somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইভটিজিং লইয়া ইহা কোন আলগা আলোচনা না। অপ্রিয় সত্যের আঘাতে আহত হইতে পারেন। (পর্ব-৪)

১৬ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

Violence is not the monopoly of the exploiters and as such the exploited can use it too and, moreover, ought to use it when the moment arrives - Che Guevara
ভায়ল্যান্স শুধু শোষকের একার সম্পত্তি না, শোষিতও ভায়ল্যান্সএর ব্যাবহার করতে পারে, শুধু তাই না, যখন সময় হবে তখন তাকে শোষকের বিরুদ্ধে ভায়ল্যান্সএর ব্যাবহারও করতে হবে। বিংশ শতকের মহান বিপ্লবী চে গুয়েভারার সবচেয়ে বিখ্যাত এই উক্তির মাধ্যমে তিনি মুক্তি আর স্বাধীনতার জন্য ভায়োল্যন্সের প্রয়োজনিয়তা বুঝিয়েছেন। অহিংসার মাধ্যমে প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জন করা যায় না এই উপলোদ্ধি আমাদের সুভাস বোস, মাস্টার দা সূর্যসেন, ক্ষুদিরাম এবং প্রীতিলতার মতো মহান বিপ্লবীদেরও হয়েছিল। বারবার সমঝোতায় যাওয়া গান্ধির অহিংসবাদ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ভারত সামলাতে অপারগ না হলে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে কিছুই করতে পারতো না। এমনকি গান্ধি যে কয়বার হার্ড লাইনে গেছেন বেশিরভাগ সময়ই গেছেন সহিংসতাবাদীদের গড়ে তোল উম্মদনাকে সামাল দিতে।
তবে শোষকের বিরুদ্ধে ভায়ল্যান্স বা সহিংসতা যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা প্রথম ভালোভাবে আমাদের সামনে যিনি তুলে ধরেছেন তিনি হলেন মহামতি ফ্রাঞ্জ ফানো। উপনিবেশবিরোধী মুক্তি সংগ্রামের অগ্রপথিক ফ্রাঞ্জ ফানোর জন্ম ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের অন্তর্গত মার্টিনিকএ। তাঁর জীবনকালের মার্টিনিক ছিল ফরাসি উপনিবেশ। ফানো চে গুয়েভারার সমসাময়িক ছিলেন। চে গুয়েভারার মতোই ভিন দেশের মানুষের মুক্তি সংগ্রামে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন। মার্টিনিকএর অনেক মেধাবি এবং উচ্চাকাঙ্খি তরুনের মতোই তিনি ফ্রান্সে পাড়ি জমান নিজেকে জাতে তুলতে, বিয়ে করেন ফরাসি মেয়ে। কিন্তু ডাক্তারি পড়ার সময় তিনি আগ্রহী হয়ে ওঠেন সাইকোলজি নিয়ে এবং ফ্রান্সের উপনিবেশ আলজেরিয়ায় ডাক্তারি করার সময় জড়িয়ে পরেন আলজেরিয়ার স্বাধীনতা সংগ্রামে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আলজেরিয়র স্বাধীনতার জন্য তিনি লড়ে গেছেন। তার এই লড়াইয়ে জড়িয়ে পরা কোন হঠাৎ ঘটন ছিল না। নিজের গবেষনাই তাকে ঠেলে দিয়েছিল বিপ্লবীর জীবন বেছে নিতে। আলজেরিয়ায় মানসিক রোগীদের