প্রথম জোক স
এক বন্ধু প্রায় ই তার আর এক বন্ধু কে নামাজ এর কথা বলে, কিন্তু সে গ্রাহ্য করে না। অবশেষে, নামাজি বন্ধুর এক লভনীয় অফার এ সে রাজি হলও , যে প্রতি ওয়াক্ত বাবদ তাকে কিছহু মাশোহারা (নগদ অর্থ) দেয়া হবে। প্রতি ওয়াক্ত নামাজ শেষে সে টাকা চায়, কিন্তু নামাজি বন্ধু বলে, পরে দিচ্ছি...। এক মাস পর, দ্বিতীয় বন্ধু, এক দিন বল ল , যাহ , তুই আমাকে ঠকাতে পারস নাই, বরং আমিই তোকে ঠকিয়েছি। কারন, এক অয়াক্ত নামাজ ও আমি ওজু করে পড়ে নি......।
দ্বিতীয় জোক স
ইমাম সাহেব, বয়স্ক মানুষ, এক রাতে এশার নামাজ শেষে তার সন্দেহ হল, নামাজ তিন রাকাত হল না চার রাকাত হল? মুসল্লী রাও বিভ্রান্ত, কনফার্ম করে কেও বলতে পারছে না, কত রাকাত নামাজ হল। এমন সময় এলাকার এক দোকানদার বলে উঠল হুজুর, নামাজ হয়েছে তিন রাকাত, কোনও ভাবেই চার রাকাত নয়। কারন, আমি প্রতি দিন চার রাকাত নামাজে, চার টি দোকান এর হিসাব মেলাই, আজ তিন টা দোকান এর হিসাব শেষ, তো দেখি নামাজ শেষ।
আজকাল আমাদের সবার নামাজের ই প্রায় ঐ একি অবস্থা। তাই তো আমাদের নামাজ আর নামাজ নাই। হয়ে গেছে আনুসঠানিকতা মাত্র। নামাজ তো মুমিন দের জন্য মেরাজ। অথচ, আমাদের নামাজ হয়ে গেছে , বাজার এর হিসাব মেলানোর জায়গা। নামাজের প্রথম ও প্রধান শর্ত হল একাগ্রতা। যদি, বান্দা, একাগ্রতার সাথে ও বিশ্বাসের সাথে নামাজ পড়ে, এবং আস্থা সহকারে প্রার্থনা করে, তবে, তা অবশ্য ই কবুল হবে। দুর্ভাগ্য জনক হলেও সত্য যে, আমাদের নামাজে একাগ্রতার বড় অভাব। আসলেই আমাদের নামাজের অবস্থা খুবই নাজুক( তবে, নিশ্চয়ই এমন ও কিছু নারী-পুরুষ আছেন , যাদের অবস্থা, অনেক ভাল)। তাই তো আমরা, যখন নামাযে দাড়াই, তখন জগতের সব কথা আমাদের মনে আসে, নতুন নতুন আইডিয়া , আমাদের মাথায় আসে। এ প্রসংগে ইমাম হানিফা (র) এর একটা ঘটনা সামনে চলে আসে। একবার, এক ব্যক্তি , তার কিছু মুল্যবান জিনিস হারিয়ে ফেলে, মনেই করতে পারছে না, সে তা কথায় রাখছে। তো , ইমাম এর কাছে আসলো পরমর্শ এর জন্য, হানিফা(র) তাকে বলল যাও নামাজ পড় গেয়ে। যেই না সে নামাজে দাড়াল, অমনি তার মনে পড়ে গেল, জিনিস টা সে রেখেছিল কোথায়। হায় রে আমার মনযোগ, কোথায় গেলে তোরে পাই?
আমরা যে নামাজ পড়ি, তার সামান্য কিছহু অংশ আল্লাহর কাছে পৌছায়( যে অংশ টুকুতে তাকে স্মরন করি)। আর বাকি অংশ, যা আল্লাহ ব্যাতিত অন্য কিছু স্মরন এ রেখে সুরা-কেরাত-দোয়া-দুরুদ পড়ি , তা কনও কাজে আসে না। হযরত খান বাহাদুর আহসান উল্লাহ (র), তার সুফি বই এ লিখেছেন, “The spirit of Salat should be focused on. Rendering Salat should be made from within the core of heart. Only gestures and postures do not serve the purpose. The spirit of the verse should be addressed to. It will not do if merely the tongue is set to motion like railway carriage. Humbleness and gratitude should be stirred up within the heart. Faith has to be fortified.”
নামাজে একাগ্রতার কথা মনে আসলে ই হযরত আলি (রা) সেই তীর বিদ্ধ চেহারা মানস পটে ভেসে ওঠে। তীরবিদ্ধ অবস্থায় হযরত আলি নামাজ নামাজ পড়ছেন, নবিজ্বীর হুকুমে, অন্য সাহাবীরা তীর বের করলেন, আলির পা হতে, নামাজরত আলি কিছু জানতেও পারল না, নামাজ শেষে রক্ত দেখে অবাক হলেন তিনি। কি অসাধারন একাগ্রতা!!
এই হযরত আলি কে নিয়ে আরো একটা মজার নামাজ সংক্রান্ত গল্প আছে। একদিন, নবিজ্বী বললেন, আলি, তুমি যদি সম্পুর্ন নামাজ একাগ্রতার সাথে পড়তে পারও , তবে তোমাকে, আমি একটা পুরস্কার দিব। আলি নামাজ পড়লেন সম্পুর্ন একাগ্রতার সাথে, কিন্তু একদম শেষে এসে, সালাম ফেরানর আগ মুহুর্তে, তার মনে প্রশ্ন আসল নবিজ্বী কি পুরস্কার দিবেন? বাস! মনযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল। তখন নবিজ্বী বললেন অমন নামায শুধু আল্লাহর নবীরাই পড়তে পারে। তবে, নিশ্চয়, আমাদের মনযোগ এর বিচ্ছিন্নতা আর তাদের বিচ্ছন্নতা এক না। পুর নামাজে , আমাদের যতটুকু মনযোগ থাকে, নিঃসন্দেহে তাদের , আমাদের থেকে বহুগুন বেশি মনযোগ থাক তো।
নামাজে মনযোগ বাড়ানোর জন্য কিছু টিপস( সংগৃহিত)
১) প্রয়োজনীয় সব কাজ আগে শেষ করে নামাজ শেষে পড়তে হবে।যেন , নামাজে কোন তাড়াহুড় ভাব না থাকে ( খুব সম্ভবত , এই টা নবিজ্বীর দেয়া পরমর্শ)।
২) নামাজের আগে ৫/১০ মিনিট কলব এ জিকির( মনে মনে জিকির করে), নামাজে দাড়াতে হবে( খুব সম্ভবত, এটা সুফী রা ফলো করতেন)। তাহলে দেখা যাবে হৃদয়ে আল্লাহর নামযপ automatic চলতে থাকবে।
৩) নামাজ কে মনে করতে হবে ,এই নামাজ, জীবন এর শেষ নামাজ ( খুব সম্ভবত , এই টা নবিজ্বীর দেয়া পরমর্শ)।
৪) নামাজে, বার-বার মনে করতে হবে, সমগ্র জাহান এর বাদশাহ, আল্লাহতায়ালার সামনে সে হাজির( সেই আদব রক্ষা করতে সচেস্ট হতে হবে) এবং আল্লাহর কাছে বার-বার দোয়া করতে হবে যেন , তার পছন্দ মত ইবাদাত আমরা করতে পারি।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




