somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সমাজতন্ত্র ও নাস্তিক্যবাদ

২১ শে মার্চ, ২০১৪ সকাল ৭:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কয়েকদিন আগে মামার ইলেক্ট্রনিক্সের দোকানের পিছনে বসে সিনেমা দেখছিলাম । আর সামনে বসে মামা মাহফিল চালাচ্ছিলেন । ত হুজুর হটাত্‍ মাহফিলের কোন এক যায়গায় বলে উঠলেন 'সমাজতন্ত্রের জন্ম হয়েছে সোভিয়েত রাশিয়ায় , সোভিয়েতে এসেই সমাজতন্ত্র আত্বহত্যা করেছে ।'
সিনেমা পুশ করে দিলাম ।গুরুত্বপূর্ন বয়ান মিস যায় কিনা !
আসলে সমাজতন্ত্র ঈশ্বর প্রদত্ব কোনো ঐশি বানী বা কোনো প্রফেটের পবিত্র কথা নয় যে এটার আলোচনা সমালচনা করে পরিবর্তন পরিমার্জ করা যাবে না । গ্রীক দার্শনিক হেরাক্লিটাস বলেছিলেন 'পরিবর্তন ছারা পৃথিবীতে কিছুই স্থায়ী নয় ।'
জার সাম্রাজ্যের পতন যেমন সমাজতন্ত্রের জয় , আমার চোখে বৃহত্তম সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙ্গনও সমাজতন্ত্রের জয় । কিভাবে ? এই প্রশ্নের জবাব এখন দেয়ার সময় নেই । এতটুকুই বলছি মহামতি লেলিনের স্বেচ্চাচারিতার কথা আমরা সবাই জানি ।
একথা শতভাগ সত্যি যে পিউর মেটালিজমে ইশ্বরের কোনো অস্তিত্ব নেই । খুব সংখেপে বস্তুবাদ হলো সমস্ত ঘটনা দূর্ঘটনা রটনা সৃষ্টি ধ্বংশ সব কিছুই বস্তু সংশ্লিষ্ট । বস্তু বা এলিমেন্ট বলতে জগতে যা কিছুর অস্তিত্ব আছে সেগুলোই বুঝানো হয়েছে । জীব এবং জীবের নানান আবেগও এর অন্তর্গত । সুতারং পিওর মেটালিজমে বিশ্বাসিরা কোথাও ইশ্বরের অস্তিত্ব খুজে পায় না । আরেকটু পরিস্কার করে বললে খুজতে চায় না । কিন্তু আমার মতো ছাপোষা কিছু লোক সবকিছুতেই সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব খুজি । নাস্তিকদের মতে হয়তো আমরা স্থুল চিন্তার অধিকারি , আর তারা সুক্ষ চিন্তার মানুষ ।
মুলত সৃষ্টির উত্‍স ও সভ্যতার বিবর্তন চিন্তা করলেই সৃষ্টিকর্তার উপস্থিতি প্রকট আকার ধারন করে । বিগ ব্যংক তত্বের প্রবক্ত স্বয়ং স্টিভেন হকিং একবার তার তত্বে ঈশ্বরের উপস্থিতি স্বীকার করেছিলেন । মুলত যারা ঈশ্বরকে অসীকার করেন তাদেরকে বেশ কিছু প্রশ্ন সবসময় এড়িয়ে যেতে হয় । ঐ প্রশ্নগুলোর উত্তর খুজতে গেলে ঈশ্বরের উপস্থিতি নিশ্চিত্‍ না হওয়া গেলেও ঈশ্বর নেই এই ধারনাটা সন্দেহের মধ্যে পড়ে যায় । কোনো এক নাস্তিক গনিতবিদ একবার অংক কষে ঈশ্বরের উপস্থিতি মুছে দিতে চাইলেন । তার অংকের ফলাফল আসলো দুটি । এক অংশে ঈশ্বরকে স্বীকার করতে হবে , অন্য অংশে করা যাবে না ।
সংশয়বাদীরা বলেন যে কোনো কিছুই নিশ্চিত হওয়া যায় না । আর নাস্তিক্যবাদ বলে সবকিছুর যৌক্তিক ব্যাখ্যা আছে । বস্তুবাদ নাস্তিক্যবাদের মত যৌক্তিক ব্যাখ্যা খুজলেও সমাজতন্ত্রের মনিষিরা নিজেদের মতো করে সমাজতন্ত্রকে সাজিয়ে নিয়েছেন । সমাজতন্ত্রী বা বামদের আজকাল চোখ বুজে নাস্তিক ট্যাগিং দেয়া হয় । উপমহাদেশের ইতিহাসে মওলানা ভাসানি সহ বহুত ধর্মভীরু লোক বামধারায় বিশ্বাসী ছিলেন । তারা কি নাস্তিক ছিলেন ? নাহ , আসলে তারা সমাজতন্ত্রের পদ্ধতি ও সমতার তত্বগুলো স্বীকার করে বস্তুবাদের মধ্যে সৃস্টিকর্তার অস্তিত্ব ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন । অথবা তাদের নিজস্ব ধর্মীয় দর্শনের উপর সমাজতন্ত্রের প্রয়োগ ঘটিয়েছিনেন ।
কোনো এক গ্রীক দার্শনিক বলেছিলেন, পৃথিবীতে নাস্তিক বলতে কোনো প্রাণী নেই । তরুণ বয়সে কিছু পাব্লিক রক্তের গরমে ঈশ্বরকে অস্বীকার করে বসে । অবাধ যৌনতাকে ব্যাক্তিস্বাধীনতা মনে করে । বয়স বাড়লে তারা আবার ঈশ্বরকে খুজে পায় ।
আর বর্তমান অবস্থা হলো জামাতের বিরুদ্ধে কিছু বললে জামাতিরা নাস্তিক বলে । এরকমভাবে সকল ধর্মের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দলগুলোও তাদের বিরুদ্ধাচানকেই নাস্তিক্য আখ্যা দেয় ।
সর্বশেষ বিষয় মহামতি দেলোয়ার সাঈদী বলেছেন 'সমাজতন্ত্র একটি কুফরি মতবাদ ।'
কথাটি অনেক যায়গায় সভায় বা মাহফিলে বলা হয়েছে । এখন কথা হলো চিরায়িত বলবিদ্যার জনক নিউটন কাফের ছিলেন । স্ট্রানজিস্টর আবিস্কারকরাও কাফেরই ছিলো । সুতারং অনেকগুলো কুফরি মতবাদের উপর প্রতিষ্ঠিত অ্যম্প্লিফায়ার দিয়ে তৈরি সাউন্ট সিস্টেম । সেই সাউন্ড সিস্টেম ব্যাবহার করে কুফরি মতবাদের বিরুদ্ধে প্রচালনা চালানো হচ্ছে ।
এই হাস্যকর বিষয়টা নিয়ে প্রায়ই ভাবি । বিজ্ঞানের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত তত্ব ও বিজ্ঞানিদের নিয়ে কঠিন ভাষায় সমালচনা করা হয় । এমনকি অনেকে নিজেদের সন্তানদেরও বিজ্ঞান পড়তে দেন না বিগড়ে যাবে বলে । কিন্তু সকালে ঘুম থেকে উঠে রাতে ঘুম যাওয়ার পর পর্যন্ত ঐসব তত্ব দারা ও ঐ সকল বিজ্ঞানি দারা তৈরি বস্তু ব্যাতিত তাদের জীবন অচল !
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×