somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সেলফি কাহাকে বলে, উহা কত প্রকার ও কি কি?

১৪ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



নিজ ক্যামেরায় বিশেষ ভঙ্গিমার সাথে নিজে নিজের ছবি তোলাকে সেলফি বলে। মাঝে মাঝে ভাবি, এবার একটা সেলফি পোস্ট দিয়াই দিব। তাহলে লাইকের বন্যায় ভাসিয়া যাইব আমার ফেসবুক। হা হা... কি মজা...। সেই ভাবনা থেকেই আমার এ লেখা। ভাবনাটা আমার ভেতরই সীমাবদ্ধ থাকে। আমি সেলফি পোস্ট দিতে পারিনা। আমার মত যারা বেশি ভাবে তারা তেমন কাজ করতে পারে না। এরা হলো ভাবুক ধরনের মানুষ। এ ধরনের লোকেরা যখন কাজটা করার কথা ভাবে তখন অন্য লোকেরা সেটা করে দেখিয়ে দেয়। আমিও মনে হয় তাদের দলে পড়েছি। আমার সেলফি তোলার ব্যাপারটাও ঠিক মাথায় গিয়ে ঠেকেছে। একথা ভাবতে ভাবতেই দেখি আমার এক বন্ধু সেলফি আপলোড করে দিয়েছে। কে যেন আমার কানে কানে বলল, তুমি আপলোড না করলে কি হবে। মানুষ কি আর তোমার জন্য বসে থাকবে? জানোনা, সময় ও স্রোত কারো জন্য অপো করে না। যাক নেগেটিভ চিন্তা করে লাভ নাই এবার পজেটিভ চিন্তা করি। আমি দিতে পারলাম না বলে কি হয়েছে আমার বন্ধুতো দিয়েছে। যাক তাও আবার কম কীসের। বন্ধু দেওয়া আর আমি দেওয়া একই কথা। তাই ‘এক প্রকার খুশি হইয়াই বন্ধুর সেলফিতে লাইক বর্ষণ করিলাম’। ছবিতে দেখলাম আমার প্রাণপ্রিয় বন্ধুটি েেতর আইলে দাঁড়িয়ে আছে তার পিছনে একটা ছাগল। মুহূর্তকাল বিলম্ব না করিয়া বন্ধুর ছবিতে লাইক করিলাম। আমার লাইক পাইয়া বন্ধুটির খুশি যেন আর ধরে না। আমার সেলফিস বন্ধুটি ছাগল ছানার মতো তাধিন ধিন তাধিন ধিন নাচতে লাগল। আরেকদিন দেখলাম আরেক বন্ধু তার বান্ধবী জরিনারে নিয়া কুলফি খাইতেছে। আমি সে ছবিতেও লাইক মারিলাম। আরেক বন্ধুকে দেখলাম বাসর ঘরে বসে আছে বউকে নিয়ে। ছবির নিচে লেখা ‘আমার ময়না পাখি আর আমি আমাদের দেখতে কেমন লাগছে বন্ধুরা,’। এসব বাসর ঘরের ছবি দেখতে কেমন লাগে বন্ধুরা আপনারাই বলেন। অবিবাহিত পোলাগো এসব ছবি দেখলে কি মাথা ঠিক থাকে।
এভাবে লাইক দিতে দিতে এক সময় তাদের সেলফির প্রতি আমার বিরক্তি ভাব চলে আসল। এমনিতেই একটা জিনিস সব সময় ভালো লাগে না। কোনো গানের কথাই দরুণ-প্রতিদিন শুনলে যত ভালো গানই হোক আর শুনতে ইচ্ছে করবে না। প্রতিদিন বিরানী খেতে যেমন ভালো লাগে না। আমাদের পেটের পোকামামড়রা পেটের ভিতর না না বলে মিছিল করতে থাকে। তেমনি ‘আমার প্রাণ প্রিয় বন্ধুদের সেলফি তোলার ধরণ দেখিয়া আমি হাসব না কাঁদব তা ভেবে কুল করিতে পারিনা’।
বরাবরই তথ্য প্রযুক্তির জ্ঞান আমার খুব সীমিত। মাঝে মাঝে ভাবি তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে কেন যে সৃষ্টিকর্তা আমাকে পাঠালেন! আমাকে যদি প্রাচীন যুগে পাঠাতেন তাহলে তেমন খারাপ হত না। লোকে যাকে মান্ধাতার আমল বলে ব্যঙ করেÑ সেই মান্ধাতার আমলে জন্ম হইলেই বরং ভালো হইত। যাক আমার ভালো লাগা মন্দ লাগার উপরতো সৃষ্টিকর্তার কিছু যায় আসে না। তিনি যা খুশি তা করতে পারেন। যাকে যখন খুশি তখন পয়দা করতে পারেন। তিনিই সকল মতার উৎস। না হয় এই আধুনিক যুগে বাস করেও কেন আমার মন-মানসিকতা কেন সেই পুরাতন যুগের মানুষের মতো হবে।
সেলফি তুলতে গিয়ে মারা যাওয়ার খবর প্রকাশিত হচ্ছে নিয়মিত। তবুও বন্ধুরা সেদিকে কর্ণপাত করছে বলে মনে হয় না। তাই সেলফি তোলার সময় সাবধানে তোলার অনুরোধ করছি। না হয় কখন যে আপনার ভবলীলা সাঙ্গ হয় কে জানে। তখন আপনার পরানের পরান কলিজার টুকরা ময়না পাখিটি অন্য জনের হাত ধরবে, পার্কে ঘুরাঘুরি করবে, রাতে ফুসুর ফুসুর করবে। এসব দেখলে আপনার আত্না শান্তিতে থাকতে পারবে না। তার মানে মরেও আপনি শান্তিতে থাকতে পারবেন না। আর আমার ফ্রেন্ডলিস্ট থেকে কোনো বন্ধু মাইনাস হোক এটা আমি চাই না।
বন্ধুরা এতণ অনেক কথা হলো এবার আলোচনা করা যাক সেলফির প্রকারভেদ নিয়ে। বন্ধুরা তোমরা যারা ফেসবুকে ছবি আপলোড দাও লাইকের বন্যায় ভাসাইয়া দাও তোমাদের ফেসবুক, তোমরা কি জানো সেলফি কত প্রকার? যদি জানো ভালো কথা না জানলে আরো ভালো। চিন্তার কোনো কারণ নাই আমি কইয়া দিতাছি। খাতা-কলম নিয়ে এখনই বসে যাও। সেলফি সাধারণত ১২ প্রকার: ১. ঝুলফি (যে সেলফিতে গোঁফ এবং কানের নিচের ঝুলফির কারুকার্যময় ছবি তোলা হয়), ২. কুলফি (আইসক্রিম খাইতে খাইতে তোলা ছবি), ৩. কানফি (যে ছবিতে কানকে প্রাধান্য দেওয়া হয়), ৪. দাঁতফি (যে ছবিতে দাঁত কিলাইয়া হাসা হয়), ৫. মুখফি (যে ছবিতে মুখ প্রদর্শন করা হয়), ৬. চুলফি (যে ছবিতে চুল ধারণ করা হয়), ৭. চোখফি (হরিনীর মত টানাটানা আখি যুগল সমৃদ্ধ ছবি), ৮. ঠোঁটফি (লিপিস্টিক দেওয়া ঠোঁটের প্রাধান্য), ৯. উপরফি (উপর দিক থেকে তোলা ছবি), ১০. নিচুফি (নিচের দিক থেকে ধারণকৃত চিত্র), ১১. ডানফি (ডাক দিক থেকে তোলা ছবি), ১২. বামফি (বাম দিক থেকে তোলা ছবি)। বিশিষ্ট সেলফি গবেষক, আমার বন্ধু নাসির উদ্দিন কিছুদিন আগে ফেসবুকের মাধ্যমে আমাকে ১০ প্রকার সেলফির কথা জানিয়েছেন: ১. সেলফি, ২. কুলফি, ৩. লিপফি, ৪. পোজফি, ৫. শোওফি, ৬. ফেইচবুকফি, ৭. মুখমন্ডল বিকৃতফি, ৮. ঢঙফি, ৯. রংফি, ১০. তুলফি।
আমার সেলফি বন্ধুদের একটি কথা আমার বুঝে আসে না। বাবারা, তোমরা সেলফি তুলবা ভালো কথা- সেলফি তোলার সময় এমন করে দাঁম মুখ খিঁচাইতে হইবে কেন? তোমাদের এমন কষ্ট দেখে আমারও যে কষ্ট লাগে। শত হলেও আমি যে তোমাদের ফ্রেন্ড। হোক না ফেসবুক ফ্রেন্ড। তবুও বন্ধু বলে কথা। তাই সেলফি তোলার সময় এমন ঠোঁটবাঁকা করে দাঁত খিঁচাখিচি বন্ধ করলেই বরং আমি শান্তি পাই। আমাদের মত এমন হাজার হাজার যুবক বন্ধু নিস্তার পাইতে পারত। দেশ মুক্তি পেত এক দাঁতখিঁচা সংস্কৃতি থেকে। সেলফি, তুই ভালো থাকিস, রাগ করিস না।

সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৫:০০
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আজকের ব্লগার ভাবনা: ব্লগাররা বিষয়টি কোন দৃষ্টিকোন থেকে দেখছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪১


ছবি- আমার তুলা।
বেলা ১২ টার দিকে ঘর থেক বের হলাম। রাস্তায় খুব বেশি যে জ্যাম তা নয়। যে রোডে ড্রাইভ করছিলাম সেটি অনেকটা ফাঁকা। কিন্তু গাড়ির সংখ্যা খুব কম।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাপ, ইদুর ও প্রণোদনার গল্প

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৪

বৃটিশ আমলের ঘটনা। দিল্লীতে একবার ব্যাপকভাবে গোখরা সাপের উৎপাত বেড়ে যায়। বৃটিশরা বিষধর এই সাপকে খুব ভয় পেতো। তখনকার দিনে চিকিৎসা ছিলনা। কামড়ালেই নির্ঘাৎ মৃত্যূ। বৃটিশ সরকার এই বিষধর সাপ... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের সংগ্রামী জনতার স্লুইস গেট আক্রমণ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২১


(ছবির লাল দাগ দেয়া জায়গাটিতে গর্ত করা হয়েছিল)

শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

২৩শে এপ্রিল পাক সেনারা ফুলছড়ি থানা দখল করে। পাক সেনা এলাকায় প্রবেশ করায় মানুষের মধ্যে ভীতিভাব চলে আসে। কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাড়ির কাছে আরশিনগর

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫০


বাড়ির কাছে আরশিনগর
শিল্পকলা একাডেমির আশেপাশেই হবে চ্যানেলটার অফিস। কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করল মৃণাল। কিন্তু খুঁজে পাচ্ছে না সে। এক-দু'জনকে জিগ্যেসও করল বটে, কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারছে না।

কিছুদূর এগোনোর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভালো আছি

লিখেছেন জানা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯



প্রিয় ব্লগার,

আপনাদের সবাইকে জানাই অশেষ কৃতঞ্গতা, শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালোবাসা। আপনাদের সবার দোয়া, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা সবসময়ই আমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শক্তি এবং সাহস যুগিয়েছে। আমি সবসময়ই অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×