somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অপেক্ষা অথবা দ্বৈত স্বত্ত্বার গল্প -ডরোথি পার্কার

০২ রা ডিসেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৫:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঈশ্বর, সে যেন এখনই আমাকে একটা ফোন করে। দয়া কর ঈশ্বর। তাকে দিয়ে এখনই একটা ফোন করাও। আমি তোমার কাছে আর কিছুই চাইব না। সত্যি বলছি, আর কিছুই না। এটুকু ছাড়া তোমার কাছে আমার চাইবার মত আর কিছুই নেই। শুধু তার একটা ফোন। ঈশ্বর দয়া কর। দয়া কর ঈশ্বর।

আচ্ছা আমি যদি এ ব্যাপারটা নিয়ে না ভাবি তাহলে হয়ত ফোনটা বেজে উঠবে। মাঝে মাঝে এমন হয়। কিন্তু আমি কি নিয়ে ভাববো? আমি ত অন্য কিছু নিয়ে ভাবতেও পারছি না। আচ্ছা আমি যদি পাঁচ দশ করে পাঁচশ পর্যন্ত গুনতে থাকি তাহলে কি এর মধ্যে ফোনটা বেজে উঠবে? আমি আস্তে আস্তে গুনবো। কোন চালাকি করব না। যদি তিনশ পর্যন্ত গোনার পর ফোনটা বেজে ওঠে তাও আমি থামব না। পুরো পাঁচশ পর্যন্ত গুনেই আমি আমি ফোন ধরব। পাঁচ দশ পনের বিশ পঁচিশ তিরিশ পঁয়তিরিশ চলি্লশ পঁয়তালি্লশ......... ইস্ কেন বাজছে না? ফোনটা বাজছে না কেন?

এই শেষবারের মত আমি ঘড়িতে সময় দেখব। সাতটা বেজে দশ। সে বলেছিল পাঁচটায় আমাকে ফোন করবে। "জান, আমি তোমাকে ঠিক পাঁচটায় কল করবো।" সে আমাকে 'জান' বলে ডেকেছিল। হঁ্যাা তাই ত বলেছিল সে আমাকে। আমি ঠিক জানি, সে দু'বার আমাকে 'জান' বলেছিল। দ্বিতীয়বার বলেছিল ফোন রেখে দেবার সময়-"এখন রাখি জান আমার?" সে অফিসে ছিল সেইসময়। হয়ত ব্যাস্ত ছিল। আর অফিসের মধ্যে এর চেয়ে বেশি কিছু বলা সম্ভবও ছিল না। কিন্তু তার মধ্যেও সে আমাকে দু'বার 'জান' বলেছে। তাকে ফোন করায় সে হয়ত বিরক্ত হয়নি। কিন্তু আমি জানি, অফিসে তাকে ফোন করাটা আমার ঠিক হয়নি। এই ব্যাপারটা ছেলেরা পছন্দ করেনা। এভাবে ফোন করলে ছেলেটা বুঝতে পারে যে মেয়েটা এখন তার কথা চিন্তা করছে, তাকে কাছে পেতে চাইছে। আর এই ব্যাপারটা যখন ছেলেটার মাথায় আসে তখন তার আর মেয়েটাকে ভালো লাগেনা। কিন্তু আমি তার সাথে গত তিনদিন কোন কথা বলিনি। আর আজকে, গত তিনদিনের পর তাকে ফোন করে জানতে চেয়েছি সে কেমন আছে। অন্য কেউ ফোন করলেও নিশ্চই তাকে একথা জিজ্ঞেস করে। এতে ত তার রাগ করার কথা না। আর আমি ত তাকে বিরক্তও করিনি। সেও ত তাই বলল, "না না বিরক্ত হইনি। আমিই তোমাকে ফোন করতাম।" তার ত এ কথা বলার দরকার ছিল না। আমি ত তার কাছে জানতে চাইনি সে কেন আমাকে ফোন করেনি। সত্যি বলছি, আমি চাইনি। আমার কাছে কখনই মনে হয়নি যে সে আমাকে ফোন করতে চাইবে কিন্তু তার চাওয়াটুকু শুধু চাওয়ার মাঝেই থাকবে। ঈশ্বর! সে যেন এমন না করে।
"জান, আমি তোমাকে ঠিক পাঁচটায় কল করবো। এখন রাখি জান আমার?" সে ব্যাস্ত ছিল। হয়ত কোন তাড়াও ছিল। তার আশেপাশে অনেকের কন্ঠ শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু এতকিছুর মধ্যেও সে আমাকে দু'বার জান বলে ডেকেছিল। আমাকেই সে বলেছিল কথাগুলো। আমি যদি আর কখনই তাকে না দেখি তার পরেও আমিই ওর জান, প্রিয়তমা। কিন্তু আমার কাছে এই ব্যাপারটা খুব সামান্য মনে হচ্ছে। আসলে কোন কিছুই যথেষ্ঠ না যদি তার সাথে আমার আবার দেখা না হয়। ঈশ্বর! দয়া করে আরেকবার তার সাথে আমার দেখা করিয়ে দাও। আমি কথা দিচ্ছি, আমি বদলে যাব। আমি আরও ভাল হবার চেষ্টা করব। যদি আরেকবার তার সাথে আমার দেখা করিয়ে দাও। যদি একটিবার তাকে দিয়ে ফোন করাও। ঈশ্বর! একটি বার সে আমাকে ফোন করুক!

