somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শুধু গ্যাসই নয় অথবা তরল সোনারূপী তেলই নয় বাংলাদেশের এক সিলেটেই রয়েছে বহু খনিজসহ বহু মূল্যবান ইউরেনিয়াম। ভারত তা দখলের জন্য গত বছর নভেম্বর থেকেই কাজ করছে। সীমান্তে উদ্দেশ্যমূলকভাবে অপতৎপরতা চালাচ্ছে। বাংলাদেশ সরকারের টনক নড়বে কবে? নজর পড়বে কবে?

১২ ই নভেম্বর, ২০১০ রাত ১১:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিপুল গ্যাসই নয়, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল তথা পূর্ব সিলেটে রয়েছে ‘তরল সোনা’ তেল এবং বিশ্বের সবচেয়ে দামি আলোচিত সম্পদ ইউরেনিয়াম আকরিক৷ দেশীয় কোম্পানির মাধ্যমে সঠিক অনুসন্ধান ও উত্তোলনের মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রবেশ করতে পারে তরল সোনার যুগে৷ ঠিক তেমনি শুধু আহরণের মতো সাহসী সিদ্ধান্তের মাধ্যমে এ দেশ প্রবেশ করতে পারে ইউরেনিয়াম আকরিক যুগে৷
১৯৫৫ সালে সিলেটের হরিপুরে ১ নম্বর কূপে গ্যাস উত্তোলনের মাধ্যমে বাংলাদেশ গ্যাসের যুগে প্রবেশ করে৷ আর ১৯৮৬ সালের ২৩ ডিসেম্বর সিলেট ৭ নম্বর কূপে খনিজ তেল আবিষ্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশ তেল যুগে প্রবেশ করে৷ কিন' বিভিন্ন কারণে তরল সোনার যুগে পুরোপুরি প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি বাংলাদেশকে৷ ১৯৮৬ সালে কুলাউড়ার হারাগাছা পাহাড়ে আবিষ্কৃত হয় মূল্যবান আকরিক ইউরেনিয়াম৷
১৯৮৬ সালের জুন-জুলাই মাসে আণবিক শক্তি কমিশনের একদল বিশেষজ্ঞ সেখানে ইউরেনিয়াম সম্পদের বিপুল মজুদের ব্যাপারে নিশ্চিত হন৷ তারা বিষয়টি তখন মিডিয়ায় প্রকাশ করেন৷ কিন' ব্যয়বহুল হওয়ায় সরকার তখন ইউরেনিয়াম আহরণের ব্যাপারে বেশি দূর এগোয়নি৷
দেশীয় কোম্পানি পেট্রোবাংলা ও বাপেক্সের সাথে একটি সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ভূতাত্ত্বিক বিশ্লেষণে বাংলাদেশের তেল সম্ভাবনাময় এলাকাগুলোর মধ্যে দেশের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত সিলেট অঞ্চলকে সর্বাপেক্ষা সম্ভাবনাময় হিসেবে গণ্য করা হয়৷ সিলেট বেসিনের বেশির ভাগ ঊর্ধ্ব ভাঁজগুলোই তেল ও গ্যাসের উপযুক্ত স্থান হিসেবে পরিচিতি ৷
দেশের প্রথম তেল আবিষ্কৃত হয় বড়লেখার পাথারিয়া পাহাড়ে ১৯৩৩ সালে৷ বার্মা অয়েল কোম্পানি তা আবিষ্কার করে ৷ কিন' উত্তোলনের সময় তা রহস্যজনক কারণে বিস্ফোরিত হয়ে আশপাশের ১৫-২০ মাইল এলাকায় বন্যার মতো সৃষ্টি হয়৷ কূপ পরিত্যক্ত ঘোষণার পর অদ্যাবধি তা আর খননের কোনো পরিকল্পনা নেয়া হয়নি৷ তারপর ১৯৬২ সালে দেশীয় কোম্পানি বিশ্ব ব্যাংকের সহযোগিতায় গোলাপগঞ্জের কৈলাশটিলায় গ্যাসকূপ খনন করলে সেখানে তেলের সন্ধান পাওয়া যায়৷ কৈলাশটিলা কূপে পরীক্ষামূলকভাবে প্রতিদিন ৫০০ ব্যারেল তেল উত্তোলিত হয়৷ কিন' অজ্ঞাত কারণে কৈলাশটিলা তেল সম্পর্কে কর্তৃপক্ষ কোনো ঘোষণা না দিয়েই তেলক্ষেত্রটি বন্ধ করে দেয়৷ ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো