somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শেখ মুজিবের ষড়যন্ত্রের রাজনীতি ! ! ! ! ! !

২৯ শে আগস্ট, ২০১১ রাত ১২:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


পাকিস্তান সৃষ্টি হওয়ার পর থেকেই দেশটিতে প্রচুর সমস্যা ছিল। ভৌগলিকভাবে দুটি অংশ হাজার মাইলের বেশী দূরে থাকায় সে সমস্যায় প্রচণ্ড জটিলতাও ছিল। পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে প্রচুর বৈষম্যও ছিল। তবে সে সমস্যার কারণগুলো বুঝা ও তার সমাধান নিয়ে যতটা চেষ্টা হয়েছে তার চেয়ে বেশী সেগুলি ব্যবহৃত হয়েছে রাজনীতির গুটি রূপে ক্ষমতা আহরণে। সবচেয়ে বেশী হয়েছে তা নিয়ে ষড়যন্ত্র পাকাতে। শেখ মুজিব সবসময়ই বলেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে প্রাসাদ ষড়যন্ত্র হচ্ছে। অথচ শেখ মুজিব নিজেই ষড়যন্ত্র করেছেন পাকিস্তানের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে এবং সেটি করেছেন পাকিস্তানের আজন্ম শত্রু ভারতের সাথে মিলে সংগোপনে। আগরতলা ষড়যন্ত্র যে মিথ্যা ছিল না সেটি বেরিয়ে আসে বাংলাদেশ সৃষ্টির পর। এখন এ ষড়যন্ত্রকে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ নিজেদের জন্য গর্বের বিষয় রূপে গণ্য করেন। যাদের বিরুদ্ধে সে মামলায় সেদিন অভিযোগ আনা হয়েছিল, তারাই এখন সে সংশ্লিষ্টতা নিয়ে বাহাদুরীও জাহির করছে। ফলে যারা বলেন, মুজিব বাংলাদেশ স্বাধীন করার সিদ্ধান্তটি নেন ২৫শে মার্চ পাকিস্তান আর্মির এ্যাকশনের পর, তারা সত্য বলেন না। মুজিব সে সিদ্ধান্ত অনেক পূর্বেই নিয়েছিলেন। এবং সে সিদ্ধান্তটি নিয়েছিলেন ভারতের সাথে মিলে। আওয়ামী লীগের প্রথম সারির নেতা এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক জনাব আব্দুর রাজ্জাক সাপ্তাহিক মেঘনায় দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, মুজিব তাদেরকে ভারতের সাথে যোগাযোগ করতে বলেছিলেন। সেখান থেকে সাহায্য মিলবে সে আশ্বাসও দিয়েছেন। মুজিবের ষড়যন্ত্র শুধু পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ছিল না, ছিল সমগ্র মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে। কারণ তার ষড়যন্ত্রে শুধু পাকিস্তান দুর্বল হয়নি। দুর্বল হয়েছে বাংলাদেশও। দুর্বল হয়েছে সমগ্র মুসলিম উম্মাহ। ভারতের থাবায় পড়েছে বাংলাদেশের ১৬ কোটি মুসলমান। বাংলার মুসলমানেরা বিশ্বের সর্ববৃহৎ মুসলিম রাষ্ট্রের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ রূপে বিশ্বরাজনীতিতে যে প্রভাব ফেলতে পারতো সে সুযোগ ধূলিস্যাৎ হয়ে গেল।
বিভক্ত মুসলমানগণ যখন দেশে দেশে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্র গড়ে উৎসব করছিল, তখন নানা ভাষাভাষি ভারতীয় মুসলমানগণ হাজার মাইলের শত্রুদেশ ভারতকে মাঝখানে রেখে অখণ্ড পাকিস্তান গড়েছিল। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রগড়ার বড় বিপদ হল, এমন রাষ্ট্রের প্রতিরক্ষার সামর্থ থাকে না। কারণ প্রতিরক্ষার খরচ বিশাল। গ্রেট ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানের মত ইউরোপীয় দেশগুলো সে খরচের ভয়ে ন্যাটোর জন্ম দিয়েছে। প্রতিরক্ষা-খরচের ভারে সোভিয়েত রাশিয়া বিলুপ্ত হয়ে গেল। বিপুল তেল সম্পদ থাকলেও সে সামর্থ সৌদি আরব, কাতার, কুয়েত কোন আরব দেশেরও নাই। তাই ১৯৪৮, ১৯৬৭ এবং ১৯৭৩ সালে ইসরাইলের হাতে তারা লজ্জাজনক ভাবে পরাজিত হয়েছিল। প্রবল প্রতিবেশী ভারতের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষার সে সামর্থ বাংলাদেশের আজ যেমন নাই, ১৯৪৭ সালেও ছিল না। আর প্রতিরক্ষার সামর্থ না থাকলে কি স্বাধীনতা থাকে? তেমন দেশ তো সিকিম-ভূটানে পরিনত হয়। ১৯৪৭ সালে খাজা নাজিম উদ্দীন, সোহরাবর্দীর মত বাংলার বিচক্ষণ মুসলিম লীগ নেতারা সেটি বুঝেছিলেন বলেই পশ্চিম পাকিস্তানীদের সাথে মিলে অখণ্ড পাকিস্তান গড়েছিলেন। তারা সংশোধন এনেছিলেন লাহোর প্রস্তাবে। মুসলিম-সংহতির এমন নজির ইতিহাসে বিরল। বিশ্বের সংঘাত-মুখি বিভক্ত মুসলমানদের জন্য এটি ছিল অনুপ্রেরণার উৎস। এমন একতা ছিল মহান আল্লাহকে খুশি করার বড় মাধ্যম। জমি থাকলে সেখানে ফসল ফলানোর সাধও জাগে। পাকিস্তান ছিল তেমনি এক বিশাল ভূমি। সে একটি নব্য বিশ্বশক্তির ইমারত গড়ে তোলার লক্ষ্যে। কিন্তু ইসলামের শত্রুপক্ষ বিশেষ করে ভারত সে সুযোগ দিতে রাজী ছিল না। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা পায় ১৯৪৭ সালের ১৪ই আগষ্টে, আর সেপ্টম্বরে মাসে নিখিল ভারত কংগ্রেসের বৈঠক বসেছিল মোম্বাই শহরে। সে বৈঠকে প্রশ্ন উঠেছিল, কংগ্রেস সব সময় অখণ্ড ভারতের কথা জনগণকে বুঝিয়েছে। এখন এ বিভক্ত ভারত নিয়ে কংগ্রেস কর্মীরা কিভাবে জনগণের সামনে মুখ দেখাবে? তখন প্রশ্নকর্তাদের শান্ত করতে গিয়ে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা জহরলাল নেহেরু বলেছিলেন, ‘আপাততঃ এ বিভক্তিকে আমরা মেনে নিচ্ছি।” ভারতীয় পররাষ্ট্র নীতি তথা পাকিস্তানের প্রতি ভারতের শত্রুসুলভ আচরণের মূল রহস্য হল ভারত বিভাগকে এই আপাতঃ মেনে নেয়ার বিষয়টি। অর্থাৎ ১৯৪৭ য়ের ভারত বিভক্তি বা পাকিস্তানের সৃষ্টিকে মেনে নেয়ার বিষয়টি ভারতীয় নেতাদের আপততঃ মেনে নেয়ার নীতির মধ্যে সীমিত, কখনই মন থেকে এ ভারত বিভক্তি তারা মেনে নেয়নি। তারা শুধু সুযোগের অপেক্ষায় ছিল কি করে পাকিস্তানকে ভাঙ্গা যায়। আর সে সুযোগটিই শেখ মুজিব ও তার অনুসারিরা ভারতের হাতে তুলে দেয়। আর সেটি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে। তাই পাকিস্তান ভাঙ্গার প্রশ্নে মুজিব জনগণ থেকে মেন্ডেট বা ভোট নেয়ার প্রয়োজন বোধ করেননি। তবে একাত্তরে বাংলাদেশে সৃষ্টি হলেও অখণ্ড ভারত সৃষ্টির কাজ এখনও হয়নি। ভারতকে এ লক্ষ্যে আরো সামনে এগুতে হবে। আর সেটি হলে তখন কি বাংলাদেশর অস্তিত্বও বিপন্ন হবে না?
মুসলমানদের বাঁচা-মরার যেমন একটি লক্ষ্য থাকে, তেমন একটি লক্ষ্য রাজনীতিরও থাকে। বাঁচা-মরার সে মূল লক্ষ্যটি হলো, প্রতিকর্মের মধ্য দিয়ে মহান রাব্বুল আ’লামীনকে খুশি করা। আর রাজনীতির সে লক্ষ্যটি হলো, ইসলামকে সর্বস্তরে বিজয়ী করা। ফলে মুসলমানের বাঁচার মধ্যে যেমন সিরাতুল মোস্তাকিম থাকে, তেমনি রাজনীতিতেও। অথচ মুজিবের সেক্যিউলার রাজনীতিতে সেটি ছিল না। বরং তাঁর রাজনীতিতে ছিল ইসলামের প্রতি প্রচণ্ড অঙ্গীকারহীনতা। ছিল যে কোন উপায়ে ক্ষমতা দখলের নেশা। সে নেশাতে একটি রক্তাক্ষয়ী যুদ্ধকে তিনি অনিবার্য করে তুলেছেন। ইসলামের প্রতি এমন অঙ্গীকারহীনতায় কি মুসলমানদের কল্যাণ হয়? এমন রাজনীতি তো আত্মঘাতী । এমন রাজনীতির ফলেই বাংলাদেশের মানুষ পরিণত হয়েছে আন্তর্জাতিক ভিক্ষুকে। আর মহাকল্যাণ হয়েছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের।
মুসলমান হওয়ার অর্থ হলো, সর্বকাজে আল্লাহর সৈনিক হয়ে যাওয়া। আর মহান আল্লাহ কি তার সৈনিকদের মাঝে কখনও বিভেদ ও বিভক্তি পছন্দ করেন? আল্লাহতায়ালা তাঁর সৈনিকদের মাঝে একতা ও সংহতিকে এতটাই ভালবাসেন যে, মাথার উপর আল্লাহর গজব নামিয়ে আনার জন্য পুতুল পূজার প্রয়োজন পড়েনা। নিজেদের মাঝে বিভেদ ও বিভক্তি গড়াটাই এক্ষেত্রে যথেষ্ট। পবিত্র কোরআনে তাই ঈমানদারদের হুশিয়ার করে দেয়া হয়েছে, “এবং তোমরা কখনই তাদের মত হয়োনা যারা (আল্লাহর পক্ষ থেকে) সুস্পষ্ট নির্দেশাবলী আসার পরও পরস্পরে বিভক্ত হলো এবং মতভেদ গড়লো, এবং তাদের জন্য রয়েছে কঠিন আযাব।” বিভক্তি ও বিতন্ডা যে আল্লাহর আযাবকে অনিবার্য করে তোলে –এটিই হলো এ আয়াতটির মূল শিক্ষণীয় বিষয়। ফিলিস্তিন, ইরাক, লেবানন, ইয়েমেন, আলজিরিয়াসহ নানা মুসলিম দেশের পথে-ঘাটে মুসলমানগণ যেভাবে কুকুর বিড়ালের ন্যায় মারা যাচ্ছে ও মুসলিম ভূমি যেভাবে কাফেরদের হাতে অধিকৃত হচ্ছে -সেটি কি আল্লাহর রহমত? সেটি কি মুসলিম জনসংখ্যা, মসজিদ-মাদ্রাসা বা সৈন্যসংখ্যার কমতির কারণে? সেটিতো শতবছর আগে যা ছিল তার চেয়ে এখন শতগুণ বেশী। বরং এটি হলো সেই কঠোর আযাব -যার প্রতিশ্রুতি মহান আল্লাহতায়ালা পূর্বোক্ত আয়াতে করেছেন। আর মহান আল্লাহতায়ালা কি তার নিজের প্রতিশ্রুতি পালনে বিলম্ব করেন? সে আযাবের আলামত কি শুধু বিদেশীদের আগ্রাসন? সে আযাব তো আসে স্বৈরাচারি স্বদেশীদের আগ্রাসন, গণহত্যা, ধর্ষণ ও নির্যাতনের মাধ্যমেও। নিজ ভূমির নদ-নদী, উপকূল, জলবায়ু, বায়ু-প্রবাহও তখন সে আযাবের হাতিয়ারে পরিণত হয়। মুজিবামলের দুর্ভিক্ষ ও সরকারি সন্ত্রাসে বহু লক্ষ মানুষের মৃত্যু এবং খোদ মুজিব ও তার পরিবারের সদস্যদের মৃত্যুকে কি আল্লাহর রহমত বলা যায়?