আহ্ ঈশ্বর! আমার প্রার্থনা কি তোমার কছে খুব কম মনে হচ্ছে? তুমি ত ওপরে বসে আছ। তোমার চারপাশে কতশত হুর, গেলমান আর নক্ষত্র ঝলমল করছে। আর আমি তোমার কাছে শুধুমাত্র একটা ফোন কলের জন্য কান্নাকাটি করছি। তুমি হাসছ ঈশ্বর! আমার কষ্টটা কি তুমি বুঝতে পারছ? তুমি ত নিশ্চিন্তে, নিরাপদে তোমার আসনে বসে আছ। কোন কিছুই তোমাকে স্পর্শ করেনা। কেউ ত তোমার হৃদয় নিয়ে খেলতে পারেনা। এটা অসম্ভব যন্ত্রনার ঈশ্বর! খুব কষ্টকর যন্ত্রনা। আমাকে তুমি সাহায্য করবেনা? তুমিই ত বলেছ তোমার কাছে মন থেকে কেউ কিছু চাইলে সে খালি হাতে ফেরেনা? তোমার দোহাই লাগে ঈশ্বর! তাকে দিয়ে একটা ফোন করাও।

নাহ্। এবার আমার থামা উচিৎ। এরকম করাটা ঠিক হচ্ছেনা। এমন ত হতেই পারে। ফোন করার কথা বলে ফোন না করাটা ত বিরাট কোন ব্যাপার না। এটা ত খুব অসম্ভব কিছুনা, তাইনা? সারা দুনিয়ায় এরকম ত হরহামেশাই হচ্ছে। ধুত্তোরি! সারা দুনিয়ায় কি হচ্ছে না হচ্ছে তা দিয়ে আমার কি? আমার ফোনটা কেন বাজছে না? নাকি বাজতে পারছেনা? এই তুই কি বাজতে পারিস না? পারিস না বাজতে? বাজতে কি তোর খুব কষ্ট হয়? খুব লাগে? এটাকে আজকে আমি ভেঙেই ফেলব। তোর শেকড়ের মত তার আমি উপড়ে ফেলব। তোকে জাহান্নামে পাঠাব!

নাহ্। আমি আর পারছিনা। আমার অন্যকিছু করা দরকার। হঁ্যা। পেয়েছি। আমি ঘড়িটা অন্য ঘরে নিয়ে রাখব। তাহলে আমার আর ঘড়ির দিকে তাকানো হবেনা। যদি সময় দেখতে ইচ্ছে করে তাহলে আমাকে হেঁটে পাশের ঘরে যেতে হবে। আর এটাও ত একটা কাজ। কাজের মধ্যে থাকলে হয়ত ব্যাপারটা ভোলা যাবে। হয়ত আমি ঘড়ি দেখে ফেরার আগেই সে আমাকে ফোন করবে। যদি সে আমাকে ফোন করে আমি তার সাথে অসম্ভব ভাল ব্যবহার করব। ফোন করে যদি সে বলে আগামী কালও আমাদের দেখা হবে না তাও আমি মন খারাপ করব না। প্রথম যে দিন তার সাথে আমার দেখা হয়েছিল ঠিক সে দিনের মত শান্ত, মিষ্টি ব্যবহার করব। তাহলে হয়ত সে আবার আমাকে ভালোবাসতে শুরু করবে। কাউকে ভালোবাসার আগে তার সাথে মিষ্টি ব্যবহার করা খুব সহজ।

আমার মনে হয়, এখনও সে আমাকে অল্প অল্প ভালোবাসে। তা না হলে সে দু'বার আমাকে 'জান' বলত না। তার মানে এখনই সব আশা শেষ হয়ে যায়নি। ঈশ্বর, সে যদি আমাকে একবার ফোন করে, আমি,তোমার কাছে আর কিছুই চাইব না। আমি তার সাথে ঠিক আগের মতই ভাল ব্যবহার করব। তাহলেই সে আবার আমাকে আবার ভালোবাসতে শুরু করবে। আর তাহলেই তোমার কাছে আমার আর কিছুই চাইতে হবেনা। তুমি কি আমার কথা বুঝতে পারছনা ঈশ্বর?

