somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সৈয়দ মেহেদী হাসান
পেশায় সাংবাদিক। ‘জল পরীর ডানায় ঝাপটা লাগা বাতাস’ (২০১৩), ‘সাদা হাওয়ায় পর্দাপন’ (২০১৫) দুটি কবিতার বই প্রকাশিত। তার লেখা নাটকের মধ্যে ফেরা, তৎকালীন, আদমের সন্তানেরা উল্লেখযোগ্য। লেখালেখির জন্য ২০১৫ সালে হত্যার হুমকি প্রাপ্ত হন।

ডাক্তার স্যারের আবার স্ত্রী অসুস্থ

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


কাল রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পরি। আজ দুপুরে গরিবের আশ্রয় স্থল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে গেলাম। সিরিয়ালে দাড়িয়ে থেকে, ঝগড়া-ফ্যাসাদ করে প্রায় এক ঘন্টায় বর্হি বিভাগের টিকিট পেলাম। শেষে গেলাম ডাক্তারের রুমের সামনে। প্রথমে মেডিসিন পুরুষদের জন্য ১০৭ নম্বর কক্ষে ঢুকে স্লিপটি জমা দিলাম। কম্পাউন্ডার জানালো, ডাক্তারে নাস্তা করতে গেছেন। তখন দুপুর সোয়া ১২টা হবে। ওই ভদ্রলোক বললেন, ১০৩ নম্বর কক্ষে চলে যান। গেলাম। সেখানে একজন কিশোর বসা। স্লিপটি জমা দিতেই বললেন, এখানে জমা দিছেন কেন?
: কোথায় জমা দিব ভাই?
: ১০৭ নম্বরে যান। গিয়া ডাক্তার দিয়া রেফর করাইয়া আনেন।

আমি গেলাম আবার ১০৭ নম্বরে। সেখানে বসা মুরব্বিকে বললাম, কাকা ১০৩ নম্বরের ভাইতো বলল রেফার করাইয়া দিতে।ভদ্রলোক এবার স্লিপটি হাতে নিলেন। তখনই একজন নারী বের হয়ে যাচ্ছেন ডাক্তারের কক্ষ থেকে। তার পিছনে একজন পুরুষ। বুড়ো লোকটি স্লিপটি এগিয়ে দিলেন সেই পুরুষ ভদ্রলোকের দিকে। তিনি স্লিপটি ফিরিয়ে দিয়ে বললেন, এখন না।

শেষে, কম্পাউন্ডার সাহেব আমাকে বুঝিয়ে বললেন ডাক্তার স্যারের আবার স্ত্রী অসুস্থ। এই যে বের হয়ে গেলেন। আইজ আর হইবে না।
আমি বললাম, তাহলে আমি কি করতে পারি?
তিনি এবার একটা সিল মেরে বললেন, যান আবার ১০৩ নম্বরে।

আসলাম ১০৩ নম্বরে। স্লিপটি জমা দিতেই তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলেন সেই কিশোর। বললেন, ওই মিয়া বলছি ডাক্তার দিয়া রেফার করতে। এখানেতো শুধু সিরিয়াল যে পরছে তার সিল। যান আপনার ডাক্তার দেখানো লাগবে না।



বললাম ভাইয়া, আমার খুব সমস্যা।
: আপনার সমস্যা তাতে আমার কি? (পাশের একজনকে বলতে লাগলেন) দ্যাশে এ্যাত মানুষ। আর এক রোগ। মরে না কেউ। খালি আইয়া কইবে, আমারে এট্টু দেহাইয়া দেন।

তখন ভাগ্রক্রমে ১০৭ নম্বর কক্ষের মুরব্বি এসে পরলেন। তিনি বললেন, এই ভাইয়ের স্লিপটা জমা নে। তার পায়খানার রাস্তায় সমস্যা

কিশোরের সাথে যুক্ত হলনে আরকে যুবক। বললনে, কি ভাই আপনার হোগা ফুডা হইয়া গেছে?
আমি তার মুখের দিকে তাকিয়ে রইলাম।কই দেখি বলে, স্লিপটা নিয়ে নিলেন। দেখে বললেন, যান তিন দিন পরে আসবেন। স্যার আইজকা অনেক ব্যস্ত।

আমি বললাম, আপনি বলার কে? আপনার স্যারই বলুক কবে আসব। তখন সেই কিশোর আর যুবক একত্র হয়ে বললেন, হোগা ফুডা মানষরে এত দাপট। যা ব্যাডা তোরে দেখবে না। যা পার কর।

আমি হতবাক হয়ে গেলাম। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া যেখানে আমার অধিকার সেখানে ডাক্তারের সহযোগীদের দ্বারা এমন আচরণ পাওয়াও কি আমার অধিকার?

শেষে চিন্তা করলাম, হয়তো কথা বললে বাকবিতন্ডা হত। ডাক্তারের সহযোগীরা আমাকেই আটকে পেটাতো। পূর্বের অভিজ্ঞতায় বলছি, তারপর পুলিশ এসে আমাকেই থানায় নিয়ে যেত। আর ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কর্মবিরতি ডেকে হাজারো রোগীর সেবা বন্ধ করে দিত।

তার চেয়ে থাক, আজ না হয় চিকিৎসা না নিয়েই যাই।
শেষে চলে এলাম বাসায়। কি আর করার।


ঘটনাটি ১ সেপ্টেম্বর, শেবাচিম হাসপাতালের
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:১২
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০



'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×