চিকিৎসা করতে গিয়ে তিনি অদ্ভুত এক আবিস্কার করে বসেন। তিনি লক্ষ করেন তাঁর অনেক রোগীদেরই মানসিক রোগের পেছনে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ভুমিকা রেখেছে উপনিবেশি সহিংসতা। তার দীর্ঘ গবেষনায় জন্ম নেয় উপনিবেশের সাইকোপ্যাথোলজি। ফানো যা আবিস্কার করেন, সহজ ভাষায় তা বলতে গেলে যা দাঁড়ায় তা হচ্ছে- উপনিবেশ নিজেকে টিকিয়ে রাখে ‘সহিংসতা’র মাধ্যমে, দৈহিক এবং মানসিক সহিংসতা এই দুই প্রকারেই। এই সহিংসতা মানুষের স্বাধীন চিন্তা, সম্মান, গৌরব, দৈহিক এবং মানসিক নিরাপত্তাবোধ কেড়ে নেয়। ফলে, উপনিবেশের জনগণের মধ্যে জন্ম নেয় নানাবিধ মনবৈকল্য। একজন চিকিৎসক হিসাবে ফানো এই মনবৈকল্যের চিকিৎসাও বাৎলে দিয়েছেন। তাঁর মতে, উপনিবেশ যেই ভাষায় কথা বলে, সেই ভাষাতেই উপনিবেশের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। এই মনবৈকল্যের চিকিৎসা একটাই, আর তা হচ্ছে সহিংসতা। একমাত্র সহিংস মুক্তিসংগ্রামই পারে উপনিবেশ দ্বারা শোষিত ব্যাক্তি এবং জাতির পূর্ণাঙ্গ ‘আত্মিক’ মুক্তি দিতে, যেই মুক্তি ছাড়া প্রকৃত সার্বভৌমত্ব অর্জন করা যায় না। সহিংসতার মাধ্যমে মানসিকভাবে সুস্থ্যতা লাভ না করে শুধুমাত্র উপনিবেশী প্রভুর দয়ায় স্বাধীনতা লাভ করলে সেই স্বাধীনতার প্রকৃত অর্থে কোন মূল্য থাকবেনা এবং এক্ষেত্রে উত্তর উপনিবেশী দেশগুলোর ভবিষ্যত নিয়ে ফানো বেশ কিছু ভবিষ্যতবাণী করেন। তাঁর ভবিষ্যতবানীর সার সংক্ষেপ ছিল অনেকটা এইরকম- “উপনিবেশী প্রভুর দয়ায় স্বাধীনতাপ্রাপ্ত রাষ্ট্রগুলোতে প্রভুদের তাবেদার পুতুল সরকার ক্ষমতায় বসবে। এই সরকার হবে উপনিবেশী শিক্ষায় শিক্ষিত এবং চলনে বলনে চিন্তা চেতনায় উপনিবেশী প্রভুর অনুকরণপ্রীয়। এই পুতুল সরকার হবে উপনিবেশের লুটপাটের ভাগিদার, যাদের মাধ্যমে পশ্চিমা উপনিবেশ কোন সৈন্য সামন্ত ছাড়াই এসব দেশের উপর মাতবরি করবে, আগের মতোই সস্তা কাচামাল, সস্তা শ্রম আর পন্যের বাজারের সুবিধা নেয়া অব্যাহত রাখবে। খাতা কলমে এই সব দেশের স্বাধীনতা থাকলেও এই ব্যাবস্থা হবে নতুন একধরণের উপনিবেশ, যেই উপনিবেশের লুটপাটের ভাগিদার হবে সেই ভুখন্ডের এমন কিছু মানুষ যারা সেই ভুখন্ডে প্রভুদের রাজত্ব নিশ্চিত করবে গনতন্ত্রের বুলি আউড়িয়ে, তাতে ব্যার্থ হলে প্রভুর সহায়তায় বসবে স্বামরিক স্বৈরশাসক”। মহামতি ফানোর এই ভবিষ্যতবানীর সাথে বাংলাদেশের মিল খুঁজে পাওয়াটাকে আশা করি কেউ কাকতালিয় ভাববেন না, এই একি ভবিষ্যতবানী সত্য হয়েছে ইউরোপের প্রাক উপনিবেশ তৃতীয় বিশ্বের বহু দেশের ক্ষেত্রেই। আবার ফিরে যাই ফানোর ভায়োল্যান্স তত্ত্বে। ফানোর সহিংসতার প্রেসক্রিপশন আরো ভালোমত বোঝানো