
ঢাকায় এসে রাসেদ প্রথমেই তার প্রিয় মামার বাসায় উঠলো। মামা এখন ঢাকা শহরে একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। বিদেশে লোক পাঠানোর একটি রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক তিনি। এই ব্যবসা করে মামা এখন প্রচুর টাকা পয়সার মালিক হয়ে গেছেন। রাসেদের আশাছিল মামা তাকে একটা বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকুরী পাওয়ার ব্যাপারে সহযোগিতা করবেন। কিন্তু একমাস পার হয়ে যাওয়ার পরও কোন প্রকার সহযোগিতা না পেয়ে সে খুবই হতাশ হয়। এরই মধ্যে মামা হাবভাবে বুঝিয়ে দেন উনি তার বাসায় থাকাটা মোটেই পছন্দ করছেন না। রাসেদকে সবচেয়ে বেশি আঘাত করেন তার মামার শশুর। মানুষকে আঘাত দিয়ে কথা বলাটা এই মানুষটার অভ্যাস। তিনি রাসেদকে বলেন, 'এভাবে সারাজীবন মামার বাসায় বসে বসে খাবে নাকি চাকরি বাকরি কিছু করবে'? দু একদিন টিউশনি থেকে ফিরতে একটু দেরি হলে মামা বকাঝকা করেন। বলেন তোমার জন্য সারারাত জেগে বসে থাকবো নাকি? আমারতো কাজ করে খেতে হয়। আসলে দোষটা মামার নয়। মামার বাসার বাড়িওয়ালা খচ্চর টাইপের মানুষ। একদিন টিউশনি থেকে ফিরতে ট্রাফিক জ্যামের কারণে রাসেদের রাত এগারোটা বেশি বেজে যায়। সেদিন মামা বিরক্তি নিয়ে বাড়িওয়ালা বাসায় চাবি আনতে যান। ব্যাস বাড়িওয়ালা মামাকে কয়েকটা কড়া কথা শুনিয়ে দেয়,কথাটা ছিল,
-'বাসাটাকেতো ব্যাচেলর কোয়ার্টার বানিয়ে ফেলেছেন'।
কথাটা মামার আত্মসম্মানে খুবই আঘাত করে।তারপর থেকেই মামা কথায় কথায় রাসেদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন। একসময় রাসেদ বুঝতে পারে সবাই তার আব্বার মত ভাল মানুষ নন যে বেকার আত্মীয় স্বজনদের বছরের পর বছর নিজের বাসায় হাসিমুখে থাকতে দেবেন। রাসেদ মোটামুটি স্বচ্ছল পরিবারের একমাত্র সন্তান। এই ধরনের অপমান তার জন্য মেনে নেওয়া কঠিন,রাসেদ সেদিনই সিদ্ধান্ত নেয় মামার বাসায় আর একমূহুর্ত নয়।
বেকারদের জন্য পরামর্শঃ বেকার জীবনে চাকুরী খোজার উদ্দেশ্যে এসে কোন নিকট আত্মীয়ের বাসায় উঠবেন না, সেটা যত কষ্টই হোক। এতে আত্মীতার সম্পর্কের অবনতি হবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৫৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