আমি ভাল নই বলে তুমি কি আমাকে শাস্তি দিচ্ছ, ঈশ্বর? আমি যা করেছি তার জন্য কি তুমি আমার ওপর অসন্তুষ্ট? কিন্তু ঈশ্বর পৃথিবীতে ত আরো কত খারাপ মানুষ আছে। তুমি কেন আমাকেই শুধুু কষ্ট দিচ্ছ? আমি ত খুব খারাপ কিছু করিনি। আমি ত কাউকে আঘাত করিনি, কাউকে কষ্ট দেইনি। আর ব্যাপার গুলো তখনই খারাপ হয় যখন কেউ কাউকে কষ্ট দেয়। আমি তা করিনি আর সেটা তুমি খুব ভালই জানো। জানোনা তুমি? তাহলে কেন তাকে দিয়ে একটা ফোন করাচ্ছো না?

সে যদি আমাকে ফোন না করে তাহলে আমি ভাববো ঈশ্বর আমার ওপর অসন্তুষ্ট। আমি পাঁচ দশ করে পাঁচশ পর্যন্ত গুনব। এর মধ্যে যদি সে আমাকে ফোন না করে তাহলে ভাববো ঈশ্বর আমাকে আর কখনই সাহায্য করবে না। পাঁচ দশ পনের বিশ পঁচিশ তিরিশ.............. আমি জানতাম! আমি জানতাম এমনই হবে আমার সাথে! ঈশ্বর আমাকে তুমি নরকে পাঠাও! কি ভেবেছ তুমি? তোমার নরক দিয়ে আমাকে ভয় দেখাবে? তুমি কি ভাবছ এখানে আমি স্বর্গসুখে আছি?

তার ফোন করতে দেরি হচ্ছে বলে এমন করাটা কি ঠিক হচ্ছে? সে হয়ত ফোন না করেই সরাসরি আমরি সাথে দেখা করতে চলে আসবে। যদি সে এসে দেখে যে আমি কাঁদছি তাহলে সে খুব বিরক্ত হবে। ছেলেরা কান্না পছন্দ করেনা। তাকে কখনই কাঁদতে দেখিনি আমি। ইশ্ তাকে যদি একবার কাঁদাতে পারতাম! একটিবার যদি সে কাঁদতে কাঁদতে মেঝেতে গড়াগড়ি করত! তাকে যদি বোঝাতে পারতাম মনের মধ্যে কতটা কষ্ট নিয়ে আমি কাঁদি! একটিবার, শুধু একটিবার যদি পারতাম!

সে নিশ্চই আমাকে নিয়ে এমনটা ভাবেনা। এমনকি আমার মনে হয় সে জানেও না যে সে আমার মনের কতখানি জুড়ে আছে। যদি সে জানত? ছেলেরা সবসময়ই ভাবে যে তাদের প্রেমিকারা তাদের নিয়ে খুব খুশি। আসলে তারা এটা ভাবতে ভালোবাসে। তারা কখনই এটা চিন্তাও করতে পারেনা যে তাদের কারনেই মেয়েগুলো কত কষ্ট পায়। আর কেউ যদি মুখ ফসকে বলেই ফেলে তাহলেই ছেলেটা তাকে ঘৃণা করতে শুরু করে। সে ভাবে মেয়েটা তার ব্যক্তিস্বত্তা গ্রাস করতে চায়। যে কোন সত্যি কথা বললেই আসলে ছেলেরা মেয়েদের ঘৃণা করতে শুরু করে। আর এ জন্যই মেয়েদের সারাজীবন অভিনয় করে যেতে হয়। আহ্ আমি ভেবেছিলাম আমাদের হয়ত এমনটা করতে হবেনা। আমি তাকে যা বোঝাতে চাই তা বলতে গেলে কখনই শেষ হবেনা। সে যদি একটিবার আমাকে ফোন করত আমি কখনই তাকে বলতাম না যে আমি তার কারনে কষ্ট পেয়েছি। ছেলেরা দুঃখী মানুষ পছন্দ করেনা। আমি এত ভাল হব যে সে আমাকে ভালো না বেসে পারবেই না। শুধু একটিবার যদি সে আমায় ফোন করত!