যাবে কিছু বাস্তব উদাহরণ দিলে। দুইশ বছর ব্রিটিশদের দাসত্ব খেটেছি আমরা, তারপর রাজনৈতিকদের প্ররোচনায় নিজেদের আত্মপরিচয় ভুলে আবার দাসত্ব বরণ করতে গিয়েছি পাকিস্তানীদের কাছে। নিজেদের নিয়ে আমাদের হিন্যমন্যতার অভাব নেই। বেশিরভাগ বাঙালিই নিজেকে ভাবে ছোটলোকের জাত। এখন, এই এতবছরের পরাধীনতা আর দাসত্বের মাঝে যদি আমাদের ফকির সন্যাসি বিদ্রোহ, তিতুমির এর বাঁশের কেল্লা, ক্ষুদিরাম, প্রিতীলতা আর সবশেষে এই মুক্তিযুদ্ধটাও যদি না থাকতো তাহলে আমাদের কি অবস্থা হতো? জাতি হিসাবে এখনো আমরা যতটুকু সুস্থ্য আছি তাও ঐ তিতুমির, ক্ষুদিরাম, নুর মোহাম্মদদের সহিংসতার জোরেই। মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিকে ভারতের সাথে ডিপ্লোমেসিতে কিছু ভুল না হলে জাতি হিসাবে আমরা আরো সুস্থ্য হতাম, এতগুলা পাকিস্তানী সৈন্যকে অক্ষত অবস্থায় ফিরে যেতে দেয়া উচিত হয় নাই। রাজাকারদের ধরে ধরে সেই একাত্তরেই ফাঁসিতে ঝোলালে জাতি হিসাবে আমরা অবশ্যই আরো সুস্থ্য সবল হতাম।
ইভটিজিংএর আলোচনায় এইসব কথাবার্তা অনেকের কাছে অপ্রাসঙ্গিক মনে হতে পারে। কিন্তু আগের তিনটা পর্ব যারা পড়েছেন তাদের মনে থাকার কথা যে প্রথম পর্বের আলোচনা ছিল উপনিবেশী শিক্ষায় শিখিত বাঙালি মধ্যবিত্তের ভিক্টোরিয়ান মনন নিয়ে। দাস শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দাস মানসিকতা সম্পন্ন বাঙালি মধ্যবিত্ত গত আড়াইশ বছর ধরে দৈহিক এবং মানসিকভাবে উপনিবেশী নির্যাতনের স্বিকার হচ্ছে। পশ্চিমা প্রভুদের দালাল দুইটা দল ৫ বছর পর পর ইতিহাস পরিবর্তন করে তরুনদের আত্বপরিচয় সংকটে ফেলে দেয়, এর সাইকোলজিকাল প্রভাব ভয়াবহ, এর ফলে নিজের এবং নিজের জাতির জন্য তরুনদের কোন সম্মান থাকে না। সাহিত্য, নাটক, চলচিত্র এবং বিশেষ করে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আমাদের এই অঞ্চলের মানুষের শরীরের রঙ সম্বন্ধে হীন ধারণা তৈরি করা হচ্ছে সেই ব্রিটিশ আমল থেকে, সাদা=সুন্দর=শ্রেষ্ট এই ধারণা আমাদের মধ্যে শুধু প্রতিষ্ঠিতই হয় নাই, দিন দিন শক্তিশালী হচ্ছে। অনেকেরই জানা নাই যে সৌন্দর্য্য সম্পর্কে এই ধরণের ধারণা আমাদের চিরকাল ছিল না। এহেন ধারণার ফলে যেই জাতির সবচেয়ে ফর্সা লোকটাও ইউরোপীয়দের তুলনায় কালো সেই জাতির মনস্তত্ব কোন পর্য্যায়ে গিয়ে পৌছে সেইটা আশা করি মনোযগি পাঠক মাত্রই বুঝতে পারবেন। নানাবিধ কৃত্তিম প্রতিযোগিতা তৈরি করে রাখা হয়েছে গ্রেজুয়েশন, ভর্তিযুদ্ধ, চাকরি যুদ্ধের নামে। বৃহত রাজনৈতিক দলগুলা জনগণকে নিজেদের খেয়াল খুশির জিম্মি করে রেখেছে। নিরাপত্তা বাহিনী, সেনাবাহিনী দুইটাই মানুষের কাছে আতঙ্কের