somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

”কফির সাথে জুড়ে থাকা...”

১৭ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১.
তাহনিফ সাধারণত
কফি নিয়ে পরীক্ষণধর্মীতায় যায় না।
পরীক্ষণধর্মীতার অভিজ্ঞতাও সুখকর
না। ওয়েটারকে তাই ম্যানু
না দেখেই ক্যাপাচিনো ওর্ডার
দিয়ে দিল। ইতালির এক
কফিশপে বসে ল্যাপটপটা নিয়ে
আবার মগ্ন হয়ে গেল। মনযোগ
ধরে রাখতে পারছে না। মাথায়
পুরোনো স্মৃতি উকি দিচ্ছে।
স্মৃতি যখন উকি দেয় তখন সেই
স্মৃতিকে সম্ভাষণ
করে ঢুকতে দিতে হয়। নতুবা বার বার
কড়া নেড়ে বিরক্ত করে। ওয়েটার
কফি দিয়ে গেল। কফিতে চুমুক
দিয়ে স্মৃতিটাকে মুক্ত
করে দেয়া ছাড়া উপায় ছিল না!
প্রতিবার কফির কাপে চুমুক দিলেই
স্মৃতিটা ভেসে ওঠে ঠিক যেন
গতকালের ঘটনা। স্বাদটাও যেন
পেয়ে যায় অবচেতনে!
২.
কফি উইথ তাহনিফ আজ।
রাইসা কবে যেন বলেছিল
কফি খাওয়াবে। তাহনিফ
গালভরা নামও দিয়ে দেয় "কফি উইথ
তাহনিফ" অবশ্যই "কফি উইথ করণ" এর
অনুকরণে। রাইসা সেই অনুকরণ
করা নামটাতেই মজা পেয়ে যায়
কেন যেন। যাই হোক কফিশপের
বাইরে তাহনিফ অপেক্ষা করছে।
রাইসার আসতে বরাবরের মতই
দেড়ি হল।
-দাঁড়ায় আছ কেন বাইরে? ভেতরে চল।
তাহনিফ কিছু বলার আগেই কাউন্টার
এট্যাকের শিকার। রাইসার
পেছনে পেছনে কফিশপে ঢুকল।
সুবিধেমত
জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না। ওদের
সুবিধে করে দিতেই কোণার দিকের
একটা টেবিল খালি হয়ে গেল।
-আহ্ এটলাস্ট।
-কি এটলাস্ট?
-এই যে তোমার সাথে, তাহনিফের
সাথে কফি উইথ তাহনিফ।
-... কফি তো খাওয়াবা তুমি। আমার
কি! আমার তো মজা।
-এহ্... আমি শুধু আজকেই। এরপর
থেকে তুমি খাওয়াবা।
-আচ্ছা যদি আমাকে পাও...
-খুঁজে বের করব হুহ্।
-হইছে অর্ডার দাও।
-তুমি দাও তোমারটা।
ওয়েটার এসে ম্যানু ধরিয়ে দিল।
তাহনিফ এসপ্রেসো ওর্ডার দিল।
রাইসা বলল ডাবল এক্সপ্রেসো নিতে।
তাহনিফ এসপ্রেসো এর আগে টেস্ট
করেনি। হুমায়ূন আহমেদের কোন
বইয়ে যেন নায়িকার
এসপ্রেসো বানানোর পারদর্শীতার
কথা বলা হয়েছিল। তাহনিফ ভাবল
এমন লেখকের উপন্যাসের
নায়িকা যখন
এসপ্রেসো বানাতো তবে অবশ্যই
তা ভাল হওয়ার কথা। আর
রাইসা যেহেতু বলছে ডাবল
এসপ্রেসো নিতে তো নেয়াই যায়।
তাহনিফ ডাবল এসপ্রেসো অর্ডার
দিয়ে দিল। ওয়েটার বলল কিঞ্চিত
বিটার হতে পারে। সামান্য
বিটারে কিই বা আসে যায়।
রাইসা স্লাইস কেক নিল।
একটু পর ওয়েটার কফির সাথে এক গ্লাস
পানি এনে তাহনিফের
সামনে এনে রাখল। পানির
কার্যকারিতা ঠিক বুঝা গেল না।
তাহনিফ কফিতে চুমুক দিল। টেস্টটার
জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিল না। সুন্দর
করে ইংরেজিতে বিটার না।
বাংলা ভাষায় তিতা, শুধু
তিতা না,অতিরিক্ত
বাড়াবাড়ি রকমের তিতা।
তাহনিফের মুখে তিতার কোন ছাপ
পড়ল না। পাশের পানির
গ্লাসটা তুলে চুমুক দিল।
পানিটা মিষ্টি লাগল। কিন্তু
পানিতে চিনি নেই।
তিতা খাওয়ার
কারণে পানি মিষ্টি লাগছে।
পানির
কার্যকারিতা এতক্ষণে বুঝতে পারল
তাহনিফ। রাইসা কথা বলে যাচ্ছে।
তাহনিফ সহজ
ভঙ্গিতে কথা শুনে যাচ্ছে। এক চুমুক
এক্সপ্রেসো এক চুমুক পানি।
এসপ্রেসোতে চুমুকের পর এক চুমুক
পানি এর টেস্ট আনএক্সপ্রেসেবল!
কফি অর্ধেকের বেশি শেষ
এতক্ষণে রাইসা কিছু খেয়াল করল
মনে হয়।
-এই তুমি এভাবে পানি খাচ্ছ কেন।
-এমনি।
-না ঘাপলা আছে। কফিতে সমস্যা?
-নাহ্ তেমন না। তবে একটু বিটার।
-মানে! কফিতো একটু এমনই হয়।
-না মানে তিতা।
-হ্যাহ্ কেমন তিতা?
-বুঝানো সম্ভব না অনেক তিতা।
-দাও দেখি...
তাহনিফ
ভাবে নি যে রাইসা কফিতে চুমুক
দেবে। কিন্তু চুমুক দিল। রাইসার
চেহারাটা দেখার মত হয়েছে।
পুরোটে মুখে বিস্ময়ের ছাপ।
রাইসা তাহনিফের দিকে করুণ
দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।তাহনিফ
হাসছে মৃদু মৃদু।
-তুমি এতক্ষণ এই কফি খাচ্ছিলা?
-হ্যা সমস্যা কি! শেষ কর না বাকিটুকু।
তাহনিফের চোখে কিছুটা কৌতুক।
রাইসা পানি চায়নি অবশ্য এখনো।
কি মনে করে বাকি কফিটুকুও শেষ
করে ফেলল রাইসা। কাপ রেখেই কেক
খাওয়া শুরু করল।
রাইসা বলতে লাগল,"এত তিতা।
তুমি কীভাবে এটা চুমুক দিচ্ছিলা?
তাও আবার অল্প অল্প করে।!"
তাহনিফের
ঠোঁটে লেগে থাকা হাসি আরও
বিস্তৃত হল,"তোমার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে চুমুক
দিচ্ছিলাম তিতা দূরে থাক, আমার
কাছে তো মিষ্টি লাগছিল!"
"উফ্ তুমি এত কথা শিখসো না...."
রাইসার মুখে কিঞ্চিত
লজ্জা লেগে আছে যেন।
তাহনিফের ঠোঁটের কোণে মৃদু
হাসি ফুটে উঠল।
স্মৃতিটা পুনরোমন্থনের জন্য আবার
আগের মত রেখে দিল!
-”কফির সাথে জুড়ে থাকা...”
-তাহমিদ উল্লাস
-১২.০৫.১৪
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

বন্ডাই সৈকতের হামলাস্থল। ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সৈকত এলাকায় ইহুদিদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত মানুষের ওপর দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিতে গুলি চালিয়েছে। এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমাণ নন বলা কুফুরী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪



সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×