ইনডাইরেক্ট সাইন!
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
প্রচন্ড বেগে বালিশটা কেঁপে উঠলো যেনো!সাদিয়া একবার চেষ্টা করলো চোখ দু'টো খোলার কিন্তু পারলো না। এই মূহুর্তে চোখ মেলে তাকানো টা দুনিয়ার সবচেয়ে কঠিন কাজ সাদিয়ার জন্য। চোখ বন্ধ রেখেই হাতড়ে বের করলো মোবাইলটা,তারপর 'ওকে' বাটনে ক্লিক করে আবারো বালিশের পাশে রেখে দিলো। সাদিয়ার মনে হলো,ঘুমের মাঝেই সে দিব্যি দেখতে পাচ্ছে,''রোজকার মতো আজকেও ফজরের আযানের পর ও এলার্ম বন্ধ করে মোবাইলটা রাখার কিছুক্ষন পরেই আম্মু রুমে আসলো,তারপর লাইট জ্বালিয়ে ফ্যান বন্ধ করে দিয়ে চলে গেলেন,তার কিছুক্ষন পর মসজিদে যাবার আগে আব্বু দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ওকে ডাকলেন ক'বার। ব্যাস,আস্তে আস্তে ঘুমটা কমে আসলে সে উঠে বসল বিছানায়।'' খানিকক্ষন পর আবারো এলার্মের শব্দ শুনতে পেলো সাদিয়া!প্রচন্ড বিরক্তির সাথে ভ্রু কুঁচকালো,আবার এলার্ম বাজে কেন এখন?সে তো একবারই এলার্ম দিয়েছে!উফ...! এলার্ম বেজেই চলছে একটানা। সাদিয়া চোখ বন্ধ রেখেই মোবাইলটা হাতে নিলো,কোন রকমে চোখটা একটু খুলে মোবাইলের দিকে তাকালো সে,এ কি?!! এলার্ম তো ওর মোবাইলে বাজছে না,তাহলে কার মোবাইলে বাজছে?! ঘাড় ঘুরিয়ে পাশে তাকাতেই ছোট-খাট একটা ধাক্কা খেলো! আস্তে আস্তে সবকিছু পরিস্কার হলো ওর কাছে,লাফ দিয়ে বিছানায় উঠে বসল সে,নিজেকে নিজের একটা কষে চড় লাগাতে ইচ্ছে করলো!
'হায়রে সাদিয়া!কি রকম মানুষ তুই?বিয়ের প্রথম দিন কেউ এভাবে মরার মতো ঘুমায়?!মানুষ নাকি বিয়ের পর নতুন জায়গায় যেয়ে টেনশনে ঠিক মতো ঘুমাতেই পারে না,আর তুই একজন!!যেখানেই কাৎ তো সেখানেই রাত!!'
একটা নিঃশ্বাস ফেলে খুব ধীরে ধীরে বিছানা থেকে নামতে যেয়ে হঠাত মনে হলো,সে এতো আস্তে আস্তে কেন নামছে?তার পাশের জন কি উঠবে না? ঘুমের জন্য তো কাল রাতে ঠিক মতো কেউ কারো সাথে কথাও বলেনি!মানুষটা যে তার মতোই ঘুম পাগল বুঝা গেছে কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, এতো দেখি তার থেকেও এক ডিগ্রী উপরে আছে,সে তো তবুও চোখ খুলে এলার্ম বন্ধ করে ঘুমায় কিন্তু এই জনাব তো এলার্মটাও বন্ধ করতে পারে না! সাদিয়া এবার বেশ শব্দ করেই বিছানা থেকে নামলো,লাইট জ্বালালো তারপর ব্যাগ খুঁজে ব্রাশ-পেস্ট বের করে লাইট জ্বালিয়ে রেখেই ওয়াশরুমে ঢুকলো।
জাহিদ প্রথমে একবার কপাল কুঁচকালো,তারপর খুব বিরক্তি নিয়ে বিড়বিড় করলো,
'কোন আক্কেল ছাড়া মানুষ এভাবে লাইট টা জ্বালালো?!ধুর... নিশ্চয়ই,এই কাজ আম্মা করছে!উফরে আম্মা...কেন যে আরামের ঘুমটা নষ্ট করো!' বলতে বলতে হঠাত মনে হলো,সে ফ্ল্যাশব্যাকে দেখতে পাচ্ছে, আম্মা তার মাথায় পাগড়ি পড়িয়ে দেবার সময় কাঁদছেন,তা দেখে সে জিজ্ঞেস করছে,
-আম্মা,আজকে তো তোমার ছেলের বিয়ে,আজকে কাঁদতেছো কেন?
