পরিসংখ্যানগত সম্ভাব্যতা ছাড়াও আরও কিছু বিষয় আছে যেসবের উপর ভিত্তি করে ভূমিকম্পের একটি সুনিশ্চিত পূর্বাভাস ব্যবস্থা গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে। এগুলো হল ভূ-মন্ডলের সিসমিক প্যাটার্ন, তড়িচ্চুম্বকীয় তরঙ্গ, ভূ-পৃষ্ঠের অবিরাম অনুভূমিক সঞ্চালন, প্রাক-আবহাওয়া, আকাশে অস্বাভাবিক আকার ও বর্ণের মেঘের উপস্থিতি, চন্দ্রকলার আকারে হ্রাস-বৃদ্ধি, ভূ-পৃষ্ঠের বিভিন্ন জলাধারে পানির অনিয়মিত হ্রাস-বৃদ্ধি, বিভিন্ন প্রাণীর অস্বাভাবিক আচরণ, বায়ুমন্ডলে বিভিন্ন রঙীন আলোক কণার উপস্থিতি ইত্যাদি।
“ভ্যান মেথড” পরিক্ষাধীন একটি পূর্বাভাস ব্যবস্থা যা সিসমিক তড়িৎ সংকেতের উপর ভিত্তি করে পূর্বাভাস দিতে সক্ষম। তবে এটি এখনও অনেকাংশেই অসম্পূর্ণ এবং এটি নিয়ে গবেষণারত বিজ্ঞানীরা দাবী করছেন যে সম্পূর্ণতা পেলে এই ব্যবস্থায় কয়েক ঘন্টা ; এমনকি ক্ষেত্রবিশেষ এগার দিন আগেও পূর্বাভাস পাওয়া যেতে পারে।
ভূমিকম্পের আধুনিক পূর্বাভাস ব্যবস্থা উদ্ভাবনের লক্ষ্যে ইসরায়েল ও জার্মানীর কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ে গঠিত একটি কনসোর্টিয়াম কাজ করে যাচ্ছে। এখানকার গবেষকেরা পূর্বাভাসের একটি গাণিতিক সমীকরণ দাঁড় করিয়েছেন বলে দাবী করেন যার ভিত্তিতে তৈরী সফটওয়্যার ভূমিকম্পের পুনরাবৃত্তির বিষয়ে নির্ভুলভাবে তথ্য বিশ্লেষণে সক্ষম। তবে সমীকরণের কার্যকারিতা এখনও শতভাগ প্রমাণিত হয়নি।
ফ্রান্সের রাষ্ট্রীয় মহাকাশ সংস্থা ‘সিনেস’ এর একটি উপগ্রহ ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা থেকে বিচ্ছুরিত তড়িচ্চুম্বকীয় তরঙ্গের হ্রাস-বৃদ্ধি বিশ্লেষণ করে বিশেষ তাৎপযপূর্ণ ফলাফল প্রদর্শনে সক্ষম। ২০০৪ সালে জাপনের দক্ষিণাঞ্চলে সংঘটিত ভূমিকম্পের পূর্বে এটি তাৎপযপূর্ণ সংকেত পাঠিয়েছিল। তবে এক্ষেত্রেও কার্যপদ্ধতি ও কার্যকারিতা এখন পর্যন্ত সুপ্রতিষ্ঠিত নয়।
অতএব, দেখা যাচ্ছে যে, এই মুহূর্তে নিশ্চিত কোন পূর্বাভাস ব্যবস্থা না থকলেও গবেষকেরা ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছেন। কোন একদিন অবশ্যই প্রতিষ্ঠিত হবে ভূমিকম্পের পূর্ণ পূর্বাভাস ব্যবস্থা। আমরা আশায় আছি। সবাই ভাল থাকুন
(অন্য পদ্ধতিগুলো নিয়ে পরবর্তী পর্বে আলোচনা করা হবে)
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:২৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




