আজ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৩৪তম মৃত্যু বার্ষিকী। একাধারে কবি, সাহিত্যিক, সংগীতজ্ঞ, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ এবং সৈনিক হিসেবে অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে নজরুল সর্বদাই ছিলেন সোচ্চার। তাঁর মৃত্যুবার্ষিকীতে তাকে শ্রদ্ধা জানাতে বিভিন্ন সামজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচি নিয়েছে।
১৮৯৯ সালের ২৫ শে মে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে দরিদ্র মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন কাজী নজরুল। পিতা কাজী ফকির আহমদে আর মা জাহেদা খাতুনের ষষ্ঠ সন্তান নজরুলের প্রাথমিক শিক্ষা জীবন শুরু হয় মসজিদে। কারণ বাবা ছিলেন মসজিদের মুয়াজ্জিন। কিন্তু দুরন্ত এই কিশোরের মন সেখান থেকে তাকে নিয়ে যায় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে। থিয়েটার, লেটোর দলে আর গান কবিতার মুক্ত মাঠে শুর হয় তার বিচরণ। সময়ের প্রয়োজনে আবার একসময় এ সবের মায়া কাটিয়ে চলে যান সেনাবাহিনীতে। অংশ নেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধে। যুদ্ধ শেষে ফিরে এসে বেছে নেন সাংবাদিকতা পেশা। সমাজের বৈষম্য আর সাম্রাজ্যবাদের আগ্রাসন তার মনকে করে তোলে বিদ্রোহী। নজরুল তাই ব্রিটিশ রাজের বিরুদ্ধে নেমে পড়েন প্রত্যক্ষ সংগ্রামে। লেখেন 'বিদ্রোহী' এবং 'ভাঙার গান'-এর মত কবিতা; প্রকাশ করেন ধূমকেতুর মত সাময়িকী। অত:পর কারাবন্দী হতে হয় লেখনীর জন্য। বন্দী অবস্থায়ই লেখেন 'রাজবন্দীর জবানবন্দী'।
কাজী নজরুলের সাহিত্যকর্মে একউসঙ্গে ভালবাসা, মুক্তি এবং বিদ্রোহের অদ্ভূত মিশেল। ছোট গল্প, উপন্যাস, গান, নাটক লিখলেও তিনি মূলত বিদ্রোহী কবি হিসেবেই বেশি পরিচিত। বাংলা কবিতার জগতে তিনি এক নতুন ধারার জন্ম দেন। প্রায় ৩০০০ গান রচনা করেছেন। লিখেছেন অংখ্য গজল।
কিন্তু এই দুরন্ত দুর্বার কবির জীবনে যেন হঠাৎ করেই নেমে আসে অসীম স্বব্ধতা। মাত্র ৪৩ বছর বয়সে তিনি পিক্স রোগে আক্রান্ত হন। হারিয়ে ফেলেন মানসিক ভারসাম্য। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে ১৯৭২ সালে তিনি সপরিবারে ঢাকা আসেন। দেয়া হয় বাংলাদেশের নাগরিকত্ত্ব। ১৯৭৬ সালে ৭৭ বছর বয়সে আজকের দিনে মৃত্যুবরণ করেন আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম।
তার মৃত্যুবার্ষিকীতে মহান এই কবির প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধা।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