আম্মা চোখ মুছতে মুছতে বললেন,
-খুশীতে কাঁদছিরে বাবা!আজ মনটা অনেক খুশী আমার!
পাশে দাঁড়ানো ছোট দুলাভাই ফিসফিস করে বললেন,
-শালা সাহেব,আম্মা এই জন্য কাঁদতেছে,এতোদিন আপনি তার ছেলে ছিলেন,আজকে থেকে আপনার শ্বাশুড়িও আপনাকে তার ছেলে দাবী করবে তাই!
জাহিদ কনুই দিয়ে দুলাভাইয়ের ভুঁড়িতে একটা গুঁতো দিয়ে বলল,
-ফরেন মিনিস্ট্রিতে চাকরী করতে করতে পুরাই কূটনা হয়ে গেছেন!খালি কূটনামী মার্কা চিন্তা!হুহ।
জাহিদ দৃশ্য গুলো মনে পড়তেই এক লাফে বিছানায় উঠে বসল। চোখ দুটো বড় বড় করে চারপাশ দেখতে লাগল...
হায় আল্লাহ,কি মানুষ সে!!বিয়ের প্রথম দিন সে মরার মতো এক ঘুমে রাত পার করে ফেলেছে!অবশ্য খুব আশ্চর্য্য হবার কিছু নেই,কারণ দোষ তো তার একার না! সে তো সারাদিনের ধকল সহ্য করে হলেও ঘুম ঘুম চোখে কথা বলার প্রিপারেশন রেখেছিলো,কিন্তু সাদিয়াই তো ২মি কথা বলে হাই তুলতে তুলতে বলেছিলো,
-আচ্ছা,সব কথা কি আমরা আজকেই বলে ফেলবো?পরে বলা যাবে না?মানে রাত তো অনেক হলো,ঘুম বাদ দিয়ে আজকে বক বক না করলেও তো হয়!
জাহিদ কথাটা শুনে আনন্দে আটখানা হয়েও আবার গম্ভীর হওয়ার চেষ্টা করে বলল,
-হুম,কথায় যুক্তি আছে!অন্যরা কি করে সেটা তো বিষয় না,আমাদের উচিত আমাদের জন্য যেটা ভালো হয় সেটাই করা!
সাদিয়া আবারো হাই তুলতে তুলতে মাথা দুলিয়ে সায় দিয়ে ঘুমাতে যাবার জন্য তৈরী হয়ে যায়। তা দেখে জাহিদও ততোক্ষন চেপে রাখা ঘুম ঘুম ভাবটাকে প্রকাশ করে হাই তোলা শুরু করেছিলো!
জাহিদ মাথা চুলকাতে চুলকাতে বুঝতে পারল লাইট সাদিয়া জ্বেলেছে,এবং সে যেনো উঠে তাই জ্বালিয়ে রেখে বাথরুমে গেছে।
বাহ!কি সুন্দর ইনডাইরেক্ট ওর্ডার!
সাদিয়া বের হয়ে দেখলো জাহিদ বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে। সাদিয়া একবার ভাবলো 'জাহিদ সাহেব' বলে ডাকবে,কিন্তু ভালো লাগলো না,শুধু একটু শব্দ করে কাঁশলো। জাহিদও কান খাঁড়া করে কাঁশি শুনলো,সে বুঝতে পারলো সাদিয়া বলতে চাচ্ছে,আপনি এখন অজু করার জন্য বাথরুমে যেতে পারেন। এটাও এক ধরণের ইনডাইরেক্ট সাইন!মেয়েটা দেখছি ভালোই ইনডাইরেক্টলি কাজ করতে পারে!
জাহিদ রেডি হয়ে রুম থেকে বের হওয়ার আগে একবার শব্দ করে দরজাটা লাগিয়ে গেলো! সাদিয়া কপাল কুঁচকালো!
এই ইন্ডাইরেক্ট সাইনের মানে কি?দরজাটা লাগাতে বলল?নাকি সে কোন কথা বলেনি দেখে একটু বিরক্তি প্রকাশ করলো!
এমন সময় সাদিয়ার শ্বাশুড়ি দরজায় নক করলেন,
-সাদিয়া উঠেছো?
