somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নাস্তিকদের ইউটিউব ভিডিও দেখে ঈমানহারা হওয়ার চারটি পর্যায়

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নাস্তিকদের ইউটিউব ভিডিও দেখে ঈমানহারা হওয়ার চারটি পর্যায় কুরআনের আলোকে ব্যখ্যাঃ

يُنَادُونَهُمْ أَلَمْ نَكُن مَّعَكُمْۖ قَالُوا۟ بَلَىٰ وَلَٰكِنَّكُمْ فَتَنتُمْ أَنفُسَكُمْ وَتَرَبَّصْتُمْ وَٱرْتَبْتُمْ وَغَرَّتْكُمُ ٱلْأَمَانِىُّ حَتَّىٰ جَآءَ أَمْرُ ٱللَّهِ وَغَرَّكُم بِٱللَّهِ ٱلْغَرُورُ
আল-হাদীদ ৫৭:১৪৷৷
ُ
মুনাফিকরা বিশ্বাসীদেরকে ডেকে জিজ্ঞাসা করবে, ‘আমরা কি (দুনিয়ায়) তোমাদের সঙ্গে ছিলাম না?’[১] তারা বলবে, ‘অবশ্যই, কিন্তু তোমরা নিজেরাই নিজেদেরকে বিপদগ্রস্ত করেছ,[২] তোমরা প্রতীক্ষা করেছিলে,[৩] সন্দেহ পোষণ করেছিলে[৪] এবং আল্লাহর হুকুম (মৃত্যু) আসা পর্যন্ত অলীক আশা তোমাদেরকে মোহাচ্ছন্ন করে রেখেছিল; আর আল্লাহ সম্পর্কে মহাপ্রতারক (শয়তান) তোমাদেরকে প্রতারিত করেছিল।

কল্পনা করুনঃ শেষ বিচারের দিনে আপনি দিশেহারা, আতঙ্কিত, আশাহত এবং মুহ্যমান। হাজারটা প্রশ্ন আপনার মাথায়, “আমি কীভাবে এই অমুল্য সম্পদ (ঈমান) হারালাম? ”আমার অন্তরের আলো কীভাবে মরে গেল”? “কেন আমার সাথীদের কাছে নূর আছে আর আমার কাছে নাই”? আমি কিভাবে নাস্তিক হয়ে গেলাম? কীভাবে এটা সম্ভব হলো”? তখন দেয়ালের অপর পাশ থেকে আপনার বিশ্বাসী সাথীরা ধাপে ধাপে বর্ণনা করবে, কেন আপনি দেয়ালের ঐ পারে আটকে গেছেন! কুরআনের আয়াতের ৪ টি ধাপ নিয়ে নিচে আরেকটু বিস্তারিত আলোচনাঃ


প্রথম পর্যায়ঃ
আপনি ইউটিউবে মেট্রোরেলের আপডেট দেখছিলেন৷ হঠাৎ করে নাস্তিকদের একটি ভিডিও এসে পড়ল৷ আপনি ক্লিক করে দেখলেন এবং নিজেকে পরীক্ষায় ফেললেন ( ফাতানতুম আনফুসাহুম)এরপর আপনার সামান্য একটু ক্ষত হলো৷ এই ক্ষত দূর করতে আরো ভিডিও দেখতে লাগলেন৷ ক্ষত বাড়তে লাগলো৷ কিন্তু আপনি ভিডিও দেখা থেকে সরে আসলেন না৷ বরং চালিয়ে গেলেন৷ কারন আপনি কুরাআন থেকে তাদের যুক্তি খন্ডানোর জন্যে চেষ্টা করবেন৷ মানে দীর্ঘসূত্রিতা করলেন ( তারাব্বাসতুম)৷ তারপর এই পর্যায়ে ক্ষত মহামারী ধারন করে মানে আপনি (ওয়ারতাবতুম) নিজেই প্রভািবত হয়ে সন্দেহ শুরু করেছেন, তারপর (গাররাকুম)৷ আপনি নিজেই বিভ্রান্ত হয়ে গেছেন৷

فَتَنتُمْ أَنفُسَكُم
তুমি নিজেকে বারংবার জেনেবুঝে এমন পরিস্থিতিতে ফেলেছ, যেখানে তোমার ঈমান পদে পদে কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হবে’। ঈমানের জন্য ক্ষতিকর হবে জেনেও আপনি বারবার নিজেকে এমন পরিবেশের সম্মুখীন করেছেন৷ মানে ঈমানের জন্যে ক্ষতিকর জেনেও তোমরা নাস্তিকদের বই পড়েছে, কথা শুনেছ৷ তোমরা ভেবেছ নাস্তিকদের বই, ভিডিও তোমাদের মনে সন্দেহ ঢুকাতে পারবে না৷
খাল কেটে কুমির এনেছো বা নিজের হাতে নিজে বিপদ ঢেকে এনেছো

