১৯৯৩ সাল থেকেই দেয়ালে দেয়ালে লেখা দেখেছিলাম,
জামাত-শিবির রাজাকার......এই মুহুর্তে বাংলা ছাড়া।
জামাত তুই রাজাকার......এই মুহুর্তে বাংলা ছাড়।
ইসলামী ব্যাংককে বর্জন করেছি অনেক আগেই। তাই এটা নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই।
১৯৯৫ সালের কথা, তখন স্কুলে পড়তাম। বেসরকারী ব্যাংক তখন হাতে গোনা মাত্র কয়েকটা। বাড়ী থেকে যে হাত খরচা দিত তা সঞ্চয় করার লক্ষে ইসলামী ব্যাংকের উত্তরা শাখায় একটি একাউন্ড করি। তখন জানতাম না ইসলামী ব্যাংক একটি জামাতি ব্যাংক। একদিন দুপুর বেলা ব্যাংকে গেলাম, টাকা জমা দিতে। গিয়ে দেখি মোটামুটি সবাই নামাজ পড়তে দাড়িয়েছে। তখন অপেক্ষা করতে লাগলাম একজন অফিসারের টেবিলের সামনে। হঠ্যাত লক্ষ করলাম, ঐ টেবিলের উপরে দুই-তিনটা শিবিরের চাদা আদায়ের রশিদ বই। একটা বই হাতে নিলাম, নিয়ে দেখি পাশ বইয়ের পাতায় এন্ট্রি রয়েছে ১০ টাকা, থেকে ১০০ টাকা জমা হয়েছে এত এত তারিখে। সেইদিন আমি আর টাকা জমা দেইনি। তার পরের দিন চেক বই নিয়ে গেলাম, আগে জানলাম আমার কত টাকা জমা আছে আর কত টাকা তুলতে পারবো। ক্যাশিয়ার বললো, ২৭০০ টাকা জমা আছে ২৬০০ টাকা তুলতে পারবো। ২৬০০ টাকা চেকে লিখে টাকা তুললাম। অবশিষ্ঠ চেক বইয়ের ৮ টি পাতা ঐখানেই ছিড়ে ফেললাম। এক অফিসার আমাকে বললো এইটা কি করলেন ? আপনার নামে তো মামলা হবে। বললাম হলে হোক সমস্যা নাই। ব্যাংক থেকে বের হয়ে এলাম। জীবনে আর কোন ইসলামী ব্যাংকে যাবো না বলে প্রতিজ্ঞা করে। আর যাইনি কখনো।
তারপরের গল্প, পারসোনাল নামে এক টিস্যু পেপার কোম্পানী আছে। আমার বাসার সামনেই ফ্যাক্টরী। ২০১১ সালের শেষের দিকে পারসোনাল টিস্যু কোম্পানী থেকে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কে বলা হলো, গাজীপুরের একক পরিবেশক হওয়ার জন্য। আমি রাজী হলাম তারপরে তারা আমাকে একটা চিঠি দিলো, টাকা জমা দিয়ে প্রোডাক্ট উত্তোলন করার জন্য। চিঠি খুলে চোখ আমার চরক গাছ। তাতক্ষনিক ফোন দিয়েই বললাম, এই ব্যবসা করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। জানতে চাইলো কারন কি ? বললাম, আপনারা ইসলামী ব্যাংকে ব্যাংকিং করেন তাই না ? উত্তর দিল হা। বললাম এটাই হচ্ছে কারন। তাদের সাথে ব্যবসা করিনি।
কেউ বিশ্বাস করবেন ? আমি এখনো দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনে যাইনি। কারন হচ্ছে কেয়ারী সিন্দাবাদ ও আরো কয়েকটা জামাতি মালিকানার জাহাজ টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনে চলাচল করে তাই।
আমার এক দুলাভাই বিয়ের জন্য এক পাত্রী দেখেছিল। বাড়ী থেকে নির্দেশ দিয়েছিল মেয়েটিকে দেখে আসার জন্য। আমি গিয়েছিলাম ওদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। গিয়ে দেখি ঐ ভদ্রলোকের মানে মেয়ের বাবার টেবিলে নয়া দিগন্ত পত্রিকা ও সংগ্রাম পত্রিকার ছড়াছড়ি। তাতক্ষনিক বললাম আমার একটু কাজ আছে বলে বের হয়ে এলাম, এসেই দুলাভাইকে ফোন দিলাম এইটা কই আসলাম ? দুলাভাই জনতে চাইলো কেন কি হয়েছে ? বললাম এই ভদ্রলোক কোন দলের রাজনীতি করে ? দুলাভাই বললো জানি না তো। বললাম ঠিকাসে লাইন কাটেন। তারপরে পাশের একটা চায়ের দোকানে খোজ নিয়ে জানতে পারলাম উনি একসময় জামাতের স্থানীয় উপজেলার আমীর ছিলেন। বিয়ে করা আমার শেষ।
প্রতিজ্ঞা প্রতিজ্ঞাই জীবনে কোনদিন ইসলামী ব্যাংক বা জানামতে জামাতিদের কোন প্রতিষ্ঠানে বা তাদের সাথে কোন সম্পর্কে জড়াবো না। এটা কেন ? আমার জন্য ? আমার নিরাপত্তার জন্য ? না মোটেই না। আমার দেশের নিরাপত্তার জন্য।