somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নেড়ি কুত্তা আর শকুনের খাবার হোক আমার লাশ, তবু এই জাতীয় আস্তিকের হাতের সৎকার যেন না পাই

২২ শে আগস্ট, ২০১০ রাত ১০:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আরজ আলী মাতুব্বর মৃত্যুর আগে তাঁর পুরো শরীরটাই দান করে গিয়েছিলেন। তাঁর চোখ দিয়ে দুনিয়ার আলো দেখেছিল তরুনি একটা মেয়ে, আমি জানিনা সে এখনো বেঁচে আছে কি না, বেঁচে থাকলে এখনো দেখছে। তাঁর কঙ্কালটা এখনো আছে বরিশাল মেডিকেল কলেজে, শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ব্যাবহৃত হয়। লামচরি গ্রামের আস্তিক নাস্তিক এবং সকল ধর্মের মানুষের কাছে বিশ্বাসী, সৎ এবং পরপোকারি মানুষ হিসাবে পরিচিত আরজ আলী চেয়েছিলেন মৃত্যুর পরও যেন তাঁর শরীরটা মানুষের কল্যানেই ব্যাবহৃত হয়। আরজ আলীর মতো এমন অনেকেই আজকাল মরনোত্তর চোখ, অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বা পুরো শরীরটাই দান করে যান মানব কল্যানে। মানবতার জন্য অকৃত্তিম ভালোবাসা আছে বলেই কিছু মানুষ এই কাজ করেন। সভ্যতার প্রথম থেকেই কিছু মানুষ মানবতার প্রতি ভালবাসার কারণে নিজেদের অকাতরে বিলিয়ে দিতে প্রস্তুত থাকেন। ফিলিস্তিনের যেই মুক্তিযোদ্ধা শরীরে বোমা বেঁধে ঘাতক ট্যাঙ্কের নিচে ঝাপিয়ে পরে সৎকারের প্রত্যাশা সে করে না। নিজের শরীর ছিন্নভিন্ন করে, নিশ্চিহ্ন করে হলেও সে সজাতির কল্যান চায়।

আমি নিজে একজন মানবতাবাদী ব্যক্তি হলেও আমার মানবতায় লিমিটেশন আছে। আমি স্বজাতির বাইরের মানুষের কল্যান চিন্তা নিয়ে খুব একটা ভাবিত না। আমার স্বজাতির, আমার এই দেশের আস্তিক, নাস্তিক, হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান নির্বিশেষে কাউকেই আমি ঘৃনা করতে চাই না, সচরাচর করিও না। সম্পূর্ণ ভিন্নমতের ব্যাক্তি এবং গোস্টিরও ভালো বৈশিষ্ট্যগুলোর প্রশংসা করতে পারি, প্রাপ্য সম্যানটুকু দেই। কোন ধর্ম বা রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন ইস্যু বা টপিক অনুযায়ী আমি সমালোচনা করি, ঢালাওভাবে কোন গোস্টির সমালোচনা আমি করি এমন নজির নাই। একমাত্র নারী অবমাননাকারী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধী ব্যাক্তি বা মতবাদ ছাড়া সবার সাথেই আমি কনস্ট্রাকটিভ আলোচনা এবং পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে যৌথ স্বার্থ রক্ষায় বন্ধুত্বে বিশ্বাসী। "আমি ধর্মকে ঘৃনা করি" অথবা আমি "আস্তিকদের ঘৃনা করি", এই জাতীয় বিষয় আমার মধ্যে নাই।

