প্রথম আলোর প্রতিষ্ঠাবর্ষির্কী উপলক্ষে গত ৪ নভেম্বরর পত্রিকায় তরুণ প্রজন্মকে নিয়ে মুহম্মদ জাফর ইকবাল স্যারের একটি লেখা প্রকাশিত হয়। লেখাটির শিরোনাম ‘ওদের নিয়ে কেন স্বপ্ন দেখব না?’। জাফর ইকবাল স্যারের লেখার বিষয় কি ছিল, কেন ছিল সে সব নিয়ে বিকল্প ধারার মাধ্যম ব্লগ ও ফেসবুকে ব্যপক আলোচনা ও সমালোচনা হচ্ছে। মৌলবাদীরা তাঁর লেখার কিছু অংশের তীব্র বিরুধীতা করে মানহানিকর বিভিন্ন লেখা পোস্ট করেছে। বাংলাদেশের বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় একজন লেখককে নিয়ে ব্লগ ও ফেসবুকে দুটি বিরোধী পক্ষ তৈরী হয়েছে। একদল স্যারের পক্ষে ও অপর দল বিপক্ষে। জাফর ইকবাল স্যারের লেখাটিকে কেন্দ্র করে এই দু দলের বিতর্কের রেশ ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ছে এবং তীব্র হচ্ছে। ব্লগে লেখার স্বধীনতা তুলনামূলক অনেক বেশি থাকায় অধিকাংশ লেখার বিষয়বস্তু এখন ব্যক্তি আক্রমনের দিকে গড়িয়েছে। জাফর ইকবাল স্যারের মেয়ে ইয়েশিমকে এর মধ্যে জরানো হয়েছে। বিভিন্ন ব্লগ ও ফেসবুকে ছবিসহ মানহানিকর বক্তব্য পোস্ট করা হয়েছে।
এ কথা আমাদের স্বীকার করতেই হবে জাফর ইকবাল স্যার দেশের বিভিন্ন সংকটে দেশের মানুয়ের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন, দেশের জন্য অনেক কাজ করেছেন, তরুণ প্রজন্মকে নিয়ে তিনি ভাবেন। মৌলবাদীরা অনেক কথা বলেন। সত্যি কথা এটাই যে জাফর ইকবাল স্যার আমেরিকায় বেল ল্যাবরেটরীতে কাজ করার সুযোগ পেয়েও দেশে ফিরে এসেছিলেন। তিনি সেখানেই সরা জীবন কাটিয়ে দিতে পারতেন। নিজের পরিশ্রম, অধ্যবসায় দিয়ে তিনি প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। আমরা আমাদের দেশের দিকে তাকাই। সহজেই দূর্নীতিতে শীর্ষ অবস্থানটি দখল করে। এ দেশে বুদ্ধিমান,সৎ, জ্ঞানী ও পরিশ্রমী মানুয়ের অভাব আছে। উদ্যমী মানুষের অভাব আছে। স্বপ্ন দেখতে জানে এমন মানুষেরও অভাব আছে।
কোন অজানা কারণে এই ব্যক্তিটিই এখন কিছু মানুষের ঈর্ষার শিকার। তাঁকে দেশ থেকে তাড়িয়ে না দিলেই নয়! দেশের জ্ঞানী ও সম্মানী মানুষদের মানহানি করাটা এখন একটা সাধারণ ব্যপার হয়ে যাচ্ছে। এই কিছুদিন আগে ড. ইউনুস কে নিয়ে বিতর্কের ঝড় বয়ে গেছে। আর এখন জাফর ইকবাল স্যারকে আমরা বিতর্কিত করছি। একজন লেখকের অসংখ্য লেখা থাকে। কোন একটি নির্দিষ্ট লেখা অথবা একটি লেখার কিছু অংশের সাথে কারও কারও মতপার্থক্য থাকতেই পারে। তাই বলে লেখকে ও তাঁর পরিজনদেরকে জড়িয়ে মানহানিকর ছবি ও বক্তব্য প্রচার করতে হবে? ইসলাম একটি শান্তির ধর্ম। অপপ্রচার, গীবত এই ধর্মে নিষিদ্ধ। জাফর ইকবাল স্যারের যে লেখাটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে সেটি অনেকে না পড়েই বিতর্ক শুরু করে দিয়েছে। যারা লেখাটিকে কেন্দ্র করে ব্লগগুলোতে আপত্তিজনক বিভিন্ন পোস্ট দিচ্ছেন তারা কেউ কিন্তু বলছেন না লেখাটির কোন অংশে তাদের আপত্তি, কেন আপত্তি। লেখাটি নিয়ে আদৌ বিতর্কের কিছু আছে কিনা সেটি কেউ চিন্তা করছেন না। আমরা আর কবে শিখব? একজন জ্ঞানী ও সম্মানী মানুষকে নিয়ে কটুক্তি করার আগে আমাদের অনেক কিছু চিন্তা করা উচিৎ। এভাবে চলতে থাকলে একসময় দেখব তাঁরা আমাদের থেকে দূরে সরে যাবেন। বাল্যশিক্ষায় পড়েছিলাম মানির অপমান বজ্রপাত এর সামিল। স্বাধীনতা যুদ্ধে আমরা অনেক বুদ্ধিজিবীকে হারিয়েছি। সে ধকল বোধ করি এখনও কাটিয়ে উঠতে পারিনি। অন্তঃসার শুন্য এ জাতির প্রকৃত ভল-মন্দ বোধ কখনই জেগে উঠেনি। একটা কথা আছে বাঙ্গালী দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যদা বোঝেনা। কোন কিছু হারারনোর পরই আমরা বুঝি সেটার মূল্য কত ছিল।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই নভেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:২৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




