প্রতিবারই গ্রামে গেলে সামু ব্লগারদের সাথে কিছু ছবি শেয়ার করা আমার একরকম নিয়ম হয়ে গেছে। সামু ব্লগারদের আমি কাছের মানুষ ভাবি তাই অনেকের মতের সাথে আমার মতের মিল না থাকলেও কোন প্রকার ঝগড়া বা ঝামেলাতে জড়াই না। প্রতিটি মানুষের চিন্তাচেতনা ভাললাগা মন্দলাগা ভিন্ন হবে এটাই স্বাভাবিক। তবে ভুলত্রুটি ধরিয়ে দেওয়া দোষের নয় তবে সেটা হতে হবে শালীনতা বজায় রেখে এবং ব্যক্তিগত আক্রমণ না করে। যাকগে ধান ভানতে শীবের গীত গাইতে চাইনা।
এবারের ইদে বাড়ি যাওয়াটা অনেক ঝামেলাপূর্ণ ছিল। সকাল নয়টার গাড়ি ছাড়লো দুপুর দেড়টায়। এরই মধ্যে অনেকেই রেগেমেগে টাকা ফেরত নিয়ে চলে গেল তা নিয়ে অবশ্য কাউন্টারের লোকেদের খুব একটা চিন্তিত মনে হল না বরং দুইশত টাকা বেশিতে সেই টিকিট বিক্রি করে দিল আমাদের সামনেই। একেই বলে ঝোক বুঝে কোপ মারা।
সাড়ে চারটায় পৌছালাম পাটুরিয়া ফেরিঘাটে। ফেরিঘাটে প্রায় পাচ কিলোমিটার গাড়ির জট, হাজারো গাড়ির লম্বা লাইন। এই সুযোগে কিছু স্থানীয় লোকজন মৌসুমি হোটেল ব্যাবসা শুরু করে দিয়েছে। তেলচপচপে পরোটা ডিম আর খিচুড়ি খাওয়ার জন্য ক্ষুদার্থ মানুষগুলো হামলে পড়েছে এসব হোটেলে।কেউ কেউ গাড়ি থেকে নেমে নৌকায় করে পাশের বিলে দশ পনেরো মিনিটির নৌকা ভ্রমনের আনন্দ নিয়ে আসছে। আসলে পৃথিবীতে কিছু সুখী মানুষ আছে যারা শত কষ্টের মাঝেও আনন্দ খুঁজে নেয়।
রাত এগারোটা নাগাদ গাড়ি ফেরিতে উঠলো। আহা অবশেষে শান্তি! ফেরির উপরের তলায় পদ্মার ঠান্ডা হাওয়ায় দারুণ লাগছিল। চা খাওয়ার ইচ্ছে হয়েছিল বেশ কয়েকবার কিন্তু যখনি মনে হল
'আরে এই চায়ের পানিতো নদী থেকে তোলা হচ্ছে আবার ফেরির টয়লেটের মলমুত্রও নদীতে মিশছে, তখনই চা খাওয়ার চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেললাম। আসলে পদ্মার এসব লঞ্চ ফেরির সব খাবারই রান্না হয় এই মলমুত্র মিশ্রিত নদীর পানি দিয়ে।
রাত দুইটা নাগাদ গাড়ি থেকে নামলাম। বাসস্ট্যান্ড থেকে আমারদের বাড়ির দূরত্ব প্রায় সাত কিলোমিটার এই মাঝরাতে গ্রামের রাস্তায় গণপরিবহন পাওয়ার আশা করাই উচিত নয় তাই আশা করি নাই। গ্রামে উবার পাঠাও না থাকলেও ভাড়ায় মোটরসাইকেল সার্ভিস আরও অনেক আগে থেকেই চালু আছে। পরিচিত এক মোটর সাইকেল ড্রাইভারকে ফোন দিলাম, দশ মিনিটেই সে হাজির। অবশেষে নিজ বাড়িতে পৌছালাম এবং আঠারো ঘন্টার যাত্রার সমাপ্তি ঘটলো।
এবার গ্রামের কিছু ছবি দেখেন
এখন চলছে পাটের মৌসুম, পাটকাটা, জাগ দেওয়া,পাটের আশ ছাড়ানো, পাট শুকানো তারপর বিক্রির বিক্রির উপযোগী হয় পাট।
বাড়ির উঠানের পাশে গাছ ভর্তি পাকা টসটসে জাম্বুরা, লেবু, মাচায় ঝুলছে চালকুমড়া
কয়েকদিনের ঝুম বৃষ্টিতে উঠানের পাশে ফুটেছে শতশত রেইন লিলি
বিঃদ্রঃ অনেকদিন কিছুই লেখা হচ্ছে না তাই উপস্থিতি জানান দেওয়ার জন্যই এই পোস্ট।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ১:০৭