কয়েকদিন আগে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলাম। যেদিন গিয়েছি সেদিনের ঘটনা। বাড়ির পাশ দিয়ে যে রাস্তা গেছে তার এক জায়গায় প্রায় শ-পাচেক মানুষের ভির। উৎসাহিত হয়ে আমিও গেলাম ঘটনা দেখতে। ঘটনা হল কোথা থেকে এক হনুমান এসেছে দলছুট হয়ে। সেটা দেখতে এত ভির। শুধু দেখলে সমস্যা ছিল না, অনেকে হনুমানকে উদ্দেশ্য করে ঢিল ছুড়ছে। দুএকজন তো প্রায় গাছেই ওঠে হনুমান ধরার জন্য। একটু পর ভিড় পাতলা হলে বেচারা কোনমতে পালিয়ে পাশের এক গোরিস্তানে ঢুকে প্রাণ বাচাল। বিকেলে বাজারের উদ্দেশ্য বের হয়েছি। দেখি রাস্তা দিয়ে কয়েকজন জাল হাতে ঘুরছে। রাস্তার পাশে এমন কোন জলাধার ছিল না যে মাছ ধরবে। কৌতূহল চাপতে না পেরে জিজ্ঞেস করলাম জাল নিয়ে ঘোরাঘুরি করার কারন কি?
উত্তর শুনে বেকুব হয়ে গেলাম।
জাল নিয়ে ঘুরছে হনুমান ধরার জন্য।
কারন?
এক লোক নাকি হনুমান কিনতে চেয়েছে তাই।
ধরতে পারলে বিক্রি করলে কিছু ইনকাম হবে এই আর কি। হাসব, কাদব নাকি চিতকার করব বুঝতে পারলাম না। চিন্তা করে দেখেন এরা মানুষ না অন্য কিছু। বিপদে পড়া একটা প্রাণীকে কিসের কি উদ্ধার করবে, তা না করে ব্যবসার চিন্তা। আসলে মানুষের লোভ মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। গতকাল ঝালকাঠিতে বাবুই পাখির বাসা পুড়িয়ে দিয়ে ৩৩ টি ছানা মেরে ফেলার ঘটনা নিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেখানে অনেকেই আগুন দেয়া সেই কৃষকের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন। অথচ চাইলে পাখিগুলো অন্যভাবে তাড়ানো যেত। আসলে মানুষ নৃশংস হতে হতে এমন পর্যায়ে গেছে যে নৃশংসতাই তাকে আনন্দ দেয়। আর যেহেতু পাখি কিংবা হনুমান কিংবা বানর হত্যা করলে কোন বিচার নেই তাই এগুলো হত্যা করেই আনন্দ নেয়। আর নির্বিচারে বৃক্ষ নিধনের কথা নাহয় বাদই দিলাম। পাখির ঘরে আগুন দিচ্ছেন দেন, কিন্তু প্রকৃতি যখন আপনার ঘরে আগুন দেবে তখন কোথায় পালাবেন?
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুন, ২০২১ দুপুর ১২:৫৮