somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পবিত্র শবে কদর উপলক্ষে দুই টি জোকস ও প্রাসঙ্গিক কিছু আলোচনা।

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


প্রথম জোক স
এক বন্ধু প্রায় ই তার আর এক বন্ধু কে নামাজ এর কথা বলে, কিন্তু সে গ্রাহ্য করে না। অবশেষে, নামাজি বন্ধুর এক লভনীয় অফার এ সে রাজি হলও , যে প্রতি ওয়াক্ত বাবদ তাকে কিছহু মাশোহারা (নগদ অর্থ) দেয়া হবে। প্রতি ওয়াক্ত নামাজ শেষে সে টাকা চায়, কিন্তু নামাজি বন্ধু বলে, পরে দিচ্ছি...। এক মাস পর, দ্বিতীয় বন্ধু, এক দিন বল ল , যাহ , তুই আমাকে ঠকাতে পারস নাই, বরং আমিই তোকে ঠকিয়েছি। কারন, এক অয়াক্ত নামাজ ও আমি ওজু করে পড়ে নি......।

দ্বিতীয় জোক স
ইমাম সাহেব, বয়স্ক মানুষ, এক রাতে এশার নামাজ শেষে তার সন্দেহ হল, নামাজ তিন রাকাত হল না চার রাকাত হল? মুসল্লী রাও বিভ্রান্ত, কনফার্ম করে কেও বলতে পারছে না, কত রাকাত নামাজ হল। এমন সময় এলাকার এক দোকানদার বলে উঠল হুজুর, নামাজ হয়েছে তিন রাকাত, কোনও ভাবেই চার রাকাত নয়। কারন, আমি প্রতি দিন চার রাকাত নামাজে, চার টি দোকান এর হিসাব মেলাই, আজ তিন টা দোকান এর হিসাব শেষ, তো দেখি নামাজ শেষ।

