মা হাসিনা,
আমার স্নেহ নিও।আশা করি ভাল আছ। অনেকদিন ধরে ভাবতেছি কবে তোমাকে চিঠি লিখব কিন্তু লেখা হয়ে উঠেনা।আজকে নারী দিবসে তাই লিখতে বসলাম।প্রথমেই আমার স্নেহময়ী মা তোমাকে নারী দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে নিচ্ছি।
মা গো,বেশ কিছুদিন আগে একটা সংবাদ আমাকে বড় আনন্দ দিয়েছিলো আর তাহলো টাইম ম্যাগাজিনে প্রকাশিত বিশ্বের শীর্ষ দশ নারী নেত্রীর মধ্যে তোমার স্থান ষষ্ঠ এবং CNN 2010 সালের বিশ্ব নারী দিবস উপলক্ষ্যে এশিয়ার প্রভাবশালী ৮ জন নারীর মধ্যে সেখানেও তোমার স্থান একই।মা রে,একজন নারী,একজন মা হিসেবে আরেকজন নারীর কষ্ট তুমিই ভাল বুঝবা তাই তোমাকে ধন্যবাদ জানাই পুরাণ ঢাকায় ভয়াবহ আগুনে পুরে সব হারানো একটি পরিবারের দুটি মেয়ের দায়িত্ব নেওয়া এবং তাদের বিয়ের যাবতীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করা।
মা গো,বঙ্গবন্ধুর ডাকে আমরা আমাদের স্বাধীনতার যুধ্যে ঝাপিয়ে পরি আর উনি হলেন সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী।সুতরাং তার সুযোগ্য কন্যা হিসেবে তোমার কাছে আমাদের দাবি অনেক।মা রে,কোন ব্যাক্তিই আইনের উর্ধে নয়...কিন্তু আমি মনে করি বিরোধী দলীয় নেত্রী হিসেবে বেগম খালেদা জ়িয়া আরেকটু সম্মান পেতে পারতেন...তাকে ঠিক ঐ ভাবে মঈনুল রোডের বাসা থেকে যেতে দেওয়াটা ঠিক হয়নি।মা গো,আশেপাশের লোকের উস্কানিতে অনেক সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হয়ে যায় বা অনেক সময় নেওয়াই হয়না।মা গো,তোমাকে আরও সহনশীল হতে হবে...না হলে আমাদের দেশটা সঠিক ভাবে উন্নতির পথে যেতে পারবে না।আর মা রে,তেলবাজ আর চাটুকারদের পাত্তা দিওনা...ওরা তোমার পাশে ক্ষমতা পর্যন্তই থাকবে...পরে কি অবস্থা হয় তাতো তুমি কেয়ারটেকার সরকারের সময়ই দেখেছ।
মা গো,ইভ টিজিং নিয়ে তুমি একটা যুগান্তকারী সমাধান দিয়েছ।কিন্তু মা,মেয়েদের স্কুল বা কলেজের আশেপাশের পরিবেশেরও পরিবর্তন আনতে হবে।স্কুল বা কলেজে পর্যাপ্ত খেলার মাঠ বা অবসর সময় কাটানোর জায়গা থাকতে হবে।স্কুল বা কলেজের ভেতরে প্রয়োজনীয় সব কিছুর ব্যাবস্থা থাকতে হবে।আর একটা কথা মা...ছেলেদের খেলার মাঠ যে হারে দিন দিন কমতেছে তাতে তাদের মানসিক আর শারীরিক বিকাশটা সঠিকভাবে হচ্ছেনা।তারা নাকি শুধু কম্পিউটার নিয়েই বসে থাকে।সুতরাং তাদের মানসিক বিকাশের যায়গাটা যেন নষ্ট না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।মা গো,তাদের মানসিক আর শারীরিক বিকাশের সম্পুর্ন ব্যাবস্থা নিয়েই তাদেরকে আইনের আওতায় আনাটা আমাদের কর্তব্য।আর মা গো,আরেকটা ব্যাপারের নিশ্চ্যতয়া কিন্তু দিতেই হবে...তাহলো অভিযোগকারিনীর অভিযোগটা কতটুকু ভিত্তিযুক্ত।
