somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সুই সাম্রাজ্যের ইতিহাস !!

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সুই সাম্রাজ্য ছিল চীনের একটি স্বল্পস্থায়ী কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ সাম্রাজ্য, যা ৫৮১ সাল থেকে ৬১৮ সাল পর্যন্ত স্থায়ী হয়। সুইরা উত্তর ও দক্ষিণ সাম্রাজ্যকে একত্রিত করে এবং চীনের প্রাধান অংশে পুনরায় হান সম্প্রদায়ের রাজত্ব কায়েম করে। পরবর্তীতে তাং রাজবংশ তাদের পরাজিত করলেও তাদের মূলনীতিসমূহ গ্রহণ করে।সুই সম্রাট ওয়েন প্রতিষ্ঠিত সুই সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল চাং’আন, ৫৮১ থেকে ৬০৫ সাল পর্যন্ত তা ডাক্সিন নামে পরিচিত ছিল এবং পরে ৬০৫ থেকে ৬১৪ পর্যন্ত লুওইয়াং নামে পরিচিত ছিল। সম্রাট ওয়েন এবং ইয়াং বেশ কিছু সংস্কার কাজ করেন যার মধ্যে অন্যতম হল কৃষিতে সমতা প্রদান, যাতে অর্থনৈতিক অসমতা হ্রাস পায় এবং কৃষিতে উৎপাদন বৃদ্ধি পায়; তিন বিভাগ এবং ছয় মন্ত্রণালয় পদ্ধতি; এবং প্রাচীন চীনের মুদ্রা প্রচলন ব্যবস্থাকে নির্দিষ্ট মানদণ্ডে নিয়ে আসা এবং পুনরায় একত্রিত করা। তারা বৌদ্ধ ধর্মের প্রচার করে এবং লোকজনকে এই ধর্ম গ্রহণে উতসাহিত করে। এই সাম্রাজ্যের মাঝামাঝিতে সম্রাট ওয়েনের সময়ে জনসংখ্যা বৃদ্ধি স্বত্তেও কৃষি উৎপাদনের উদ্বৃত্ত দেখা যায়। তাই এই সময়কে এই সাম্রজ্যের সোনালি যুগ বলে গণ্য করা হয়।

গগুর‍্যেও সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পরিচালিত ব্যয়বহুল কিন্তু ব্যর্থ সেনা অভিযান, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল কোরিয়া অভিযান,৬১৪ সালে পরাজয়ের মাধ্যমে শেষ হয়। অভ্যন্তরীণ কিছু বিদ্রোহ দেখা দেয় যার চূড়ান্ত পরিণতি ছিল ৬১৮ সালে কয়েকজন মন্ত্রী মিলে সম্রাট ইয়াংকে হত্যা করানো। ফলে সুই সাম্রাজ্যে বিভাজন দেখা দেয় এবং প্রতিষ্ঠার ৩৭ বছরেই যুদ্ধ ও স্থাপনা প্রকল্পের জন্য ধীরে ধীরে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। বিশেষ করে, সম্রাট ইয়াংয়ের সময়ে বাড়তি কর ও বাধ্যতামূলক কায়িক শ্রমের জন্য বিদ্রোহ দেখা দেয় এবং স্বল্পস্থায়ী গৃহযুদ্ধ শেষে এই সাম্রাজ্যের পতন হয়।সেই সাম্রাজ্যকে চীন বিভক্তির পর আবার একত্রিত করার জন্য পূর্ববর্তী কিন সাম্রাজ্যের সাথে তুলনা করা হয়। সুইরা তাদের এই সংক্ষিপ্ত সময়ে নতুনভাবে আবার সকল অনেক বড় বড় প্রকল্প নির্মাণ করে এবং বেশ কিছু সংস্কার কাজ করে, যা চীনের ইতিহাসে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলে। উত্তর ও দক্ষিণ সাম্রাজ্য সময়ের শেষের দিকে উত্তর ঝও ৫৭৭ সালে উত্তর কি বিজয় করে এবং উত্তর চীনকে একত্রিত করেন। এই শতাব্দীতে হান সম্প্রদায়ের সংখ্যালগু সিয়ানবেই শাসিত উত্তর সাম্রাজ্যের কাছ থেকে দক্ষিণ সাম্রাজ্য জয় করে। এই সময়ে উত্তর ঝও সম্রাট জিং সম্রাট হলে তার সৎমা হান সম্প্রদায়ের ইয়াং জিয়ানের কন্যা রাজমাতা হন এবং ইয়াং জিয়ান উত্তর ঝও রাজদরবারের রাজপ্রতিনিধি নির্বাচিত হন। পূর্ব প্রদেশের এক সেনাদলকে পরাজিত করে ইয়াং জিয়ান সম্রাট ওয়েন উপাধি নিয়ে সিংহাসন দখল করে এবং ঝও রাজদরবারের ডিউক থাকাকালীন অবস্থায়, যেখানে সুই শব্দটি দিয়ে অনুসরণ করা বুঝাত, সেটি শব্দ থেকেই তার নতুন প্রতিষ্ঠিত সাম্রাজ্যের নামকরণ করেন সুই। তিনি ৫৯ জন যুবরাজকে হত্যা করেন, তা স্বত্তেও তাকে ভদ্র সম্রাট বলা হয়।সম্রাট ওয়েন সিংহাসনে আরোহণ করে হান বিরোধী সকল নিয়ম-রীতি তুলে দেন এবং তার হান বংশীয় নাম ইয়াংকে পুনরদ্ধার করেন। তিনি চীনকে পুনরায় একত্রিত করার লক্ষ্যে তার সাম্রাজ্যকে শক্তিশালী করতে কিছু সংস্কার কাজে হাত দেন। তিনি যারা পূর্বে হান সাম্রাজ্য সময়কালে স্বজনপ্রীতি ও নয়-পদ পদ্ধতির দুর্নীতি পরিত্যাগ করেছিল এমন কনফুসীয় পন্ডিতদের সমর্থন লাভ করেন।