আজকাল আমাদের সবার নামাজের ই প্রায় ঐ একি অবস্থা। তাই তো আমাদের নামাজ আর নামাজ নাই। হয়ে গেছে আনুসঠানিকতা মাত্র। নামাজ তো মুমিন দের জন্য মেরাজ। অথচ, আমাদের নামাজ হয়ে গেছে , বাজার এর হিসাব মেলানোর জায়গা। নামাজের প্রথম ও প্রধান শর্ত হল একাগ্রতা। যদি, বান্দা, একাগ্রতার সাথে ও বিশ্বাসের সাথে নামাজ পড়ে, এবং আস্থা সহকারে প্রার্থনা করে, তবে, তা অবশ্য ই কবুল হবে। দুর্ভাগ্য জনক হলেও সত্য যে, আমাদের নামাজে একাগ্রতার বড় অভাব। আসলেই আমাদের নামাজের অবস্থা খুবই নাজুক( তবে, নিশ্চয়ই এমন ও কিছু নারী-পুরুষ আছেন , যাদের অবস্থা, অনেক ভাল)। তাই তো আমরা, যখন নামাযে দাড়াই, তখন জগতের সব কথা আমাদের মনে আসে, নতুন নতুন আইডিয়া , আমাদের মাথায় আসে। এ প্রসংগে ইমাম হানিফা (র) এর একটা ঘটনা সামনে চলে আসে। একবার, এক ব্যক্তি , তার কিছু মুল্যবান জিনিস হারিয়ে ফেলে, মনেই করতে পারছে না, সে তা কথায় রাখছে। তো , ইমাম এর কাছে আসলো পরমর্শ এর জন্য, হানিফা(র) তাকে বলল যাও নামাজ পড় গেয়ে। যেই না সে নামাজে দাড়াল, অমনি তার মনে পড়ে গেল, জিনিস টা সে রেখেছিল কোথায়। হায় রে আমার মনযোগ, কোথায় গেলে তোরে পাই?
আমরা যে নামাজ পড়ি, তার সামান্য কিছহু অংশ আল্লাহর কাছে পৌছায়( যে অংশ টুকুতে তাকে স্মরন করি)। আর বাকি অংশ, যা আল্লাহ ব্যাতিত অন্য কিছু স্মরন এ রেখে সুরা-কেরাত-দোয়া-দুরুদ পড়ি , তা কনও কাজে আসে না। হযরত খান বাহাদুর আহসান উল্লাহ (র), তার সুফি বই এ লিখেছেন, “The spirit of Salat should be focused on. Rendering Salat should be made from within the core of heart. Only gestures and postures do not serve the purpose. The spirit of the verse should be addressed to. It will not do if merely the tongue is set to motion like railway carriage. Humbleness and gratitude should be stirred up within the heart. Faith has to be fortified.”
নামাজে একাগ্রতার কথা মনে আসলে ই হযরত আলি (রা) সেই তীর বিদ্ধ চেহারা মানস পটে ভেসে ওঠে। তীরবিদ্ধ অবস্থায় হযরত আলি নামাজ নামাজ পড়ছেন, নবিজ্বীর হুকুমে, অন্য সাহাবীরা তীর বের করলেন, আলির পা হতে, নামাজরত আলি কিছু জানতেও পারল না, নামাজ শেষে রক্ত দেখে অবাক হলেন তিনি। কি অসাধারন একাগ্রতা!!
এই হযরত আলি কে নিয়ে আরো একটা মজার নামাজ সংক্রান্ত গল্প আছে। একদিন, নবিজ্বী বললেন, আলি, তুমি যদি সম্পুর্ন নামাজ একাগ্রতার সাথে পড়তে পারও , তবে তোমাকে, আমি একটা পুরস্কার দিব। আলি নামাজ পড়লেন সম্পুর্ন একাগ্রতার সাথে, কিন্তু একদম শেষে এসে, সালাম ফেরানর আগ মুহুর্তে, তার মনে প্রশ্ন আসল নবিজ্বী কি পুরস্কার দিবেন? বাস! মনযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল। তখন নবিজ্বী বললেন অমন নামায শুধু আল্লাহর নবীরাই পড়তে পারে। তবে, নিশ্চয়, আমাদের মনযোগ এর বিচ্ছিন্নতা আর তাদের বিচ্ছন্নতা এক না। পুর নামাজে , আমাদের যতটুকু মনযোগ থাকে, নিঃসন্দেহে তাদের , আমাদের থেকে বহুগুন বেশি মনযোগ থাক তো।
নামাজে মনযোগ বাড়ানোর জন্য কিছু টিপস( সংগৃহিত)
১) প্রয়োজনীয় সব কাজ আগে শেষ করে নামাজ শেষে পড়তে হবে।যেন , নামাজে কোন তাড়াহুড় ভাব না থাকে ( খুব সম্ভবত , এই টা নবিজ্বীর দেয়া পরমর্শ)।
২) নামাজের আগে ৫/১০ মিনিট কলব এ জিকির( মনে মনে জিকির করে), নামাজে দাড়াতে হবে( খুব সম্ভবত, এটা সুফী রা ফলো করতেন)। তাহলে দেখা যাবে হৃদয়ে আল্লাহর নামযপ automatic চলতে থাকবে।
৩) নামাজ কে মনে করতে হবে ,এই নামাজ, জীবন এর শেষ নামাজ ( খুব সম্ভবত , এই টা নবিজ্বীর দেয়া পরমর্শ)।
৪) নামাজে, বার-বার মনে করতে হবে, সমগ্র জাহান এর বাদশাহ, আল্লাহতায়ালার সামনে সে হাজির( সেই আদব রক্ষা করতে সচেস্ট হতে হবে) এবং আল্লাহর কাছে বার-বার দোয়া করতে হবে যেন , তার পছন্দ মত ইবাদাত আমরা করতে পারি।

০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

আরো একটি সফলতা যুক্ত হোলো আধা নোবেল জয়ীর একাউন্টে‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪০



সেদিন প্রথম আলো-র সম্পাদক বলেছিলেন—
“আজ শেখ হাসিনা পালিয়েছে, প্রথম আলো এখনো আছে।”

একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আজ আমি পাল্টা প্রশ্ন রাখতে চাই—
প্রথম আলোর সম্পাদক সাহেব, আপনারা কি সত্যিই আছেন?

যেদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১১

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

ছবি এআই জেনারেটেড

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ প্রতিবাদের ভাষা নয় কখনোই
আমরা এসব আর দেখতে চাই না কোনভাবেই

আততায়ীর বুলেট কেড়ে নিয়েছে আমাদের হাদিকে
হাদিকে ফিরে পাব না... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×