মুসলিম ইতিহাসে এমন কোন নজির নেই যে মুসলমানগণ ভূগোলকে খণ্ডিত করলো অথচ মাথার উপর আযাব নেমে এল না। আরব বিশ্বে শতবছর আগেও এত রাষ্ট্র ছিল না, ফলে এত আযাবও ছিল না। মুসলিম বিশ্বে যতই বাড়ছে রাষ্ট্রের সংখ্যা, ততই বাড়ছে দুর্গতি। ইসলামে যে দেশভাঙ্গা হারাম – শেখ মুজিব ও তাঁর অনুসারিরা ইসলামের এ বুনিয়াদী কথাটি বুঝেননি। অথচ ইসলামের সে বিধান ভারতীয় কংগ্রেস নেতা করম চাঁদ গান্ধিও বুঝতেন। তাই মুসলিম লীগ যখন ভারত ভেঙ্গে পাকিস্তান গড়ার প্রস্তাব পাশ করে তখন কায়েদে আজম মোহম্মদ আলী জিন্নাহকে তিনি ইসলামের সে বিধানের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন। তখন কায়েদে আযমের যুক্ত ছিল, মুসলিম লীগ কোন মুসলিম দেশ ভাঙ্গছে না, বরং হিন্দু-সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারত ভেঙ্গে বিশ্বের সর্ববৃহৎ মুসলিম দেশের জন্ম দিচ্ছে। তাঁর আরো যুক্তি ছিল, মুসলমানগণ হিন্দুদের থেকে সর্বার্থে একটি আলাদা জাতি। প্রতি পরিবারের জন্য যেমন আলাদা ঘর লাগে, স্বতন্ত্র একটি জাতির জন্যও স্বতন্ত্র দেশ লাগে। নইলে সে জাতি তার নিজের জীবন-লক্ষ্য ও জীবনাদর্শ নিয়ে বেড়ে উঠতে পারে না। হিন্দুদের ধর্ম যেমন মুসলমানদের থেকে ভিন্ন, তেমন ভিন্ন হলো তাদের বাঁচা-মরা, রাজনীতি, আইন-আদালত ও সংস্কৃতির এজেণ্ডা। এটিই ছিল জিন্নাহর ‘দ্বিজাতি’ তত্ত্ব। মুসলমানদের উপর ফরয শুধু নামায-রোযা আদায় নয়, আইন-আদালতে কোরআনী বিধানকেও মেনে চলা। সেটি একটি কাফের অধ্যুষিত রাষ্ট্রে কিকরে সম্ভব ? তাই মুসলমানের কাজ শুধু মসজিদ মাদ্রাসা গড়া নয়, ইসলামি রাষ্ট্র গড়াও। ফলে পাকিস্তান গড়ার কাজকে এজন্যই উপমহাদেশের মুসলমানেরা ইবাদত মনে করেছে। তেমনি ইবাদত মনে করেছে এর প্রতিরক্ষাকেও।
প্রশ্ন হলো, একাত্তরে যেসব ইসলামপন্থিগণ অখণ্ড পাকিস্তানের পক্ষ নিয়েছিল তারা কি পূর্ব পাকিস্তানীদের কল্যাণকে মুজিবের চেয়ে কম গুরুত্ব দিত? বাংলাদেশ কি শুধু মুজিব ও তার অনুসারীদের জন্মভূমি? মুজিবের ন্যায় তারাও তো এ ভূমিতেই জন্ম নিয়েছে। তাদেরও দাবী ছিল, পূর্ব পাকিস্তানের ন্যায্য পাওনা দেয়া হোক। ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা পাক সমগ্র পাকিস্তান জুড়ে। এমনকি মুজিবের ৬ দফা প্রণয়নের বহু আগেই তৎকালীন পূর্ব বাংলার মূখ্যমন্ত্রী জনাব নুরুল আমীন বাজেটে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রদেশের জন্য ন্যায্য হিস্যার দাবী নিয়ে তৎকালীন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী জনাব গোলাম আহমদের সাথে বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েছিলেন। পূর্ব-পশ্চিম দুই প্রদেশের বৈষম্য নিয়ে বহু পশ্চিম পাকিস্তানী রাজনৈতিক নেতারাও যে সোচ্চার ছিল সেটি কি শেখ মুজিব জানতেন না? এমনকি ইয়াহিয়া খানও সেটি স্বীকার করতেন। তার আমলে কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরিতে বহু বাঙালী অফিসারের পদ্দোন্নতি হয়েছিল এবং সেনাবাহিনীতে বেশী পূর্ব পাকিস্তানীদের নিয়োগের হুকুম হয়েছিল। সংখ্যার অনুপাতে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় পার্লামেন্টে পূর্ব পাকিস্তানের শতকরা ৫৬ ভাগ আসন মেনে নিয়েছিলেন ইয়াহিয়া খান। অথচ আওয়ামী লীগ নেতা সহরোওয়ার্দী পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় পার্লামেন্টে পূর্ব পাকিস্তানের সংখ্যানুপাতে আসনের ন্যায্য অধিকার বিসর্জন দিযে দুই প্রদেশের সমসংখক আসনের বিধানটি মেনে নেন। প্রকৃত সত্য হলো, মুজিবের সাথে পাকিস্তানপন্থিদের মূল বিরোধটি প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন নিয়ে ছিল না, ছিল না বৈষম্য দূরীকরণ নিয়ে, ছিল না মুজিবকে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতায় বসানো নিয়েও । এমনকি ইয়াহিয়াও সেটি মেনে নিয়েছিলেন, নির্বাচনী বিজয়ের পর ইয়াহিয়া খান তাকে মোবারকবাদও জানিয়েছিলেন। মুজিবের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবী জানিয়ে পত্রিকায় বিবৃতি দিয়েছিলেন মুসলিম লীগ নেতা মমতাজ দওলাতানা, জামায়াত নেতা মওলানা মওদূদী এবং জনাব গোলাম আযম, পিডিপি নেতা জনাব নুরুল আমীনও। মুজিবের সাথে সে মূল বিরোধটি ছিল, অখণ্ড পাকিস্তানের অস্তিত্ব নিয়ে। অখণ্ড পাকিস্তানের বিনাশে মুজিব তার নিজ সিদ্ধান্তটি নিয়ে ফেলেছিলেন নির্বাচনের বহু