somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

অজয় শীল
মানুষের মাঝে মানবীয় গুণাবলী বিকশিত হোক, মানুষ সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে মানুষের সম্মান নিয়ে বেচে থাকুক। বাঘ, ভাল্লুক, জন্তু-জানোয়ারের বিশেষণে যেন আর বিশেষায়িত না হয়। এ উদ্দেশ্যে আমার মিশন "চরিত্র গঠন আন্দোলন"।

।। আপনি এখনো শেষ হয়ে যান নি, এখনো অনেক কিছু আছে পৃথিবীকে দেয়ার ।।

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমি ৮০ বৎসরের বয়স্ক এমন লোককে দেখেছি এখনো প্রবল আগ্রহ নিয়ে স্ব স্ব কাজে মনোনিবেশ করতে। তাঁরও ২ বৎসর, ৩ বৎসর, ৫ বৎসরের প্ল্যান রয়েছে। এবং একে একে সম্পাদন করার কাজে উনি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ও সদা তৎপর। কী উৎসাহ উনার মধ্যে !!! মাঝে মাঝে লজ্জা হয়, কেন আমি উনার মতো হতে পারলাম না। কেন একটা কাজে ব্যর্থ হওয়ার সাথে সাথে পৃথিবীর যত হতাশা আছে সব আমার নিজের মাথার উপর এসে পড়ে।

আবার বেশির ভাগ মধ্য বয়স্ক লোককে (যাঁদের বয়স ধরুন ৫০+) দেখি প্রচণ্ড রকমের হতাশাগ্রস্থ। কোন রকমে চাকুরী থেকে অবসরে গেলেই উনার জীবনের সকল কর্মকাণ্ড যেন নিমিষেই শেষ হয়ে গেল। এ রকম চরমমাপের হতাশাগ্রস্থ লোকগুলো সবসময় নেতিবাচক চিন্তায় মগ্ন থাকে। উনাদের জীবনই আসলে ঐ অবসর গ্রহণের মুহূর্ত পর্যন্ত। এ সমস্ত লোকগুলো থেকে আর সৃষ্টিশীল কিছু পাওয়া যায় না। এঁরা পৃথিবীকে নতুন কিছু দিতে পারে না।

দেখুন তফাত টা। একদিকে আশি বছরের বৃদ্ধের রয়েছে পূর্ণ তারুণ্য আর অন্যদিকে ৫০ বা ৬০ পেরুলেই উনি হয়ে যান লাঠি হাতে ন্যুজ এক বুড়ো। তাঁর মানে বার্ধক্য আসলে বয়সে বা শরীরে নয়, বার্ধক্য আমাদের মনে।

৩০ পার হলেই আমাদের মনের এক ব্যাপক পরিবর্তন আসে। তখন তারুণ্য আস্তে আস্তে বার্ধক্যে মোড় নেয়। বিয়ে হয়, ছেলে-মেয়ে হয়, ওরা বড় হয়। আর কোন রকম একটা মেয়ে বা ছেলে বিয়ে দিতে পারলেই আমরা বৃদ্ধের কাতারে গিয়ে পড়ি। আহ কি শান্তি, পড়াশুনা, চাকুরী, বিয়ে, ছেলেমেয়ে, তাদের বিয়ে, চাকুরী থেকে অবসর আর কি। অনেক হয়েছে এ জীবনে। আসলে এভাবে যারা চিন্তা করে তাঁরা অবসরের পর আর কোন কাজ হাতের কাছে পায় না। আমরা পৃথিবীর শ্রেষ্ট জীব হয়েও এখনো গরু, ছাগল, পশু পাখির মতো একই ছন্দে একই মাত্রায় জীবনটাকে সাজাই আর ইহকালের কার্য সাঙ্গ করি।

মানুষের আসলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় অবসরকাল। জীবনের শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে পরবর্তী প্রজন্মকে কিছু উপহার দেয়ার খুবই মোক্ষম সময়। যা আমরা অযত্নে অবহেলায় শেষ করে কেবল মৃত্যুর প্রহর গুনি।

কোন মানুষ তাঁর শিশু-কৈশোরকাল কাটে পড়ালেখায়, যৌবন যায় জীবিকা নির্বাহে অতঃপর বার্ধক্য কাটে স্রষ্টার সান্নিধ্যে আর অবহেলায়। স্রষ্টার সান্নিধ্য শিশুকাল থেকে অজন্ম হওয়া উচিৎ। এক্ষেত্রে অবসর গ্রহণের পরবর্তী সময়টা আসলে নিজেকে পৃথিবীর বুকে স্মরণীয় করে রাখার গুরুত্বপূর্ণ সময়। যাঁরা এ সময়টাকে সদ্ব্যবহার করে তাঁরা পৃথিবীতে স্মরণীয় হয়ে থাকেন।