দ্রুত জায়নামাজ ভাঁজ করে উঠে দাঁড়ালো সাদিয়া।
-জ্বী আম্মা আসেন,আমার নামাজ পড়া শেষ।
-মাশাআল্লাহ,এইতো ভালো মেয়ে,কি সুন্দর, বিয়ের পর প্রথম দিনটাই শুরু করলে আল্লাহকে স্মরণ করে। অনেক ভালো লাগল দেখে গো মা,আল্লাহ তোমাদের জীবনটাকে অনেক সুন্দর করে দিন।
সাদিয়ার মনটা খুব খুশী হয়ে গেলো,নতুন জীবনের প্রথম দিনটা সে এক মায়ের দোয়া নিয়ে শুরু করছে। তার ইচ্ছে করলো আম্মুকে একবার ফোন করতে,করলে নিশ্চয়ই তিনিও এমন দোয়া করবেন,কে জানে কাল সারারাত বেচারী ঘুমিয়েছে কি না! সাদিয়ার শ্বাশুড়ি আরো কিছুক্ষন ওর সাথে গল্প করে নিজের ঘরে চলে গেলেন।
সাদিয়া মোবাইলটা মাত্র হাতে নিয়েছে তখনই জাহিদের কন্ঠ শুনতে পেলো!কপালটা কুঁচকে মোবাইলটা রেখে দিলো! সাত সকালে যদি দেখে বউ মোবাইলে কথা বলছে,ডেফিনেটলি মনে মনে বিরক্ত হবে।
দুপুরে দিকে সাদিয়ার আম্মুরা সবাই আসলেন,তারা দুপুরে খেয়ে বিকেলে সাদিয়া-জাহিদকে নিয়ে যাবেন। সাদিয়া সকাল থেকেই শ্বাশুড়ির সাথে আঠার মতো লেগে আছে,উনি যা যা করতে বলছেন সে পাখীর মতো উড়ে যেয়ে তা ই করছে। মনে মনে আবার হাসছে,
'বাহ,সাদিয়া,তুই কতো কাজ করছিস আজকে,অথচ বাবার বাড়ি যখন ছিলি,আম্মু কাজের জন্য ডাকলেই বই নিয়ে বসতি!আর এখন?হিহিহি, গুড জব...!'
জাহিদ নাশতার টেবিলে বসে একবার ভাবলো,সাদিয়াকে জিজ্ঞেস করবে,
-সাদিয়া,তুমি কি নাশতা করেছো?না করলে বসতে পারো আমার সাথে!
কিন্তু একটু পরেই মত পাল্টালো!নাহ,প্রথম দিনেই সবার সামনে এভাবে জিজ্ঞেস করা যায় না!সবাই ক্ষেপাবে!
নাশতা সামনে নিয়ে ওর এমন চিন্তা করা দেখে মেঝ বোন মুখ টিপে হাসল। তারপর একটু জোরেই বলল,
-জাহিদ,তুই নিশ্চিন্ত মনে নাশতা করতে পারিস,তোর বউ কে খাওয়ানোর দায়িত্ব আমার,ওকে?
পাশ থেকে রুহি মানে বড় ভাগ্নিটা ফট করে বলল,
-মামা মনে হচ্ছে,মামী কে ছাড়া নাশতা করতে চাচ্ছে না!কই গো নানি?বউ কি শুধু আপনার সাথেই থাকবে,মামার কি হবে তাহলে?
হাসির রোল পড়ে গেলো ডাইনিং টেবিলে!জাহিদ কটমট করে রুহির দিকে তাকালো। রুহি তখন রান্নাঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে সাদিয়া কে ডাকলো কয়েকবার,কিন্তু সাদিয়া বের হলো না,সে পরে আম্মা-আপুদের সাথে খাবে তাই!
জাহিদ মনে মনে সুধালো,'যার জন্য করি চুরি সেই বলে চোর' এত্তগুলো টিটকারী হজম করলাম,আর ম্যাডাম বলে পরে খাবো! তারমানে এটাও একরকম ইনডাইরেক্ট সাইন!!সে বুঝালো,যে তার জাহিদের সাথে খাওয়ার ইচ্ছে নাই! হুহ
সাদিয়ার আম্মু দুপুরে খাওয়া শেষ করে ওর শ্বাশুড়িকে জিজ্ঞেস করলেন,
-তা আপা,কেমন দেখলেন বউ কে?আপনার মনের মতো মনে হয়?না হলে বলেন,দু'দিন যে আমার কাছে থাকবে ভালো করে সব শিখিয়ে দিবো!হাহাহা
সাদিয়ার শ্বাশুড়ি হেসে বললেন,
-নাহ আপা,এমন মেয়ে আবার মনের মতো বউ হবে না?মাশাআল্লাহ,যথেষ্ট বুদ্ধিমতি মেয়ে,আর ভুল-ত্রুটি তো একটু হবেই,তবে সেটা নিয়ে আপনি আর ভাববেন না সেগুলো আমিই শুধরে নিবো,এখন তো সে আমার সংসারের বউ তাই না? সাদিয়া ততক্ষনে সব কিছু গুছিয়ে নিজের রুমে দৌড়ে আসল। এসেই জলদি ব্যাগ গোছাতে লাগল,জাহিদ মোবাইল নেয়ার জন্য রুমে এসে দেখল সাদিয়া ব্যাগ গোছাচ্ছে! সে তখন দ্রুত বের হয়ে দুলাভাইকে এক পাশে ডেকে আনলো,
-দুলাভাই,আজকে কি আমাকেও ওদের বাড়ি যেতে হবে?আমি না গেলে হয় না?