দক্ষিণ বিজয়ের লক্ষ্যে সেনা অভিযানে ইয়াংজি নদীতে চেন সাম্রাজ্যের সম্মুখীন হওয়ার জন্য সম্রাট ওয়েন হাজার হাজার জাহাজ জোগাড় করেন। সবচেয়ে বড় জাহাজটিতে পাঁচ স্তরবিশিষ্ট ডেক ছিল এবং ধারণ ক্ষমতা ছিল ৮০০ জন। সম্রাট ওয়েন সিয়ানবেই এবং অন্যান্য চীনের নৃগোষ্ঠীর পাশাপাশি সদ্য বিজিত দক্ষিণ সিচুয়ান এলাকার জনগণকেও চেনদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে বাধ্য করেন। ৫৮৮ সালে সুইরা ইয়াংজি নদীর উত্তর তীরে সিচুয়ান থেকে পূর্ব চীন সাগর পর্যন্ত ৫১৮,০০০ সৈন্য জড় করে। চেন সাম্রাজ্য এত পরিমাণ সেনা প্রতিরোধ করতে পারে না এবং ৫৮৯ সালে সুই সৈন্যরা জিয়াংকাংয়ে (নানজিং) প্রবেশ করলে শেষ চেন সম্রাট আত্মসমর্পণ করে। শহরটি ভূপতিত করা হয় কিন্তু সুই সৈন্যরা চেন অভিজাতদের উত্তরে নিয়ে আসে, সেখানে তাদের দক্ষিণের মত সব ধরণের সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হয়।যদিও সম্রাট ওয়েন যুদ্ধ ও বড় বড় স্থাপনা কাজের জন্য দেউলিয়া ঘোষিত হয়, তিনি তার রাজত্বের শুরুর দিকে বেশ কিছু উন্নয়নমূলক কাজ করেন। তিনি পূর্ববর্তী হান সাম্রাজ্য সময়ের মত খাদ্য মজুদের জন্য শস্যাগার নির্মাণ করেন। তার সময়ে জনসংখ্যা বৃদ্ধি স্বত্বেও কৃষি উৎপাদনে উদ্বৃত্ত থাকে, যা আরও এক শতাব্দী পরে সম্রাট সুয়াংজংয়ের সময় বৃদ্ধি পায়।

সুই সম্রাটরা চীনের উত্তর-পশ্চিমের অভিজাত সেনাপতিদের বংশধর এবং বলা হয় তারা পিতার দিক থেকে হান সম্প্রদায়ের পদস্থ কর্মকর্তা ইয়াং ঝেনের উত্তরসূরী[৭] নিউ বুক অব তাং-এ বর্ণিত আছে যে তাদের পূর্বপুরুষরা ঝাও সাম্রাজ্যের সম্রাটদের ডিউক ছিলেন।হংনং ইয়াং সুই সম্রাটদের পূর্বপুরুষ, তেমনি লংসি লি হলেন তাং সম্রাটদের পূর্বপুরুষ।ঝাওজুনের লি এবং ফানইয়াংয়ের লু শান্তুং থেকে আসেন এবং লিউ সম্প্রদায়ের সাথে সম্পর্কিত, যাদের হংনং ইয়াং এবং গুয়ানলংয়ের অন্যান্য সম্প্রদায়ের সাথে যোগসূত্র রয়েছে। অন্য আরেক বর্ণনায় বলা আছে, হংনং ইয়াং, হেডংয়ের জিয়া, হেনেইয়ের সিয়াং, ও তাইউয়ানের ওয়াং পরবর্তী সং সাম্রাজ্যের সম্রাটদের পূর্বপুরুষ।