আপনি আজ মরলেন তো কাল আপনার ছেলেমেয়ে মনে রাখলো পরশু বড়জোর নাতি নাতনিরা মনে রাখল। এর পর পৃথিবীতে আপনার অস্তিত্ব আর থাকবে না। আপনি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবেন। এটাই কি জীবন? তাও আবার মানুষের জীবন !!! পৃথিবীর প্রত্যেকটি মানুষ যদি মৃত্যুর আগে অন্তত তাঁর জীবন থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা পরবর্তী প্রজন্মকে দিয়ে যেত তাহলে এসব জীবনের এবং এসব ঘটনার আর পুনরাবৃত্তি বোধহয় হতো না। পরবর্তী প্রজন্ম তাঁর জীবন কে অন্যভাবে সাজানোর সুযোগ পেত।

আমরা মানুষরা আসলেই খুবই স্বার্থপর জাতি। আমার ব্যর্থতা আমি অন্যের কাছে শেয়ার করে যেমন নিজেকে ছোট করতে চাইনা তেমনই আমার ভুলের চোরাবালিতে অন্যরাও হাবুডুবু খাক তা-ই চাই। এতে করে আমাকে এক্সট্রা কোন কাজ করতে হচ্ছে না। এক্সট্রা কোন পরিশ্রম করতে হচ্ছে না। সবাই মরুক ঐ ভুলের চোরাবালিতে। আমরা সবাইকে ভালবাসি, সবাইকে নিয়ে মরার জন্য; অন্যদের বাঁচিয়ে রাখার জন্য নয়।

আমাদের মাইন্ড সেট চেঞ্জ করতে হবে। উদার হতে হবে। পরিশ্রমী হতে হবে। পরোপকারী হতে হবে। দায়িত্ব নিতে শিখতে হবে। আর পরবর্তী প্রজন্মের যদি সৃষ্টি আমরাই করি তবে তাদেরকে আমাদের নিজের অভিজ্ঞতা লব্ধ পথটি বাতলিয়ে দিতে হবে। তাদের কোন চাপ প্রয়োগ করা যাবে না। তাদের চিন্তা চেতনায় স্বাধীনতা দিতে হবে এবং নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নেয়ার সাহস যোগাতে হবে। তবেই আমরা প্রজন্মের পর প্রজন্ম স্মরণীয় হয়ে থাকবো।

এটাই হোক মানব জীবনের লক্ষ্য। পৃথিবী সকল মানুষ জন্মজন্মান্তর স্মরণীয় হয়ে থাক মানুষের যোগ্যতা নিয়ে।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৩৩
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শোকের উচ্চারণ।

লিখেছেন মনিরা সুলতানা, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সকাল ১০:১৬

নিত্যদিনের জেগে উঠা ঢাকা - সমস্তরাত ভারী যানবাহন টানা কিছুটা ক্লান্ত রাজপথ, ফজরের আজান, বসবাস অযোগ্য শহরের তকমা পাওয়া প্রতিদিনের ভোর। এই শ্রাবণেও ময়লা ভেপে উঠা দুর্গন্ধ নিয়ে জেগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যা হচ্ছে বা হলো তা কি উপকারে লাগলো?

লিখেছেন রানার ব্লগ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১:২৮

৫ হাজার মৃত্যু গুজব ছড়াচ্ছে কারা?

মানুষ মারা গিয়েছে বলা ভুল হবে হত্যা করা হয়েছে। করলো কারা? দেশে এখন দুই পক্ষ! একে অপর কে দোষ দিচ্ছে! কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

আন্দোলনের নামে উগ্রতা কাম্য নয় | সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যবাদকে না বলুন

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



প্রথমেই বলে নেয়া প্রয়োজন "বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার সমস্ত অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে" ধীরে ধীরে দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসছে। ছাত্রদের কোটা আন্দোলনের উপর ভর করে বা ছাত্রদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোন প্রশ্নের কি উত্তর? আপনাদের মতামত।

লিখেছেন নয়া পাঠক, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৬

এখানে মাত্র ৫টি প্রশ্ন রয়েছে আপনাদের নিকট। আপনারা মানে যত মুক্তিযোদ্ধা বা অতিজ্ঞানী, অতিবুদ্ধিমান ব্লগার রয়েছেন এই ব্লগে প্রশ্নটা তাদের নিকট-ই, যদি তারা এর উত্তর না দিতে পারেন, তবে সাধারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকুরী সৃষ্টির ব্যাপারে আমাদের সরকার-প্রধানরা শুরু থেকেই অজ্ঞ ছিলেন

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:০৭



আমার বাবা চাষী ছিলেন; তখন(১৯৫৭-১৯৬৪ সাল ) চাষ করা খুবই কষ্টকর পেশা ছিলো; আমাদের এলাকাটি চট্টগ্রাম অন্চলের মাঝে মোটামুটি একটু নীচু এলাকা, বর্ষায় পানি জমে থাকতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×