এন্টি আমেরিকান বা আমেরিকার বদনাম করে কিছু লেখা মানে ই খুবই সুপাঠ্য কিছু । এর আবেদন বা চাহিদার কোন তুলনা ই হয়না । তা আমি জেনে শুনেই বিষ করছি পান । আমেরিকা র জয় গান ই অজ গাইব কিছুক্ষণ ।
জুলাই মাস । ৪ঠা জুলাই আমেরিকার স্বাধীনতা দিবস ।এ নিয়ে আবার লেখার কী আছে ? প্রতিটি দেশের ই আছে স্বাধীনতা দিবস । ।স্বাধীনতা শব্দের প্রকৃত অর্থ্ যে কী তা আমি আমেরিকায় না এলে জানতাম ই না ।পাখির মত স্বাধীন জীবন । আমরা সবাই রাজা এখানে । সত্যিকারের স্বাধীনতা এসেছিল এই মাটিতেই ১৭৭৬ সালের ৪ঠা জুলাই । বৃটিশদের অরাজকতা থেকে বের হয়ে আসার জন্য ‘প্রতিটি মানুষ ই সমান এবং একই সৃষ্টি কর্তার সৃ ষ্টি’ এই বাণীকে সামনে রেখে থমাস জেফারসন লিখলেন স্বাধীনতার বাণী । শুধুমাত্র ভৌগলিক ই নয় । ভেঙে গেল সব পরাধীনতার শৃংখল । বাক স্বাধীনতা । প্রেসের স্বাধীনতা । ধর্মীয় স্বাধীনতা ।এমন কি কোন আইন পরিবর্তনের জন্য ও সরকারের কাছে আবেদন করার স্বাধীনতা ।সবার । আমেরিকায় বসবাসকারী প্রতিটি মানুষের ।
নিজেকে প্রকাশ করার যে স্বাধীনতা , সংবাদপত্র, রেডিও টেলিভিশন তথা সমগ্র মিডিয়ার যে স্বাধীনতা আছে এই দেশে পৃথিবীর বহু দেশেই নিজের ঘরে ও নিজেকে প্রকাশ করার এতটা স্বাধীনতা থাকেনা মানুষের । আর ধর্ম্ ? রাষ্ট্র কখনোই কোন ধর্ম্ পালনে কাউকে বাধ্য করবে না । নিষেধ ও করবে না । যে যার ধর্ম্ পালন করবে ।
যদিও আধিকাংশ জনগন ই ঈশ্বর ও ধর্মে বিশ্বাসী এখানে । । কে উ যদি কোন ধর্ম্ই পালন করতে না চায় এমন কি ঈশ্বরে ও বিশ্বাস করতে না চায় সে অধিকার ও আছে তার । আছে নিরশ্বর বাদ নিয়ে কথা বলার , বই লেখার সব অধিকার । এ জন্য তাকে দেশান্তরিত হতে হয় না। আমাদের দেশের তসলিমা নাসরিন সহ পৃথিবীর আরো অনেক দেশান্তরিত আছেন এখানে বাক স্বাধীনতাহীন দেশ সমূহের প্রতিনিধি হয়ে ।
আমি আমেরিকাতে এসেই প্রথম দেখলাম দলে দলে মেয়ে রা মসজিদে যাচ্ছে । রাত জেগে ক্ষতম তারাবী পড়ছে ।২০০১ এর সেপ্টেম্বর ১১ এর ঘটনার পর অনেক কথাই শোনা যায় । আমার চোখে কোন কিছুই অতিরিক্ত মনে হয়নি । নিরাপত্তার জন্য সরকার কে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিতে হয়েছে তবে অসৌজন্যমূলক কিছুই হয়নি । অন্তত: স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ কেউ বলতে পারবেনা । এমনকি যে টুইন টাওয়ার দুটো ধ্বংস হয়েছিল টেরোরিস্টদের দ্বারা তার ঠিক উল্টো দিকেই গড়ে উঠছে ১০০ মিলিযন ডলার বাজেটের মসজিদ ও ইসলামী কালচারাল সেন্টার ।আবেগ প্লুত প্রিয়জন হারাণো মানুষ গুলো চায়নি এটা হোক । সরকারকে আবেগের উ র্ধে এসে সিদ্ধান্ত নিতে হয় । এটা একমাত্র আমেরিকাতেই সম্ভব ।যে মুসলিমদের সাথে এতকিছু সেই মুসলিমরাই তাদের পসরা নিয়ে নিউর্কের প্রাণ কেন্দ্রে ।যেখানে পৃথিবীর বহু দেশেই ধর্ম্ নিয়ে চলছে রায়ট । ভাঙছে জ্বলছে পুড়ছে সব মসজিদ , মন্দির , উপাসনালয় ।
নিজ ধর্ম্ পালনের অবাধ স্বাধীনতার কথা ভেবে ই ফ্রান্স , স্পেন, ইংল্যানড থেকে বহু লোক আমেরিকাতে এসেছিল । এখন ও নিরাপদে ও নিশ্চিন্তে স্বাধীনভাবে নিজের ধর্ম্ পালনের জন্য এটাই একমাত্র ভূমি । কত ধর্মের কত বর্ণের মানুষ ! কী শান্তি পূর্ণ্ সহ অবস্থান ।