সম্রাট ইয়াং তার পিতার মৃত্যুর (অথবা খুন হওয়ার) পর সিংহাসনে আরোহণ করেন। তিনি তার সাম্রাজ্য বিস্তৃত করেন কিন্তু তার পিতার মত যাযাবরদের সমর্থন লাভের আশা করেন নি। তার পরিবর্তে তিনি আমলাদের জন্য কনফুসীয় শিক্ষা এবং পরীক্ষা পদ্ধতি পুনঃস্থাপন করেন। তিনি তখনকার রীতি অনুযায়ী অভিজাত শ্রেণী থেকে সরকারী কর্মকর্তা নিয়োগ না দিয়ে মেধা অনুসারে সরকারী পদে নিয়োগ দেন। তার এক পদ্ধতি অবলম্বনের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল দুর্নীতি রোধ করা। তিনি প্রথম সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার প্রচলন করে, যা পরবর্তী তাং রাজবংশ থেকে শুরু করে ১৩০০ বছর পর্যন্ত বিদ্যমান ছিল। শিক্ষায় সংস্কার আনার কারণে তিনি যাযাবর সম্প্রদায়ের সমর্থন হারান। তিনি বেশ কিছু ব্যয়বহুল স্থাপনার কাজ শুরু করেন, যেমন গ্র্যান্ড খাল এবং কয়েকটি ব্যয়বহুল যুদ্ধে জড়িয়ে যান। এই সময়ে তুর্কি যাযাবর সম্প্রদায় চীনে আক্রমণ চালায় এবং কৃষকদের অর্থে ব্যয়বহুল জীবনযাপনের জন্য তিনি জনসমর্থন হারান এবং তার মন্ত্রীদের দ্বারা খুন হন।সম্রাট ওয়েনের মত ইয়াংও ভিয়েতনামে সেনা অভিযান পরিচালনা করেন কারণ উত্তর ভিয়েতনামের আনাম প্রদেশ ৬০০ বছর পূর্বে হান সাম্রাজ্যের অধিগত ছিল। কিন্তু মধ্য ভিয়েতনামের চম্পা রাজ্য তাদের উত্তরে আক্রমণে বাধা হয়ে দাড়ায়, যা লিনয়ি-চম্পা অভিযান নামে পরিচিত।

হ্যানয় অঞ্চল পূর্বে হান এবং জিন সাম্রাজ্য দখলকৃত ছিল, যা ৬০২ সালে স্থানীয় শাসকদের কাছ থেকে তারা সহজেই পুনরদ্ধার করে। কয়েক বছর পর সুই সেনারা আরও দক্ষিণে অগ্রসর হতে থাকে এবং দক্ষিণ ভিয়েতনামের চম্পা থেকে যুদ্ধহস্তী আরোহী সেনাদল তাদের আক্রমণ করে। সুই সেনারা পিছু হটার ভান করে এবং হাতীদের জন্য গর্ত করে ফাঁদ তৈরি করে। চম্পার সৈন্যদলকে আক্রমণ করার প্রলোভন দেখিয়ে তারা ধনুক নিক্ষেপ করে। ফলে হাতী পিছু হটতে গিয়ে তাদের নিজেদের সৈন্যকে পদদলিত করে। যদিও সুই সৈন্যদল বিজয় লাভ করে কিন্তু রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা না থাকার ফলে উত্তরের অনেক সৈন্য রোগে, বিশেষ করে ম্যালেরিয়ায়, আক্রান্ত হয়ে হাল ছেড়ে দেন।


