আমি যখন মরে যাব, তখন অনেকেই বলবে, "ভাল হয়েছে ৷ বড়টাকে বিয়ে না করিয়ে ছোটটাকে বিয়ে করাইসে ৷ তাই না হলে একটা মেয়েকে অল্প বয়সে বিধবা হতে হত ৷"
*
শুভ'র ডাইরিতে তাই লেখা ছিল ৷ এক হাত থেকে অন্য হাতে ডায়রিটা ঘুরল কয়েক বার ৷ সবাই অবাক ! এবারে সবাইকে হারিয়ে দিল ৷ সবার মাথা কেমন ফাঁকা হয়ে গেল ৷ এরকম কিছু হবে, এটা কেউ চিন্তাও করে নি ৷
*
কয়েক মাস যাবত শুভ বাড়িতে ঠিক মত টাকা দিচ্ছিল না ৷ তাতেই অনেক ধরনের কথা বলা শুরু হয় যায় ৷ পরিবারের অন্যদের সাথেও সম্পর্কে কেমন একটা ছাড়া ছাড়া ভাব চলে আসে ৷ আরে , পুরুষের পরিচয় যে টাকা ৷ টাকা যার আছে, তার আশেপাশে সবাই থাকে ৷
*
অনেক ধরনের কথা রটে গেছে ৷ অনেকেই বিশ্বাস শুভ বিয়ে করে ফেলছে ৷ তাই না হবে কেউ ফোনটা পর্যন্ত না ধরে থাকে কেমন করে !- কেউ বলে, যুগ খারাপ ৷ কোন নেশা ধরেছে, হয়ত ৷ কেউ ভাবে ছেলেটা এমন হয়ে গেল কেন ? কেমন করে ?
*
শুভ বাসা পরিবর্তন করেছে ৷ নতুন বাসাটা তাই বাড়ির কেউ জানে ৷ কেউ এসে খুজেও পাচ্ছে না ৷ আগের বাসার কেউ শুভ‘র নতুর বাসার খবর জানে না ৷ আর একটা খবর আজই সবার জানল ৷ শুভ ক্যান্সার আক্রান্ত ছিল ৷ কাউকে জানায় নি ৷ দরিদ্র পরিবার চিকিৎসার জন্য এত খবর করবে কি করে ? তার চেয়ে নিরবে চলে যাওয়াই ভাল ৷ একদিন আগে পরে মৃত্যুকে তো মেনে নিতেই হবে ৷ আমি না হয় একটু আগেই চলে যাব ৷
*
তিন মাস ধরে শুভ অবস্থা খারাপ হতে থাকে ৷ চাকরিটাও গত মাসে করা হয় নি ৷ জমা কিছু টাকা ব্যাংক সব থেকে নিজের হাতে নিয়ে নিয়েছে ৷ হাসপাতালে ভর্তি পাঁচ দিনের খরচ অগ্রিম পরিশোধ করা রয়েছে ৷ হাসপাতালে ভর্তির ঠিকানা ঘরের বাড়ির ঠিকানা দিল ৷ নার্সের হাতে একটা ফোন নাম্বার ধরিয়ে দিল ৷ শুধু বলবেন, পৃথিবী কাউকে কিছু নিয়ে যেতে দেয় না ৷সেই ফোনটা করা হয়ে গেছে ৷