বস্তু। অহর্ণিশ নানামুখি সহিংসতার শিকার হচ্ছে এদেশের মানুষ। আর এখন পর্যন্ত এইসব সহিংসতার প্রথম এবং প্রধান শিকার 'বাঙালি পুরুষ'। এই পুরুষ শিক্ষা, চাকড়ি, ব্যাবসা প্রতিটা ক্ষেত্রে সহিংসতার শিকার। বেশি উদাহরণ দেয়ার দরকার নাই, বাঙালি পুরুষ মাত্রই ঠিক কি ধরণের মনস্তাত্বি শোষোন নিপিড়ন আর সহিংসতার মধ্য দিয়ে বড় হয়ে ওঠে তা আমরা ভালোভাবেই উপলদ্ধি করতে পারি। ভায়োল্যান্স বা সহিংসতার স্বাভাবিক এক চাহিদা নিয়ে জন্ম নেয় প্রতিটা মানুষ, বিশেষ করে পুরুষ মানুষ। শিকার করার জন্য এবং নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য একসময় এর দরকার ছিল। সামাজিক মানুষ খেলাধুলা আর সাংগঠনিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে সহিংস প্রবৃত্তি, প্রতিযোগিতা আর নেতৃত্বের সুষ্ঠ বিকাস নিশ্চিত করেছে। আমাদের দেশের পুরুষদের, বিশেষ করে শহুরে পুরুষদের সেই সুযোগও নাই। একে সে ভায়োল্যান্সের শিকার, তার উপর সে পালটা ভায়োল্যান্স করার রাজনীতি জানেনা, নাই প্রসমনের সুযোগ। ফলাফল হলো "দুর্বলের উপর ভায়ল্যান্স"। দাস মনবৃত্তির একটা গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট হলো এরা শক্তিমান প্রভুর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারে না, প্রভুকে এরা ঘৃণা করে না, ভয় এবং শ্রদ্ধা করে। অবদমিত ভায়ল্যান্সের প্রকাশটা এরা করে নিজেদের চেয়ে দুর্বল ব্যাক্তি বা শ্রেণীর উপর। আমাদের সমাজ কাঠামোয় দাস মনোবৃত্তির পুরুষের কাছে নিজের সহিংসতা প্রকাশের জন্য সহজ টার্গেট হয়ে যায় অপেক্ষাকৃত দুর্বল শ্রেনী বলে স্বিকৃত নারী।
আগের পর্বগুলোর আলোচনা একটু স্মরণ করুন, তাহলে সার বক্তব্যটা ধরতে সহজ হবে। সেই ব্রিটিশ আমল থেকেই উপনিবেশ আর বাঙালি পুরুষএর মধ্যে ক্ষমতা সম্পর্ক হলো প্রভু-দাস সম্পর্ক। এই সম্পর্কের ভিত্তী শোষন, আর এই সম্পর্ক টিকে থাকে সহিংসতার মাধ্যমে, শ্রেষ্ঠত্বে-দাসত্ব সংক্রান্ত হেজেমনিক ধারণা টিকিয়ে রাখার মাধ্যমে। এই অবস্থায় গৃহবন্দী নারীই ছিল বাঙালি মধ্যবিত্ত পুরুষের ক্ষমতা প্রয়োগ করার একমাত্র যায়গা। সময় যত যাচ্ছে বাঙালি পুরুষের উপর মানসিক সহিংসতা যেমন বাড়ছে তেমনি ঘর ছেড়ে নারীরাও বেরিয়ে আসছে। উপনিবেশের দাস 'পুরুষ' হারাতে বসেছে তার ক্ষমতা প্রয়োগের শেষ আশ্রয়স্থল। এই অবস্থায় সে হয়ে উঠেছে ব্যাপারোয়া। খেলাধুলা আর সাংগঠনিক চর্চা কমে যাওয়ায় সহিংসতার অবদমনও ধারণ করেছে চুড়ান্ত আকার, জন্ম দিচ্ছে মনোবৈকল্য। সেই সাথে যুক্ত হয়েছে যৌন অবদমনের ফলে সৃষ্ট কোর্টশিপ ডিজঅর্ডার। ফলাফল হিসেবে আমরা পাচ্ছি মহামারি আকারের যৌন নির্জাতন আর ইভটিজিং। কিন্তু এই বিশাল বিরাট অবক্ষয় যে প্রবল দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে গতি পাচ্ছে কি করে? এই গতি দিচ্ছে অনিয়ন্ত্রিত এবং দ্রুত গতির সামাজিক পরিবর্তন, এবং সেই সাথে কর্পোরেট মিডিয়ার সাংস্কৃতিক অসভ্যতা। এই বিষয় নিয়া পরবর্তি পর্বে আলোচনা করবো।
