
নিভে আসা চাঁদের নীলাভ ছায়ায়
আমি শুয়ে আছি বিষখালির ধারে
পৃথিবীর সমস্ত শব্দ পেরিয়ে
শুধু নদীর স্রোতের মধ্যে
একটা কান্নার ধ্বনি যেন রয়ে গেছে,
অজানা এক যন্ত্রণার ঢেউয়ে
আমি ধীরে ধীরে ভেঙে পড়ছি,
কোনো এক বিস্মৃত জন্মের অপরাধে।
হে চাঁদ,
তুমি কি জানো,
আমার ভেতর এখনও জমে আছে
একটি শিশুর মতো কুঁকড়ে যাওয়া মৃত্যু
যে জন্ম নিতে চেয়েছিল নিঃশব্দে,
কিন্তু আলোর তীব্র আঘাতে
রক্তাক্ত হয়েছিল তার অস্তিত্ব।
আমি জেগে উঠিনি,
আমাকে জাগানো হয়েছে।
আমি হাঁটিনি,
আমাকে ঠেলে দেয়া হয়েছে
এই পৃথিবীর চিৎকারের মধ্যে
যেখানে প্রতিটি ভোর মানে নতুন ক্ষয়,
প্রতিটি আলো মানে নতুন ক্ষরণ।
মানুষেরা হেসে চলে,
তাদের চোখে আগুন,
তাদের মুখে উৎসবের মুখোশ
তাদের শরীর কামার্ত
তাদের হৃদয় শঠ প্রতারনাশক্ত
আর আমি,
একাকী এক জীবন্ত দহন,
যার পাঁজরে এখনো লেগে আছে
ভয়, ঘৃণা, অতীত আর অভিশাপ।
হে স্মৃতি, হে হিম হাওয়া,
তোমরা কি জানো,
আমি আর পারি না বহন করতে
এই জীবনের ভার?
আমি চাই গভীর, অনন্ত, নিঃসাড় ঘুম,
যেখানে কোনো প্রশ্ন নেই, উত্তর নেই
শুধু আছে অন্ধকার
ঘোর আঁধার
যে আমাকে চেনে, আমায় ভালোবাসে।
এই পৃথিবী, এই যুদ্ধ, এই গর্জন
আমি তো আসিনি এর সাক্ষী হতে।
কে টেনে এনেছে আমাকে এই হাহাকারে?
কে বলেছে, জেগে উঠো?
আমার তো ছিল না কোনো শপথ,
না কোনো প্রতিজ্ঞা।
হে ধরনী,
তোমার আলো আমার চোখে বিষ,
তোমার শব্দ আমার হৃৎপিণ্ডে ক্ষত।
আমি তোমার কেউ নই, কোনোদিন ছিলাম না।
তোমার সূর্য, চাঁদ, নদী ,আলো,আঁধার
এর কোন কিছুই
আমার জন্য নয়
আমার জন্য বরাদ্দ শুধু
বরষা ভেজা রাতে
জলডোবা শিতল কার্পেটে
নিশীথ অন্ধকারে যখন নিঃশব্দে ভাঙে নদীর ঢেউ,
তখন এক মৃত আত্মার মতো শুয়ে থাকি
এক অন্তহীন যাত্রার প্রতিক্ষায়।
** ছবিটি আমার বাড়ির লঞ্চ ঘাটের। গতকালের ভাড়ি বরষায় টুইটুম্বুর। আমার প্রীয় নদী বিষখালি। বরষায় সে অনিন্দ রুপে সাজে।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মে, ২০২৫ সকাল ১১:২৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




