somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পত্রিকায় প্রকাশিত আমার একটি লেখা

১০ ই নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৩:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এখানে ক্লিক করুন
Click This Link

চুয়েট কর্তৃপক্ষের যত উদাসীনতা!
আমিনুল ইসলাম দীদার

চট্টগ্রাম বিআইটি ২০০৩ সালে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) রূপান্তরিত হয়। এই রূপান্তরের পরপরই ব্যাপক পরিবর্তন আসে চুয়েটের অবকাঠামোয়। এ ক্ষেত্রে নতুন স্থাপনার প্রয়োজন পড়বে, এটাই স্বভাবিক। কিন্তু কোনো সুষ্ঠু পরিকল্পনা ছাড়াই তড়িঘড়ি শুরু করা হয় একের পর এক নতুন ভবনের নির্মাণকাজ। এভাবে অনেক ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হলেও এর বেশির ভাগই অসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে আছে। এরই ধারাবাহিকতায় পক্ষকাল আগে একটি পাঁচতলা একাডেমিক ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না নিয়েই পাহাড় কাটা শুরু করে কর্তৃপক্ষ। পরিবেশ অধিদপ্তর তা জানতে পেরে পাহাড় কাটা বন্ধের নোটিশ দিয়েছে। ফলে এ ভবনটির নির্মাণকাজও অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে।
এভাবে এক বা একাধিক কারণে চুয়েটের আরো অনেক ছোটবড় নির্মাণকাজ অসম্পূর্ণ অবস্থায় আছে। এ সম্পর্কিত বহু সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশের পরও চুয়েট কর্তৃপক্ষের যেন কোনো গরজ দেখা যাচ্ছে না। ছবিসহ পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ (দৈনিক সমকাল, ১০ জুলাই ২০১১) থেকে দেখা যায়, ২০০৪ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি চুয়েটে শহীদ মিনার নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু সাত বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো সেই শহীদ মিনার নির্মিত হয়নি। অথচ মুক্তিযুদ্ধে চুয়েটের তৎকালীন দুজন শিক্ষার্থী শহীদ হন। শহীদদের ক্যাম্পাসে একটি পূর্ণাঙ্গ শহীদ মিনার থাকবে না, এ কেমন কথা? অন্য একটি জাতীয় দৈনিকে গত বছর প্রকাশিত সংবাদে দেখা যায়, চুয়েটের ছাত্রকল্যাণ ভবনের Student welfare complex) ভিত্তিপ্রস্তরসহ সামান্য পরিমাণ কাজ এখন আগাছার নিচে চাপা পড়ে আছে। কর্তৃপক্ষের এ ধরনের উদাসীনতার কারণে শিক্ষার্থীরা পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ৯ জুন ২০১১ তারিখের কালের কণ্ঠে 'প্রথমে জিমনেসিয়াম, পরে ছাত্রাবাস, এখন ক্যান্টিন' শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার কমপ্লেক্স না থাকায় চুয়েটের জীর্ণ জিমনেসিয়ামটি সাত বছর ধরে ক্যান্টিন হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে ভবনের ভিত্তিটুকু অযত্নে পড়ে থাকার কারণে তা পুনরায় নির্মাণের উপযোগিতা হারাচ্ছে। ফলে ভবনটির নির্মাণকাজ হয়তো নতুন করে শুরু করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেবে। শুধু তা-ই নয়, নির্মাণকাজ নিয়ে অনেক ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগও আছে। এ ছাড়া চুয়েটের অন্য একটি ১২ তলা একাডেমিক ভবনের নির্মাণকাজ তিন বছর আগে শুরু হলেও অর্ধেকও সম্পন্ন হয়নি। আংশিকভাবে নির্মিত ভবনেই শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে বাধ্য হচ্ছেন।
স্থাপনাগুলো তৈরির কাজ অসম্পূর্ণ থাকায় সার্বিকভাবে চুয়েটই পিছিয়ে যাচ্ছে। প্রকল্পগুলোর জন্য প্রতিবছর অল্প অল্প বাজেট ধার্য করার কারণে প্রকৃতপক্ষে সামগ্রিক উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কোনোটিই ব্যবহারোপযোগী হচ্ছে না। এ নিয়ে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে চুয়েট কর্তৃপক্ষ লোকদেখানো কিছু পদক্ষেপ নেয়। প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি এলেই কিছুদিন শহীদ মিনারের নির্মাণকাজ চলে। ফেব্রুয়ারি মাস চলে গেলে নির্মাণকাজও বন্ধ হয়ে যায়। চুয়েটের বিভিন্ন স্থাপনা তৈরির স্থান নির্বাচনে রয়েছে অনেক পরিকল্পনাহীনতার ছাপ। বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ নেওয়ার পর চুয়েটের নতুন একটি আবাসিক হল নির্মাণ করা হয়, যেটি 'নতুন হল' নামে পরিচিত। এটি নির্মিত হয়েছে একটি ব্যস্ততম রাস্তার পাশে। সারাক্ষণ রাস্তায় গাড়ি চলাচলের শব্দের কারণে আবাসিক শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ব্যাঘাত ঘটে। চুয়েট ক্যাম্পাসের ৬৩ একর জায়গার মধ্যে অনেক খালি জায়গা থাকতেও কাপ্তাই-চট্টগ্রাম সড়ক ঘেঁষে আবাসিক হলটি কেন নির্মাণ করা হলো, তা আমাদের বোধগম্য নয়। একটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণকাজ কতটা সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন হওয়া উচিত, নির্মাণকাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত একজন প্রকৌশলী ইমারত নির্মাণ বিধিমালা জানবেন না, পরিবেশ ছাড়পত্রের কথা জানবেন না_এটা কাম্য নয়।
প্রতিবছর নতুন নতুন টেন্ডার দিয়ে নির্মাণকাজের সংখ্যা বাড়ানোর ক্ষেত্রে কারো কারো ব্যক্তিস্বার্থই প্রাধান্য পেয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। অনেকেই মনে করেন, এর আগে উলি্লখিত ১২ তলা একাডেমিক ভবনটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলে পাঁচতলা একাডেমিক ভবনটি বর্তমানে নির্মাণেরই প্রয়োজন হতো না এবং পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করে পাহাড় কাটারও দরকার পড়ত না। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, চুয়েটে নতুন নতুন নির্মাণকাজ যতটা না প্রয়োজনের তাগিদে, তার চেয়ে বেশি অন্য কোনো তাগিদে করা হচ্ছে। আমরা চাই, চুয়েটে নতুন নতুন স্থাপনা নির্মাণ শুরুর এই প্রতিযোগিতা অবিলম্বে বন্ধ করা হোক এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অর্ধনির্মিত স্থাপনার বাকি কাজ সম্পন্ন করা হোক।

লেখক : প্রাবন্ধিক
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৩:৫৩
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×