somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কয়েকটি খারাপ লেখা।

২২ শে মার্চ, ২০২২ রাত ১:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভাগ্নেকে তার মা দস্তুরমতো পিটিয়েছে। আট বছরের বাচ্চা সকাল ছয়টায় ঘুম থেকে উঠেই স্কুলে যাবার জন্য তৈরী হবার সময় এক পশলা মার খায় । স্কুলে সহপাঠি মিলে পড়াশুনা তারপর প্রশস্ত স্কুল মাঠে খেলাধুলায় তার মন থেকে মারধোরের ক্ষণস্থায়ী স্মৃতি চলে যায়। তিন ঘন্টার স্কুল শেষে বাড়ি ফিরলেও তার মন ভরে না । বাসায় এসে আবার তার জেদজিদি শুরু হয়। বাসার কাজের বুয়াকে সে বিনা কারণেই বলে বসেছে ' তুমি চুপ কর বেয়াদপ, তোমার মুখে লাথি মারবো, তুমি একটা শয়তান ' । কাজের বুয়া তাকে বলেছিল অত চকলেট খেও না বাবু , দাতে পোকা পড়বে ' ।
তারপর ছেলেকে ধরে মায়ের মারধোর। থামাতে যাই । মার থেকে বাচাতে চেষ্টা করলাম। তার হাত ধরে টেনে নিয়ে আসছি । সে বলেই চলেছে ' খালা শয়তান , আম্মু শয়তান ' ।
এই বাচ্চা এইসব কথা শিখল কোথায়?

আজ জ্যামে বসে সেদ্ধ হয়েছি । গরম । আগুন । সামান্য কাজে মেগাসিটিতে এসেছি। জলদি ফিরতে হবে এখান থেকে। নইলে সিগারেট আবার ধরে ফেলবো। করোনার সময় ঘরে বসে নেশাটা ছেড়েছি । অনেক সহজেই ছাড়তে পেরেছি । এখানে এসে বাহিরে বেরোতেই মাথা ব্যথা শুরু হলো। মফস্বলের শুদ্ধ বাতাসের ফুসফুস এই বাতাসে হাসফাস করা শুরু করলো। বিষ ঢোকা শুরু হলো। বিষে বিষক্ষয় করতে সিগারেট টানা শুরু করেছি। পুরনো সেই ব্যাপারটা আবার ঘটতে শুরু করেছে । মাথা কিছুক্ষণের জন্য ঠান্ডা হয়ে যাওয়া ।
সিগারেট ছাড়ার সময় অনেক কষ্ট হয়। নতুন করে ধরলে বেশ ভালই লাগে।

কোলকাতার স্মৃতি
পড়াশুনার শেষ বছরটায় আমাদের মনে হলো এবার একটু আরামে থাকার দরকার। ভার্সিটির আশেপাশে থাকা দরকার। যে মেসে থাকতাম, কেমন পুরানো হয়ে পড়ছিল দিনে দিনে। ভার্সিটির প্রিয় একজন টিচার ক্যাম্পাসের পাশেই একটা বাড়ির পুরো নিচতলা আমাদের থাকার বন্দোবস্ত করে দিলেন। বাড়ির কাকিমা আমাদের বেশ পছন্দ করলেন। আবাসিক এলাকায় রাস্তার পাশে সারি সারি বাড়ি। তেমন কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। আমরা মুসলিম তাতে প্রতিবেশীদের আপত্তি নেই। কাকিমা শুধু বললেন, বাসায় আমিষ একটু সাবধানে খেতে। গন্ধ যেন একটু কম ছড়ায়।
মাংস খাবো, তাতে গন্ধ কমানো সম্ভব!

একদিন বাজারে বড়সড় এক মোরগের দিকে নজর গেল আমাদের। দেশী মোরগ। প্ল্যান করা হলো বিকেলে ওটাকে কিনে সন্ধা বরাবর জবাই দিয়ে রাতে মোরগটাকে কেটে খেয়ে ফেলা হবে। বড় তাগড়া মোরগ। গোসলের বড় বালতিতে মোরগটাকে বেধে ফেলে রাখা হলো । সেকি প্রতিবাদ তার। কিছুক্ষন পরপর জোরে জোরে ক ক ক করতে থাকে। চেচামেচি সহ্য করতে না পেরে সন্ধার পরপরেই ওঠাকে জবাই দিয়ে দিলাম। মনে হলো পুরো এলাকাজুড়ে হঠাত ঝুম নিরবতা নেমে এলো। আমার মনোযোগী হয়ে পরলাম সেটাকে রান্নার উপযোগী করতে। মোরগ বিরিয়ানি হবে মোরগ রেজালা হবে ।

একটু পড়েই নীরব এলাকায় সকল নিস্তব্ধতা এম্বুলেন্সের তীক্ষ্ণ শব্দে ভেঙ্গে খান খান হয়ে গেল। আমাদের পাশের বাসায় থামল সেটা। বাড়ির এক কাকিমা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
দুইদিন পর আমাদের বাড়ি মালিক কাকু এসে বললেন 'এ কি করেছ তোমরা , আরেকটু হলেই তো কেলেঙ্কারী হয়ে যেত '
কি হয়েছে কাকু ?
তোমাদের না একটু সাবধানে মাংস খেতে বলেছিলাম। আর তোমরা আস্ত জ্যান্ত মোরগ এনে জবাই করে খেয়েছ । পাশের বাসার কাকিমা নিরামিষভোজী। তোমাদের মোরগ কাটা মোরগের চেচামেচি তিনি সহ্য করতে পারেননি। জ্ঞান হারিয়েছিলেন। তারপর এম্বুলেন্স ,হাসপাতাল। '
এরকমও হয়।
এই ঘটনার পরেও ওই বাড়িতে, ওই এলাকায় থেকে পড়াশুনা শেষ করেছি। আমাদের কেউ কিছু বলেনি , কোনো বকা ঝকা নেই। রাস্তায় দেখা হলে ওই প্রতিবেশী কাকিমা হাসিমুখে কথা বলতেন। যতদিন ঐখানে ছিলাম ,উনার কাছে ক্ষমা চাইতে পারিনি, সরি ও বলিনি।
একেবারে কলকাতা ছাড়ার দিন উনার সাথে দেখা করে, বিশেষ কোনো প্রসঙ্গ না টেনে শুধু ' দুঃখিত কাকিমা ' বলে চলে এসেছিলাম।
কোলকাতার সোদপুরের এইচ বি টাউনের মানুষদের মতো ভালো মানুষ কদাচিত পেয়েছি জীবনে।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মার্চ, ২০২২ রাত ১:১৪
১৭টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭



আমাদের ব্রেইন বা মস্তিষ্ক কিভাবে কাজ করে লেখাটি সে বিষয়ে। এখানে এক শিম্পাঞ্জির কথা উদাহরণ হিসেবে টেনেছি মাত্র।

ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

×