কিন্তু আজকে আমার মন ঘৃনায় বিষিয়ে গেছে। আস্তিকতার মানে যদি হয় ঢালাও ঘৃনা এবং ভালো কাজের প্রতি অশ্রদ্ধা তবে সেই আস্তিকতাকে আমি ঘৃনা করি এবং এই ধরণের আস্তিকতা যারা পোষন করে সেই ধরণের আস্তিকদের আমি মানুষ নামের অযোগ্য বলেই মনে করি। কুকুর, বেরাল, শকুন, শেয়ালের অবস্থানও সেইসব আস্তিকের চেয়ে অনেক উচুতে। ব্লগার হা...হা...হা... একটা পোস্ট দিয়েছেন, "নাস্তিকদের লাশ দিয়ে যা যা করা যেতে পারে" । একজন আস্তিক হিসাবে আপনি নাস্তিকদের অনেক কিছুরই সমালোচনা করতে পারেন। সেই ধরণের সমালোচনা হয়েও আসছে। কিন্তু মরনোত্তর দেহদানের মতো একটা মহৎ কাজ নিয়ে এই ধরণের বিবেকহীন ফাজলামি এবং সমালোচনা কোন সুস্থ্য মস্তিস্কের মানুষের পক্ষে করা সম্ভব না। অবশ্য ব্লগার হা...হা...হা...এর মতো একজন নোংড়া মনের মানুষের পক্ষে এটাই স্বাভাবিক, সে এই ধরণের পোস্ট দেয়ায় আমি খুব বেশি অবাক হই নাই, মানুষ হিসাবে সে কতটা নিচু মনের তা আমার কাছে আরো পরিস্কার হয়েছে। কিন্তু দুঃখ পেয়েছি ভিন্ন যায়গায়। ঐ পোস্টে ভালো লেগেছে ৪৮জন মানুষের। ঐ পোস্টের অসুস্থ্য বক্তব্যের সাথে সহমত পোষন করে মন্তব্য করেছেন বহু আস্তিক ব্লগার। বিষয়টা আর কোন একক ব্যাক্তির পর্যায়ে থাকেনি, হয়ে গেছে ব্লগের "আস্তিক" গোস্টির ভিউ পয়েন্ট। ব্লগের সুপরিচিত কিছু মুখকেও এইধরণের নোংড়ামি করতে দেখেই সবচেয়ে অবাক হয়েছি। ভাবতে দুঃখই লাগছে এদের আস্তিকতা এবং ধর্ম বিশ্বাসকে আমি যথেষ্ট শ্রদ্ধা করেছি, অথচ কোন শ্রদ্ধা পাওয়ার যোগ্যতাই এরা রাখেনা। কোন নাস্তিক কি কখনো ইসলামের মহৎ বৈশিষ্ট গুলো যেমন যাকাত প্রথা, এতিমদের প্রতি ন্যায় বিচার এইসবের সমালোচনা করেছে? আমি অন্তত দেখি নাই।

এর নাম যদি আস্তিকতা হয় তাহলে আমি "আস্তিকতা কে ঘৃনা করি", এরাই যদি আস্তিকতার প্রতিনিধিত্ব করে তাহলে বলবো আমি "আস্তিকদের ঘৃনা করি"। আমার লাস শেয়ালে, কুকুরে শকুনে ছিড়ে খুড়ে খাক, কোন অবলা প্রাণীর খাদ্যই আমি হবো, কিনতু এই জাতীয় পশুর চেয়েও অধম আস্তিকের হাতের সৎকার যেন আমি না পাই। আমি জানিনা স্রষ্টা বলে কেউ আছেন কি না। যদি থাকেন এবং তিনি যদি ন্যায় বিচারক হন, তাহলে এই জাতীয় আস্তিকদের সৎকারের হাত থেকে তিনি আমাকে বাঁচাবেন বলেই বিশ্বাস করি।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে আগস্ট, ২০১০ রাত ১০:৪৭
৮২টি মন্তব্য ৪৬টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজনীতির পন্ডিত, ব্লগার তানভীর জুমারের পোষ্টটি পড়েন, জল্লাদ আসিফ মাহমুদ কি কি জানে!

লিখেছেন জেন একাত্তর, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৪৯



সামুর রাজনীতির ডোডো পন্ডিত, ব্লগার তানভীর ১ খানা পোষ্ট প্রসব করেছেন; পোষ্টে বলছেন, ইউনুস ও পাকিসতানীদের জল্লাদ আসিফ মাহমুদ ধরণা করছে, "সেনাবাহিনী ও ব্যুরোক্রেটরা বিএনপি'কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নীল নকশার অন্ধকার রাত

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:১৬


কায়রোর রাস্তায় তখন শীতের হিম হাওয়া বইছিল। রাত প্রায় সাড়ে এগারোটা। দুইটা বড় সংবাদপত্র অফিস: আল-আহরাম এবং আল-মাসরি আল-ইয়াউম—হঠাৎ করেই আগুনে জ্বলে উঠলো। কিন্তু এই আগুন কোনো সাধারণ দুর্ঘটনা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদি ভাই, ইনসাফ এবং একটা অসমাপ্ত বিপ্লবের গল্প

লিখেছেন গ্রু, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৮



ইদানিং একটা কথা খুব মনে পড়ে। হাদি ভাই।

মানুষটা নেই, কিন্তু তার কথাগুলো? ওগুলো যেন আগের চেয়েও বেশি করে কানে বাজে। মাঝেমধ্যে ভাবি, আমরা আসলে কীসের পেছনে ছুটছি? ক্ষমতা? গদি? নাকি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩২

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে[

স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধে রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা, মব-রাজনীতি ও এক ভয়ংকর নীরবতার ইতিহাস
চরম স্বৈরশাসন বা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রেও সাধারণত সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার সাহস কেউ করে না। কারণ ক্ষমতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×