somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কতোটা মন পুড়ে গিয়ে হয় নিঃশেষ!!!

০৯ ই এপ্রিল, ২০০৮ রাত ১২:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভাবি জীবনটা কি খুবই সহজ! আজন্ম এই একটা কাজই পারি। কেবল ভেবে যেতে। যতোটা না ভাবি তারচেয়ে বহুগুন কম কাজ করি। সেই ছোটবেলায় সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে যখন স্কুলে যেতে হতো তখনো ভাবতাম আহারে এখন যদি বিলের ধারে গিয়ে বসে থাকতে পারতাম। খুব ঘুম চোখে থাকলে ভাবতাম আহারে ঘড়ির কাটাটা যদি পিছিয়ে যেত কিছুক্ষণ। এই ভাবনা পর্যন্তই শেষ। জীবনের এত বছর পরে এসেও ভাবনা পিছু ধরেই আছে। নাগরিক এই জীবনের রোজনামচায় ভাবনার স্থান কোন প্রহরে তাই আবার ভাবতে হয়। হায়! ঘুরে ফিরে সেই আবার ভাবনা।
মায়াবন্ধন কি সহজ হতে পারতো না? জীবন নিয়ে অনেক ভাবি, জীবনের বন্ধনগুলো নিয়েও ভাবি, হোক না টুকরো টুকরো সেই বন্ধন। আমার জীবনটাইতো টুকরো টুকরো।টুকরেো এই জীবনে এতো বন্ধনের মধ্যে থাকাটাই ভাগ্যের। তাইতো ভাবি আমার জীবনটা স্বর্ণলতার মতো। স্বর্ণলতা এই যে এতো দ্রুতি ছড়ায় তা কেবল সেই অবলম্বনকারী গাছটার জন্য। আমার জীবনের যা কিছু দ্রুতি বলে আছে সবই্আমার চারপাশের প্রিয় মানুষগুলোর জন্য।

ফ্রাঞ্জ কাফকার মেটাফরমোসিস গল্পটা যখন পরি তখন মাথায় গেথে গিয়েছিল গ্রেগর সামসার জীবনপট। আহারে, বেচার জীবনটার রুপান্তর কেমন করে হলো। নিজের জীবনের নানা রুপান্তরের সাথে রুপক কোন মিলের জন্যই বুঝি সহজ এই ভাবনা। নিজে না চাইলেও তো কতোবার রুপান্তরিত হতে হয়!

মস্তিস্কের সাইনাপস এ বাসা বাধে অলস চিন্তারা। বন্ধুত্বের যে অবারিত প্রান্তর সেটা দখল করে বসে ইট পাথর আর কাকেরা। হায় সবুজ ঘাস চাপা পড়ে হয়ে যায় বিবর্ন। মুঠোফোন পেরিয়ে অন্তর্জালের একটা জগত আবার সক্রিয় হয়ে উঠে। রুপান্তর বুঝি তাকেও ছাড়ে না। এইসব তেলাপোকা আর গ্রেগর সামসার জীবন পাল্টে যাওয়া তারপর আরো কতো কতো জীবন! আর আমরা কেবল কিংবা আমি কেবল চেয়ে চেয়ে দেখি। অর্ন্তজালের এই জগতেও কতো বাহারী ক্ষেত্র ছড়িয়ে আছে...
কখনো এই জগতে নেমে আসে খড়কহস্ত! কানে আসে অনুভুতি চেপে ধরা বুটের শব্দ! হৃদয়ের অলিন্দ থেকে ভেসে ভেসে আকুল শব্দগুলো আমার প্রকাশের পথ খুজে ফিরে। আমি সেই সুযোগ দিতে পারি না। কিংবা আমি সেই সযোগ নিতে চাই না। কারণ এই অর্ন্তজালেই আমার চারপাশের কিছু মানুষের উপর চেপে রাখা বাধ। আর আমি কেবল প্রতিবাদ করতেই জানি। আর কিছুই যে পারি না.... তবে হৃদয়ের গভীর থেকে অুনভুতিগুলো জমা হয় এক এক করে। কোন এক মন্উদাস করে দেওয়া বিষন্ন রাতে বাধ ভেঙ্গে দেয়।

