somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখা কিছু মুহূর্ত

১০ ই জুন, ২০১১ রাত ১:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জীবনে অনেকবার অনেক রকম বিপদের সম্মুখীন হয়েছি। আজ আপনাদের সাথে আমার জীবনে ঘটে যাওয়া কিছু ভয়ানক ঘটনা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো

ঘটনা ১: জীবনের প্রথম অগ্নি দুর্ঘটনা

তখন আমি ক্লাস ওয়ানের ছাত্র, মাস ডিসেম্বর। আমাদের বাসার নিচের তলায় একটি পরিত্যক্ত দোকান ছিলো, এবং বাসার বাইরের দিকে দোকানটি একটি সাটার দ্বারা তালাবন্ধ ছিলো ,যদিও ভিতরের দিকে একটি দরজা দিয়ে সেখানে ঢোকা যেত। দরজার তালাটাও ছিলো ভাঙ্গা তাই মাঝে মধ্যেই সেই দরজা দিয়ে ভিতরে যেতাম। সেই রুমটাতে মূলত রঙ কাঠ এবং কিছু নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে ভরা ছিলো । তো একদিন আমি সেখানে একটি মোমবাতি নিয়ে যাই কারণ তার ভিতরে কোন লাইট ছিলোনা। তো আমি মোমবাতি জালিয়ে সেখানে বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র দিয়ে নানারকম জিনিস বানানোর চেষ্টা করতাম, হঠাৎ করে আমার মোমবাতি টা একটা রঙের কৌটার মধ্যে পরে যায় এবং কৌটার উপরে হালকা আগুন জ্বলে ওঠে যদিও সেটা দেখে আমার ভালোই লাগছিলো এবং কোন তরলের উপর আগুন ধরতে পারে তা দেখে আমি খুবই বিস্মিত হই এবং মনে মনে ভাবতে থাকি আমি বুঝি নতুন কিছু আবিস্কার করে ফেলেছিB-)। হঠাৎ আমার পায়ে ধাক্কা খেয়ে রঙের ডিব্বাটা মাটিতে পরে যায় এবং সারা ঘরের মেঝেতে আগুন ছড়িয়ে পরে এবং অন্যান্য অনেক দাহ্য পদার্থ ছিলো সেই যাতে খুব সহজেই আগুন লেগে যায় । কিছুক্ষণের মধ্যে পুরা রুমটাতেই আগুন লেগে যায় ধোয়াতে ঘর ভরে যায় ,আমি চিৎকার করতে থাকি ,এবং ধীরে ধীরে আগুন আমাকে ঘিরে ফেলে যদিও তখন অনেকেই চলে আসে এবং পানি দিতে থাকে কিন্তু এতে শুধু ধোয়াই বারতে থাকে , ভাগ্য ভালো কেউ খুব দ্রুত ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয়। ইতিমধ্যে আমি ধোয়ায় অজ্ঞান হয়ে পড়ি । পরে জানতে পারি ফায়ার সার্ভিসের লোকেরা এবং এলাকার লোকজন দোকানের সাটার ভেঙ্গে আমাকে উদ্ধার করে অজ্ঞান অবস্থায় এবং তখন নাকি আমার হাতের কাপড়ে আগুন লেগেও গেছিলো ,এবং হাতের সামান্য অংশ পুরেও গেছিলো।
যাইহোক সেই যাত্রায় বেচে গেছিলাম