এই পর্ব শেষ করার আগে একটা বিষয় উল্লেখ করতে চাই, যা নিয়ে শেষ পর্বে বিস্তারিত আলোচনা থাকবে। গত এক বছরে ইভটিজিং আর যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে ইলোরা, সিমিনের মতো অনেক কিশোরী আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। গত কয়েক মাসেই বেশ কয়েকজন গৃহবধু নির্যাতনের প্রতিবাদে সন্তানসহ আত্মহুতি দিয়েছেন। পত্র পত্রিকায় এ ধরণের আত্মহুতিকে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে, বলা হচ্ছে আত্মহত্যা কোন সমাধান না। আমার কাছে এইসব ফাকা বুলি মনে হয়। এদেশের নারী বিষয়ক নীতিমালা এবং বহু নারী অধিকার সংগঠন এত বেশি আলগা এবং বাইরের জিনিস নিয়ে কাজ করে যে এদের পক্ষে প্রতিদিন প্রতিক্ষন অত্যাচারিত নিপিড়িত নারীদের সমস্যার সমাধান করা সম্ভব না। প্রতিনিয়ত সহিংসতার শিকার এসব নারী নিজেরাই নিজেদের সমস্যার সমাধানের নেমেছে এবার। তাদের এই আত্মাহুতি আমার কাছে নেহায়েত অসহায় আত্মসমর্পন বা মানসিক দৌর্বল্য বলে মনে হয় না, বরং সহিংসতার বিপরীতে সহিংসতা বলেই মনে হয়। শত্রু প্রবল হলে এবং শক্তিতে না কুলালে আত্মঘাতি হামলা করার নিয়ম আছে। এই নারীরা যা করছে তা হলো আত্মঘাতি হামলা। একজনের আত্মহুতিতে আরেকজন শক্তি পাচ্ছে। আত্মহুতির পরিমান বারছে, হয়তো আরো বারবে। আত্মহত্যা করে এরা প্রমান করছে যে শুধুমাত্র নির্যাতিত হতে এরা দুনিয়ায় আসে নাই, তাদের যেই শরীরটাকে পুরুষ নিজেদের মুখ, চোখ আর হাতের সম্পত্তি বলে মনে করে সেই শরীরটাকে তারা চাইলে যে কোন সময় ধ্বংস করতে পারে, তারা প্রমান করতে চায় ঐ শরীরের মালিক তারা নিজেরাই, পুরুষরা না। সন্তানকে সাথে নিয়ে আত্মহত্যা করার মধ্যেও হয়তো একটা হুশিয়ারী আছে। সন্তানসহ আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়ে অত্যাচারি পুরুষকেও সে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়ে যাচ্ছে। আমারা মনে হয় ইভটিজিং আর নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে নারীরা সহিংস যুদ্ধটা এরি মধ্যে শুরু করে দিয়েছে, এই আত্মহননের মাধ্যমেই। এবার পুরুষদের সময় হয়েছে তাদের কাপুরুষতা আর হীনতা থেকে বেরিয়ে আসার এবং দাসত্বের বিরুদ্ধে লড়াই করার।

(চলবে)
২১টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×