আচ্ছা কি করছে সে এখন? হয়ত সে এখন রাস্তায়। হয়ত সে আমার কাছেই আসছে। আচ্ছা তার কিছু হয়নি ত? না তার খারাপ কিছু হবে এমনটা আমি কল্পনাও করতে পারি না। আমি ভাবতেও পারিনা সে নিথর হয়ে মরে পড়ে আছে। আচ্ছা যদি সে মারা যেত! কি ভয়ংকর চিন্তা করছি আমি! উমম নাহ্ অতটা ভয়ংকর নয়। ব্যাপারটা বেশ ভালই হত। যদি সে মারা যেত তাহলে সে শুধু আমারই থাকতো। অন্য কেউ ওকে পেত না। আমারও তাহলে এসব নিয়ে ভাবতে হত না। আমি শুধু পুরোনো দিনগুলোর কথা ভাবতাম। কি বর্নিল ছিল সেই দিনগুলো। শুধু ও আর আমি আর ছিল স্বপ্ন। ইশ্ যদি সে মারা যেত! যদি মারা যেত!

কি আশ্চর্য! আমি কি অদ্ভূত আচরন করছি। একজন আমাকে সময়মত ফোন করেনি বলে আমি তার মৃতু্য কামনা করছি! এমনও ত হতে পারে যে ঘড়িটা হয়ত ভুল সময় দেখাচ্ছে। সে হয়ত খুব দেরি করে ফেলেনি। অনেক কারনেই সামান্য দেরি হতে পারে। হয়ত আজ তার কাজের চাপ বেশি। হয়ত সে তার বাসায় গিয়ে আমাকে ফোন করবে। অন্যের সামনে ফোন করাটা তার পছন্দ না। হয়ত সে একটু হলেও উদ্বিগ্ন এই ভেবে যে আমি তার ফোনের অপেক্ষায় আছি। এমনও ত হতে পারে যে হয়ত সে ভাবছে আমিই তাকে ফোন করব। আমি সেটা করতেই পারি। আমিও পারি তাকে ফোন করতে।

না আমি কখনই এটা করব না। না না না। হায় ঈশ্বর আমি যেন তাকে ফোন না করি। আমাকে এ কাজ করিও না ঈশ্বর। ওর যদি আমার জন্য একটুও চিন্তা থাকত তাহলে ও যেখানেই থাকুক আর ওর সামনে যত মানুষই থাকুক না কেন ও ঠিকই আমাকে ফোন করত। ঈশ্বর আমাকে শুধু জানতে দাও ও কি ভাবছে? কি করছে? আমি কি শুধু শুধুই আশা করে যাচ্ছি?

আমি তাকে কখনই ফোন করব না। জীবনেও না। ও মরুক, জাহান্নামে যাক তা-ও না। আর হঁ্যা, ঈশ্বর তোমার কাছেও আর কাঁদবো না। এটুকু করার ক্ষমতা আমার আছে। যদি সে আমাকে সত্যিই চায় তাহলে ইচ্ছে করলেই সে আমাকে পেতে পারে। সে জানে আমি কোথায়। সে জানে আমি তার জন্যেই অপেক্ষা করছি। সে নিশ্চিত ভাবেই জানে যে আমি শুধুই তার। আমার ভাবতে অবাক লাগে, যখনই কোন ছেলে নিশ্চিত ভাবে বুঝতে পারে যে মেয়েটা শুধুই তার, তখনই সে মেয়েটার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।

তাকে ফোন করাটা খুব সহজ। হয়ত তাকে ফোন করাটা ততটা বোকামী হবেনা। হয়ত সে রাগ করবেনা। এই ব্যাপারটাকে হয়ত সে খুব স্বাভাবিক ভাবেই নেবে। হয়ত সে ফোনে আমাকে পাবার চেষ্টা করেছিল। কখনও কখনও এমন হয়। কেউ হয়ত ফোন করেই যাচ্ছে করেই যাচ্ছে। কিন্তু ওপাশ থেকে কেউ কোন সাড়া দিচ্ছে না। না, আমি নিজেকে বোঝানোর জন্য এমনটা বলছিনা। সত্যিই মাঝে মাঝে এমন হয়। ঈশ্বর তুমি ত জানো এমন হয় কি না হয়। ঈশ্বর, আমাকে ফোন থেকে দূরে রাখো। প্লীজ দূরে রাখো। আমাকে এতটুকু অহংকার ধরে রাখতে দাও। এতটা খেলো করোনা আমাকে। এটুকুই ত আমার সম্বল।

