বামরা গনতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। বিশ্বাস শব্দটির সাথে বামদের এক ধরনের শত্রুতাও সর্বজনবিদিত। বর্তমান বাম নিয়ন্ত্রিত জগাখিচুড়ি সরকার গত দু'দিন ধরে কতিপয় ধর্মবিদ্বেষী ব্লগারদের গ্রেফতার করা শুরু করেছে।
এই ধর্ম বিদ্বেষীদের গ্রেফতারের দাবি সাধারন মানুষ অনেক আগে থেকেই করে আসছিলো। এক বছর আগে হাইকোর্টও এদের বিরুদ্ধে রুলিং দিয়েছে।
এমনকি বর্তমানে তাদের লেখালেখি পত্রপত্রিকায় প্রকশিত হওয়ার পরে ২৩ দিন অতিবাহিত হয়েছে। অবশেষে দায়সারা হলেও সরকার চেষ্টা করছে ধর্ম সম্রাজ্যে তাদের হৃত গৌরব পুনরুদ্ধারের। সেই প্রয়োজনে তাদের নানাবিধ নাটক , উপনাটক, নাটিকা ইত্যাদি সাজাতে হচ্ছে। সেই নাটক সব যে একপর্বে সমাপ্য, তাও নয়। বরং ইন্ডিয়ার ঘটিষ্ট এই সরকারের বাম অংশ ইন্ডিয়ার সিরিয়ালগুলোর অনুকরন করতেই বেশি পছন্দ করছেন।
হেফাজতে ইসলামের লংমার্চ ঠেকানোর জন্য সরকারের আপ্রান চেষ্টায় আমরা কেউই বাধ সাধতে চাই না। তবে সরকারের কোন অংশ সেই চেষ্টা করছে তা একটু খতিয়ে দেখার চেষ্টা করা যেতে পারে।
দেখা যাক বর্তমান সরকারে বাম অংশগ্রহন কতটা.....
১। ব্যারিষ্টার শফিক আহমদ আইন মন্ত্রণালয়,
২। আবুল মাল আবদুল মুহিত অর্থমন্ত্রণালয়,
৩। হাসানুল হক ইনু তথ্য মন্ত্রণালয়,
৪। দিলীপ বড়ুয়া শিল্পমন্ত্রণালয়,
৫। দপ্তরবিহীনমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত,
৬। আ ফ ম রুহুল হক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়,
৭। নূরুল ইসলাম নাহিদ শিক্ষা মন্ত্রণালয়,
৮। বেগম মতিয়া চৌধুরী খাদ্য মন্ত্রণালয়,
৯। শাহজাহান খান নৌ মন্ত্রণালয়,
১০। এ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান গণপূর্ত মন্ত্রণালয়,
১১। ইয়াফেস ওসমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
.......... .........
বাম নেতা নূহ উল আলম লেলিনকে প্রেসিডিয়ামের সদস্য করা হয়েছে। এ ছাড়াও আরো অনেক সাবেক বামনেতাদের প্রশাসন ও দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন, সবার নাম উল্লেখ করলাম না।
এখন কথা হচ্ছে, একসময় যারা বঙ্গবন্ধুর বিচার চেয়েছেন, বঙ্গবন্ধুর চামড়া দিয়ে ডুগডুগি বাজাতে চেয়েছেন, এমনকি এই বাম দলগুলো প্রথম বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ছয় দফারও বিরোধীতা করেছিলেন। তারা তাদের খোলস থেকে কতটা বের হয়ে আসতে পেরেছেন বা কতটা আওয়ামী মানসিকতায় আসতে পেরেছেন এটা নিয়ে আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাদের শুরু থেকেই সন্দেহ ছিলো।
তারপরেও ধরে নিলাম শাহবাগ আন্দোলনে এরা সরকারের উপকার করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এদেশে সেই ৭২ সাল থেকে , বামরা যেদিকে চায় , সাগর শুকিয়ে যায় । এভাবেই তাদের বুদ্ধিতে শাহবাগ বুমেরাং হলো। শেখ হাসিনা ও তাদের আওয়ামী পন্থী অংশ ধারনা করলেন সমস্যা নাই, বাম অংশের হাতেই রয়েছে শাহবাগ আন্দোলন।
