বতর্মান সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে চায় কিন্তু তারা শুধু ব্যন্ডউথের দাম কমিয়েই পগারপার হয়ে যাচ্ছে।
ইন্টারনের ব্যাবহারকারি আমরা যখন স্পিড নিয়ে সব সময় চিন্তিত থাকি এবং কিভাবে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের দেশে কিভাবে আরো বেশি দ্রুতগতির ইন্টারনেট ব্যাবহার করতে পারি সেটা নিয়ে চিন্তিত তখনই সরকার উল্টা সিধান্ত নিল।
" ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর (আইএসপি) আপলোড স্পিড সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ রাখার নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।" কত বড় গর্ধভ, কুশিক্ষিত ও অযোগ্য হলে এ রকম আত্তঘাতি সিধান্ত নেয়া যায়?
যখন এদেশের বেকার ছেলেপেলেরা তথ্যপ্রযুক্তি ব্যাবহার করে নিজেরা সাবলম্বি হবার পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছি তখনই এরকম সিধান্ত অবাক করে দেয় আমাদের।
ফ্রিল্যান্সারদের পেটে লাথি
এক হিসাবে দেখা যায়, ২০১২ সালে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা দেশে এনেছেন ফ্রিল্যান্সাররা। ফ্রিল্যান্সাররা দিনে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করছে। ফ্রিল্যান্সাররা ভিডিও এডিটিং, থ্রিডি মডেলিংসহ অনেক বড় মাপের ফাইল আপলোডসহ নানা কাজ করেন। সাধারণত এডিট করা একটি ভিডিও’র সাইজ ১ গিগা বা তার চেয়েও অনেক বেশি হয়।আগে যেখানে একজন ফ্রিল্যান্সার ১ এমবিপিএস এর ইন্টারনেট ব্যবহার করে ডাউনলোড স্পিড পেয়েছেন ১০০- ১২০ কেবিপিএস এবং আপলোড স্পিড থাকতো ২০-৩০ কেবিপিএস। এখন সেটা কমিয়ে ২৫ শতাংশ করায় আপলোড স্পিড পাবে ৫-৭ কেবিপিএস। এতে একদিকে যেমন সময় নষ্ট হবে, অন্য দিকে কাজ করার আগ্রহ হারাবে ফ্রিল্যান্সাররা এবং বৈদেশিক মুদ্রার আয় কমে যাবে।
গার্মেন্টস শিল্পের উপর আবারো আঘাত
গার্মেন্টস ও বায়িং হাউস'কে সব সময় বিদেশি ক্রেতার সাথে যোগাযোগ রাখতে হয়। দর কষাকষি, পন্যের স্প্যাসিফিকনেস, মেজারমেন্ট এর মাধমে আলাপ আলোচনা, স্কাইপেতে ভিডিও চ্যাটিং ইত্যাদিতে দ্রুত গতির ইন্টারনেট কানেকশন দরকার হয়। হেড অফিসে বসে বিভিন্ন লোকেশনের ফ্যাক্টরির ভিডিও ফুটেজ দেখে নিরাপত্তা ও অন্যান্য বিষয় তাৎক্ষনিক সিধান্ত নিয়ে থাকেন কর্তাব্যাক্তিরা। এ ব্যাবসা এমনিতেই বন্ধ হবার উপক্রম হয়েছে, যদি দ্রুত গতির ইন্টারনেট না থাকে তাহলে এটা অতি শিগ্রহই বন্ধ হবে বলে আশা করি ।
এই রুপ লক্ষ লক্ষ বানিজ্য প্রতিষ্ঠানই ক্ষতি গ্রস্থ হবে। বেকার হব আমরা, অর্থনৈতিক মন্দায় পড়বে আমার এই দেশ, বাংলাদেশ।
ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আকতারুজ্জামান মঞ্জু বিটিআরসির নির্দেশনা প্রসঙ্গে বলেন, “এ নির্দেশনা আইএসপিদের দেওয়া হয়নি। দেওয়া হয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেইটওয়ে (আইআইজি) সংস্থাগুলোকে। আমরা আইআইজি থেকেই ব্যান্ডউইথ নিয়ে থাকি। সুতরাং এর প্রভাব পড়বে সবার উপরই।
ইন্টারনেট বিশেষজ্ঞ সুমন সাবির বলেন, “সাধারণ ব্যবহারকারীরা মূলত ইমেইল অ্যাটাচমেন্ট, স্কাইপে কথা বলা, ইমেজ আপলোড বা ভিডিও আপলোড করতে গেলে সমস্যায় পড়বেন। প্রধানত সমস্যায় পড়বেন ফ্রিল্যান্সাররা। তাদের বড় বড় ফাইলগুলো ক্লায়েন্টকে ইমেইলের মাধ্যমে পাঠাতে হয়। সেক্ষেত্রে মূলত তারাই ভুগবে। এছাড়া বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো তো আছেই।”
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নে বারবারই বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রযুক্তি। ফেসবুক, ইউটিউব বন্ধ করে দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। তবে এবার পুরো ইন্টারনেটের উপর এমন নির্দেশনা বিতর্কিত করছে সরকারের সিদ্ধান্ত।
যেখানে আপলোড ও ডাউনলোড স্পিড বাড়ানোর এবং ইন্টারনেট সংযোগ মূল্য কমানোর কথা সরকারকে চিন্তা করতে হবে, ঠিক তখন সরকার যেন উল্টো পথেই চলছে। এভাবে কি ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব?????
এ সিধান্ত যদি কোনো ৮ম শ্রেনি পাশ সরকার/মন্ত্রি’রা গ্রহন করত তাহলে হয়ত এতটা অবাক ও কস্ট পেতাম না, কিন্তু সিধান্ত নিল অতি শিক্ষিত, ডক্টরেট মন্ত্রী আমলারা, যারা নিজেদের কে সব সময় অতি পণ্ডিত ভাবে। এই কি তাদের পাণ্ডিত্য???!!!!!???