আগেই। তার নিজের কথায় সেটি ১৯৪৭ সালে। এবং সেটি সাধন করতে তিনি ভারতের সাথে ষড়যন্ত্রমূলক কোয়ালিশনও গড়েছিলেন। পাক-আমলের ২৩ বছর ধরে তিনি রাজনীতি করেছেন, বহু বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়েছেন, সত্তরে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন, মূলত সে স্ট্রাটেজীরই অবিচ্ছেদ্য অংশ রূপে। তাই ইসলামাবাদে গিয়ে ক্ষমতায় বসাতে তার কোন আগ্রহ ছিল না। তখন তিনি তার নিজের ৬ দফাকেও আবর্জনার স্তূপে ফেলেছিলেন। তখন তার ৬ দফা এক দফায় পরিণত হয়। সেটি হলো পাকিস্তান ভাঙ্গা এবং স্বাধীন বাংলাদেশ নির্মাণ। ইয়াহিয়া খানের কাছে ১৯৭১ য়ের ২৩ শে মার্চ তার শেষ দাবী ছিল, সমগ্র পাকিস্তানের নয়, শুধু পূর্ব পাকিস্তানের ক্ষমতা তার হাতে দেয়ার। স্মরণীয় হলো, এনিয়ে আওয়ামী মহলেও কোন বিতর্ক নেই। বস্তুত বাংলাদেশের জন্ম নিয়ে আজও এটাই সরকারি ভাষ্য। এবং মুজিবের ষড়যন্ত্র মূলক রাজনীতির এটিই হলো চূড়ান্ত নজির।
ভারতীয় গোয়েন্দাদের সাথে শেখ মুজিবের সংশ্লিষ্টতার কথা বলেছেন ভারতীয় লেখক ও সাংবাদিক অশোক রায়না। অশোক রায়নার বই থেকে একটা উদ্ধৃতি দেয়া যাকঃ In order to present a clear synopsis of the events that finally brought RAW (Indian spy agency) into the Bangladesh operation, one must review the intelligence activities that started soon after its formation in 1968. But by then Indian operatives had already been in contact with the “pro-Mujib” faction. A meeting convened in Agartala during 1962-63 between the IB (Intelligence Bureau) foreign desk operatives and the Mujib faction, gave some clear indications of what was to follow. The meeting in Agortala had indicated to colonel Menon (which in fact was Sankaran Nair), the main liaison man between the Mujib faction and the Indian intelligence, that the “group” was eager to escalate their movement… They raided the armoury of East Bengal Rifles in Dhaka but this initial movement failed. In fact it was a total disaster. …A few months later, on January 6, 1968, the Pakistan government announced that 28 person would be prosecuted for conspiring to bring about the secession of East Pakistan, with the Indian help (which is known as Agartala conspiracy case in judicial history of Pakistan). –( Asoka Raina, Inside RAW: The Story of Indian Secret Service, page 49-50).
অর্থঃ “কি ধরণের ঘটনাবলী ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা RAW (Research & Analytic Wing) কে তার অপারেশনকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে টেনে নেয় সেটির উপর একটি সুস্পষ্ট ধারণা পেতে হলে অবশ্যই ১৯৬৮ সালে RAW প্রতিষ্ঠা পাবার পর থেকে তার কাজকর্মকে পর্যালোচনা করতে হবে। কিন্তু ইতিমধ্যেই (অর্থাৎ RAW প্রতিষ্ঠা পাবার পূর্ব থেকেই) ভারতীয় গুপ্তচরেরা মুজিবগ্রুপের সাথে সংযোগ গড়ে তুলেছে। আগরতলাতে ১৯৬২-৬৩ সালে ইনটেলিজেন্স বুরোর বিদেশ বিভাগের গুপ্তচর এবং মুজিবগ্রুপের সাথে যে বৈঠক হয়েছিল সেটিই একটি সুস্পষ্ট ধারণা দেয় যে সামনে কি হতে যাচ্ছে। আগরতলার সে মিটিং কর্নেল মেনকে (আসলে তিনি ছিলেন সংকরান নায়ার) –যিনি ছিলেন মুজিবের লোক এবং ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থার এজেন্টদের মাঝে সংযোগ রক্ষাকারি- এ ধারণা দেয়া হয়, তারা তাদের কাজকে আরো প্রবলতর করতে আগ্রহী। …তারা ইস্ট বেঙ্গল রাইফেলস ঢাকাস্থ অস্ত্রাগারে হামলা করে, কিন্তু প্রাথমিক এ হামলা ব্যর্থ হয়ে যায়। ... আসলে এটি ছিল বিপর্যয়। … কয়েক মাস পরেই ১৯৬৮ সালের জানুয়ারিতে পাকিস্তান সরকার ঘোষণা দেয়, ভারতের সাথে ষড়যন্ত্র করে পূর্ব পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করার অভিযোগে ২৮ জনের বিরুদ্ধে বিচার করবে। এবং এটাই পাকিস্তানের ইতিহাসে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা রূপে পরিচিত। আগরতলা মামলা প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সংসদের ডিপুটি স্পীকার এবং আওয়ামী লীগের নেতা অবঃ কর্নেল শওকত আলীর বক্তব্য, "আমরা তখন রাজনৈতিক কারণে অনেক কথাই বলেছি। তবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় যে অভিযোগ দায়ের করেছিল তা শতভাগ ঠিক ছিল। আমাদের পরিক্ল্পনা শুরু হয় ১৯৬৪ সালে। ১৯৬৮ সালে আমরা ধরা পড়ি। পরিকল্পনা ছিল, একটি নির্দিষ্ট রাতের একটি নির্দিষ্ট সময়ে বাঙালী সৈন্যরা পূর্ব পাকিস্তানের সব সেনানিবাস দখল করে পাকিস্তানী সৈন্যদের অস্ত্র কেড়ে নেবে। এরপর মুজিব ভাইয়ের নেতৃত্বে স্বাধীনতা ঘোষণা করব।" - (দৈনিক প্রথম আলো, ৭/১২/২০০৯)।
