somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অষ্টম ওয়েজ বোর্ডের দাবিতে অনশন (ভন্ডামি) চলছে

০৯ ই মে, ২০১২ বিকাল ৩:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


খবর: অষ্টম ওয়েজ বোর্ড গঠনের দাবিতে গণঅনশন কর্মসূচি পালন করছে বাংলাদেশ সাংবাদিক-শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্যপরিষদ। জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে সকাল ১০ টা থেকে শুরু হওয়া এই গণঅনশন কর্মসূচি চলবে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত।

বিশ্লেষণ: এই মুহুর্তে সরকারিবিধি মতে সপ্তম ওয়েজ বোর্ড অনুযায়ী সাংবাদিকদের বেতন-ভাতা এবং অন্যান্য সুবিধা পাওয়ার কথা! তাই এবার অষ্টম ওয়েজ বোর্ডে দাবি ওঠছে, সময়োপযোগী ও উন্নত বেতন-কাঠামোর জন্য। কিন্তু সাংবাদিক নেতারা যখন অষ্টম ওয়েজ বোর্ড গঠনের দাবিতে গণঅনশন পালন করছেন। কিংবা লম্ফ-জম্ফ দিচ্ছেন ঠিক তখন ঢাকা শহরে বিভিন্ন মিডিয়া হাউজে কর্মরত সাংবাদিক এবং সংবাদকর্মীদের সিংহভাগ (শতকরা ৭০ থেকে ৮০ ভাগ) এখনো প্রথম ওয়েজ বোর্ডের আওতাতেও বেতন পাচ্ছেন না! আর সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা সাংবাদিকরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কোনো প্রকার বেতন-ভাতা ছাড়াই আল্লারস্তে কাজ করছেন। যার ফলে বেঁচে থাকার দাগিতে তাদেরকে বাধ্য হয়েই নানা অপরাধ কর্মে লিপ্ত হতে হচ্ছে।

ওয়েজ বোর্ড দেওয়া মালিক পক্ষের দায়িত্ব এবং কর্তব্য। অন্যদিকে ওয়েজ বোর্ড অনুযায়ী বেতন-ভাতা পাওয়া সাংবাদিকদের মৌলিক অধিকার। কিন্তু তথাকথিত সাংবাদিক নেতাদের সঙ্গে যোগসাজসে মিডিয়া মালিকরা তাদের হাউজে ৪/৫ জন-কে ওয়েজ বোর্ড দিয়ে বাকিদের নিয়োগ করে চুক্তিভিত্তিতে। চুক্তিভিত্তিতে নিয়োগ প্রাপ্তরা ওয়েজ বোর্ডের অর্ধেক সুবিধাও পায় না। সব চেয়ে বড় কথা হলো চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের কোন আইনি ভিত্তি না থাকায় সাংবাদিকরা মালিক পক্ষ দ্বারা সার্বক্ষণিক হয়রানির শিকার হন। তারা যে কোনো সময় চাকরী হারানোর ভয়ে থাকেন। ফলে তারা নিজেদের অধিকারের কথাটাও বলার সাহস করেন না। অনেক সময় মালিক পক্ষের অন্যায় দাবির কাছে মাথানত করে চলতে হয়, নিউজ লিখতে হলেও সেটা লিখতে হয় তাদের খেয়াল-খুশি মতেই। তা ছাড়া ন্যূনতম চাহিদা পূরণের নিশ্চয়তাপূর্ণ বেতন-ভাতা না পাওয়ায় হয় তাদের নৈতিক অধপতনের শিকার হতে হয় অথবা সামাজিকভাবে হেয় হয়ে থাকতে হয়। অন্যায়ভাবে তাদের চাকরীচ্যুত করা হলেও আদালতে গিয়ে যথাযথ প্রতিকার পাওয়ারও সুযোগ থাকে না।

