৯ ডিসেম্বর, ২০১৫, বুধবার
ব্রডভিউ সাবওয়েস্টেশন থেকে ৫০৪ স্ট্রীটকারে উঠে যখন ডাউনটাউন টরন্টোর ট্রিনিট্রি স্ট্রীটে এসে নামলাম, তখন বেলা প্রায় সাড়ে বারোটা বাজে। গন্তব্য টরন্টো ডিস্টিলারী ডিস্ট্রিক্ট এর ক্রিস্টমাস মার্কেট। প্রথমে 'ডিস্টিলারী ডিস্ট্রিক্ট' নাম শুনে আমি নিজেও একটু অবাক হয়েছিলাম। পরে এ ব্যাপারে একটু খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারলাম যে এই জায়গাতেই ১৮৩২ সালে The Gooderham and Worts Distillery প্রতিষ্ঠিত হয় যা ১৮৬০ সালের শেষ নাগাদ পর্যন্ত বিশ্বের বৃহত্তম অ্যালকোহল (হুইস্কি) প্রস্তুতকারী এবং শোধনাগার হিসেবে পরিচিত ছিল।
পঞ্চান্ন, মিল স্ট্রীটে যখন পায়ে হাঁটা পথে পৌঁছালাম, তখনই বুঝতে পারলাম এই 'ডিস্টিলারী ডিস্ট্রিক্ট' জায়গাটিতে প্রাচীন ইউরোপের একটা চমৎকার ফ্লেভার আছে। টরন্টো ক্রিস্টমাস মার্কেট এই বিখ্যাত 'ডিস্টিলারী ডিস্ট্রিক্ট' -এই অবস্থিত।
এবছর ২০ নভেম্বর থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত টরন্টো ক্রিস্টমাস মার্কেট-এর কার্যক্রম চলবে। মঙ্গল থেকে শুক্রবার দুপুর ১২ টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এই মার্কেটে ফ্রি ঘোরা গেলেও এবছর শনি আর রবিবারে ৫ ডলার করে এন্ট্রি ফি রেখেছে কর্তৃপক্ষ। সোমবার মার্কেট বন্ধ।
রাস্তার পাশে দোকানীরা পসরা সাজিয়ে বসেছে।
পায়ে হাঁটা পথে ওপেন এয়ার মার্কেটের ভেতরের দিকে চলেছি
আর অল্প গেলেই বিশাল এক ক্রিস্টমাস ট্রি এর দেখা মিলবে
ক্রিস্টমাস ট্রি
পায়ে হাঁটা পথ
ফ্রেঞ্চ ভাষায় merci শব্দের অর্থ ধন্যবাদ
ঘুরতে ঘুরতে ঢুকলাম এক চকোলেটের দোকানের ভেতর
চকোলেটের দোকানের ভেতরে
চকোলেটের দোকানের ভেতরে
চকোলেটের দোকানের ভেতরে
লাইনে দাঁড়িয়ে কিনে নিলাম কিছু মজাদার চকোলেট
আনুমানিক ১৪০০ সালের দিকে জার্মানীতে বড়দিন বা ক্রিস্টমাসের আগে 'ক্রিস্টমাস মার্কেট' প্রথা শুরু হয়। পরবর্তীতে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে এই 'ক্রিস্টমাস মার্কেট' চালু হয়। টরন্টোর 'ক্রিস্টমাস মার্কেট' এবছর তার ৫ম বর্ষে পদার্পণ করলো। এই মার্কেটটি অনেকটা জার্মান স্টাইল 'ক্রিস্টমাস মার্কেট'-এর আদলে তৈরি। মূলত স্থানীয় পণ্যসামগ্রীর পসরা সাজিয়ে রাস্তার পাশে দোকানীরা তাদের দোকান সাজিয়ে বসেন। এসব দোকানগুলোতে খাবার আর দেশীয় হাতে তৈরি পণ্য ছাড়াও ক্রিস্টমাস গিফট আইটেমের ছড়াছড়ি দেখলাম।
এই মঞ্চে প্রতিদিন ওপেন এয়ার শো হয়
ক্রিস্টমাস মার্কেটের ভেতরের আরও কিছু ছবি:
কানাডাতে 'পুটিন' একটি জনপ্রিয় খাবার। ফ্রেঞ্চ ফ্রাই-এর মধ্যে পুটিন গ্রেভি আর চিজ দিয়ে এই পুটিন বানানো হয়।
বাচ্চাদের জন্যে মার্কেটের ভেতরে বিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে
হাতে তৈরি এসব চমৎকার শো পিসের দামটাও আগুনের মতোই
ঘুরতে ঘুরতে এসে পড়লাম সান্তা ক্লজের বাড়িতে
সান্তা ক্লজের বাড়ি
লিণ্ড এর চকোলেটের আউটলেটে দেখলাম জনপ্রতি ৩ টা করে ফ্রি চকোলেট দিচ্ছে। কাজেই দেরী না করে লাইনে দাঁড়িয়ে পড়লাম লোভনীয় চকোলেটের আশায়।
এই ভদ্রমহিলা পুলিশের মতো চকোলেরে পাশে দাঁড়িয়ে আছেন যেন কেউ ৩ টার বেশি চকোলেট নিতে না পারে
লিণ্ডরের চকোলেটের অনেক দাম। তাই ফ্রি-তে চকোলেট পেলে কানাডিয়ান মানুষজনও ঠাণ্ডার মধ্যে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকে চকোলেটের আশায়
ফ্রি চকোলেট পেতে খুব একটা দেরী হলোনা। লোভনীয় মজাদার চকোলেটগুলো পকেটস্থ করে পড়ন্ত বিকেলে বাসায় ফেরার পথ ধরলাম।
তথ্যসূত্র:
view this link
view this link
view this link
view this link
view this link
view this link
view this link