............বুয়েটে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়া ছেলেটি ভাবে , "ইস ,যদি ইলেক্ট্রিক্যাল পড়তে পারতাম !!! ..."
............অল্পের জন্য বুয়েটে চান্স না পাওয়া ছেলেটি ঢাবির এপ্লাইড ফিজিক্সে ভর্তি হয়ে ভাবে , " বুয়েটে যে কেন একটা সাবজেক্ট পেলাম না !!যেকোন একটা সাবজেক্ট পেলেই বিন্দাস হতো ... " ।
.........ঢাবিতে ওয়েটিং এ থেকে চান্স না পাওয়া ছেলেটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মেসিতে ভর্তি হয়ে ভাবে " ধ্যত্তুরি , ঢাবি টা মিস হয়ে গেল ...।। আবারো হতাশ হইয়া গেলাম ...।।"
.........ঢাবি , জবি কোথাও চান্স না পেয়ে বাংলা কলেজে ফরম তুলে ছেলেটি মনে মনে ভাবে " ইসস , জগন্নাথেও যদি যেকোন একটা সাবজেক্ট এ ভর্তি হতে পারতাম , কত্ত ভালো হতো...!! "
এগুলো হল আমাদের দেশের স্টুডেন্টসদের হতাশা ।। যে যেখানেই থাকুক সবাই কেমন জানি সবার পজিশান থেকেই হতাশ ।। অথচ বাস্তবতা সম্পূর্ণ এর উল্টো ।। দুই একটা বিষয়ে একটু বলি ...
বাংলাদেশের প্রত্যেকটা পাবলিক ইউনিভার্সিটিতেই যথেষ্ট পরিমাণ ফেসিলিটি আছে স্টাডি করার , আছে পর্যাপ্ত স্টাডি ম্যাটারিয়ালস ।। আমার জানামতে এমন একজন স্টুডেন্টস ও নাই যে তার ভার্সিটিতে কোন একটা ইকুইপমেন্ট এর অভাবে গবেষণা করতে পারে নাই , বা তার পড়াশুনার জন্য যথেষ্ট পরিমাণ কিছু পাই নাই ।।
কোথাই কি আছে না আছে তা নিয়ে মাথা ঘামিয়ে তো তোমার লাভ নেই , তুমি চিন্তা করো যে তুমি তোমার স্টাডি ম্যাটারিয়ালস গুলো ক্যাম্পাস থেকে ঠিকমত পাচ্ছো কিনা ।। এখন তুমি যদি ভাবো যে , তোমার ক্যাম্পাসে কোথাও ওয়াইফাই নাই আর ঢাবিতে টয়লেটে গেলেও ওয়াইফাই পাওয়া যায় তাহলে সারাজীবন হতাশ ই থেকে যাবা ।।
এবার আসি ভার্সিটি লাইফের পরের অংশে যাকে আমরা বলি লাইফের প্রফেশনাল পিরিয়ড ।। যারা গ্র্যাজুয়েশন শেষে স্কলারশিপ নিয়ে হাইয়ার স্টাডি করতে চাও , তাদের বলি ...
বাইরের ইউনিভার্সিটি গুলোতে যখন তুমি এপ্লাই করবা তারা কিন্তু তোমাকে বুয়েটে কিংবা ঢাবিতে পড়া নিয়ে প্রাওরিটি দিবে না , তারা প্রাইওরিটি দিবে তোমার সিজিপিএ + ওদের ক্যাম্পাসের কিছু রিকুয়ারমেন্টস লাগে ওইগুলো , যেমন ঃ ইউ এস এ কিংবা কানাডাতে যারা পড়তে যাবা তাদের জি আর ই , টুফেল কিংবা IELTS দিতে হবে , সাথে তারা তোমার কোন পাব্লিকেইশন্স থাকলে স্বভাবতই প্রাইওরিটি দিবে ।। তেমনি প্রত্যেক দেশের প্রত্যেক ভার্সিটির জন্যই স্পেসিফিক কিছু রিকুয়ারমেন্টস আছে ।। লক্ষ্য করো , কোন ভার্সিটির কোন প্রফেসর তোমাকে জিজ্ঞেস করবে না যে তুমি বাংলাদেশের কোন ভার্সিটি থেকে পড়ে আসছো ।। ওরা দেখবে তোমার ডিপার্টমেন্ট এবং রেজাল্ট ।।
এবার দেশের কথাই আসি , গত দুই বছর আগে বিসিএস এ ফার্স্ট হয়েছে ইডেনের এক ছাত্রী ।। হাউ ইজ ইট পসিবল ?? পসিবল , কারন ওই মেয়েটি হতাশ হয়নি , সে তার দ্বারা যতটুকু সম্ভব এচিভ করার চেষ্টা করেছে এবং ফাইনালি করেছেও ।। সময়কে ন্যানোসেকেন্ডে ভাগ করে সে চেষ্টা করেছে প্রোপারলি ইউটিলাইজ করার ।।
মেডিকেল এবং ইঞ্জিনিয়ারিং এর কিছু সেক্টর বাদে বাকি সব সরকারি সেক্টরেই মুটামুটি সবাই পার্টিসিপেট করতে পারে ।। এক্ষেত্রে কোন স্পেসিফিক ভার্সিটির কাউকে প্রাধান্য দেওয়া হয় বলে আমার জানা নাই ।।
,
একটা ঘটনা বলি , ২০১৩ সালে আমাদের মেকানিক্যাল এর একটা টিম গিয়েসিলাম কুয়েটে একটা রোবোটিক কম্পিটিশিন এ ।। বুয়েট , আই ইউ টি , এম আই এস টি সহ সবগুলো ইঞ্জিনিয়ারিং ভার্সিটি এবং কিছু প্রাইভেট ভার্সিটি পার্টিসিপেট করে ।। কিন্তু , ওই কম্পিটিশন এ ফার্স্ট হয়ে যায় বি আই ইউ টি নামের একটা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্টস রা ।। বুঝতে পারসো ?? একটা ভাল ভার্সিটিই সব না।।
সবশেষে একটা কথা বলি , একটা ভার্সিটি কখনোই তোমার সাফল্যের প্রধান কারন নয় , হতে পারে একটা অন্যতম কারন ।। তোমার সাফল্যের প্রধান কারন তুমি নিজে ।। যেখানেই পড়ো নিজের পজিশনটাকে কখনোই ছোট করে দেখো না ।। মনে রাখবা , তোমার ভেতরে পটেনশিয়াল থাকলে পৃথিবী সেটা জানবেই ............।।