মা গো,আমাদের দেশের সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের যে পরিবেশ তা নিয়ে কারো মনে কোন দ্বিধা নেই...কিন্তু ব্যাঙ্গের ছাতার মত গজিয়ে উঠা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশে আমাদের মেয়েরা কতটুকু নিরাপদ? একটা চার তলা ভবন নিয়ে গড়ে উঠা এই সব প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের মানসিক বিকাশটাইবা কোথায় হয়...আর পড়া লেখার পাশাপাশি যে খেলাধুলা বলে কিছু আছে তা বলতে গেলে আমাকে নিয়ে হাসাহাসি শুরু হয়ে যাবে।তাই এসব প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদনের আগে এই ব্যাপারগুলার দিকে দৃষ্টি দিতে বলবে।
মা গো,হেনার ব্যাপারটা আমাকে খুবই কষ্ট দিয়েছে।আমাদের দেশে ফতোয়া এখনো বন্ধ হয়নি।তবে আগের থেকে কমেছে অনেক।আসলে বিষাক্ত গাছ রেখে তার ফল আসা বন্ধ করা যাবেনা তাই ফতোয়া বন্ধ করতে হলে আগে আমাদের কাঠ মৌলভিদের আইনের ব্যাপারটা মাথায় প্রবেশ করিয়ে দিতে হবে।আর সবার আগে মুফতি আমিনী সাহেব কে মা তোমার সাইজ দিয়ে যেতে হবে...উনি এখনো উনার ফতোয়া নিয়ে বাংলাদেশের বাল্ থ্যাকারে সাজতে চাচ্ছেন।
মা হাসিনা, আরও একটা ব্যাপার যেটাতে আমি যা খুব অবাক হয়ে গেছি তা হলো...বিএসএফ কতৃক ফেলানীর মৃত্যু।পার্শ্ববর্তি দেশ হিসেবে তাদের সব কিছুই কিন্তু চোখ এড়িয়ে গেলে হবেনা।মা রে,তোমার কাছে সবার আগে তোমার দেশের আমজনতা।বিএসএফ এর ইচ্ছা হবে আর পাখির মত গুলি করে মারবে...সেটাতে কিন্তু জনগণ তোমার উপরে আস্থা হারিয়ে ফেলবে।আমাদের দিপু মার উচিৎ ছিলো একজন মেয়ে হয়ে আরেকজন নিতান্ত দরিদ্র মেয়ে ফেলানীর মৃত্যুর কড়া প্রতিবাদ জানানো।
মা গো,সিডওর মত জায়গায় ইসমাত জাহানের সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে সদস্যপদ অর্জন বা ব্রিটিশ পার্লামেন্টের হাউস অব কমন্সে বাঙালি মেয়ে রুশনারা আলীর নির্বাচিত হওয়া বাঙ্গালী নারীদের এগিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত বহন করে।শুধু সরকার হিসেবে তাদের প্রতি যথাযথ খেয়াল দেওয়া,তাদের মেধাকে সঠিক পথে ব্যাবহারের পথ সৃষ্টি করার দায়িত্ব তোমার এবং তোমার সরকারের নীতিনির্ধারকের।
তোমার সুস্থতা কামনা করে এখানেই শেষ করছি
ইতি,
তোমার গেদু চাচা।
০৮-০৪-২০১১ ইং।
***লেখাটা গতকাল প্রকাশ করার ইচ্ছা ছিলো কিন্তু তা হয়ে ওঠেনি গরিব গেদু মিয়ার মডেম না কি জানি বলে তাতে নাকি মেগাবাইট নামক বস্তু ফুরিয়ে গেছিলো***Link

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