ঘটনা ২: পানিতে ডোবার অভিজ্ঞতা

আমি তখন ক্লাস ফোরের ছাত্র জীবনে প্রথমবারের মত আমি আমার মামাবাড়িতে যাই, এবং সেটাই ছিলো আমার প্রথম গ্রাম দর্শনের অভিজ্ঞতা। মামাবাড়িতে গিয়ে দেখি বিশাল পুকুর ।এর আগে আমি কখনো এত সামনে থেকে এত বিশাল জলরাশি দেখিনাই। শুধু অপেক্ষায় ছিলাম কখন নামবো। কিন্তু প্রথমদিন কেউ আমাকে নামতে দিলোনা, সবাই না করলোX((। তাই তার পরেরদিন সকালে খুব ভোরে উঠে কাউকে না বলে নিজেই নেমে গেলাম , একটু একটু করে সামনে আগাচ্ছি , আহ কি দারুন অনুভূতি যখন আমি গলা পানিতে নেমে যাই ,তখন হঠাৎ করে পা পিছলে যায় আর নিজের ব্যাল্যান্স রাখতে পারছিলাম না, চিৎকার শুরু করি। তারপর আর জানিনা আমার যখন জ্ঞান আসে তখন দেখি সবাই আমাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে , পরে জানলাম আমার চিৎকার শুনে আমার এক কাজিন ছুটে চলে আসে ,ও আবার সাতার জানতোনা তাই ও কিছু না করে শুধু চিৎকার করতে থাকে ,পরে আমার এক মামা এবং আরেকজন কাজিন মিলে আমাকে উদ্ধার করে।

ঘটনা ৩: স্থান আজিমপুর বাস স্ট্যান্ড সময় ৫ টার মত তারিখ ৪ই জুন



হরতালের আগের-দিন তাই বাস পেতে খুব সমস্যা হচ্ছিলো , একসময় একটা ৬ নম্বর বাস এসে থামায়, এবং তারপাশে একটি প্রাইভেট কার খুব শান্তভাবে দাঁড়িয়ে ছিলো । আমি অন্য মানুষের মত প্রাইভেট কার আরা বাসের মাঝখান দিয়ে বাসে ওঠার চেস্টা করি,যদিও বাসটা খুব ধীরে ধীরে সামনে এগোচ্ছিলো এবং প্রাইভেট কারটা স্থির ছিলো। কিন্তু আমি যখন মাঝখান দিয়ে যেতে শুরু করি তখন হটাৎ করে প্রাইভেট কারটা টান দেয়, আমি থামানোর জন্য বলতে থাকি কিন্তু কোন ড্রাইভারই থামায়না, এবং আমি বাস এবং প্রাইভেটের চাপায় পরি আমার এক পা বাসের চাকা ও তার বডির মাঝখানে ঢুকে যায়, আমি তখন চিৎকার করছিলাম তবুও তারা দুজনেই টানার চেস্টা করছিলো, আমার পা একটু একটু করে মচকাতে থাকে এবং বাম পায়ের উরুটা মনে হচ্ছিলো কেউ কেটে নিয়ে যেতে চাচ্ছিলো। তখন মনে মনে ভাবছিলাম আর বুঝি কোনদিন বাসায় যাওয়া হবেনা।আমার চিৎকারে পরে রাস্তার লোকজন বাস এবং প্রাইভেটের সামনে গিয়ে তাদের থামায় , এবং লোকজন পরে প্রাইভেট কারটাকে পিছন দিক থেকে তুলে ধরে আমাকে বাস আর কারের মাঝখান থেকে বের করে। এ যাত্রাও বেচে যাই শুধু পায়ের মাংস থেঁতলে গেছে , আর জাগায় জাগায় চামড়া উঠে গেছে ভাগ্য ভালো কোন হাড় ভাঙ্গে নাই। সেইদিন যদি রাস্তায় মানুষ না থাকতো তবে হয়তো আজ আর লিখতে পারতাম না। তাদের কাছে আমি চির কৃতজ্ঞ

একে একে তিনবার বেচে গেলাম মনে হয় আমার আয়ু আরো অনেকদিন আছে ,আপনারা কি বলেন?
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুন, ২০১১ রাত ১২:২২
২০টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৬





মাসের আধিক কাল ধরে দাবদাহে মানব প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই যে অগ্নি স্নানে ধরা শুচি হওয়া শুরু হলো, তো হলোই। ধরা ম্লান হয়ে, শুষ্ক হয়, মুমূর্ষ হয়ে গেল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×