কিন্তু লেনিন সাহেব তার ম্যাডামকে জানিয়ে দিলেন এই আন্দোলনের বক্তৃতা আসলে তিনি লেখেন না।
মানে হচ্ছে অন্য কেউ লেখে। যাই হোক আওয়ামী পন্থিরা হয়তো ভুলে গেছেন যে এক জায়গায় ১০ জন বাম নেতা থাকলে সেখানে দল থাকে ১৩ টা। কারন এরা এক একজন এতই জ্ঞানী যে এক একজনে গড়ে একটা দলেও কুলোয় না। সেই বাম অংশের প্রতি ভরসা করে এখন বুমেরাং হয়ে গেল।
যতই গানম্যান দিয়ে নিরাপত্তা দেয়া ডমেষ্টিক ব্লগারদের গ্রেফতার করা হোক, ইসলাম পন্থীদের মান এই সরকার ভাঙাতে পারবেন বলে তো মনে হয় না। আর ভোটের রাজনীতিতে বামদের কোনো ভোট আছে বলে তো শুনিনি।
এদিকে ব্লগারদের এই গ্রেফতাদের মহাজ্ঞানী বাম অংশ চটে যাবে এতে কোনো সন্দেহই নাই।
ইতিমধ্যেই মহিউদ্দিনের পক্ষে বাক স্বাধীনতার জন্য অশ্রু বিসর্জনকারীদের কর্মকান্ডে তার যথেষ্ট প্রমানও মিলেছে।
তলে তলে যে হেফাজতকে ঠেকানোর চেষ্টা তারা করছেন না তাও না। এদেশে একমাত্র বামদেরই ধারনা যে তারা পৃথিবীতে সব থেকে বেশি বুদ্ধিমান। আর সবাই কম-বেশি বোকা। সুতরাং আলেমদের বিরুদ্ধে টাকা পয়সা দিয়ে কিছু আলেম দাঁড় করিয়ে দিলেই হলো !!!
এত বড় একটা বিষয়কে এত সহজে সমাধান করার প্রচেষ্টাই বলে দেয় যে বামরা এদেশে কেন ভোট পায় না।
নিচের খবরটি দেখেন,
হেফাজতে ইসলামের ৬ এপ্রিলের লংমার্চ প্রত্যাহার জানাতে বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ‘সচেতন হক্কানী আলেম সমাজ’ নামের নতুন একটি সংগঠন। সরকারের পক্ষে কাজ করা এই সংগঠনটির সংবাদ সম্মেলনে জনপ্রতি ২৫০ টাকা দিয়ে লোক জমায়েত করা হয়।
বিষয়টি তখনই প্রকাশ পায় যখন প্রতিশ্রুত টাকার পরিমাণ কম হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংবাদ সম্মেলনে যোগ দেয়া কয়েকজন নতুন বার্তা ডটকমকে বলেন, “আমাদেরকে ২৫০ টাকা করে দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরে প্রেস ক্লাবের নিচে এসে সবাইকে ২০০ টাকা করে দেয়া হয়।”
সংবাদ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী আরেকজন নতুন বার্তা ডটকমকে বলেন, “আমাদের মধ্যে অনেকে মসজিদের ইমাম এবং ইসলামী ফাউন্ডেশনের লোক, তারা চাকরি বাঁচানোর জন্য এখানে এসেছেন। এছাড়া বাইরের লোকও আছে।”
টাকার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, “এখানে যে হুজুরে (সংগঠনের আহ্বায়ক মাওলানা জহিরুল ইসলাম মিঞা)বক্তব্য দিয়েছেন তিনি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালকের কাছের লোক।” Click This Link
আমি মোটামুটি শিওর যে এটাও একটা বাম বুদ্ধি। এখন খবরটি প্রকাশিত হওয়ার পরে হিত হলো নাকি বিপরীত হলো তা তো আপনারা বুঝতেই পারছেন।
সত্যি কথা বলতে কি এ ধরনের প্রচারনা আসলে কোনো কাজে আসে না। আলেম সমাজকে এত তুচ্ছ জ্ঞান করারও কোনো সুযোগ নাই। দেশের সব প্রযুক্তিতে উন্নত টিভি চ্যানেলগুলো মিলেও শাহবাগের ভাবমূর্তী ভুলুন্ঠিত হওয়া কিন্তু ঠেকাতে পারেনি।
একা আমার দেশের কাছে সবাই পরাজিত হয়েছে। এগুলো কি কারনে, তা এখন আর বুঝলেও কোনো লাভ আছে কিনা জানি না। হয়তো অনেক দেরি হয়ে গেছে।