পূর্বের এক পোস্টে বলেছিলাম, মুক্তিযোদ্ধাদের হুমকি-ধুমকিতে অথবা ভোটের হিসাব-নিকাশ করে, ডান দরজা দিয়ে হোক আর বাম দরজা দিয়ে হোক, আওয়ামি সরকার মুক্তিযোদ্ধা কোটা টিকিয়ে রাখবে। কথাটা ফলে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী দু'দিন আগে জাতীয় সংসদে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগের চরিত্র সম্পর্কে আগাম বলতে পারায় নিজেকে ফেনীর পাগলা মিঞা দরবেশ মনে হচ্ছে।
২.
আওয়ামি সরকার যদি মুক্তিযোদ্ধাদের ভোটের লোভে অথবা মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের প্রতি করুণা দেখিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রাখতে চান, তাতে পূর্বের মতই স্বাধীনতাবিরোধী ও প্রেমনৈতিক শ্রেণির মানুষের কাছে মুক্তিযোদ্ধাদের দেশপ্রেমকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে। আর যদি মুক্তিযোদ্ধারা পুত-নাতিসব সুখভোগ করার জন্য মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রাখতে সরকারকে বাধ্য করে থাকেন, তবে বলব তারা পূর্বের মতই নিজেরাই নিজেদের দেশপ্রেমকে প্রশ্নবিদ্ধ করবেন। বিরোধী ও প্রেমসচেতন মানুষ পূর্বের মতই বলে বেড়াবেন, মুক্তিযোদ্ধা নামধারীরা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে নয়, ব্যক্তিগত স্বার্থে মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছেন। সত্যিকারের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধে গিয়ে থাকলে তাদের ব্যক্তিগত বা পারিবারিক স্বার্থ বিসর্জিত থাকার কথা, তাদের পুত-নাতিদের সাধারণের সাথে সংগ্রাম করে যোগ্যতামাফিক বাঁচার ইচ্ছাবোধ থাকার কথা!
দেশপ্রেম কী? ইমানুয়েল কান্ট হলে খুব সুন্দরভাবে এর সংজ্ঞা দিতে পারতাম। নিজের বা নিজের পরিবারের জন্য নয়, দেশের মানুষের সুন্দর ও নিরাপদ ভবিষ্যতের লক্ষ্যে আত্মনিয়োগকেই দেশপ্রেম বলে। যা বিনিময় বা প্রতিদান আশা করে, তা আর যা-ই হোক, দেশপ্রেম নয়। ব্যাপারটি আওয়ামি সরকার ও মুক্তিযোদ্ধাদের বোঝা উচিত।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