হরিপুরে বাণিজ্যিক ক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়৷ ১৯৮৭ সালে ভাটেরার পাহাড়ি এলাকায় ফেঞ্জুগঞ্জ গ্যাস ক্ষেত্রে তেল আবিষ্কৃত হয়৷ পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে সিলেট বেসিন তথা দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে কূপ খনন করে ব্যাপক সাফল্য পাওয়া যায়৷ এই সময়ে ১৯৫৫ সালে সিলেট গ্যাসক্ষেত্র, ১৯৬০ সালে রশিদপুর গ্যাসক্ষেত্র, ১৯৬৩ সালে হবিগঞ্জ গ্যাসক্ষেত্র, ১৯৮১ সালে বিয়ানীবাজার গ্যাসক্ষেত্র এবং ১৯৮৭ সালে ফেঞ্জুগঞ্জ গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়৷ দেশের ভূতাত্ত্বিক বিশ্লেষকরা দৃঢ়ভাবে মনে করেন, সিলেটের ভূ-অভ্যন্তরে একাধিক এলাকায় আরো উল্লেখযোগ্য তেলের মজুদ রয়েছে এবং নিঃসন্দেহে সিলেট বাংলাদেশের সর্বাপেক্ষা তেল সম্ভাবনাময় এলাকা। কিন' গত ২০ বছরে সিলেট অঞ্চলে বিশেষভাবে তেল অনুসন্ধান কিংবা আহরণে তেমন কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি৷
সঙ্গতকারণেই এ প্রশ্ন খুব জোরদারভাবে উত্থাপিত হয়, কেন তেল অনুসন্ধানে সরকার কোনো গুরুত্ব দেয় না৷ তেল-গ্যাসে সমৃদ্ধ সিলেট অঞ্চলের কুলাউড়া উপজেলার হারাগাছা পাহাড়ে আজ থেকে ১৩ বছর আগে ইউরেনিয়াম আকরিকের বিপুল মজুদ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেলেও আজ পর্যন্ত তা আহরণের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না৷ বিশেষজ্ঞ মহল থেকে ওই এলাকায় আরো অনুসন্ধান কার্যক্রম চালানোর দাবি জানালেও তাতে তেমন কর্ণপাত করেনি সরকার৷ কুলাউড়ার হারাগাছা পাহাড়ে ১৯৮৬ সালে প্রথম ইউরেনিয়ামের সম্ভাব্যতা আবিষ্কৃত হয়৷ পরে ১৯৯৬ সালে এখানে ইউরেনিয়ামের মজুদ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেলেও গত ১৩-১৪ বছর ধরে সরকারের সিদ্ধান্তহীনতা ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে এই প্রকল্পের তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি৷ এটি অবশ্যই সরকারের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্তের ব্যাপার৷
এদিকে বাংলাদেশের ইউরেনিয়াম খনিটি ভারতের রাজ্য মেঘালয় ঘেঁষা সিলেট সীমান্তে। আর বাংলাদেশকে না জানিয়েই ভারত ওই অঞ্চলে খনন ও ইউরেনিয়াম উত্তোলনের কাজে গত বছর নভেম্বরেই হাত দিয়েছে। এ উদ্দেশ্যে ভারত কৌশলও নিয়েছে চরম ধুরন্ধর ও স্বার্থপরের মতো। বাংলাদেশের জনগণ যাতে ইউরেনিয়াম আবিষ্কার, খনন ও উত্তোলন সম্পর্কে জানতে না পারে সেজন্য ভারত বিএসএফকে দিয়ে তামাবিল ও জৈন্তাপুর সীমান্তে সমপ্রতি গোলযোগ শুরু করিয়েছে। পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পর থেকে বিডিআর রয়েছে খুবই দুর্বল ও অনিশ্চিত অবস্থায়। ফলে বাংলাদেশের দিক থেকে কোনো উসকানি দেয়ার প্রশ্ন উঠতে পারে না।
