somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দিনপঞ্জি - ১

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রতিদিন একই ব্যস্ততা আর ভাল লাগছিল না বলেই ঝিম মেরে পড়ে থাকার জন্য আজ বাসায়। কিন্তু বাইরের গনগনে রোদের তেজ ঘরে এসেও ঝিম মেরে থাকতে দিচ্ছেনা। তাই গুটগুট করে ঘরময় ঘুরছি আর ভাবছি, হাতে এক গ্লাস ঠান্ডা লেবু পানি। ভাবছিলাম 'চিঠি' নিয়ে। 'সবিনয় নিবেদন' শেষ করে চিঠি নিয়েই ভাবছি, পড়ছি। নিজের চিঠির বাক্সটা হাতের কাছে না থাকায় অন্যদের গুলোতেই ঘুরে বেড়াচ্ছি, মনেমনে নেড়েচেড়ে নিচ্ছি। কিছু আগে আবার পড়লাম 'বুদ্ধদেব গুহ'র এই চিঠিটা। ভাবছি পুরো বইটাই আবার শুরু করে দিব :-)

"কুর্চি,

তোমার চিঠি হঠাৎ এই শীতের সকালে এক রাশ উষ্ণতা বয়ে আনলো। পাতা ঝরে যাচ্ছে সামনের শালবনে। বিবাগী হচ্ছে ভোগী। রিক্ততার দিন আসছে সামনে। এরই মধ্যে তোমার চিঠি যৌবনের দুতীর মতো; এলো এক ঝাঁক টিয়ার উল্লাসী সমবেত সবুজ চিৎকারের মতো। দুর্বোধ্য আপাত। কর্কশ শব্দমঞ্জরীও কী দারুন মুগ্ধতা বয়ে আনে কখনো কখনো, কী দারুন ভাবে সঞ্জীবিত করতে পারে অন্যকে।
তাই নয়?
তার মানে এই নয় যে- তোমার চিঠি দুর্বোধ্য। উপমার খুঁত ক্ষমা করে দিও।
কেমন আছ তুমি? জানতে চাইলেও জানতে পাই কই?

সকাল থেকেই তোমাকে আজ খুব সুন্দর একটা চিঠি লিখতে ইচ্ছে করছিল। ঘুম ভাঙ্গার পর থেকেই তোমার কথা মনে পড়ছিল খুবই। আজকে ঘুম ভাঙ্গলো বড় এক চমকে। এক জোড়া পাখির ডাকে ঘুম ভাঙ্গলো। যে পাখিদের ডাক বড় একটা শুনিনি এদিকে। কম্বল ছেড়ে দৌড়ে বাইরে গিয়ে দেখি- এক জোড়া স্কারলেট মিনি-ভেট এসে বসেছে আম গাছের মাথায়। আমার ঘুম ভাঙ্গা নিয়ে পাখিরা। আহা! রোজই যদি আসতো। আর তারপরই তোমার এই চিঠি। দিন আজকে ভালো যাবে আমার।
বলছিলাম যে, সকাল থেকেই তোমাকে সুন্দর একটি চিঠি লিখবো ভাবছিলাম। কিন্তু সুন্দর সুখের যা কিছু ইচ্ছা তা দমন করার মধ্যেও বোধহয় এক ধরনের গভীরতর সুখ নিহীত থাকে। থাকে না?

আজ চিঠি লিখবোনা তোমাকে। তার বদলে একটি স্বপ্নহার পাঠাচ্ছি, লেখক কবি না। তবুও তার নাম গোপন থাক। কল্পনা করেই খুব লাগছে যে, তুমি আমার চিঠি কোলে নিয়ে বসে আছ, জানালার পাশে। যে মানুষটি তোমার মিষ্টি-গন্ধ কোলের গন্ধ পায়নি কখনও, পাবেও না কোনদিন, তার চিঠি সেই পরশে গর্বিত হয়ে উঠেছে যে, এই ভেবেই কত সুখ।

কি যে দেখেছিলাম তোমার ঐ মুখটিতে কুর্চি। এত যুগ ধরে কত মুখইতো দেখলো এই পোড়া চোখ দু’টি। কিন্তু, কিন্তু এমন করে আর কোনো মুখ’এইতো আমার সর্বস্বকে চুম্বকের মত আকর্ষণ করেনি। ভালো না বাসলেই ছিল ভালো। বড় কষ্টগো ভালোবাসায়। ভালো তো কাউকে পরিকল্পনা করে বাসা যায় না। ভালোবাসা হয়ে যায়, ঘটে যায়। এই ঘটনার ঘটার অনেক আগের থেকেই মনের মধ্যে প্রেম পোকা কুরতে থাকে। তারপর হঠাত’ই এক সকালে এই দুঃখ সুখের ব্যাধি দূরারোগ্য ক্যান্সারের মতই ধরা পড়ে। তখন আর কিছুই করার থাকে না। অমোঘ পরিণতির জন্যে অশেষ যন্ত্রনার সংগে শুধু নীরব অপেক্ষা তখন।

