভঙ্গি করে মনরঞ্জন করবে এটাকে আমরা প্রগতি বলি না স্যার, নোংরামো বলি। একটা ছেলে ছটা মেয়ের সাথে শুয়ে বাপের পয়সা গুণে সপ্তমটাকে বিয়ে করবে – এটা আমাদের কাছে পবিত্র প্রেম মনে হয় না স্যার, দুঃখিত। এটা লুইচ্চামি, ভন্ডামী। আমি লম্বা জামা পড়ে, মুখে দাড়ি রেখে, গোড়ালি অবধি প্যান্ট গুটিয়ে মাথা নিচু করে পথ চলব, আমি আমার তরুণ ভাইদের তা করতে বলব। আপনি আমার গায়ে মৌলবাদের তকমা দেন, আমার একটুও যায় আসে না।

৪.
স্যার আপনি যেমন আপনার আত্মাকে এক অজানা প্রভুর কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন তেমন আমিও আমার দেহ-মন-জীবন-মরণ আমার প্রভু আল্লাহর কাছে বিক্রি করে দিয়েছি। স্ত্রী- সন্তানসহ পুরো পরিবারকে উৎসর্গ করেছি। শুধু আমি না স্যার, আমার মত লাখো মুসলিম তরুণ আছে যারা নিজেদের এভাবেই আল্লাহর রাস্তায় কুরবানী করে দিয়েছে নিজেদের। পাকিস্তানে কেন এত জঙ্গী জানেন স্যার, কারণ সে দেশের কিছু মানুষ দেশটিকে আমেরিকার কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। আমরা আমাদের দেশকে কারো কাছে বিক্রি করতে দেব না, তাতে আপনি আমাকে হিজবুত তাহরির ভাবেন আর শিবির। জঙ্গী ব্যবসা মাল্টিমিলিয়ন ডলারের ব্যবসা, দেশে জঙ্গী আছে এই হুজুগ তুলতে পারলে অনেক টাকা ভিক্ষে পাওয়া যায়। আমাদের তরুণ সমাজকে লুলা-কানা বানিয়ে সুশীল সমাজকে ভিক্ষে ব্যবসা করতে দেব না, যদি মরে যাই তো যাব – আপনারা জঙ্গী বললেও আল্লাহ জানেন আমরা আমাদের দেশকে কত ভালবাসি, দেশের মানুষকে কত ভালবাসি। কারণ আমি মুসলিম, আমি নিজের জন্য বাঁচিনা, আল্লাহর জন্য বাঁচি।

আপনি আমাদের নিয়ে স্বপ্ন দেখেন না কিন্তু আমরা আমাদের নিয়ে স্বপ্ন দেখি। কিন্তু সেই স্বপ্ন শুধুই পার্থিব ভোগ-বিলাসের সুখস্বপ্ন না। প্রত্যেকটা পুরুষ যেন হালাল রুযি কামাই করে পরিবারসহ দু’বেলা খেতে পারে সেই স্বপ্ন। প্রত্যেকটা মেয়ে যেন শিক্ষিত হয়, সন্তানকে নিজের সৃষ্টিকর্তাকে চিনতে শেখায়, নীতিবোধ শেখায় সেই স্বপ্ন। আমরা শুধু স্বপ্ন দেখি না স্যার পরিকল্পনাও করি। আমরা সে অনুযায়ী কাজ করার চেষ্টা করি। কি কাজ শুনবেন? ইসলাম শিখি, নিজের জীবনে প্রয়োগ করি, অন্য মানুষকে ইসলামের সৌন্দর্যের দিকে ডাকি। আমরা ক্ষমতা চাই না, সম্পদ চাই না, খ্যাতি চাই না - সবার জন্য শান্তি চাই। আমাদের এ চেষ্টায় আপনার প্রভু যেমন খাপ্পা তেমনি আপনিও। কিন্তু বিশ্বাস করেন আমরা আপনার উপর ক্ষুব্ধ নই, আপনার জন্য শঙ্কিত। আপনি যাকে প্রভু হিসেবে নিয়েছেন সে মানুষকে প্রতারণা করে স্যার, সে মিথ্যা আশ্বাস দেয়। আপনার জন্য করুণা হয় স্যার, আপনি এত কিছু বুঝলেন – ইসলামটা বোঝার চেষ্টা করলেন না? যিনি আপনাকে মাথা ভরে মেধা দিলেন, সোনা দিয়ে গড়া লেখার হাত দিলেন তার বিরুদ্ধে কতক্ষণ যুদ্ধ করবেন স্যার? আর কতদিন যুদ্ধ করবেন? আপনি যে হেরে যাচ্ছেন সেটা কি আপনার চুলের পাক বলে দিচ্ছে না?

শ্রদ্ধেয় জাফর ইকবাল স্যার, আমি আপনার হিদায়াতের জন্য দু’আ করি যেন আপনি ইসলামের মর্ম বুঝে মুসলিম হয়ে মারা যেতে পারেন। আল্লাহ যদি আমাকে বাঁচিয়ে রাখেন আমি যেন আমার শৈশবের হিরোর জানাযা পড়তে পারি

Collected from facebook:sharif abu hayat opu
৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজনীতির পন্ডিত, ব্লগার তানভীর জুমারের পোষ্টটি পড়েন, জল্লাদ আসিফ মাহমুদ কি কি জানে!

লিখেছেন জেন একাত্তর, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৪৯



সামুর রাজনীতির ডোডো পন্ডিত, ব্লগার তানভীর ১ খানা পোষ্ট প্রসব করেছেন; পোষ্টে বলছেন, ইউনুস ও পাকিসতানীদের জল্লাদ আসিফ মাহমুদ ধরণা করছে, "সেনাবাহিনী ও ব্যুরোক্রেটরা বিএনপি'কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নীল নকশার অন্ধকার রাত

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:১৬


কায়রোর রাস্তায় তখন শীতের হিম হাওয়া বইছিল। রাত প্রায় সাড়ে এগারোটা। দুইটা বড় সংবাদপত্র অফিস: আল-আহরাম এবং আল-মাসরি আল-ইয়াউম—হঠাৎ করেই আগুনে জ্বলে উঠলো। কিন্তু এই আগুন কোনো সাধারণ দুর্ঘটনা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদি ভাই, ইনসাফ এবং একটা অসমাপ্ত বিপ্লবের গল্প

লিখেছেন গ্রু, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৮



ইদানিং একটা কথা খুব মনে পড়ে। হাদি ভাই।

মানুষটা নেই, কিন্তু তার কথাগুলো? ওগুলো যেন আগের চেয়েও বেশি করে কানে বাজে। মাঝেমধ্যে ভাবি, আমরা আসলে কীসের পেছনে ছুটছি? ক্ষমতা? গদি? নাকি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩২

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে[

স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধে রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা, মব-রাজনীতি ও এক ভয়ংকর নীরবতার ইতিহাস
চরম স্বৈরশাসন বা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রেও সাধারণত সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার সাহস কেউ করে না। কারণ ক্ষমতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×