দ্বিতীয় পর্যায়ঃ
وَتَرَبَّصْتُمْ
প্রতীক্ষা করাঃ আপনি জানতেছেন যে নাস্তিকদের ইউটিউব ভিডিও আপনার ঈমান নষ্ট করছে তাহলে আপনি দীর্ঘসূত্রিতা করলেন কেন? প্রতীক্ষা করলেন কেন? ঘরের ভাত খেয়ে পরের মুষ তাড়ানো জন্যেই কি দুধ কলা দিয়ে সাপ পোষলেন? নিজের গুরুত্বপূর্ন কাজ কর্ম ফেলে এমন জিনিস ইউটিউবে দেখলেন ঈমানও গেল কেরিয়ারও গেল৷ আমও গেল ছালাও গেল৷

তৃতীয় পর্যায়ঃ দাজ্জালের ফিতনার মতো নাস্তিকদের ফিতনা ছড়িয়ে পড়েছে৷ বহু ঈমানদার ভাই বর্তমানে ইসলাম নিয়ে সন্দেহে পড়ে গেছে৷
وَٱرْتَبْتُمْ
সন্দেহ করাঃ সূরা হাদিদের ১৪ নম্বর আয়াতে প্রতীক্ষা করার পরের স্টেপ সন্দেহ করা৷ প্রভাবিত হয়ে যাওয়া৷
এক সময় মুফাসসিল ইসলাম নাস্তিকদের পাল্টা জবার দিত৷ এতে করে নাস্তিকদের সব কথা দীর্ঘসময় ধরে তাকে শুনতে হতো৷ এক পর্যায়ে সেই নাস্তিক হয়ে যায়৷ মুফতি আব্দুল্লাহ আল মাসুদ নাস্তিকদের বই পড়ত, তাদের যুক্তি খন্ডানোর জন্যে, কিন্তু নিজেই নাস্তিকদের মাঝে হারিয়ে যান৷

চতুর্থ পর্যায়ঃ
وَغَرَّتْكُمُ
পথভ্রষ্ট হয়ে যাওয়াঃ
দেখেন পথভ্রষ্ট কিন্তু প্রথমেই হয় নি৷ পথভ্রষ্ট হয়েছে তিনটি স্টেপ পার হয়ে৷ মানে বছরের পর বছর সময় লেগেছে৷ প্রথমে নাস্তিকদের বই পড়ে নিজেকে পরীক্ষায় ফেলেছো, পরে দীর্ঘসময় চালিয়ে গেছো, তারপর সন্দেহ তৈরী হয়েছে, তারপরও ফিরে আসো নি, সন্দেহ দূর করার জন্যে তাদের ভিডিও আর বেশী দেখেছেন মানে বিষ দূর করার জন্যে আরো বিষ খেয়েছেন৷ পরে পথভ্রষ্ট হয়ে গেছেন৷

কিছু প্রশ্নঃ
তাহলে কুরআন কি নাস্তিকদের যুক্তি খন্ডাতে ব্যর্থ?
অবশ্যই না৷ বরং যে অল্প বিদ্ব্যান ব্যক্তি কুরআন পড়ে নাস্তিকদের যুক্তি খন্ডাতে যাবে সেই নাস্তিক বা অন্তত সন্দেহমনা হয়ে যাবে৷ এমনকি মুফতিরাও পথভ্রস্ট হতে পারে৷
নবী সঃ ও কাফিরদের কথায় তাল হারিয়ে ফেলতেন৷ যেমনঃ ১) সূরা কাহাফে ২৮ নম্বর আয়াতে নবী প্রায় রাজিই হয়ে গিয়েছিলেন গরিবরা পিছনে বসবে আর ধনী কাফিররা তার সামনে বসে আলোচনা হবে৷ পরে ওহী নাযিল হয় ও তা নিষিদ্ধ হয়৷
২) নজমে দুটি আয়াত যোগের মাধ্যমে লাত ও ওজ্জার স্বীকৃতি দিয়েই ফেলেছিলেন৷
পরে সূরা হজ্জের ৫২-৫৪ আয়াতে এর সংশোধনী আসে৷
তারমানে নবী কাফির নাস্তিকদের কথার মাইর প্যাচে পরে যেতেন৷ হয়তো সে কারনেই নবী সঃ এর সর্বাধিক দুয়াটি ছিল " হে অন্তর পরিবর্তনকারী, আমার অন্তরকে তোমার দ্বীনের উপর শক্তভাবে রাখো৷" যেন কাফিরা তার মনকে প্রভাবিত করতে না পারে৷