অনেকদিন আগে পড়েছিলাম এরিক মারিয়া রেমার্কের উপন্যাস থ্রি কমরেড। রবার্ট, গোটফ্রীড আর ওটোর কি অদ্ভুত বন্ধুত্ব! জীবনে এরকম বন্ধুত্ব যে কতো করে চাই কিংবা চেয়েছি! প্যাট্রিসিয়া যাকে ডাকা হতো প্যাট নামে এমন একজন প্রিয় মানুষ আর বন্ধু পেলেও মন্দ হতো না। আমি তো উপন্যাস পড়েই জানি কি বাস্তবতার মুখেই না পড়েছিল উপন্যাসের চরিত্রগুলো। আর আমার জীবনেতো বাস্তবতা আরো বেশি। তাই রাতজাগা রাতগুলোতে ভাবনার জানালা দিয়ে কেবল উকি দিতেই জানি আমি...কারন পেছনেই সীমারেখা টেনে দিয়েছে এইসব বাস্তবতাগুলো।

প্রায়ই ভাবি সমুদ্র দেখতে যাবো। সমুদ্র দেখতে যাওয়া হয় নি কখনো। তাহলে কিভাবে বলি- আমি আজ ভেজাব চোখ সমুদ্রজলে!
তবুও মনের গভীর থেকে দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে। সেই দীর্ঘশ্বাসের প্রতিটি অনু পরমানু জানে-

চোখটা এতো পোড়ায় কেন
ও পোড়া চোখ সমুদ্রে যাও
সমুদ্র কি তোমার ছেলে
আদর দিয়ে চোখে মাখাও।

জানি সব কিছু একই সমান্তরাল স্রোতে চলে না। বেকে যায় প্রতিনিয়ত। সব কিছু ভেঙ্গে পড়ে। হয়তো নতুন করে গড়ার জন্যই ভাঙ্গে। কিন্তু এওতো জানি এই জীবনের অনেক কিছুই নতুন করে গড়ে উঠে না। ভাঙ্গা গড়ার কথা এই যে ঘটা করে বলছি তার কারণ অন্তর্জালের আমার এক প্ল্যাটফর্মকেন্দ্রীক ঘটনার বিষয়। মাতৃভাষার অক্ষরে সাজা সেই প্ল্যাটফর্ম আমার। একই প্ল্যাটফর্মে কিছু প্রিয় মানুষ আমার, কিছু প্রিয় বন্ধু আমার। বুকের ভিতর তপ্ত শ্বাস জমা হতে থাকে যখন দেখি কিছু অবহেলায় ভেঙ্গে যেতে থাকে সহজ এইসব আশ্রয়। হায় মন কষ্ট বোঝে...পরিচিত একজন যখন বলে কখনোই সে এই আঙ্গিনায়, এই জানালায় উকি দিবে না, ভুল করেও না। আরেকজন বলেছে আগের মতো স্বাচ্ছন্দ নেই, কিংবা মায়া কেটে গেছে। যদি আমি উকি দেই প্রিয় কিংবা একসময়ের প্রিয় অন্তর্জালের এই জানালায় আমার যে মনে পড়বে সেই মুখগুলোর কথা। যে বলে ফেলেছে আর এই জানালায় উকি দিতেও আসবে না। এতো এতো অভিমান যে ভেঙ্গে পড়ার কারনে..তা কি আর কখনো জোড়া লাগবে?
কি জানি ...এইসব সহজ মানেও ইদানিং জানি না কিংবা বুঝি না....

জীবনাটা বুঝি একটা কবিতাই হয়ে গেছে। কোলরেজ বলেছিলেন-কবিতা সবটা বোঝা যায় না, বো্ঝা উচিতও নয়। কবিতার খানিকটা রহস্যময়, অনেকটা অনির্বচনীয়।

তবে আমার এই জীবনের কিছু অনুভুতি অনির্বচনীয় হয়েই থাকনা। না হয় নাই বুঝলাম তা। রহস্যময় হয়েই থাক অনুভুতির কিছু প্রান্তর।
২৩টি মন্তব্য ২৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×