somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জাফর সাহেবের ইসলাম চিন্তার ব্যবচ্ছেদ

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১১:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

‘ঘৃনা হচ্ছে একটা শিল্প যা সময়ের সাথে সাথে অর্জন করতে হয়’।

৭১ থেকে জাফর ইকবাল সাহেব যে শিল্পের অনুশীলন করে করে চুড়ান্ত পর্যায়ে উপনীত হয়েছেন সে বিষয়ে আমার কথা বলা তার ঘৃনার প্রশমন ঘটাবে বলে আমি মনে করিনা কিংবা আমি সে বিষয়ে লিখতেও চাইনা কারন ঘৃনিতরা(?) আছে সে বিষয়ে পূর্নাঙ্গ বলার জন্য।অবশ্য এ ঘৃনার অন্য ব্যাখ্যা থাকতে পারে।শেক্সপীয়ার বলেছিলেন-

“অনেক সময় ভীতিই ঘৃণার সঞ্চার করে”

যুগে যুগে ইসলামবিরোধীরা ইসলামের অগ্রযাত্রাকে ভয় করেছে ফলে তৈরি হয়েছে ঘৃনার। আর এ ‘ঘৃনা অন্ধ’ ।তাই একবার যখন ঘৃনার উদ্রেক হয় তখন এমন কিছু কথা মানুষ বলে ফেলে যা ধরতে হয়না এবং বুদ্ধিমান মানুষ মাত্রই তা সুচিন্তিতভাবে দূরে ঠেলে রাখে।তাই জাফর সাহেব জামাত শিবির নিয়ে ঘৃনা থেকে কি বলেছেন সেটা নিয়ে কথা নাবলে তার এ লেখা পড়ার আগে ইসলামের শত্রুদের চরিত্রের দুইটা দিক না জানলেই নয়। ক আমি জামাত শিবিরের কোন সদস্য নই,তবে যারা সুচিন্তিতভাবে ইসলাম বিরোধীতাকে শিল্প বানিয়ে ফেলেছে তাদের সে নষ্ট শিল্পের বিষয়ে কথা বলা একজন মুসলিম হিসেবে আমার দায়িত্ব বলেই মনে করি।

২।

বিংশ শতাব্দীর এক চিন্তাবিদ তাঁর এক বইতে লিখেছিলেন-

‘কিছু কিছু মানুষ যখন কাঠমোল্লাদের গালি দেয়া তখন তারা আসলে কাঠমোল্লাদের গালি দেয়না, গালি দেয় ইসলামকে।কারন তারা ইসলাম মানেই কাঠমোল্লাদের বুঝে’।

যারা সত্যিকার ইসলামকে বুঝার চেষ্টা করে তারাও কাঠমোল্লাদের বিরুদ্ধে কথা বলে কিন্তু তা বলে সংশোধনের উদ্দেশ্যে।ইসলামকে তার আসল সৌন্দর্যের ছোঁয়ায় রাঙ্গানোর জন্য। অপরদিকে ইসলাম বিদ্বেষীরাও কাঠমোল্লাদের গালি দেয়,তারা আসলে কাঠমোল্লাদের ছদ্মাবরনে ইসলামকে গালি দেয়।আমরা যারা নিজেকে মুসলিম দাবি করি তারা এসকল ইসলাম বিদ্বেষীদের কথায় খুব বেশি পুলকিত হওয়ার কিছু নেই। সময় এসেছে আজ তাদের কথা যাচাই করে দেখার।

আজকে যারা কথায় কথায় সাম্প্রদায়িকতা,ধর্মান্ধতা বিরোধী বক্তব্য কপচায় তাদের উদ্দেশ্য থাকে আসলে ভিন্ন।তারা এ সাম্প্রদায়িকতা,ধর্মান্ধতা বলতে ইসলামকে বুঝায়। এবং যখন বলে এ সাম্প্রদায়িকতা,এবং ধর্মান্ধতার উচ্ছেদ কর তখন তারা আসলে ইসলামকে উচ্ছেদের ইংগিত দিতে চায়।কিন্তু তাদের সম্পর্কে আল্লাহ বলেছেন-
তারা মুখের ফুঁৎকারে আল্লাহর আলো নিভিয়ে দিতে চায়। আল্লাহ তাঁর আলোকে পূর্ণরূপে বিকশিত করবেন যদিও কাফেররা তা অপছন্দ করে।সুরা সফ-৮