তারপরেও গত কয়েক মাসে জৈন্তাপুর সীমান্তে একের পর এক আগ্রাসী তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে বিএসএফ। দফায় দফায় বিনা উসকানিতে বিএসএফ’র গুলিবর্ষণে কয়েক মাসে শতাধিক বাংলাদেশী বেসামরিক নাগরিকের রক্ত ঝরেছে। হাওরে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে বিরোধের সূত্রপাত ঘটিয়ে বিসিএফ প্রতিবারই চেষ্টা চালায় বাংলাদেশ ভূখণ্ড দখলের।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, জৈন্তাপুর সীমান্তে মাটির নিচে লুকিয়ে থাকা মূল্যবান ইউরেনিয়াম খনি করায়ত্ত করতেই হাজারো কূটকৌশল গ্রহণ করেছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।
ইউরেনিয়ামসমৃদ্ধ জৈন্তাপুরের কেন্দ্রী ও ডিবি হাওর দখলে নিতে ওপারের মুত্তপ্তারপুরে বসবাসরত খাসিয়া সমপ্রদায়ের মাঝে কৌশলে একটি ধর্মীয় উত্তেজনা ছড়িয়ে দিচ্ছে ভারত সরকার।
জৈন্তাপুরের ডিবি হাওরে ১৭৮৮ সালে খাসিয়া সমপ্রদায়ের জনপ্রিয় রাজা বিজয় সিংহের সলিল সমাধি হয়েছিল। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় হাওরে অপর খাসিয়া রাজা রাজেন্দ্র সিংহকে সমাধিস্থ করা হয়। জনপ্রিয় এ দুই রাজার সমাধিকে ধর্মীয় তীর্থভূমি হিসেবে মনে করেন ভারতীয় খাসিয়ারা। জানা গেছে, জায়গা দুটি দখলের মতলব হাসিল করতে এ দুটি স্থান উদ্ধারের নামে সেখানকার খাসিয়াদের উসকে দিয়েছে ভারত সরকার। ফলে অন্য সময়ের তুলনায় এবারই বিএসএফ’র চেয়ে সে দেশের খাসিয়াদের বেশি সহিংস হতে দেখা যাচ্ছে।
সমপ্রতি খাসিয়াদের মাঝে ধর্মীয় উন্মাদনা ছড়িয়ে দিয়ে এক দিকে সেখানকার পরিবেশবাদীদের আন্দোলন ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করা এবং অন্য দিকে বাংলাদেশের ভূমি দখল করে ইউরেনিয়াম আহরণ প্রকল্প বাস্তবায়নের পথে হাঁটছে সাম্রাজ্যবাদী ভারত।
সঙ্গতকারণেই সরকারের উচিত ভারতের কার্যক্রম সম্পর্কে জাতিসংঘ ও আইএইএসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে দ্রুত অবহিত করা এবং খনন কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য ভারতের উপর চাপ সৃষ্টি করা। ভারতকে অবশ্যই আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলতে হবে। এজন্য প্রথমে বাংলাদেশের প্রাপ্য নির্ধারণ করে চুক্তি স্বাক্ষর করতে হবে। খনন কাজও যৌথভাবেই চালাতে হবে। এর অন্যথা হলে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভারতের বিরুদ্ধে নালিশ করতে হবে। যে কোনোভাবে ভারতকে ইউরেনিয়াম খনন ও উত্তোলন করা থেকে নিবৃত্ত করাটাই এখন সরকারের প্রধান কর্তব্য।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই নভেম্বর, ২০১০ দুপুর ১২:১৯
১৩টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেঘ ভাসে - বৃষ্টি নামে

লিখেছেন লাইলী আরজুমান খানম লায়লা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩১

সেই ছোট বেলার কথা। চৈত্রের দাবানলে আমাদের বিরাট পুকুর প্রায় শুকিয়ে যায় যায় অবস্থা। আশেপাশের জমিজমা শুকিয়ে ফেটে চৌচির। গরমে আমাদের শীতল কুয়া হঠাৎই অশীতল হয়ে উঠলো। আম, জাম, কাঁঠাল,... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×