তাই বলছিলাম, মিডিয়া মালিকরা যখন চলতি ওয়েজ বোর্ডই বাস্তবায়ন করছে না। বরং সরকার এবং সাংবাদিক নেতাদের ম্যানেজ করে বঞ্চিত করছে, শোষণ করছে বেশির ভাগ সাংবাদিকদের। তখন অষ্টম ওয়েজ বোর্ডের দাবিতে আন্দোলন ভন্ডামি ছাড়া আর কিইবা হতে পারে? সাংবাদিক নেতারা যদি সত্যিই তাদের সহকর্মীদের প্রতি সহানুভূতিশীল হন, যদি তারা সাংবাদিকতাকে দেশের উন্নয়নে, সমাজের উন্নয়নে কাজে লাগাতে চান, তাহলে তাদেরকে অবশ্যই মালিক পক্ষকে বাধ্য করতে হবে সকলের জন্য ওয়েজ বোর্ড নিশ্চিত করতে। অন্যথায় প্রতি হাউজে ৪/৫ জন সাংবাদিকের সুবিদার জন্য অষ্টম ওয়েজ বোর্ড কেন, দশম ওয়েজ বোর্ড গঠন করেও এ পেশার কোনো উন্নয়ন করা সম্ভব হবে না। সরকার এবং মালিক পক্ষের কাছেও তাদের কোনো মূল্যায়ন হবে। যেমনটা এখন চলছে।

সরকার এবং মালিক পক্ষ মনে করে সাংবাদিকরা তাদের পোষা এবং চাকর। যার কারণে তাদের প্রতি তাদের মূল্যায়নটাও সেই অনুপাতেই করে থাকে। আর সে কারণেই তাদের কোনো সহকর্মী খুন হলেও কয়েকদিন হাল্লা-চিল্লা করা ছাড়া তেমন কিছু করার থাকে না। সাগর-রুনি হত্যাসহ এমন অসংখ্য ঘটনা এর সাক্ষ্য বহন করছে।

তাই অষ্টম ওয়েজ বোর্ডের দাবিতে আন্দোলন হচ্ছে, হোক। কিন্তু তার আগে সাংবাদিক নেতাদের নিশ্চিত করতে হবে যে, ওয়েজ বোর্ড শুধু মুষ্টিমেয় সাংবাদিকের জন্য দুর্লভ বস্তু নয়, বরং এটা সকল সাংবাদিক-সংবাদকর্মীর মৌলিক অধিকার। সরকারও সাংবাদিকদের মৌলিক অধিকার বাস্তবায়ন না হওয়ার দায় এড়াতে পারে না। কেন না, শুধু আইন করেই তাদের দায় শেষ হয়ে যায় না। সংবাদপত্র মালিকগণ সরকারের কাছ থেকে তাদের পত্রিকা দেখিযে নানা রকম সুবিধা আদায় করে। তাই সরকারেরও উচিত মিডিয়া মালিকগণও যাতে আইন মানে সে বিষয়টা নিশ্চিত করা। সাংবাদিকদের মৌলিক অধিকারের দাবি বাদ দিয়ে আর যত আন্দোলন তা শুধু ভন্ডামি! আর এসব ভন্ডামি করে নিজেদের ‌'সাঙ্গাতিক' পরিচয় লুকানো যাবে না।
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিজয়ের কবিতা

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৫৪



বিজয়ের মাস ডিসেম্বর, লক্ষ প্রাণে লেখা বিজয়ের
সেই সোনালি অক্ষর,
দিকে দিকে শুনি জয়ধ্বনি বাংলাদেশের নামে, এই
স্বাধীনতা কেনা রক্তের দামে;
হৃদয়ে হৃদয়ে বাজে মুক্তির শত গান, ডিসেম্বরে
পেয়েছি আমরা বিজয়ীর সম্মান;
মার্চের সেই অমর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

বন্ডাই সৈকতের হামলাস্থল। ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সৈকত এলাকায় ইহুদিদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত মানুষের ওপর দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিতে গুলি চালিয়েছে। এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমাণ নন বলা কুফুরী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪



সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×