বেসিনটা ধবধবে সাদা।ওয়াসার মাধ্যমে ধেয়ে আসা পানির প্রভাবে দুটি হাত ধুয়ে ফেলবার সময় মাঝারি আকৃতির খাবারের কণা খুলে এসে জমে গিয়েছিল বেসিনে।তাই সাভাবিকভাবেই ভিড় জমাল লাল পিপড়াদের সারি।তারা ঘুরঘুর করল।কেউ কেউ সেই সামান্য খাবারের টুকরো থেকেই আরো ক্ষুদ্র টুকরো খুঁজে নিয়ে এক উদ্দেশ্যহীন জীবনে বেঁচে থাকার উদ্দেশ্যে হেঁটে হেঁটে পথ পাড়ি দিতে লাগল।এভাবে পাড় হল দুই ঘন্টা দশ মিনিট।এর মাঝে কোন মানুষ সাদা বেসিনটাকে লাল পিপড়ায় ছেয়ে যেতে দেখল না।দু ঘন্টা দশ মিনিটের মাথায় প্রচন্ড রাগী এক মানুষ আসল বেসিনে।সে এসেছিল তার উত্তপ্ত কপাল,চোখ আর কান্না ধুয়ে ফেলতে।ঘোরের ভেতর থাকায় সাদা বেসিনকে তার বসে যাওয়া চোখে দেখাল অসুখী হলুদ।আর লাল পিপড়াদের তার মনে হল ভয়ঙ্কর সব দুঃখ অর্থাৎ জীবনের প্রতীক।কল ছাড়ার সাথে সাথে অবশ্য পানি আসল না।দরিদ্র ওয়াসার দারিদ্রের একটি হালকা ছাপ পড়ল বেসিন জুড়ে।কোন পিপড়া অবশ্য এই ব্যাপারটি ধরতে পারল না।তবু তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে পানি ঢেলে পিপড়ার দলকে খুন করতে চেয়ে না পেরে ঈষৎ লজ্জিত হল মানুষ।সামনে দেয়ালে আটকানো আয়নায় সেই লজ্জিত চোখ ঘুরঘুর করল কতক সময়,উদাসীনতার কারনে যা গুনে দেখা হল না।মানুষ অলস আর আত্মকেন্দ্রিক।তাই যে কোন মুহুর্তে ডুবে গেল নিজের ভাবনার জগতে।এর মধ্যে ওয়াসার পানি আসল হঠাৎ করে!ঝমঝম করে।কেননা কল খোলাই রেখে দিয়েছিল মানুষ।পানির গতিতে আঘাত পেয়ে লাল পিপড়ার নাজুক শরীর বিধ্বস্ত হল।মুহুর্তের গভীরে ভেঙে ভেঙে হারিয়ে গেল বেঁচে থাকার লাল প্রতীক।ছটফট করে অল্প কটি পিপড়া স্রোতের উল্টো দিকে দৌড়তে পারল।সম্ভবত তারা বেঁচে থাকতে চেয়েছিল।কেউ তাদের জিজ্ঞেস করল না,কেন তারা বেঁচে থাকতে চেয়েছিল।বরং শুকনো আবেগি মানুষ হাতের কোষে পানি এনে তাদের ভাসিয়ে দিল মৃতদের স্রোতে।
অন্য এলাকার লোকজন একই মুহুর্তে টিপিকাল ডিপ্রেশনে ভুগছিল।কেননা তাদের কল থেকে তখন পানির ধারা নামছিল না।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