৩।

মক্কায় যখন মহানবী (সঃ) ইসলামের প্রচার শুরু করেছিলেন তখন কাফির মুশরিকরা এ বিপ্লবী প্রচার বন্ধ করার জন্য উঠে পড়ে লাগে। ইসলামের দাওয়াতের পথ রোধ করার জন্য তারা তাদের গুরু মস্তিষ্কের যথেষ্ট ব্যায়াম সম্পাদন করে।মহানবী (সঃ) কে নিষেধ করা,আপোস করা,ব্যংগ বিদ্রুপ করা,ভয় দেখানো কিছুই তারা বাদ রাখেনি।তাদের এসকল কর্মসূচির একটা অন্যতম অংশ ছিল সাংস্কৃতিক কর্মসূচী।মানুষকে কিচ্ছা কাহিনী,গান,বাদ্য বাজনা, আনন্দ সম্ভোগে মগ্ন রেখে তাদেরকে চিন্তা চেতনার দিকে পঙ্গু করে রাখা যাতে তারা যেন কোন গুরুতর বিষয়ের প্রতি মনোযোগ দিতে না পারে যা কুরআন ও মুহাম্মদ (সঃ) তাদের কাছে পেশ করছিলেন।

ইবনে হিশাম সীরাতে মুহাম্মদ বিন ইসহাকের বর্ননা উদ্ধৃত করে বলেন,বনী আবদুদ্দারের নদর বিন আল হারেস বিন কালাদা কুরাইশের এক সমাবেশে বলে,তোমরা মুহাম্মদের সঃ মুকাবেলা যেভাবে করছ তার কোন ফল হবেনা।মুহাম্মদ সঃ যখন যুবক ছিলেন তখন তিনি তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে অমায়িক ছিলেন,সবচেয়ে সত্যবাদি, বিশ্বস্ত ছিলেন।এখন যখন তাঁর চুল শ্বেতবর্ন ধারন করেছে তখন তিনি তোমাদের নিকটে এমন জিনিস এনেছেন যে তোমরা তাকে বলছ যাদুকর,গনক ,কবি ও পাগল।খোদার কসম তিনি যাদুকর নন,আমরা যাদুকর দেখেছি তাদের ঝাঁড়ফুঁকও দেখেছি।খোদার কসম তিনি গনক নন।আমরা গনকের নীরস ছন্দোবদ্ধ কথা শুনেছি।সে যে আবোল তাবোল কথা বলে তাও আমাদের জানা আছে।খোদার কসম তিনি কবিও নন ।কবিতার সকল ধারা পদ্ধতিও আমাদের জানা আছে।তাঁর কালাম এসবের কোন ধারায় পড়েনা।খোদার কসম তিনি পাগল নন।পাগলের যে অবস্থা হয়ে থাকে যে ধরনের অর্থহীন কথা বিড়বিড় কড়ে বলে তা কি তোমাদের জানা নেই?হে কুরাইশ সর্দারগন!অন্য কিছু উপায়চিন্তা করে দেখ।যে জিনিসের মুকাবেলা তোমাদের করতে হবে তা এর চেয়ে অনেক গুরুতবপূর্ন যে তোমাদের কিছু রচনা করে তাকে পরাজিত করতে চাও।

তারপর সে প্রস্তাব করে যে অনারব দেশ থেকে রুস্তম ও ইসফেয়ান্দরের কেচ্ছা কাহিনী সংগ্রহ করে এনে ছড়ানো হোক যাতে লোক এর প্রতি অনুরক্ত হতে থাকে এবং তা তাদের কাছে কুরআন থেকে অধিক বিস্ময়কর মনে হয়।তারপর কিছুদিন এ কাজ চলতে থাকে এবং স্বয়ং নদর কেচ্ছা কাহিনী শুনাতে থাকে।