আচ্ছা অহংকার, গৌরব এগুলো কি খুব বিরাট ব্যাপার? কি হবে এগুলো দিয়ে যদি আমি তার সাথে কথাই বলতে না পারি? এই অহংকার, এই গৌরব আসলে কিছুই না। সত্যিকারের গৌরব ত অহংকার না থাকার মধ্যেই। আমি তাকে ফোন করতে চাই বলে এসব বলছিনা। কথাগুলো সত্যি, আমি জানি। আমি এসব তুচ্ছ অহংকারের নিকুচি করি। ঈশ্বর আমাকে ফোন থেকে দূরে রাখো। আমি যেন তাকে ফোন না করি।

আমি বুঝিনা মানুষ অহংকারী হয়ে কি পায়? এটা একটা ফালতু ব্যাপার। আমিই হয়ত তাকে ভুল বুঝেছি। হয়ত সে-ই আমাকে পাঁচটায় ফোন করতে বলেছিল- "আমাকে ঠিক পাঁচটায় ফোন করো জান।" হঁ্যা আমি প্রায় পুরোপুরি নিশ্চিত। এ কথাই বলেছিল সে আমাকে।
ঈশ্বর আমি নিজেকে বোঝানোর জন্য কি বলছি এসব?

আমি অন্য কিছু নিয়ে ভাববো এখন। চুপচাপ বসে থাকব। কিন্তু আমি পারছিনা কেন? কেন আমি স্থির থাকতে পারছিনা? আচ্ছা আমি ত বসে বসে কিছু পড়তে পারি। কিন্তু কি পড়বো? ওই বইগুলো ত সব ভালোবাসার গল্পে বোঝাই। এমন ভালোবাসা যেখানে দু'জন দু'জনকে প্রান দিয়ে ভালোবাসে। আচ্ছা এই গল্পগুলো কারা লিখে? তারা কি জানেনা এসব যে চরম মিথ্যা কথা? তারা কি জানেনা এই মিথ্যাগুলো মানুষকে কত কষ্ট দেয়? চুলোয় যাক ওরা।

আমি শান্ত থাকব। উত্তেজিত হবার মত এমন কিছু হয়নি। আমি ভাববো সে এমন একজন মানুষ যার সাথে আমার ভাল পরিচয় নেই। আমি তাকে ভাল করে চিনিও না। আমি ভাববো সে আরেকটা মেয়ে। তারপর তাকে ফোন করে বলব, " ঈশ্বরের দোহাই লাগে, কি হয়েছে তোমার বলবে তুমি?" আমি শুধু এটুকুই করব। এরপর দ্বিতীয়বার আর তাকে নিয়ে ভাববো না। কেন আমি তার সাথে এত ভাল ব্যবহার করব? শুধু তাকে ভালোবাসি বলে? হয়ত তাই। আমি তাকে খুব স্বাভাবিক ভঙ্গিতে ফোন করব। আমি যদি না করি তাহলে তুমি দেখে নিও ঈশ্বর। আমি অবশ্যই করব। হায় আমি একি করতে যাচ্ছি ! না না না! আমাকে দিয়ে তুমি করাবে ঈশ্বর?

ঈশ্বর তুমি কি সত্যিই তাকে দিয়ে ফোন করাবে না? তুমি কি নিশ্চিত? একটু কি ছাড় দিতে পারোনা তুমি? সত্যিই কি পারোনা? আমি বলছিনা যে তাকে এখনই ফোন করতে হবে। শুধু সে যেন ফোন করে। একটু দেরীতে হলেও যাতে সে-ই করে। আমি পাঁচ দশ করে পাঁচশ পর্যন্ত গুনব। এর মধ্যে যদি সে ফোন না করে তাহলে আমিই করব। হঁ্যা আমিই করব।

হে ঈশ্বর, হে সৃষ্টিকর্তা, পরম করুণাময় এর আগেই সে যেন একটিবার আমাকে ফোন করে। একটিবার।

পাঁচ দশ পনের বিশ পঁচিশ তিরিশ পঁয়তিরিশ চলি্লশ.......................



৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×