নাস্তিকদের যুক্তি খন্ডাতে ওহী প্রাপ্ত নবীরা ক্লান্ত ও হতাশ হয়ে পড়তেন৷ আর আপনি তো ওহী প্রাপ্ত নন৷ তাই নাস্তিকদের যুক্তি খন্ডানো আপনার দায়িত্ব নয়৷ তারা একের পর এক প্রশ্ন করেই যাবে৷ আপনি যতই উত্তর দেন তারা সন্তুষ্ট হবে না৷ নতুন আরো প্রশ্ন বের করবে৷ সজোরে একটি ট্রেন আপনার দিকে এগিয়ে আসছে, আর আপনি হাত দিয়ে থামাতে গেলেন৷ সেটা ভুল৷ আপনার উচিত রেল লাইনের উপর দিয়ে না হেটে অনত্র হাটা৷ কু পরিবেশ বর্জন করা৷
যেমনটি দেখতে পাইঃ আল-হাজ্জ ২২:৫৫

وَلَا يَزَالُ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ فِى مِرْيَةٍ مِّنْهُ حَتَّىٰ تَأْتِيَهُمُ ٱلسَّاعَةُ بَغْتَةً أَوْ يَأْتِيَهُمْ عَذَابُ يَوْمٍ عَقِيمٍ

যারা অবিশ্বাস করেছে তারা ওতে সন্দেহ পোষণ করা হতে বিরত হবে না; যতক্ষণ না তাদের নিকট কিয়ামত এসে পড়বে আকস্মিকভাবে অথবা এসে পড়বে এক বন্ধ্যা (অশুভ) দিনের শাস্তি
এইভাবে মুনাফিকদেরকে তাদের ঈমান হারানোর পর্যায়ক্রমিক প্রক্রিয়াটি মু’মিন ব্যক্তিরা ধাপে ধাপে ব্যাখ্যা দেবে। যেটা শুরু হয়েছিল আপাতদৃষ্টিতে একটা ছোট্ট পদক্ষেপ থেকে, অসৎ সঙ্গ! নাস্তিকদের ইউটিউব ভিডিও!!!!! এবং সেখান থেকে এটা একটা অটোমেটিক ডাউনওয়ার্ড স্পাইরাল সিঁড়ি, শুধুই নিচের দিকে নেমে যাওয়া! ঘুরে না দাঁড়ালে, আল্লাহ্‌র কাছে ক্ষমা চেয়ে হিদায়াতের জন্য প্রার্থনা না করলে আল্লাহ্‌র চূড়ান্ত আদেশ না আসা পর্যন্ত এই বিভ্রান্তিতেই আজন্ম বসবাস করতে হবে

মোট কথাঃ
কুরআন একটি থিওরী, নাস্তিকরা এন্টি কুরআন থিওরী৷ মানে ধরুন কুরআন একটি সফটওয়্যার৷ আর নাস্তিকদের কথা হলো ভাইরাস৷ ভাইরাস যেমন সফটওয়্যারকে ধীরে ধীরে কার্যক্ষমহীন করে ফেলে, নাস্তিকদের যুক্তি আপনার ঈমানকে নড়বড়ে করে দিবে৷ তাই সূরা হাদিদের ১৪ নং অনুযায়ী আপনাকে অবশ্যই এন্টিভাইরাস ব্যবহার করতে হবে৷ যাতে ইউটিউবে নাস্তিকদের ভিডিও না আসে৷ যদি রিকমেন্ড আসে তবে ভিডিও এর হেডিং এর ডান পাশে তিনটি ডট চিহ্ন ক্লিক করে not interested চাপুন৷ tell us why আসবে৷ তখন
Not interested this recommendations এ ক্লিক করুন
বিস্তারিত জানতেঃ৷
https://m.facebook.com/notes/sefat-mahjabeen/ঈমান-এবং-সৎকর্মঃ-আঁধার-প্রান্তরে-পথচলার-প্রদীপ/1360757577268103



সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:২১
১০টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হালহকিকত

লিখেছেন স্প্যানকড, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:১২

ছবি নেট ।

মগজে বাস করে অস্পষ্ট কিছু শব্দ
কুয়াসায় ঢাকা ভোর
মাফলারে চায়ের সদ্য লেগে থাকা লালচে দাগ
দু:খ একদম কাছের
অনেকটা রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় ।

প্রেম... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×