কেউই যেনো কাউকে ভালো না বাসে। জীবনের সব প্রাপ্তিকে এ যে অপ্রাপ্তিতেই গড়িয়ে দেয়। তার সব কিছুই হঠাৎ মূল্যহীন হয়ে পরে। যাকে ভালবাসে তাকে নইলে তার আমিত্বই অনস্তিত্বে পৌঁছায়। হুঁশ থাকলে এমন মুর্খামি কেউ কি করে? বল? সেই জন্যই বোধহয় হুঁশিয়ারি মানুষদের কপালে ভালবাসা জোটে না। যারা হারাবার ভয় করে না কিছুতেই, একমাত্র তারাই ভালবেসে সব হারাতে পারে। অথবা, অন্য দিক দিয়ে দেখলে মনে হয়, যা-কিছুই সে পেয়েছিল বা তার ছিল; সেই সমস্ত কিছুকেই অর্থবাহী করে তোলে ভালবাসা। যে ভালবাসেনি, তার জীবনও বৃথা!
তবুও… বড় কষ্ট ভালবাসায়!

কুর্চি দেখি কি করতে পারি তোমাদের সাথে বেড়াতে যাবার। ইচ্ছে তো কত কিছুই করে। এই জীবনে ক’টি ইচ্ছে পূর্ণ হলো বলো? কারই’বা হয়? এমনিতে আমার অনেক কষ্ট। এমন করে ডাক পাঠিয়ে আর কষ্ট বাড়িওনা। একা একা মজা করতেও বিবেকে লাগে। যার বিবেক বেঁচে থাকে, তার সুখ মরে যায়। সুখী হবার সহজ উপায় বিবেকহীন হওয়া। বিবেক বিবশ হলেই বাঁচি।
ভালো থেকো,

তোমার পৃথু দা"
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:০৮
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৫

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না
অহনা বলেছিল, আমি জানি আমি তোমাকে পেয়েছি সবখানি
আমি তাই নিশ্চিন্তে হারিয়ে যাই যখন যেখানে খুশি

অহনা বলেছিল, যতটা উদাসীন আমাকে দেখো, তার চেয়ে
বহুগুণ উদাসীন আমি
তোমাকে পাওয়ার জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিয়াল ফিলিস্তিনীরা লেজ গুটিয়ে রাফা থেকে পালাচ্ছে কেন?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১১ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



যখন সারা বিশ্বের মানুষ ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ফেটে পড়েছে, যখন জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে সাধারণ সদস্য করার জন্য ভোট নিয়েছে, যখন আমেরিকা বলছে যে, ইসরায়েল সাধারণ ফিলিস্তিনীদের হত্যা করার জন্য আমেরিকান-যুদ্ধাস্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাফসানের মা হিজাব করেন নি। এই বেপর্দা নারীকে গাড়ি গিফট করার চেয়ে হিজাব গিফট করা উত্তম।

লিখেছেন লেখার খাতা, ১১ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩


ছবি - সংগৃহীত।


ইফতেখার রাফসান। যিনি রাফসান দ্যা ছোট ভাই নামে পরিচিত। বয়স ২৬ বছর মাত্র। এই ২৬ বছর বয়সী যুবক মা-বাবাকে বিলাসবহুল গাড়ি কিনে দিয়েছে। আমরা যারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ এঁটেল মাটি

লিখেছেন রানার ব্লগ, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৫৬




শাহাবাগের মোড়ে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলাম, মাত্র একটা টিউশানি শেষ করে যেন হাপ ছেড়ে বাঁচলাম । ছাত্র পড়ানো বিশাল এক খাটুনির কাজ । এখন বুঝতে পারি প্রফেসদের এতো তাড়াতাড়ি বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাইলট ফিস না কী পয়জনাস শ্রিম্প?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১২ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:৪০

ছবি সূত্র: গুগল

বড় এবং শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাশে ছোট ও দূর্বল প্রতিবেশী রাষ্ট্র কী আচরণ করবে ? এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধিক্ষেত্রে দুইটা তত্ত্ব আছে৷৷ ছোট প্রতিবেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×