বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান জানান, আগের মতো স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার কোনো সম্ভাবনাই অদূর ভবিষ্যতে নেই!
যদি সমস্ত স্বাস্থ্যবিধি ঠিক মতো মেনে চলা না হয়,সে ক্ষেত্রে সমস্যা আরো বাড়বে বলেই জানিয়েছেন তিনি।
প্রতিদিন বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিলও।
এমন পরিস্থিতিকে পেছনে ফেলে কবে আগের মতো স্বাভাবিক ছন্দে ফিরবে মানব সভ্যতা?
টেড্রস আধানম ঘেব্রেইসাস জানান, ছ'মাস ধরে বিশ্ব করোনার সঙ্গে লড়াই করছে। কিন্তু ছ'মাস পরেও কয়েকটি দেশে করোনা যে হারে ছড়াচ্ছে, তাতে আরো ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকেই এগোচ্ছে গোটা বিশ্ব। বিশ্বের সামগ্রিক করোনা পরিস্থিতির ক্রমশ অবনতি ঘটছে। আমেরিকা আর দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলিতে করোনা পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়াবহ হচ্ছে। তিনি মনে করেন
করোনা মোকাবেলার ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি দেশ ভুল পথেই এগোচ্ছে।
করোনাভাইরাসকে বায়ুবাহিত বলে মেনে নিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও)৷ এর আগে করোনাভাইরাস ড্রপলেটের মাধ্যমে ছড়ায়- এমনটাই দাবি করেছিল তারা৷ কিন্তু ৩২ দেশের ২৩৯ জন বিজ্ঞানী নিজেদের রিসার্চের পর সংস্থার কাছে করোনাভাইরাসের বায়ুবাহিত হওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য জোর দাবী করেছিলো৷প্রাথমিকভাবে সে তত্ত্ব মেনে নিয়ে সংস্থাটি জানিয়েছিল, সব খতিয়ে দেখার পর এ নিয়ে রায় দেবে৷ শুক্রবার তারা জানিয়ে দিল, বিশেষ পরিস্থিতিতে বিশেষ আবহাওয়ায় বাতাসে ভেসে ছড়ায় করোনাভাইরাস৷
নতুন গাইডলাইন দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা :
মানুষের জানা উচিত, হাওয়ায় ভেসে ছড়ায় করোনাভাইরাস৷ করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে এই তথ্য জানা থাকলে উপকৃত হবে মানুষ৷ কিছু বিশেষ এলাকায় বিশেষ পরিস্থিতিতে হাওয়ায় ভেসে ছড়ায় করোনাভাইরাস৷ কোনো ভিড়ে পরিপূর্ণ জায়গায় এরোসল ট্রান্সমিশনের পাশাপাশি হাওয়ায় ভেসেও ট্রান্সমিশন হয়৷
জায়গাগুলো হলো- জিমনেশিয়াম, রেস্টুরেন্ট। যেখানে একই হাওয়া চলে, সেখানেই এই সংক্রমণ ছড়ায়৷
যে নতুন গাইডলাইন জারি করেছে, তাতে ভিড়ে ভরা জায়গায় একেবারেই না যাওয়া ভালো৷ এ ছাড়া মাস্ক পরা
ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে৷
কোনো বদ্ধ জায়গায় করোনা সংক্রমিত ব্যক্তি যদি দীর্ঘক্ষণ থাকেন, তাহলে সে একই হাওয়ায় যদি অন্য মানুষ নিঃশ্বাস নেয়, তাহলে তাদের মধ্যেও সংক্রমণ ছড়ায়৷ তাই মানুষ যদি এ ধরনের জায়গা এ সময় এড়িয়ে চলে, তাহলে করোনা থেকে বাঁচতে পারে৷ এ ধরনের জায়গাগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখে এ রকম জায়গায়ও না যাওয়াই ভালো৷
মাস্কও বিপজ্জনক হতে পারে :
করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) থেকে বাঁচতে মাস্ক পরতে হবে। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে মাস্কও বিপজ্জনক হয়ে উঠতে
পারে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।মাস্ক মুখে দিয়ে শরীরচর্চা, প্রাতঃভ্রমণ বা জগিং করলে শরীর পর্যাপ্ত অক্সিজেন গ্রহণ করতে
পারবে না। এ অবস্থায় অক্সিজেন কমে গিয়ে উল্টো তা স্বাস্থ্যের পক্ষে বিপজ্জনক হতে পারে! তাই এই সময় মাস্ক না
পরাটাই শ্রেয় বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।এছাড়া খুব ভারী ধরনের কাজ, খুব বেশি দৈহিক পরিশ্রম হয়, এমন কাজের সময় মাস্ক পরে থাকলে শরীরে প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়। মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালনের স্বাভাবিক ছন্দ বিঘ্নিত হতে পারে। দেখা দিতে পারে একাধিক আকস্মিক স্বাস্থ্য সমস্যা।
তবে আশপাশে যদি আপনার করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে তাহলে সে স্হানে না যাওয়াই উত্তম হবে। যেমন শারীরিক অনুশীলন জনবহুল স্থানে না করে একেবারে নির্জন স্থানে করতে হবে, যেখানে কারো কাছ থেকে আপনার দেহে জীবাণু আসবে না। শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতির ফলে অস্বাভাবিক ক্লান্তি, শরীরের বিভিন্ন অংশের পেশিতে টান পড়া বা খিঁচুনি, বমি ভাব, মাথা ঘোরানো
এমনকি স্ট্রোক পর্যন্ত হতে পারে। তাই এই সমস্ত ক্ষেত্রে মাস্ক না পরে বিকল্প উপায় অবলম্বন করতে হবে।
যুক্তরাজ্য সরকারের ঘোষনা :
আগামী সপ্তাহ থেকে বিভিন্ন দোকান ও সুপারমার্কেটে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করার ঘোষণা দিয়েছে।
‘প্রধানমন্ত্রী স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে লোকজনকে দোকানগুলোতে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে এবং আগামী ২৪ জুলাই থেকে এটি পরা বাধ্যতামূলক হবে।
এতে আরো বলা হয়, ‘বদ্ধ জায়গায় মাস্ক পরলে তা লোকজনকে করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষা দেয়। সূত্র : এএফপি।
২০১৯ সালে জলবায়ু সম্মেলনে কি ছিল :
জলবায়ু পরিবর্তনের শারীরিক লক্ষণ যেমন ভূমি ও সমুদ্রের উত্তাপ বৃদ্ধি, সমুদ্রপৃষ্ঠের উত্থানকে ত্বরান্বিত করা এবং বরফ গলে যাওয়া, বিশ্ব আবহাওয়াবিদ্যালয়ের নেতৃত্বাধীন একটি নেটওয়ার্ক দ্বারা সংকলিত একটি নতুন প্রতিবেদনে
২০১৯ সালকে দ্বিতীয় উষ্ণতম বছরে পরিণত করতে ভূমিকা রেখেছে। যা প্রতিদিন আমাদের সংকটের দিকে নিয়ে যাচ্ছে ।
সংগঠনটি তাদের প্রতিবেদনে জানায় যে ,আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, মানব স্বাস্থ্য, অভিবাসন ও স্থানচ্যুতি, খাদ্য সুরক্ষা এবং ভূমি ও সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের উপর আবহাওয়া এবং জলবায়ু সংক্রান্ত ঘটনাগুলির ক্রমবর্ধমান প্রভাব বিস্তার করছে।
সূত্র: জি-নিউজ, সিএনএন, অর্ন্তজাল ।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১১:২০