somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আল্লাহ তাআলার মাহবুব বনার আমল

২১ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১. এশরাক-এর নামায
৩৬৫ দিনে এক বছর। প্রতি দিনই যদি একটি হজ্ব এবং একটি উমরার সওয়াব অর্জন হয়, তাহলে এক বছরে কতগুলো হজ্ব ও উমরার সওয়াব হবে ভেবে দেখেছেন? এই বিরাট সওয়াব আমরা এশরাকের নামাযের মাধ্যমে খুব সহজে অর্জন করতে পারি। ফজরের নামাযের কিছুক্ষণ পর সূর্যোদয় হয়। সেই সময় যদি দুই রাকাত নামায পড়ি, তাহলে আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে একটি হজ্ব এবং একটি উমরার সওয়াব দান করবেন। (জামে তিরমিযী ১/১৩০)
কয়জনের সৌভাগ্য হয়, টাকা-পয়সা খরচ করে মক্কা মুকাররমা ও মদীনা মুনাওয়ারা যাওয়ার? বাসা-বাড়িতে, বিশেষত মাদরাসায় অবস্থানরত সকলের জন্য এশরাকের নামায পড়া সহজ। এই সহজ আমলের মাধ্যমে প্রতি বছর ৩৬৫ হজ্ব এবং ৩৬৫ উমরার সওয়াব পেতে পারি! আল্লাহু আকবার। মাত্র দুই রাকাত নামাযের উসিলায় এত বড় পুরস্কার!
আরেকটি হাদীসে কুদসীতে এসেছে, আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেন, বান্দা যদি চার রাকাত নামায সকালে পড়ে, সন্ধ্যা পর্যন্ত বান্দার যত কাজ আছে আমি আল্লাহ তার সকল কাজের যিম্মাদার হয়ে যাই। (জামে তিরমিযী ১/১০৮)
প্রতিদিন সকালে কত কাজের ইরাদা করি। কত কিছুর ইচ্ছা করি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। কেন হয় না বুঝি না। এশরাকের দুই রাকাতের সঙ্গে আরো দুই রাকাত মিলালে চার রাকাত হয়ে যাবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের সকল কাজের যিম্মাদার হয়ে যাবেন। হযরত হাফেজ্জী হুজুর রাহ. এশরাকের দুই রাকাতের সঙ্গে আরও দুই রাকাত মিলিয়ে চার রাকাত পুরা করতেন। তালিবুল ইলম ভাইদেরকে বিশেষভাবে বলছি, ৩৬৫ দিন একদিনও যেন এমন না যায়, যেদিন আপনারা এশরাক পড়েন নাই। চেষ্টা করুন। চেষ্টা করলে আল্লাহ পাকের নুসরত হবে।
২. যাওয়ালের নামায
ক্যালেন্ডারের সময় অনুযায়ী যখন যোহরের সময় হয় যেমন বর্তমানে সোয়া ১২টায় যোহরের ওয়াক্ত হয়ে যায়। এই সময় হওয়া মাত্রই সকালের অনুরূপ চার রাকাত নামায পড়ে নিবো। এটাকে যাওয়ালের নামায বলা হয়।

৩. চাশতের নামায
যদি সম্ভব হয়, তাহলে সালাতুল ইশরাক ও যাওয়ালের মাঝামাঝি সময় অর্থাৎ সকাল ৯টা থেকে ১১ টার ভিতর চাশতের নামায পড়বো। আট রাকাতের কথা রেওয়ায়েতে এসেছে। চার রাকাতের কথাও এসেছে। দুই রাকাত পড়লেও হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। সময় কম, সবক আছে, মুতালাআ আছে। সুতরাং একেবারে বাদ দিবো না, দুই রাকাত হলেও পড়ে নিবো।

৪. আওয়াবীন
মাগরিবের নামাযের পর আওয়াবীন পড়বো। সালাতুল আওয়াবীন সম্পর্কে দুই রেওয়ায়েত আছে। ছয় রাকাত ও বিশ রাকাত। বিশ রাকাতের রেওয়ায়েতের সনদে দুর্বলতা তুলনামূলক কম। ছয় রাকাতের সনদ আরেকটু দুর্বল। (কিন্তু মাগরিব ও এশার মাঝে নফল নামায একাধিক সহীহ আছার দ্বারা প্রমাণিত। আর একটি হাসান পর্যায়ের হাদীসে এই নামাযকে সালাতুল আওয়াবীন বলা হয়েছে।) মাদরাসা খোলা থাকা অবস্থায় মাগরিবের পর বিশ রাকাত পড়তে পারবো না। তখন ছয় রাকাতের রেওয়ায়েতের উপর আমল করবো। হাফেজ্জী হুজুর রাহ. বলতেন, ছয় রাকাত পড়তে না পাড়লে চার রাকাত পড়বে। দুই রাকাত সুন্নতে মোয়াক্কাদা তো আমরা পড়ছি। তার সঙ্গে চার রাকাত মিলিয়ে নিলে ছয় রাকাত হয়ে যাবে। এই ছয় রাকাতের বিনিময়ে আল্লাহ তাআলা বার বৎসর নফল ইবাদত করার সওয়াব দান করবেন। (জামে তিরমিযী ১/৯৮)

৫. তাহাজ্জুদ
সবচে গুরুত্বপূর্ণ হলো তাহাজ্জুদের নামায। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ফরয নামাযের পর শ্রেষ্ঠ নামায হল, রাতের নামায (তাহাজ্জুদ)। (জামে তিরমিযী ১/৯৯)
তাহাজ্জুদের সময় বিক্ষিপ্ত। রেওয়ায়েতে শেষ রাতের এক তৃতীয়াংশের কথা এসেছে। এছাড়াও বিভিন্ন রেওয়ায়েত আছে। শেষ রাত্রে ওঠা সম্ভব না হলে শোয়ার আগে কয়েক রাকাত পড়ে শুই। হযরত হাফেজ্জী হুজুর রাহ. বলতেন, এটা তাহাজ্জুদের স্থলাভিষিক্ত হবে ইনশাআল্লাহ। কাল হাশরের ময়দানে আল্লাহ পাক তাকেও তাহাজ্জুদগুজার হিসাবে উঠাবেন ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তাআলা যেন আমাদের সকলকে তাহাজ্জুদগুজার বান্দা হিসাবে কবুল করেন, এজন্য চেষ্টা করতে হবে।
আমি আজ আপনাদের সামনে এই কটি কথাই আরজ করলাম। কথাগুলো বলার খুব ইচ্ছা ছিলো। আল্লাহ পাকের শোকর আপনজনদের মজলিসে তা বলা হয়ে গেলো।

যদি আমরা আগামী দিন সকাল থেকেই এই আমলগুলো শুরু করি এবং করতে থাকি, তাহলে আল্লাহ পাকের মাহবুব বনে যাবো। আল্লাহ পাকের গোলাম হয়েও তার মাহবুব হয়ে যাবো। অথচ দুনিয়ার গোলাম তার মনিবের কাছেও ভিড়তে পারে না। এই আমলের মাধ্যমে এই মাদরাসার সকল তালিবুল ইলম ভাই এবং আমরা আল্লাহ তাআলার মাহবুব হয়ে যেতে পারি। আল্লাহ সকলকে আমলগুলো করার তাওফীক দান করুন। আমীন।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে আপনি হাদিস শুনতে চান?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৪৫


,
আপনি যদি সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে হাদিস শুনতে চান, ভালো; শুনতে থাকুন। আমি এসব প্রফেশানেলদের মুখ থেকে দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজনীতি, বাজেট,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×