অশোক রায়নার কথা, ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬৮ সালে। আর শেখ মুজিবের সাথে ভারতীয় গোয়েন্দাদের যোগাযোগ ছিল তার অনেক আগে। এবং সেটি ছিল ভারতীয় “আই.বি”র সাথে। মুজিব যে পাকিস্তান ভাঙ্গার ষড়যন্ত্রটি করেছেন সত্তরের নির্বাচনের বহু পূর্ব থেকেই সেটি তিনি নিজ মুখে বলেছেন পাকিস্তান থেকে ফেরার পর ১০ই জানুয়ারি রেসকোর্সের ময়দানে। বলেছিলেন, “স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠার লড়াই একাত্তর থেকে নয়, সাতচল্লিশ থেকে।” সে লক্ষ্যে তিনি আগরতলাতেও গিয়েছিলেন। সে প্রমাণটি এসেছে এভাবেঃ আগরতলায় শেখ মুজিব সম্পর্কে ত্রিপুরার সাবেক মুখ্যমন্ত্রী শ্রী শচীন্দ্রলাল সিংহ বলেন, “১৯৬৩ সালে আমার ভাই এমএলএ শ্রী উমেশলাল সিং সমভিব্যহারে শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে ১০জন ত্রিপুরার পালম জিলার খোয়াই মহকুমা দিয়া আগরতলায় আমার আগরতলার বাংলোয় রাত্র ১২ ঘটিকায় আগমন করেন। প্রাথমিক আলাপ-আলোচনার পর আমার বাংলো বাড়ি হইতে মাইল দেড়েক দূর ভগ্নী হেমাঙ্গিনী দেবীর বাড়িতে শেখ সাহেব আসেন। সেখানেই থাকার-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। তারপর মুজিবুর ভাইয়ের প্রস্তাব অনুযায়ী আমি আমাদের প্রধানমন্ত্রী পন্তিত জওয়াহের লাল নেহরুর সাথে দেখা করি। আমার সাথে ছিলেন শ্রী শ্রীরমন চীফ সেক্রেটারি। তাকে (শ্রীরমনকে)শ্রী ভান্ডারিয়ার বিদেশ সচিবের রুমে রাখিয়া প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করি। তিনি মুজিবুর রহমানকে ত্রিপুরায় থাকিয়া প্রচার করিতে দিতে সম্মত হন নাই কারণ চীনের সাথে লড়াইয়ের পর এতোবড় ঝুঁকি নিতে রাজি হন নাই। তাই ১৫ দিন থাকার পর তিনি (শেখ মুজিব) ত্রিপুরা ত্যাগ করেন। সোনাপুড়া পশ্চিম ত্রিপুরারই এক মহকুমা কুমিল্লার সাথে সংলগ্ন। শেখ মুজিবুর রহমানকে সর্বপ্রকার সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়।”–(সাহিদা বেগম, ২০০০, প্রকাশনায় বাংলা একাডেমী)। ভারতের সাথে মুজিবের গোপন ষড়যন্ত্র চলছিল বহুদিন ধরে। পাকিস্তান সরকারের গোয়েন্দাদের কাছে সেটি ধরা পড়ে ১৯৬৮ সালে। ১৯৬৮ সালের ৬ই জানুয়ারি পাকিস্তানের সরকারি প্রেসনোটের বরাত দিয়ে এপিপি জানায়, একটি রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে গত মাসে পূর্ব পাকিস্তানে ২৮ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ষড়যন্ত্রটি গত মাসে উদঘাটিত হয়। ধৃত ব্যক্তিগণ পূর্ব পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টায় লিপ্ত ছিল। ষড়যন্ত্র সফল করার জন্য প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র, গোলাবারুদ এবং অর্থ সংগ্রহ করাই তাদের উদ্দেশ্য ছিল।– (সাহিদা বেগম, ২০০০)।
যে কোন ষড়যন্ত্রের মূল কথা হলো, সেটি করতে হয় অতিশয় সংগোপনে। প্রকাশ্যে যে কাজ হয় তাকে কেউ ষড়যন্ত্র বলে না। ষড়যন্ত্রকারীদের এজন্যই পদে পদে মিথ্যা বলতে হয়। এবং সেটি সত্যের ন্যায় অতি প্রাঞ্জল ভাবে। ষড়যন্ত্রকারিরা এজন্যই মিথ্যাবাদী হয়। শেখ মুজিবের সে ক্ষেত্রে অনেক পারদর্শীতা ছিল। মিথ্যাভাষন তিনি শেষ অবধি চালিয়ে গেছেন। তাই পাকিস্তানের জেল থেকে বেরিয়ে যখন লন্ডন হয়ে ফিরছিলেন তখনও লন্ডনে “দি টাইমস” এর প্রখ্যাত সাংবাদিক এ্যান্থনি ম্যাসক্যারেনহাসকে বলেছিলেন,
"going to keep some link with Pakistan” - (Anthony Mascarenhas, Bangladesh: A legacy of Blood, Chapter 5)
অথচ দেশে ফিরে বললেন তার উল্টোটি। সোহরোওয়ার্দ্দী উদ্যানের জনসভায় বললেন, “পাকিস্তানের সাথে আর কোন সম্পর্ক নয়।” তিনি বরং গভীর সম্পর্ক এবং সে সাথে ২৫ বছরের দাস-চুক্তি করলেন ভারতের সাথে।
শেখ মুজিব যে পাকিস্তান ভেঙ্গে বাংলাদেশে বানাতে চান সেটি দেশবাসীকে কখনই প্রকাশ্যে বলেননি। ১৯৭০ সালের নির্বাচনী জনসভাগুলোতে যেমন বলেননি, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় যখন অভিযোগ উঠেছিল তখনও বলেননি। বরং পাকিস্তান ভাঙ্গার ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার কথা বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে কসম খেয়ে অস্বীকার করেছিলেন। অভিযোগের জবাবে নিজ জবানবন্দীতে বলেছিলেন, “আমি কখনও পূর্ব পাকিস্তানকে পশ্চিম পাকিস্তান হইতে বিচ্ছিন্ন করিবার জন্য কোন কিছু করি নাই কিংবা কোনোদিনও এই উদ্দেশ্যে কোনো স্থল, নৌ বা বিমান বাহিনীর কোনো কর্মচারীর সংস্পর্শে কোনো ষড়যন্ত্রমূলক কার্যে আত্মনিয়োগ করি নাই।”–(সাহিদা বেগম, ২০০০)। শেখ মুজিব বহু শত বক্তৃতা দিয়েছেন, ঘরে বাইরে বহু লক্ষ বাক্যও উচ্চারণ করেছেন, কিন্তু কখনই পাকিস্তান থেকে পূর্ব পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করার পক্ষে একটি কথাও প্রকাশ্যে বলেননি। দলীয় কোন সম্মেলনে যেমন বলেননি তেমনি কোন সাংবাদিকদের সাথে সাক্ষাৎকারেও বলেননি। বাংলাদেশ স্বাধীন করার পক্ষে কোন দলীয় প্রস্তাবও পাশ করাননি। ফলে বাংলাদেশ সৃষ্টির পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিপদে পড়ে, স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে। এ দাবীটি অবশেষে জিয়াউর রহমান করে বসেন। শেখ মুজিব বাংলাদেশের স্বাধীনতারা কথা প্রথমবার বললেন ১৯৭২ সালের ১০ই জানুয়ারিতে রেসকোর্সের (আজকের সহরোওয়ার্দী উদ্দান) জনসভায়। এভাবে শেখ মুজিব নিজেই প্রমাণ করলেন, পাকিস্তান সরকার এতদিন যা বলেছে সেটি মিথ্যা ছিল না। আগরতলা মামলাটিও ষড়যন্ত্রমূলক ছিল না। বরং মুজিব যা বলে এসেছেন সেটিই মিথ্যা। ষড়যন্ত্র করেছেন তিনি নিজে। সত্তরের নির্বাচনে শেখ মুজিব যে শুধু ইয়াহিয়া খানের দেয়া লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক মেনে নিয়ে নির্বাচনে নেমেছেন তা নয়, প্রতি নির্বাচনী জনসভাতে জয়বাংলার সাথে “পাকিস্তান জিন্দাবাদ” ধ্বনিও দিয়েছেন। কিন্তু নির্বাচনে জনসভায় দেয়া পাকিস্তানে জিন্দাবাদ ধ্বণি কি শেখ মুজিবের গোপন মনের প্রতিধ্বণি ছিল? এটি কি নিছক সাধারণ মানুষকে ধোকা দেয়ার জন্য ছিল না?
ভারতীয় ষড়যন্ত্র, শোষণ ও আধিপত্যের মুখে বাংলাদশে আজ যে কতটা অসহায় সেটি কোন সচেতন বাংলাদেশীরই অজানা নয়। অনেকেই তা নিয়ে প্রতিবাদ মুখরও। কিন্তু বাংলাদেশের সামর্থ্য নেই গোলামীর এ বেড়াজাল থেকে থেকে বেরিয়ে আসার। আওয়ামী লীগের নেতাদের লক্ষ্য একমাত্র গদী –সেটি যদি ভারতের কাছে আত্মসমর্পণ করেও হয়। সেটির প্রমাণ মেলে ভারতের সাথে তাজউদ্দীনের তথাকথিত স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের ১৯৭১য়ের অক্টোবরে স্বাক্ষরিত আত্মসমর্পণের চুক্তিটি দেখে। চুক্তির শর্তাবলী ছিলঃ
এক). বাংলাদেশের কোন সেনাবাহিনী থাকবে না, থাকবে একটি প্যারা মিলিটারি বাহিনী।
দুই). বাংলাদেশের প্রশাসনে ভারতীয়দের রাখতে হবে।
তিন). ভারতীয় বাহিনী বাংলাদেশে স্থায়ী ভাবে থাকবে।
চার). সীমান্তে তিন মাইল এলাকা জুড়ে কোন মুক্ত বাণিজ্যিক এলাকা থাকবে। -(The Tide, January, 1990)।
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের এ হলো বড় রকমের ষড়যন্ত্র ও বিশ্বাসঘাতকতা। তবে ভারতের সাথে স্বাক্ষরিত সে চার দফা চুক্তি নিয়ে এগুতে হয়নি। ভারত সে চুক্তিতে যা চেয়েছিল, মুজিব সরকার দিয়েছে তার চেয়ে অনেক বেশী। চুক্তিতে সীমান্তের তিন মাইল জুড়ে মুক্ত বাণিজ্যের কথা ছিল, কিন্তু বাস্তবে সমগ্র দেশ পরিণত হয় ভারতের বাজার। ইন্দিরা গান্ধি ভেবেছিল এতটুকু অর্জন করতে হলে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতীয় সেনাবাহিনী ও প্রশাসনে ভারতীয়দের বসাতে হবে। কিন্তু তার সে ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। শেখ মুজিব এবং তার রাজনৈতিক ক্যাডার ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ভারতীয়দের চেয়েও বেশী ভারতীয় স্বার্থের পাহারাদারিতে পরিণত হয়। ভারতীয় সাহায্য ভিক্ষা করতে যে নেতা নিজে ৬০এর দশকেই আগারতলা গিয়েছিলেন, এমন ভিক্ষুক নেতার কি কোন মেরুদণ্ড থাকে? সে যে ভারতীয় সাহায্য অব্যাহত রাখার আশায় নিজ দেশের সীমান্ত খুলে দিবে সেটিই কি স্বাভাবিক নয়? বাংলাদেশী ভূমি বেরুবাড়ী লাভে ভারতকে এজন্যই কোন যুদ্ধ লড়তে হয়নি। ১৯৭৪ সালের ১৬ই মে মুজিব চুক্তি দস্তখত করে ভারতের হাতে তুলে দিয়েছেন। অথচ চুক্তি মোতাবেক বাংলাদেশের ছিটমহলো যেতে যে তিন বিঘা জমি প্রাপ্য ছিল সেটি আদায় করতে পারেননি। সে প্রাপ্য তিন বিঘা না পাওয়া নিয়ে শেখ মুজিবের যেমন কোন মাথা ব্যাথা ছিল না, প্রতিবাদও ছিল না। পরবর্তি কালের আওয়ামী লীগ সরকারেরও ছিল না। এবং আজও নেই। শেখ মুজিব এবং আওয়ামী লীগ নেতাদের একমাত্র ক্ষোভ শুধু পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। অথচ পাকিস্তান আমলের ২৩ বছরে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানকে এক ইঞ্চি ভূমিও ভারতের হাতে হারাতে হয়নি। পাকিস্তান আমলে ভারত ফারাক্কা বাঁধও চালু করতে পারেনি। প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান ভারতকে হুশিয়ার করে দিয়েছিলেন, ফারাক্কা চালু করা হলে বাঁধের উপর পাকিস্তান বোমা ফেলবে। ভারতের প্রতি শেখ মুজিবের এমন নতজানু চরিত্র সে সময়ের পাকিস্তানপন্থি নেতাকর্মী ও আলেমদের অজানা ছিল না। আর সে কারণেই আজ যা হচ্ছে সেদিন সেটিরই তারা সঠিক পূর্বাভাস দিতে পেরেছিলেন।
আওয়ামী লীগ পক্ষ থেকে একটি বিষয় জোরে শোরে বলা হয়, সত্তরের নির্বাচন ছিল পাকিস্তান খণ্ডিত করে স্বাধীন বাংলাদেশ সৃষ্টির পক্ষে রেফারেন্ডাম বা গণরায়। ইন্দিরা গান্ধিও সে কথা বলে বিশ্ব-জনমতকে প্রভাবিত করার কাজে ব্যবহার করেছেন। অথচ এটি মিথ্যা। সত্তরের নির্বাচন ছিল অখণ্ড পাকিস্তানের সংবিধান নির্মানের লক্ষ্যে, দেশটিকে খণ্ডিত করার পক্ষে রেফারেন্ডাম নয়। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী মেনিফেস্টো ছিল শাসনতন্ত্রে অধিক শায়ত্বশাসনের দাবী নিয়ে। তিনিই নিজেই বলেছেন, নির্বাচন ছিল ৬ দফার ভিত্তিতে। তাই প্রশ্ন হলো, ৬ দফা উপর ভোট স্বাধীনতার পক্ষে রেফারেন্ডার হয় কি করে? দেশের ভূগোল বদলানো তো অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এজন্য কি আওয়ামী লীগ কোন সিরিয়াস আলোচনা জাতির সামনে পেশ করেছে? কোন একটি জনসভাতেও কি সেটি খোলাসা করে বলেছে? সব নির্বাচনই যে দেশের ভূগোল পাল্টানোর রেফারেন্ডাম নয় তারও একটা উদাহরণ দেয়া যাক। ব্রিটিশ শাসনের শেষ দিকে উত্তর-পশ্চিম সীমান্ড প্রদেশের প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে খান আব্দুর গাফফার খানের নেতৃত্বে কংগ্রেস বিজয়ী হয়, পরাজিত হয় মুসলিম লীগ। কংগ্রেস পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার প্রবল বিরোধী ছিল শুরু থেকেই। এবং বিরোধীতা করে প্রদেশটির পাকিস্তান ভুক্তির। যুক্তি খাড়া করে, তাদের বিজয়কে পাকিস্তানে অন্তর্ভূক্তির বিরুদ্ধে গণরায় বা রেফারেন্ডাম রূপে মেনে নিতে হবে। কিন্তু মুসলিম লীগ সেটি মেনে নেয়নি, তৎকালীন ব্রিটিশ সরকারও মেনে নেয়নি। কারণ সে নির্বাচনে ইস্যু ছিল প্রাদেশিক সরকার গঠন নিয়ে, পাকিস্তানের পক্ষে-বিপক্ষে নয়। ফলে জনগণকে নির্বাচনকে সামনে রেখে পাকিস্তানে অন্তর্ভূক্তির মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে চিন্তা-ভাবনার সুযোগ দেয়া হয়নি। সে বিষয়টিকে বিবেচনায় রেখে ভোট দিতে এমনকি কংগ্রেসী নেতারাও আহ্বান করেনি। ফলে বিষয়টি নিয়ে সে প্রদেশে আবার নির্বাচন দিতে হয়েছে। বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ তখন পাকিস্তানের পক্ষে ভোট দিয়েছে।
১৯৭০ সালে নির্বাচনেও অখণ্ড পাকিস্তানের পক্ষ-বিপক্ষে বা স্বাধীন বাংলাদেশ নির্মাণ নিয়ে কোন গণরায় হয়নি। শেখ মুজিব নিজেই এ বিষয়ে নির্বাচনে ভোট চাননি। ফলে যে নির্বাচনটি হলো অখণ্ড পাকিস্তানের শাসনতন্ত্র তৈরীর বিষয়টি বিবেচনায় রেখে সেটি স্বাধীন বাংলাদেশের পক্ষে গণরায় বা রেফারেন্ডাম হয় কি করে? সত্তরের নির্বাচন নিয়ে এ হলো আওয়ামী লীগের বড় জালিয়াতি। তেমন একটি রেফারেন্ডাম হলে সে নির্বাচনে পাকিস্তানী বহু দলের হাজার হাজার প্রার্থী থাকতো না। প্রার্থীদের বদলে থাকতো মাত্র একটি ইস্যু। তখন মাত্র দুটি পক্ষ দেখা দিতঃ একটি অখণ্ড পাকিস্তানের পক্ষে, অপরটি বিচ্ছিন্ন স্বাধীন বাংলাদেশের পক্ষে। সেটি হলে অখণ্ড পাকিস্তানের পক্ষের নানা দলে বিভক্ত শক্তি তখন একতাবদ্ধ হতো। তখন তাদের নিজেদের মধ্যে কোন ভোটযুদ্ধে হতো না। অথচ ১৯৭০য়ের নির্বাচনে পাকিস্তানপন্থি দলগুলি বহু দলে বিভক্ত থাকায় লাভ হয়েছে আওয়ামী লীগের। রেফারেন্ডাম হলে সে ক্ষতি থেকে তারা রক্ষা পেত। মুসলিম লীগ তখন ফজলুল কাদের চৌধুরীরর নেতৃত্বে কনভেনশন মুসলিম