এরপর আসে সংবিধান । ১৭৮৭ সালে লেখা হয়েছিল এ সংবিধান ।শুরু হলো এক নতুন সরকার পদ্ধতি যা এখন ও বিদ্যমান । প্রয়োজনে এর ছোট খাঁট পরিবর্তন পরিবর্ধন করার অনুমতি ও ইতিহাস রয়েছে । যাকে বলে এমেন্ডমেন্ট । প্রতি ৪ বছর পর পর নভেম্বর মাসের প্রথম সোমবারের পর যে মন্গলবার আসবে হবে প্রেসিডেন্ট ইলেকশন ।কৃষি প্রধান সমাজে কৃষকদের সুবিধার কথা ভেবেই এটা লেখা হয়েছিল ১৮৪৫ সালে । একই ভাবে শত বর্ষ্ ধরে চলছে এ নিয়ম কোন ব্যাতিক্রম ছাড়া ।তেমনি দু বছর পর পর হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভ ও প্রতি ৬ বছর পর পর সিনেটরদের নির্বাচিত করা হয় ।এরা জনগনের প্রতিনিধি । বিভিন্ন স্টেট বা অংগ রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য সংসদে যান । এবং সত্যিকার অর্থেই তা করেন ।
সংসদে কোন সত্তর ধারা নেই । সংসদে কারো একচ্ছত্র আধিপত্য না হয় সে জন্য রয়েছে ক্ষমতার চেক এন্ড ব্যালান্স । ক্ষমতার অপব্যাবহার করার কোন ই সুযোগ নেই । ক্ষমতা সমান ভাবে বি ভক্ত ।প্রেসিডেন্ট এর নির্বাচিত সুপ্রিম কোর্টের কোন জাজ কিম্বা কোন বিল সিনেট গন নাকচ করে দিতে পারেন তেমনি জনগনের ট্যাক্সে পরিচালিত হবে এমন নতুন কোন বিল সংসদে উত্থাপন করতে পারেন শুধু মাত্র হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভ গন ।
সত্তর ধারা থাকার জন্য আমাদের দেশে একজন সংসদ সদস্য জনগনকে নয় , মূলত : তার দলকেই প্রতিনিধিত্ব করেন । যেমন ধরুন আপনার এলাকায় একটি খাল কাটা হবে কিম্বা রাস্তা বানানো হবে । আপনারা, এলাকার জনগন ঠিক ওভাবে চাইছেন না । কাকে বলবেন ? আপনার এলাকার প্রতিনিধিকে । বেচারা ! ওনার কি কোন উপায় আছে ? নিজের দলের বাইরে ভোট দেবার কোন অধিকার ই তার নেই ।তাহলে সংসদ থেকেই বিতাড়িত হবেন ।এখানে কার প্রতিনিধিত্ব করছেন উনি ? এটাকেই বলে সত্তর ধারা ।
আমরা ধরেই নিয়েছি আমরা অসত । ঘুষ নিয়ে , দুর্নীতি করে আমরা অন্যায়ভাবে নিজের দলর বিরুদ্ধে ভোট দিয়ে দলকে , সরকারকে পথে বসিয়ে দিব । সংবিধান ও লিখেছি সেভাবে।একটি ছোট শিশু যখন হাঁটতে শিখে । বার বার পড়ে যায় । তাই বলে কি তাকে বসিয়ে রাখি ? হাঁটা থেকে বিরত রাখি ? নাকি এভাবে আছাড় খেয়ে খেয়ে ই একদিন সে হাঁটতে শিখে ।ঠিক তেমন ই অসততা ও অনিয়ম কে শুধরাতে হলে তাকে সততা ও শৃংখলার মধ্য দিয়েই যেতে হবে । একদিন পৌঁছে যাবে গন্তব্যে । এই যে এতকক্ষণ ধরে আমেরিকার কথা বললাম ।আজ পৃথিবীর কাছে একটি উদাহরণ । একটি স্বপন । একটি গন্তব্য । ওরা ও আমাদের মতই মানুষ ।কৃষক । ওরাও ছিল বৃটিশদের দ্বারা শোষিত একটি কলোণী । আমাদের ই মত । ওদের কি আমাদের চেয়ে ও পুরাণো কোন ঐতিহ্য আছে ? আমরা কেন পারছিনা ? কেন ? আমাদের ও কেন হয়না এমন একটি স্বাধীনতা দিবস ? যেখানে অমরা জোর গলায় বলতে পারি প্রতিটি মানুষই একই সৃষ্টি কর্তার সৃষ্টি । প্রতিটি মানুষের ই অধিকার আছে বাঁচার , স্বাধীনতার, সুখী হবার ।যেখানে আমরা সবাই রাজা ।।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