-কাদের বাড়ি?
-আরে ওদের বাড়ি!
-ওদের ওদের করছো কেন?বলো তোমার শ্বশুড় বাড়ী,এতো খুঁজে একখান বউ এনে দিলাম,আর তুমি মিয়া বউ এর নাম নিতে লজ্জা পাও!!হায়রে!
জাহিদ কপট রাগ দেখিয়ে বলল,
-দুলাভাই পয়েন্টে আসেন,আমি না গেলে কি সমস্যা হবে?আমি যেয়ে ওখানে কি করবো?
-আরে মিয়া এটা নিয়ম,তোমাকে তো যেতেই হবে,আর তোমার শ্বশুড় বাড়ি তো তুমিই বেড়াবা সেখানে আর কে থাকবে? কেন,তোমার আপুর বিয়ের পর আমি এসে ছিলাম না তোমাদের বাসায়,ভুলে গেছো?
জাহিদ মুখ ভার করে বলল,
-আপনার সাথে আপুর কবে বিয়ে হয়েছিলো সেটাই মনে নাই,আর আপনি আছেন কি হয়েছিলো সেটা নিয়ে!! ধুর,দুলাভাই,এটা কি নিয়ম?আমি যাইতে পারবো না,আপনি ওদেরকে বুঝান!
-তোমার কি মাথা খারাপ হয়েছে?দুনিয়ার সবাই যায়,আর তুমি যেতে পারবে না?আম্মা শুনলে দিবে একটা ধোলাই!যাও,যেয়ে ব্যাগ গোছাও।
জাহিদ মুখটা বাংলার পাঁচ করে নিজের ঘরে আসল,সে দেখে সাদিয়া একদম রেডি হয়ে বসে আছে। মেজাজটা আরেকটু খারাপ হলো,বাবার বাড়ি যাবার জন্য ম্যাডাম একদম সবার আগে রেডি হয়েগেছে!আর জামাইর যে যেতে ইচ্ছে করছে না সে খবর একদমই নাই! রুম থেকে আবারো বের হয়ে গেলো সে। বের হতে হতে ভাবল,সাদিয়া রেডি হয়ে বসেছিলো,তার মানে সে কি কোন ইনডাইরেক্ট সাইন দিচ্ছিলো?যে আমি রেডী,তুমিও রেডি হও টাইপের কিছু!!
সাদিয়া এভাবে এসেই আবার জাহিদের চলে যাওয়া দেখে কিছুটা অবাক হলো!তারপর ওর মনে পড়লো,জাহিদের ব্যাগ তো গোছানো হয়নি! দ্রুত বের হয়ে জাহিদের ভাগ্নিটাকে ডেকে আনলো,ওকে বলল,জাহিদ কে জিজ্ঞেস করে তার জিনিসপত্র কোথায় কি আছে,কি কি নেয়া লাগবে তা একটু গুছিয়ে দেবার জন্য।
জাহিদ সোফায় বসে ছিলো,ভাগ্নি রুহি যখন এসে ওকে ডেকে রুমে নিয়ে আসল,এবং কি কি লাগবে জিজ্ঞেস করলো,তখন জাহিদ বুঝলো সাদিয়াই ওকে পাঠিয়েছে। তার মানে এটাও এক রকম ইনডাইরেক্ট সাইন!!!
গাড়িতে বসে সাদিয়া খেয়াল করলো জাহিদ সেই তখন থেকে মোবাইলে ডুব মেরে আছে! এপাশে যে ওর শ্যালক সুহাইল আর শ্যালিকা সুবাতা ওর কাজ দেখে মুখ টিপে হাসছে,আর সাদিয়া কে ক্ষেপাচ্ছে সে ব্যাপারে জাহিদ একদমই বেখেয়াল!
