১। সামহোয়ার ইন ব্লগে কোন পাকিস্তানী নাগরিক ব্লগিং করে বলে বিশ্বাস করি না। (দুই-একটা পাকিস্তানপ্রেমী থাকতে পারে)। কারণ পাকিস্তানের কোন প্রদেশে বাংলা ভাষা চালু নাই। কিন্তু ব্লগে অসংখ্য ভারতীয় নাগরিক (এবং ভারতপ্রেমী) ব্লগার আছে কারণ ভারতের একটি বড় প্রদেশ পশ্চিমবঙ্গের মানুষের মাতৃভাষা বাংলা।
২। ভারতীয় নাগরিকরা নিজের দেশকে সেরা মনে করতেই পারে। সব দেশের নাগরিকের কাছেই তার নিজের জন্মভূমি সেরা। কিন্তু বাংলাদেশ প্রসঙ্গে তাদের বেশিরভাগেরই দৃষ্টিভঙ্গি এমন- ভারত থেকে আসা পণ্য খেয়ে-পড়ে এই ক্ষুদ্র, ভিখারী দেশটা টিকে আছে। তারা যদি জানত ভারত থেকে আসা প্রতিটি পণ্য আমাদের দেশী পণ্যের তুলনায় অত্যন্ত নিম্নমানের, এবং সেই নিম্নমানের পণ্য তারা আমাদের উচ্চমূল্যে কিনতে বাধ্য করে, তাহলে তাদের থোতামুখ ভোঁতা হয়ে যেত। অপরদিকে আমাদের দেশের প্রতিটি সেরা জিনিসের প্রতি (যেমন, ইলিশ) তাদের লোভ মাঝে মাঝে সীমা ছাড়িয়ে যায়।
৩। প্রায় সব বাংলাদেশী ১৯৭১ এ নৃশংস গণহত্যা, বর্বরতার জন্য পাকিস্তান রাষ্ট্রটিকে ঘৃণা করে। জন্মসূত্রে এমন কোন বাংলাদেশী পাওয়া যাবে না, যারা এদেশে আয় রোজগার করে পাকিস্তানে সম্পদ গড়ে। কিন্তু এমন অসংখ্য জন্মসূত্রে বাংলাদেশী পাওয়া যাবে, যারা এপার বাংলায় ব্যবসা, চাকুরি করে ওপার বাংলায় সম্পদ গড়ে। দেশপ্রেমের সংজ্ঞা তাদের কাছে ভিন্ন।
তাই ব্লগে কাদের কোন প্রেম, কখন জাগ্রত হয় সেটা সাধারণ ব্লগাররা ভালভাবেই টের পায়।
আমাদের ঘাটাবেন না, আমাদের গৌরবের ৭১ আছে, আমরা চিরকাল মারের প্রত্যুত্তরে কঠিন মার দিয়ে বিজয়ী হয়েছি। আমাদের ইতিহাস বিজয়ের ইতিহাস, বীরত্বের ইতিহাস।
কিন্তু দাদাবাবুদের ইতিহাস চিরকালই পরাজয় নয়ত আপোষের ইতিহাস।
.............................................................................................
এই পোস্টের সাথে প্রিয় বড়ভাই কালপুরুষ -এর একটি চমৎকার কবিতা জুড়ে দিলাম- (মূল কবিতাটি এখানে)
প্রতিবেশী দাদাকে
এই যে দাদা, শুনছেন-
ধুতির কোচাটা কী একটু সামলাবেন!
বাতাসটা আজ বড্ডো বেশী বেগতিক-
বলাতো যায়না, ধূতির কোচা থাকবেতো ঠিক!
দেখলেনতো- সামান্য খোঁচাতেই সব বিচ্ছুরা,
কেমন আপনার পেছনে করলো তাড়া!
লন্ড্রী থেকে সদ্য কাঁচা ফিনফিনে ধূতি,
ভাঁজটা তরতাজা, মনে তাই এতো ফূর্তি!
ছিটেফোটা অভ্রের জ্বলজ্বলে শুভ্রতা,
সবই যে মিথ্যে হলো, বুঝলেন কী দাদা!
মাখালেন কড়কড়ে ধূতি গোবর-কাদায়,
এমন নাজেহাল অবস্থা! কে আর আপনাকে বাঁচায়!
কেতাদূরস্ত ধূতির অহংকারে,
বেশতো ছিলেন স্বর্গের দ্বারে!
ভাঁজে ভাঁজে ছিল অহংকারের টান,
বুঝলেননা কাকে বলে মান-অপমান!
একদা বাঁশ আর কঞ্চির বুঝেও তফাৎ,
যারা বেছে নিয়েছিল বাঙালীর পদপশ্চাৎ;
ধোপে টেকেনি তাদের কোন ইচ্ছা,
লাখো শহীদের রক্তে ভেসে গেছে তাদের শোষনের কেচ্ছা।
রক্তের নেশায় উন্মাদ হয়েছিল যারা একদা- বর্বর হায়েনা,
আত্মঘাতী বোমা হামলায় আজ তারা নিজেদের অস্তিত্ব খুঁজে পায়না।
একাত্তরের সেই বিশ্বস্ত বন্ধুর হাত,
কেউ কি মেনে নেবে? শত্রু হয়ে যদি করে আঘাত!
নির্লজ্জের মতো কেউ যদি দাবী করে,
আমরা যেন আছি তাদেরই ঘরে;
তবে আপনিও বুঝবেন বাঁশ আর কঞ্চির কিঞ্চিত তফাৎ,
যদি পারেনতো এখনই সামলে রাখেন নিজের পদপশ্চাৎ।
ধূতির ভাঁজ হাতে চেপে ধরলেও কুঁচকাবে,
রাস্তা-ঘাটে চলতে সঙ্গত কারণেই ভাঁজ খাবে।
তার চেয়ে বরং বাতাসে উড়ুক ধূতির কোচা,
দুর্বল ভেবে অপরকে কেনইবা দেবেন খোঁচা?
ফুরফুরে মেজাজে নিজ পথে চলুন,
বন্ধুত্বের কথা গর্বের সাথেই বলুন।
রাস্তার যতো সব ধূলি-কাদা,
ধূতির শুভ্রতায় হোকনা বাঁধা;
গায়ে না মেখে এড়িয়ে চলুন,
হঠাৎ ধাক্কা খেলে বুঝিয়ে বলুন।
কারো আঙিনায় অযথা পা মারাবেন না,
শিকার ভেবে উল্লাসে গুলি ছুঁড়বেন না।
ঝড়-জলোচ্ছাস আর সিডোরে,
যে জাতি প্রাণ দিতে পারে অকাতরে,
প্রয়োজনে তারাই অস্ত্র ধরতে জানে,
বাঁচার লড়াইয়ে তারা মরতেও জানে।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ দুপুর ২:১৮