সুই সাম্রাজ্য সময়কালে গগুর‍্যেও সম্প্রদায়কে তাড়ানোর জন্য বেশ কিছু অভিযান চালানো হয়, কোরিয়ার তিন রাজ্য আক্রমণ তাদের একটি। সম্রাট ইয়াং অসংখ্য সেনাকে বাধ্যতামূলকভাবে এই অভিযানে পাঠায়। ইতিহাসে বর্ণিত আছে যে এই অভিযানে এত পরিমাণ সৈন্য পাঠানো হয়েছিল যে গগুর‍্যেও আক্রমনের পূর্বে সকল সৈন্য সাংহাইগুয়ান জেলার নিকটবর্তী র‍্যালির স্থান থেকে তাদের বের হতে ৩০ দিন লেগেছিল। এক বর্ণনায় বলা আছে, এই অভিযানে বাধ্যতামূলক ও বেতনভুক্ত সৈন্য মিলে সর্বমোট ৩,০০০ রণপোত, ১,১৫০,০০০ পদাতিক, ৫০,০০০ অশ্বারোহী ও ৫,০০০ কামান ও গোলাবাহী যোগ দেয়। নদী, উপত্যকা, পাহাড়-পর্বত মিলে তারা ১,০০০ লি বা ৪১০ কিলোমিটার স্থান দখল করে। এতো সৈন্য থাকা স্বত্তেও সম্রাট ইয়াং ও তার সৈন্যদের প্রধান চার অভিযান ব্যর্থ হয়। গগুর‍্যেও সম্প্রদায়ের নেতা ইউলজি মুনডেওক ছিলেন দক্ষ সেনাপ্রধান এবং কলাকৌশলে অভিজ্ঞ। তাছাড়া সুই সৈন্যরা উত্তরের ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় ঠিকতে পারে নি এবং অসংখ্য সৈন্য অনাহারে ও হিমদংশনে মারা যায়।


সুইদের বেশ কিছু বড় প্রকল্পের একটি ছিল চীনের মহাপ্রাচীর সংস্কার ও বর্ধিতকরণ। যে কারণে অর্থনীতি বর্ধিত করতে কর বাড়ানো হয়, যা ক্রদ্ধ শ্রমিকদের ক্রোধ আরও বাড়িয়ে দেয়। তাছাড়া সুই সাম্রাজ্য শেষের দিকে বিদ্রোহ বাড়তে থাকে এবং চীনের সমর্থ কৃষক এবং অন্যান্য পেশাজীবীরা সমর্থন দেয়। যা কৃষি এবং সামগ্রিক অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলে।অনেক পুরুষেরা বাধ্যতামূলক সেনাবাহিনীতে যোগদান না করার জন্য তাদের নিজেদের দেহের কোন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ভেঙ্গে ফেলে, একে তারা প্রসন্ন থাবা এবং সৌভাগ্য পা নামে অভিহিত করে। পরে সুই সাম্রাজ্যের পতনের পর তাং সম্রাট তাইজং এক ডিক্রির মাধ্যমে এই রীতি তুলে দেওয়ার ঘোষণা দেয় এবং ডিক্রিতে যারা এই রীতি অনুসরণ করবে তাদের কঠোর শাস্তির কথা উল্লেখ করেন।সুই সাম্রাজ্য সময়ের আরেকটি বড় কাজ ছিল গ্র্যান্ড খাল খনন করা। খালটি উত্তরে হাংঝও অঞ্চল থেকে ইয়াংজি ও ইয়াংঝও হয়ে উত্তর-পশ্চিমে লুওইয়াং অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত। মহাপ্রাচীরের মত আবার অসংখ্য শ্রমিককে বাধ্যতামূলকভাবে কাজ করতে হয়। সুই সাম্রাজ্যের হঠাৎ পতনের আরেকটি কারণ ছিল গগুর‍্যেওদের বিপক্ষে পরিচালিত সেনা অভিযানে ব্যাপক পরিমাণে অর্থ এবং মানব সম্পদ হারানো। সেই পরাজয়ের পরে রাজ্যে বিদ্রোহ শুরু হয় এবং ৬১৮ সালে সম্রাট ইয়াংকে হত্যা করা হয়। তিনি রাজধানীতে বিদ্রোহীদের আক্রমণের আশঙ্কা দেখে দক্ষিণে চলে যান এবং সেখানে তার মন্ত্রী ও পরামর্শদাতা ইউয়েন ক্লান কর্তৃক খুন হন। একই সময়ে উত্তরে অভিজাত সম্প্রদায়ের লি ইউয়ান বিদ্রোহ শুরু করেন, যা তার তাং সম্রাট গাওজু উপাধি নিয়ে সিংহাসনে আরোহণের মধ্য দিয়ে শেষ হয় এবং শুরু হয় তাং সাম্রাজ্য।ঝাও সাম্রাজ্য, সুই সাম্রাজ্য এবং তাং রাজবংশের রাজপরিবারের সন্তানসন্ততিদের পরবর্তী জিন সাম্রাজ্য সময়কালে ডিউক পদ প্রদান করা হয়। এই রীতিকে বলা হয় ।


