শীত ও ইচ্ছেপাখি
শীতের এই আগমনী সময়ে
আমার বড় ইচ্ছে করে
ফিরে যেতে গাঁয়ের কাছে।
মনে আমার সুখ সুখ লোভ
দেখব সেথা আমার গাঁয়ের কুয়াশাঢাকা রূপ।
সেথায় দিনশেষে সন্ধ্যা নামবে
মায়াবী গোধূলীকে আঁধারে ঢেকে দিয়ে।
তারপর একটি দীর্ঘ রাত
বাইরে টিনের চালে
টুপটাপ ছন্দমুখর শিশিরের পতন।
ঘরের ভিতর থরো থরো শীতের কাঁপন।
লেপ-কম্বল-মোটা কাঁথা জড়িয়ে শুয়ে পড়া।
তারপর রাত ভোর।
কুয়াশার চাদরে মোড়া একটি সকালের আগমন।
কিন্তু সূর্যদেবের দেখা নেই।
তাই ঘাসের পাতায় বিন্দু বিন্দু শিশিরের আয়নায়
নিজকে খুঁজে ফেরা অবিরল ইচ্ছায়।
আমার খুব ইচ্ছে করে
এই শীতে আমার গ্রামকে কাছে পেতে
আপন করে, ভাল লাগার নিবিড় বলয়ে।
যেথায় নরম তুলতুলে রোদ উঠে
রাতের জমাট কুয়াশা কেটে।
তার মন হারানোর হাতছানিতে
সময়ের পিছুটান ভুলে
মেঠোপথের বাঁক মাড়িয়ে
ছুটে যাব কাশবনে।
সেখানে নিজকে ফিরে পাব স্মৃতির পাতায়।
ইচ্ছে করে ইচ্ছেমতো
পিঠে-পায়েস খাবো শত।
সীমের মাচায়, লাউয়ের ডগায়
সুখ কুড়োব থোকায় থোকায়।
ক্ষেতের ধারে আইলের পাশে
বুনোফুলের গন্ধ মেখে
মটরশুটির কানে কানে
বলব কথা সংগোপনে।
সেই কথাটি জানবে শুধু গাঁয়ের লোকে।
ইচ্ছে করে তাদের কাছে
শহুরে মনকে হারিয়ে ফেলতে।
ছোট ছোট শীতের বেলায়
তুলতুলে রোদের পাখায়
ইচ্ছে করে এই আমিকে রেখে আসতে।
আর যেন সে না ফিরে
শহরের এই ইট-পাথরের ঘরে।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:১৪