এই লেখার যখন ড্রাফট করছি তখন করোনা ভাইরাস আমাদের ফ্রন্ট লাইন বিধ্বস্ত করে দ্বিতীয় ধাপে বিস্তার লাভ
করেছে আজ মনে হচ্ছে আমরা বড্ড দেরী করে ফেলেছি , আমাদের মূল স্তরে "মাস কম্যুনিটি" আক্রান্ত হতে চলেছে ।
সরকার ও সহযোগী সংস্হা এতদিনে এর ভয়াবহতা উপলব্দি করছেন ,
গত জানুয়ারী'২০ থেকে দেশে ৬ লক্ষ মানুষ দেশে এসেছে, পুলিশের হিসাবে মার্চের প্রথম ২০ দিনে বিদেশ থেকে ফিরেছেন ২ লাখ ৯৩ হাজার মানুষ। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক এসেছেন কোভিড-১৯ আক্রান্ত দেশগুলো থেকে। বিমানবন্দর থেকে বের হয়েই তাঁরা যাঁর যাঁর বাড়িতে চলে গেছেন। তাঁদের মধ্যে মাত্র ২০হাজার বিদেশফেরত কোয়ারেন্টিনে আছেন। অন্যদের কোনো হদিস নেই।
গত সপ্তাহ পর্যন্ত এসব প্রবাসী স্বাভাবিকভাবেই গ্রামে-গঞ্জে, হাটবাজারে ঘুরেছেন, সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। এই বিদেশফেরতদের মধ্যে কেউ সংক্রমিত হয়ে থাকলে তা কত মানুষের মধ্যে ছড়াবে, সে বিষয়ে কোনো ধারণাই করা যাচ্ছে না। মাঠ থেকে পাঠানো প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পুলিশের কর্মকর্তারা এক ‘ভয়ংকর পরিণতি’র আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
আগামীকাল থেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) থেকে সেনাবাহিনী নিয়োজিত হচ্ছে। বিভাগীয় ও জেলা শহরগুলোয় সামাজিক দূরত্ব ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থার জন্য বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা দিতে সেনাবাহিনী নিয়োজিত হবে।
করোনা ভাইরাসের কারণে ২৬ মার্চ থেকে আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি ছুটি থাকবে। এর মধ্য ২৯ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি থাকবে। এর আগে ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের ও পরে ২৭ ও ২৮ মার্চের সাপ্তাহিক ছুটিও যোগ হবে। এ ছাড়া ৩ ও ৪ এপ্রিল সাপ্তাহিক ছুটি এ ছুটির সঙ্গে যোগ হবে।
চীন ৮ই ডিসেম্বর এই ভাইরাস সনাক্ত করে এবং তখন থেকে কাজ শুরু করে।চীন ৩১ ডিসেম্বর বিশ্ব স্বাস্হ্য সংস্হাকে জানায়।
করোনা ভাইরাস নিয়ে আইইডিসিআর ডিসেম্বর মাসেই অবহিত হয় ।উনাদের বক্তব্য অনুসারে তখন থেকেই
বিশ্ব স্বাস্হ্য সংস্হার মাধ্যমে আপডেট পাচ্ছিলেন । ৮ই জানুয়ারী কভিড-১৯ নামকরন করা হয়, নভেল করোনা ভাইরাস
অর্থাৎ নূতন করোনা ভাইরাস ।
Corona Guide
করোনা ভাইরাসের দীর্ঘ ইতিহাস আছে :
সার্স করোনা ভাইরাসের শনাক্ত হয় চীনে -২০০৩ সালে
মার্স করোনা ভাইরাসের শনাক্ত হয় সৌদী আরবে -২০১২ সালে
নভেল করোনা-২০১৯ ভাইরাসের শনাক্ত হয় চীনে -২০১৯ সালে
বর্তমান বিশ্বের সর্বশেষ পরিস্হিতি ঃ-
Covid-19 world Update
সার্স, মার্স , কভিড-১৯ সবই একই গোত্রর তবে ভিন্ন ভিন্ন রুপে বিচরন ও বিস্তার বা সংক্রমন ক্ষমতা পার্থক্য ভেদে তাদের
ভয়ংকর রুপ আমরা দেখছি । মূলত ২০০৩ সাল থেকে বিজ্ঞানীরা এর উপর গবেষনা করে আসছেন এবং ভবিষ্যৎ বাণী ছিল যে,
অচিরেই নূতন একটি ভাইরাস আসবে, যা আমরা বর্তমানে প্রত্যক্ষ করছি ।
History of COVID-19
বিশ্ব স্বাস্হ্য সংস্হা ও চীন বলছে তাদের ভূল থেকে অন্যরা শিক্ষা নিক , 'আমাদের মেডিকেল স্টাফদের রক্ষা করা দরকার': চীনা চিকিৎসকরা বলছেন যে উহানে প্রথম ভূলগুলো করেছে ইউরোপ একই ভুল করেছে। চীন প্রথমে তাদের চিকিৎসা কর্মীদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হয় , সকল দেশের এব্যপারে সাবধান হওয়া দরকার ছিল; চীনের মূল ভূখন্ডের ৩,৪০০ এরও বেশি চিকিৎসা কর্মী সংক্রামিত বলে মনে করা হচ্ছে। ১৩ জন চিকিৎসা কর্মীর মৃত্যু হয়েছে ।
করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে চীন আশার আলো জ্বেলেছ বলে মনে করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তবে চীনের কৌশল অন্য দেশগুলোয় ব্যবহার করা যায় কি না, এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষ করে পশ্চিমা দেশগুলোর বেলায়।এএফপির খবরে জানানো হয়, চীনে গত চার দিনে স্থানীয়ভাবে আক্রান্ত একজন রোগী পাওয়া গেছে। গত বছরের ডিসেম্বরে দেশটির হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার পর যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, তা থেকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।
জানুয়ারি মাসে চীন উহান শহরকে কার্যকরভাবে অবরুদ্ধ করে এবং এর ১ কোটি ১১ লাখ জনসংখ্যাকে কোয়ারেন্টিনে পাঠায়। এই প্রক্রিয়া পরে অনুসরণ করা হয় পুরো হুবেই প্রদেশের জন্য। পাঁচ কোটি মানুষকে গণ–আইসোলেশনে পাঠায়।
হুবেই প্রদেশে কমপক্ষে ৪২ হাজার চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের পাঠানো হয় স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য। এ সময় ৩ হাজার ৩০০ স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হন এবং ১৩ জন মারা যান।বার্তা সংস্থা সিনহুয়ার খবর অনুসারে চীন প্রতিদিন ১৬ লাখ মাস্ক উৎপাদন করেছে ওই সময়। চীনের অধ্যাপক ঝেংজিজিই বলেন, বিপুলসংখ্যক মানুষের ভাইরাসটি বহনের আশঙ্কার মধ্যে ব্যাপক হারে মাস্ক ব্যবহার ভাইরাসের বিস্তার রোধ করতে সহায়তা করেছে ।
করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯: আমাদের সাম্প্রতিক রাজনীতি
আজ সচিবালয়ে এক জরুরী সংবাদ সম্মেলনে , সোমবার মোট ১০টি সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানান ,
আরও একমাস পূর্বে নিলে এবং বিমান বন্দরে কড়াকড়ি আরোপ করে কঠিন সিদ্বান্ত বাস্তবায়ন করলে
'মাস কম্যুনিটি ট্রান্সমিশনের ' আশন্কার সৃষ্টি হতো না ।
পরিস্হিতি সামাল দিতে বর্তমানে আরব আমিরাতের দেশটির সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আজানের সময় “আল-সালাতু ফি বুয়ুতিকুম” বলা হচ্ছে, যার মানে বাড়িতে থেকে (অথবা আপনি যেখানে আছেন সেখানে থেকেই) নামাজ পড়ুন।
দুবাইয়ের ইসলামিক এফেয়ার্স এ্যান্ড চ্যারিটেবল এ্যাকটিভিজ ডিপার্টমেন্ট এক ইনস্টাগ্রাম পোস্টে জানায়, "সংযুক্ত আরব আমিরাতের সব মসজিদে জামাতে নামাজ পড়া স্থগিত থাকবে এবং জনগণকে তাদের বাড়িতে থেকে নামাজ পড়তে বলা হবে এবং এই মহামারি মোকাবিলায় আমাদের সাহায্য করার জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা হবে।” জাতীয় ও সামাজিক অঙ্গীকার অনুযায়ী এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
..............................................................................................................................................................
ভিন্ন মাত্রার খবরটি দিয়ে লেখাটি পোষ্ট করতে চাই : করোনাভাইরাস আতঙ্কে চীন থেকে বাংলাদেশে যারা ফিরেছিলেন। এখন আবার চীনে ফিরতে শুরু করেছেন তারা।করোনাভাইরাস আতঙ্কে যাদের অধিকাংশ ফিরে এসেছিলেন বাংলাদেশে। চীনের পরিস্থিতি স্বাভাবিক আর বাংলাদেশের অবস্থার অবনতি হওয়ায় নিজেদের কর্মস্থল চীনে ফিরতে শুরু করেছেন ।
জাতীয় দলের সাবেক টেনিস খেলোয়াড় শাহনেওয়াজ আহমেদ ও ইসরাত রুমা দম্পতি বিগত শুক্রবার চীনে ফিরে গেছেন ।
-- ঃএক নজরে বর্তমান বাংলাদেশের করোনা পরিস্হিতি ঃ---
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মার্চ, ২০২০ রাত ২:৪৩