লীগ, আব্দুস সবুর খানের নেতৃত্বে কাইয়ুম মুসলীম লীগ ও আবুল কাশেমের নেতৃত্বে কাউন্সিল মূসলিম লীগ – এরূপ তিন টুকরায় বিভক্ত ছিল। পাকিস্তান ভাঙ্গার বিপক্ষে শুধু ইসলামপন্থি দলগুলোই ছিল না, ছিল এমন কি আওয়ামী লীগেরও অনেকে। বিপক্ষে ছিল ভাষানী ন্যাপের সভাপতি মওলানা ভাষানী ও তার সেক্রেটারি মশিহুর রহমান। পাকিস্তান ভাঙ্গার পক্ষ্যে ছিল না যশোরের আব্দুল হকের নেতৃত্বাধীণ পুর্ব পাকিস্তান কম্যিউনিস্ট পার্টিসহ চীনপন্থি রাজনৈতিক দল। ফলে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রশ্নে রেফারেন্ডাম হলে এবং সে রেফারেন্ডামে মুসলীম লীগের সকল গ্রুপ, ভাষানী ন্যাপ, জামায়াতে ইসলামি, নুরুল আমীন-ফরিদ আহম্মদ-মাহমুদ আলী সাহেবদের নেতৃত্বধীন পিডিপি, মওলানা আতাহার আলীর নেজামে ইসলাম পার্টি ও জমিয়তে ইসলামসহ সকল দল যদি পাকিস্তানের পক্ষ নিত তবে কি পাকিস্তান ভাঙ্গার ভারত-আওয়ামী লীগ যৌথ প্রজেক্ট নির্বাচনে জিততে পারতো? আওয়ামী লীগ সেটি জানতো। অজানা ছিল না ভারতীয় গোয়েন্দাদেরও। তাই জেনে বুঝে নির্বাচনে সেটিকে কোন ইস্যু বানায়নি। বরং সত্তরের নির্বাচনের প্রতিটি জনসভাতে শেখ মুজীব জয় বাংলা স্লোগান যেমন দিয়েছেন তেমনি পাকিস্তান জিন্দাবান স্লোগানও দিয়েছেন। -(আবুল মনসুর আহমদ, ১৯৮৯)। এমন কি শেষের দিকে ইয়াহিয়া খান যখন পাকিস্তান ভেঙ্গে বাংলাদেশ গড়ার পক্ষে-বিপক্ষে একটি রেফারেন্ডামের প্রস্তাব রাখে তখন ইন্দিরা গান্ধিও সেটির বিরোধীতা করেন।
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সত্তরের নির্বাচনে অংশ নেয়াও যে ষড়যন্ত্রের অংশ ছিল সেটি বিশ্বাস করতেন মওলানা ভাষানী। সে বিষয়টি জানা যায়, ভাষানীপন্থি ন্যাপের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক রংপুরের জনাব মশিহুর রহমানের বক্তব্য থেকে। মশিহুর রহামন বলেছেন, “১৯৬৯ সালের মাঝামাঝির সময়... এমন সময় ঘোষিত হলো, ইয়াহিয়া চীন যাচ্ছেন সেপ্টেম্বর মাসে। মওলানা আমাকে বললেন, “প্রগতিশীল বামপন্থি রাজনীতি বাঁচাতে হলে ইলেকশন বন্ধ করা ছাড়া উপায় নাই। কারণ, ইলেকশন হলেই ৬ দফার আন্দোলন বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন রূপ নেবে। সুতরাং ইলেকশন আপতত স্থগিত রাখার জন্য যদি কিছু করা যায় তাই কর।” তিনি বললেন, আগে শাসনতান্ত্রিক এবং কাঠামোগত প্রশ্নগুলো মীমাংসা করে তারপর নির্বাচন হোক যেমন ইয়াহিয়া পশ্চিম পাকিস্তানে এক ইউনিট ভেঙ্গে দিয়েছে। এখন পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসনের কাঠামোও ঘোষণা করুক। …আমি পাকিস্তানে চীনা রাষ্ট্রদূত যিনি জেনারেল ইয়াহিয়ার সাথে পিকিং যাচ্ছেন তাকে বললাম, “আপনি প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাইকে আমার এই ছোট্ট চিরকুটটি পৌছে দিবেন।” চীন থেকে ফিরে এলেন ইয়াহিয়া। সেপ্টেম্বরের ১৭ তারিখে ঢাকায় প্রেসিডেন্ট হাউজে আমি তার সাথে দেখা করলাম। তার সাথে হুজুরের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আলোচনা করলাম। তিনি আমাকে জানালেন,“প্রধানমন্ত্রী চৌ, সেই জ্ঞানী বৃদ্ধও এমনি আশংকার কথা আমাকে বলেছেন। কিন্ত আমি বলেছি, তেমন খারাপ অবস্থা দেখলে আমি ক্ষমতা হস্তান্তর করবো না।” –(সুত্রঃ ন্যাপের ৩০ বছর, সাপ্তাহিক বিচিত্রা)। তবে ভাষানীর চিরাচরিত রাজনৈতিক কৌশল হলো, স্রোত বুঝে রাজনীতির জাল বিছানো। নির্বাচনে মুজিবের বিজয় দেখে তিনি ভাবলেন, পূর্ব পাকিস্তানের বিচ্ছিন্নতা ঠেকানো যাবে না। তখন তাঁর রাজনীতির মূল এজেণ্ডা হয় নিজের রাজনীতি ও নিজের দলকে বাঁচানো,অখণ্ড পাকিস্তান বাঁচানো নয়। এবং এটা করতে গিয়ে তিনি মুজিবের আগেই স্বাধীনতার দাবী তুলেন। তাছাড়া সেক্যিউলার ও বামপন্থি হওয়ার কারণে তার রাজনীতিতে সে প্যান-ইসলামিক চেতনাও ছিল না। নিজেকে মওলানা রূপে জাহির করলেও তিনি কোনদিন আল্লাহর দ্বীনের পক্ষ নেননি। মহান আল্লাহর শরিয়তি আইনের প্রতিষ্ঠার দাবী নিয়ে তিনি এক মুহুর্তের জন্য ময়দানে নামেননি। নবীজী (সাঃ)র প্রদর্শিত মডেল তাঁর রাজনীতিতে মডেল রূপে গণ্য হয়নি। বরং আদর্শিক দীক্ষা নেন মাও সে তুঙ’য়ের কাছে। ফলে তাঁর দহরম মহরম বেড়েছে নাস্তিক কম্যিউনিস্টদের সাথে। তাঁর রাজনীতিতে তাই আশ্রয়, প্রশ্রয় ও প্রতিপালন পেয়েছে ইসলামবিরোধী কট্টোর


Written by ফিরোজ মাহবুব কামাল
১৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×