ইবনে আব্বাস রাঃ বলেন নদর এ উদ্দেশ্যে গায়িকা দাসী ও খরিদ করেছিল।যখনই সে এ কথা শুনত যে অমুক নবি সঃ এর কথায় প্রভাবিত হয়ে পড়ছে ,তখনই তার পেছনে সে একজন দাসী লাগিয়ে দিত এবং তাকে বলতো তাকে খুব ভালো করে যত্ন করে খেতে দাও এবং গান শুনাতে থাক,যাতে তোমাকে নিয়ে মত্ত থেকে তার মন যেন ওদিক থেকে সরে আসে।

আজকের নব্য নজর বিন আল হারেসদের বক্তব্য অনেকটা এরকম

“যে বয়সে তাদের একুশে ফেব্রুয়ারিতে প্রভাতফেরি করার কথা, ষোলোই ডিসেম্বরে স্মৃতিসৌধে ফুল দেওয়ার কথা, পয়লা বৈশাখে রাজপথে রবীন্দ্রসংগীত গাওয়ার কথা, সেই বয়সে তারা যে শুধু এই অবিশ্বাস্য আনন্দ থেকে নিজেদের বঞ্চিত করে রাখে তা নয়, তারা এগুলোকে প্রতিহত করার চেষ্টা করে। যে বয়সে তাদের মুক্তচিন্তা শেখার কথা, গান গাওয়ার কথা, নাটক করার কথা, আদর্শ নিয়ে ভাবালুতায় ডুবে যাওয়ার কথা, সেই সময় তারা ক্ষুদ্র গণ্ডির মধ্যে নিজেদের আটকে রাখতে শেখে, সাম্প্রদায়িক হতে শেখে, ধর্মান্ধ হতে শেখে”।

এসকল ইসলামের শত্রুদের কথা পর গ্রহন করার আগে আমরা যারা নিজেকে মুসলিম দাবী করি তারা কোরআনের সূরা হুজুরাতের এ আয়াতটা স্মরনে রাখা একান্ত জরুরী।

“মুমিনগণ! যদি কোন পাপাচারী ব্যক্তি তোমাদের কাছে কোন সংবাদ আনয়ন করে, তবে তোমরা পরীক্ষা করে দেখবে, যাতে অজ্ঞতাবশতঃ তোমরা কোন সম্প্রদায়ের ক্ষতিসাধনে প্রবৃত্ত না হও এবং পরে নিজেদের কৃতকর্মের জন্যে অনুতপ্ত না হও।সুরা হুজুরাত-৬

লেখকঃআবু হামযা

Collected from
Muslim brotherhood page
৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজনীতির পন্ডিত, ব্লগার তানভীর জুমারের পোষ্টটি পড়েন, জল্লাদ আসিফ মাহমুদ কি কি জানে!

লিখেছেন জেন একাত্তর, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৪৯



সামুর রাজনীতির ডোডো পন্ডিত, ব্লগার তানভীর ১ খানা পোষ্ট প্রসব করেছেন; পোষ্টে বলছেন, ইউনুস ও পাকিসতানীদের জল্লাদ আসিফ মাহমুদ ধরণা করছে, "সেনাবাহিনী ও ব্যুরোক্রেটরা বিএনপি'কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নীল নকশার অন্ধকার রাত

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:১৬


কায়রোর রাস্তায় তখন শীতের হিম হাওয়া বইছিল। রাত প্রায় সাড়ে এগারোটা। দুইটা বড় সংবাদপত্র অফিস: আল-আহরাম এবং আল-মাসরি আল-ইয়াউম—হঠাৎ করেই আগুনে জ্বলে উঠলো। কিন্তু এই আগুন কোনো সাধারণ দুর্ঘটনা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদি ভাই, ইনসাফ এবং একটা অসমাপ্ত বিপ্লবের গল্প

লিখেছেন গ্রু, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৮



ইদানিং একটা কথা খুব মনে পড়ে। হাদি ভাই।

মানুষটা নেই, কিন্তু তার কথাগুলো? ওগুলো যেন আগের চেয়েও বেশি করে কানে বাজে। মাঝেমধ্যে ভাবি, আমরা আসলে কীসের পেছনে ছুটছি? ক্ষমতা? গদি? নাকি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩২

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে[

স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধে রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা, মব-রাজনীতি ও এক ভয়ংকর নীরবতার ইতিহাস
চরম স্বৈরশাসন বা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রেও সাধারণত সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার সাহস কেউ করে না। কারণ ক্ষমতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×