ধংসের আগে মৃত্যু এবং পুনর্জন্ম যার
গায়ের কাঁটায় জ্বলে ওঠে তার নিবিড় পুরস্কার ।
বুভুক্ষু দেশ, আমি মাথা পেতে তুলে নেয়া এক প্রাণ
বাংলা গ্রামের মন ভাঙ্গা সুর, বুক-ভাঙ্গা অভিমান ।
খাদ্য চাইছি, কবিতাপাগল, ভাষা এসে অস্ফুটে
খরার ভিতর লিখে রাখে গাছ, রক্তকরবী ফুটে ।
জোৎস্নায় মরে, জোৎস্নায় পুড়ে বুদ্ধিভ্রংশ লোক
বিপুল আকাশে টাঙিয়ে রেখেছে দিগন্তব্যাপী শ্লোক ।
এই তবে ঘাস, এই তবে মাটি ! বলে দাও আরও কী কী?
ডানদিক থেকে এগিয়ে এসেছে রহস্য টিকটিকি ।
জিভ আর লোভ, মোহ ও অর্থ কিভাবে করব জয়
পোড়া ঘর আর ধংসচিহ্ন ফেলে রাখা নির্ভয় ।
একদিন তাই পিছিয়ে পিছিয়ে খুঁজে পেয়ে যাই পথ
এত দুঃখেও এত হত্যায় মানুষ এখনো সৎ !
সাধারন তারা বাঁচতেই চায় অন্ন ব্রহ্ম ভাবে
ঘি আর শাকে শান্তির হাসি সংসার উল্টাবে ।
দুটি ভাত শুধু অনন্তধবনি গাছে বসে থাকে প্রেত
দুপুর বেলায় ঘুমিয়ে পরেছে নিবিড় শস্যখেত ।
দুরদেশ থেকে হেটে-হেটে আজ পার হয়ে যাওয়া কেউ
শাড়ির উপরে গয়নার কাজ আগুনগর্ভ ঢেউ ।
পথে পথে শুধু ফেলে রেখে যায় চরনকুসুম তার
বালকের দল ধান ভেবে আজ ভরেছে অলংকার ।
ধান তবু আছে অস্ত্র যখন পুঁতে ফেলে দাও ওকে
অনেক সময় পেরিয়ে গিয়েছে দরজায় কড়া ঠুকে ।
উঠানে মুরগি, মুরগির শিরে ধরা পড়ে আছে বাজ
ছায়া মূর্তির পাশে ঘোরেফেরে হরিণের কারুকাজ ।
পড়ে যেতে হবে, চলে যেতে হবে প্রানহীণ এক শব
আমার মধ্যে ঘুরে-ফিরে ওঠে জেগে থাকা বিপ্লব ।
হারের ভিতর শুদ্ধতা খুঁজে অনেক মানুষ লীন
মরে যাওয়াটাই ব্যর্থতা শুধু বেঁচে থাকা রঙ্গিন !
রংয়ের পতাকা পেয়ে গেছি হাতে গতির শক্তি পার
মাথায় মুকুট, তবু রাজা নই, রাজার ঘোড়সওয়ার ।
বারবার ডাকো ক্ষুধা নিয়ে তাই ছেড়ে চলে যাওয়া দায়
না ফিরেও জানি এভাবেই তবু ফিরে ফিরে আসা যায় ।