কি এতো করছে সে মোবাইলে?সাদিয়ার একবার ইচ্ছে করলো জিজ্ঞেস করতে,কিন্তু করলো না,শুধু একবার জোরে কাশি দিলো! জাহিদের ভাষায় সেটা হলো,ইনডাইরেক্ট সাইন!
কিন্তু জাহিদের কোন রেসপন্স নেই!ব্যাপার কি? সাদিয়া যে ইনডাইরেক্টলি ওকে সাইন দিচ্ছে সেটা কি জনাব বুঝতে পারছে না?! সাদিয়ার রাগ আরো বেড়ে গেলো! কোন রকম কথা ছাড়াই সে টান দিয়ে জাহিদের হাত থেকে মোবাইলটা নিয়ে গেলো,কোন দিকে না তাকিয়ে সেটাকে নিজের ব্যাগে ভরে মুখটা অন্যদিকে ঘুরিয়ে রাখল।
জাহিদের কিছুটা সময় লাগল,ব্যাপারটা বুঝতে! যখন বুঝতে পারল,তখন কিছুক্ষন অবাক হয়ে সাদিয়ার মুখের দিকে তাকিয়ে রইল,তারপর আস্তে করে বলল,
-আমাকে আগে থেকে ইনডাইরেক্টলি সাইন দিলেই হতো!আমি মোবাইল টা রেখে দিতাম,তাহলে তো আর এতো রাগ দেখতে হতো না!
সাদিয়া রাগী মুখে ওর দিকে চোখ ফিরিয়ে বলল,
-ইনডাইরেক্ট সাইন বুঝতে হলে ডিরেক্ট এটেনশন থাকা চাই,কিন্তু কারো তো আমার দিকে কোন খেয়ালই নাই!সমস্ত মনোযোগ ঐ মোবাইলে!এজন্য এবার ডিরেক্ট সাইন দিলাম,ওকে?
জাহিদ মাথা দুলিয়ে বলল,
-বুঝতে পেরেছি,ভুলটা আসলে আমারই ছিলো! এনিওয়ে,এখন থেকে কি তাহলে আমাকে ডিরেকটলিই সাইন দেয়া হবে,কোন ইনডাইরেক্ট সাইন দেয়া হবে না আর?
সাদিয়ার খুব হাসি পেলো!কিন্তু সে হাসি চেপে বলল,
-ইনডারেক্টলি তো আর কারো মনের ভাব বুঝা যায় না,তাই কি আর করা,ডিরেক্টলিই এখন থেকে সাইন দেয়া হবে।
জাহিদ এবার মিটমিট করে হেসে সাদিয়ার দিকে তাকিয়ে বলল,
-ধন্যবাদ,ইনডাইরেক্ট থেকে ডাইরেক্ট একশ্যানে আসার জন্য!এখন থেকে আমিও ডিরেক্টলি সাইন দিবো ওকে?
সাদিয়া হাসতে হাসতে মাথা দোলালো। তা দেখে জাহিদ কিছু বলতে চাচ্ছিলো,কিন্তু তার আগেই সুবাতা বলে উঠলো,
-কি ব্যাপার দুলাভাই?কি নিয়ে এতো হাসাহাসি!আপনি কি কোন জোকস বলেছেন নাকি আপু কে?কি জোকস বললেন,একটু শুনি আমরাও!
জাহিদ খুক খুক করে কেশে হাসতে হাসতে বলল,
-জোকস এখনো বলিনি,তবে অনেক কিছু বলার জন্য ইনডাইরেক্ট থেকে ডাইরেক্ট গ্রিন সিগন্যাল পেয়েছি,তুমি অবশ্য সেটা বুঝবে না,বুঝলে?
সাদিয়া আরো জোরে হেসে ফেলল,বোনের হাসি দেখে সুবাতাও বোকার মতো হাসতে লাগল! শুধু জাহিদ মুচকি হাসি দিয়ে দিয়ে সাদিয়ার দিকে তাকিয়ে রইল।
[উৎসর্গঃ সাদিয়া কে। সাদিয়া প্রায়ই একটানা বকবক শেষে আমাকে বলবে,'তোকে আমি এতক্ষন এতো কথা কেন বললাম,বলতো?এই জন্য বললাম,যাতে তুই আমার এক্সপিরিয়েন্স থেকে গল্প লেখার থিম খুঁজে পাস,বুঝলি?' আমিও মনে মনে বলি,বুঝলাম,ইহা-উহা সবই বুঝলাম!!]
১৩টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন
=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=
©কাজী ফাতেমা ছবি
মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।
হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।
ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন
মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে
ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন
মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি
গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন
জানা আপুর আপডেট
জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।
বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন