somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পিতা-মাতা সন্তানের শরীরে বেশী ওজন বহন করে

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যে পিতা-মাতা সন্তানকে এত ভালবাসে এবং সন্তানের মঙ্গলের জন্য জীবনপাত করে দেয় অথচ সে সন্তানের যখন চোখ ফোটে তখন সে সন্তান পিতামাতার সমস্ত কৃতকর্মের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে থাকে তাই-না।এটি সঠিক যে প্রতিটি মানুষই পৃথিবীতে জন্মের পর থেকে মৃত্যুর দিন পর্যন্ত একটি অনভিজ্ঞ ষ্টেজ থেকে ক্রমাগতভাবে বিভিন্ন অভিজ্ঞতা লাভ করে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হয়। এই অনভিজ্ঞতাবোধ যদি না থাকত তবে মানুষ পৃথিবীতে কোন কর্ম করতে পারতোনা।যেমন উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি পরিস্কার করি।
ধরি মানুষ একটি অনভিজ্ঞতার প্রেক্ষিতে পরিণয়ের স্বাদ গ্রহণের জন্য উন্মাদনায় মত্ত হয়ে সে স্বাদ ভক্ষণের জন্য রমণীর সাথে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হয়ে পরিণয়ের অভিজ্ঞতা লাভ করে যার ফসল হিসেবে সন্তান আসে যা তাদের ভালবাসার চিহ্ন বহন করে। এটি ঠিক যে দীর্ঘমেয়াদী যে কোন কর্মই ক্লান্তিকর কিন্তু যেহেতু মানুষের মধ্যে যে নিয়ামক শক্তি কাজ করে সেটি হল তার তারুণ্যের প্রবল শক্তি যেটি তার মননশীলতাকে দীর্ঘদিন ধরে বহন করে। এই তারুণ্যের শক্তি নিয়ে সন্তানের জন্মের পর থেকে তাকে লালন-পালনের সমস্ত কাজকর্ম করে থাকে। যেমন সে যতক্ষণ পর্যন্ত বুঝতে না শিখে ততক্ষণ পর্যন্ত পিতা-মাতা তার সাথে বন্ধুর মত তথা ছায়ার মত থেকে তাকে বৎসরের পর বৎসর ধরে সাথে করে স্কুলে নিয়ে যায়,তাকে মানুষ করে। পরিবারের তারতম্য তথা ধনী পরিবারের পিতা-মাতা তাদের লেবেল মোতাবেক সন্তানকে মানুষ করার জন্য সাধ্যমত অর্থ ব্যয় করে এবং দরিদ্র পিতা-মাতাও তাদের সাধ্যমত যেটুকু পারে ব্যয় করে থাকে।
একসময় সে সন্তান মানুষ হয়।মানুষ হওয়ার পর সন্তানের বধুর মুখদর্শন লাভের চরম এক আকাঙ্খা বোধ করেন পিতা-মাতা যার জন্য অনভিজ্ঞতা থেকে সেই অভিজ্ঞতা লাভের জন্য ব্যস্ত হয়ে উঠেন। একসময় পুত্রকে বিয়ে দেন। নুতন টুকটুকে বউ সংসারে আসে। সংসারে আসার পর ক্রমাগতভাবে শুরু হয়ে যায় ছন্দোপতন। তখন হয়তো বধু তার স্বামীকে বলে বসল তুমি শুধুই আমার,আর কারো নও এবং তুমি আমা ব্যতীত অন্য কারো জন্য কিছু করতে পারবেনা। চল আমরা অন্য কোথাও গিয়ে সংসার করি। হয়তো তার সাথে মেয়ের সুখের জন্য তাকে আলাদা করতে তার পিতা-মাতাও যোগ হয়। ফলে এক সময় বধু যখন তার একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারে সচেষ্ট হয়ে সংসারে বিভিন্ন প্রকার গেম শুরু করে তখন হয়তো বা আদ্যাশক্তির বশ হয়ে বধুর স্বামী তথা পিতা-মাতার সন্তান তাদের একমাত্র বুকের ধনকে বধুর কাছে চিরদিনের স্বত্বতে বিসর্জন দেন। সেই সন্তানটি আদ্যাশক্তির বশ হয়ে ভুলে যায় তার পিতা-মাতাকে,ভুলে যায় তার পিতা-মাতা তাকে কিভাবে কষ্ট করে বৎসরের পর বৎসর অর্থ ব্যয় করে মানুষে রুপান্তরিত করেছিল।
এখন প্রশ্ন হল-এই যে মানুষ করা,এইযে সন্তানের পিছনে অর্থ ব্যয় তাকি শুধু পুত্রবধুরই প্রাপ্য,নাকি তার এক আনা হিস্যা হলেও পিতা-মাতা পেতে পারে।কিন্তু আদ্যাশক্তির প্রভাবে পুত্র কিছুই বলতে পারে না,কেননা বধুকে কিছু বললে যদি তার প্রেয়সী তার সাথে দাম্পত্য সম্পর্ক ছিন্ন করে ফেলে তাহলে তো সে পাগলপ্রায় হয়ে যাবে। এভাবে বাবা-মাকে ত্যাগ করে সে বধুর সাথে চলে যায় অন্যত্র।প্রকৃতিগতভাবে সে পিতা-মাতা বিরুদ্ধ হয়ে পড়ে। এমন কি বৎসরের পর বৎসর ধরে সে সন্তানটি পিতা-মাতার কোন খোঁজও নেয়না। এক সময় বলে বসে যে তার পিতা-মাতা তার জন্য নাকি কিছুই করেনি। সে সন্তানের মধ্যে কোন বিবেকবোধ কখনও জাগ্রত হয় না যে, সে যে তার পিতা-মাতার উপর এমন আচরণ করছে এর ফলে যদি সে পরম করুণাময়ের নিকট থেকে অভিশপ্ত হয়ে যায় যার ফলে তার সন্তানও তাকে এমন আচরণ করবে। পিতা-মাতা যে পরিমাণ সন্তানকে খাওয়ায় তার এক আনা হিস্যাও সন্তানের নিকট থেকে দাবী করেনা না। তাদের শুধু চাওয়া যে তারা বৃদ্ধ হলে সন্তান তাদের সাথে ভাল ব্যবহার করুক,তাদের দেখাশুনা করুক। কিন্তু সে সন্তান কুসন্তান হয়ে যায়। এক সময় দরিদ্র পিতা-মাতা হলে রাস্তায় নিক্ষিপ্ত হয় অবস্থাভেদে আস্তাকুড়ে জীবনের স্বাদ পায় যা ভিক্ষাবৃত্তি দিয়ে শুরু হয় এবং মৃত্যুর করালগ্রাসে তা শেষ হয়। অপরদিকে ধনী বৃদ্ধ পিতা-মাতার সন্তানের অভাবে অনেকের ঠাঁই হয় বৃদ্ধাশ্রমে যেখানেও তাদের দিন কাটে স্বজনহীন সন্তানহীন অবস্থায়,যেখানে অনেক উৎসবে বাইরের আধুনিক জগতের আলোয় সন্তান উদ্ভাসিত হলেও পিতার জন্য এক মিনিটের খোঁজ নেয়া তার জন্য প্রেস্টিজ ইস্যু। তখন পিতা-মাতা পুত্র.পুত্রবধুর কাছে বুড়া ও বুড়ি হিসেবে অভিহিত হয়।
তাই বলতে চাই যে,প্রথম জীবনের অনভিজ্ঞ ষ্টেজে পরিণয় করে সন্তান জন্মদানের পর তার জন্য প্রাণপাত করে মানুষ করার পর নিজে শেষ জীবনে আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হওয়ার অভিজ্ঞতা বই কিছু নয়।এটিই জীবন প্রবাহ।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:১১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রোড জ্যাম ইন ভিয়েতনাম

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৭



আমার ধারনা ছিল জটিল জ্যাম শুধু বাংলাদেশেই লাগে । কিন্তু আমার ধারনা ভুল ছিল । ভিয়েতনামে এরকম জটিলতর জ্যাম নিত্য দিনের ঘটনা । ছবিটি খেয়াল করলে দেখবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!

লিখেছেন মাঈনউদ্দিন মইনুল, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬



এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×