যদিও সুই সাম্রাজ্য স্বল্পস্থায়ী ছিল কিন্তু তা আগের যুগের সংস্কৃতির সাথে যোগসূত্র স্থাপন করে বেশ কিছু পরিবর্তন নিয়ে আসে, যা সেসময়ে শুরু হয় এবং পরবর্তী তাং রাজবংশ ও তার পরের সময়কালে বিস্তৃত ও সুদৃঢ় হয়। তারা চীনের মহাপ্রাচীর বর্ধিত করে ও গ্র্যান্ড খাল খনন করে এবং রাজনীতিতেও কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন নিয়ে আসে। তাদের রাজনৈতিক পদক্রম পরবর্তী তাং রাজবংশ কিছুটা পরিবর্তন করে গ্রহণ করে।সুইরা ধর্ম এবং সাহিত্যে বিকাশ লাভ করে বিশেষ করে বৌদ্ধ ধর্ম ও পদ্যে। তারা ধর্মীয় বিভিন্ন রীতিনীতি পালন এবং বলিদান করত।


ষোল রাজ্য ও উত্তর ও দক্ষিণ সাম্রাজ্য সময়কাল থেকে বৌদ্ধ ধর্ম প্রসার লাভ করেন, যা ভারত থেকে আফগানিস্তানের কুশন হয়ে হান সাম্রাজ্যের শেষের দিকে চীনে প্রবেশ করে। সুই সাম্রাজ্যে কেন্দ্রীয় শাসন ব্যবস্থা সীমিত হওয়ায় বৌদ্ধ ধর্ম প্রসিদ্ধি লাভ করে। বৌদ্ধ ধর্ম জোট নিরপেক্ষ সাংস্কৃতিক সংঘ গড়ে তুলে, যা জনগণকে যুদ্ধে থেকে রেহাই দেয়। এছাড়া আরও অনেক কারণে বৌদ্ধ ধর্ম সুই সাম্রাজ্য সময়ে চীনের সংস্কৃতির পুনঃজন্ম দান করে।

প্রথমদিকে বৌদ্ধ ধর্মীয় রীতিনীতি ভারতের সংস্কৃত সূত্র অনুসারে শিক্ষাদান করা হত। ছয় সাম্রাজ্যের শেষের দিকে ও সুই সাম্রাজ্য সময়কালে স্থানীয় চীনা বিদ্যালয়ে বৌদ্ধ ধর্ম শিক্ষাদান প্রসার লাভ করে। বিশেষ করে ঝিয়ির তিয়ানতাই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা এবং মোহে ঝিগুয়ান নীতি শিক্ষাদান। তিনি লুটাস সূত্রের আলোকে এই নীতি পাঠদান করতেন।সম্রাট ওয়েন এবং তার সম্রাজ্ঞী চীনে রাজতান্ত্রিক শাসন বৈধ করা ও চেন বিজয়ের জন্য বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করেন। সম্রাট নিজেকে চক্রবর্তী হিসেবে পেশ করেন, যার মানে তিনি একজন বৌদ্ধ শাসক যিনি তার সেনাবাহিনী বুদ্ধের বিশ্বাসকে রক্ষার জন্য ব্যবহার করেন। ৬০১ সালে সম্রাট ওয়েন বুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন চীনের বিভিন্ন উপাসনালয়ে প্রেরণ করেন এবং ফরমান জারি করেন, চার সাগরের গণ্ডির ভিতর অবস্থিত সকল মানুষ, ব্যতিক্রম ব্যতীত, জ্ঞানের আলোয় বিকশিত হোক ও সৎকর্ম করুক, তাদের বর্তমান সুখী ভবিষ্যতের দিকে ধাবিত করুক, যাতে তাদের কল্যাণের জন্য সৃষ্ট বাকি সৃষ্টিসমূহ তাদের প্রত্যেককে এবং সবাইকে সেই অদ্ভুত আলোকের দিকে ধাবিত করে।প্রকৃতপক্ষে এই কাজ ছিল অনেকটা মৌর্য সম্রাট অশোকের অনুকরণ ।পদ্যে বিকাশ লাভ করলে কয়েকজন কবি প্রসিদ্ধি লাভ করলেও সুই সাম্রাজ্যের স্বল্প স্থায়িত্ব, চীনা পদ্যে পরিবর্তন, স্বাতন্ত্রের অভাব, অপর ছয় সাম্রাজ্যের সাথে যোগসূত্র ও তাং সময়কালের পদ্যের বিকাশের ফলে বাকিরা হারিয়ে যায়। সুই সাম্রাজ্যের কবিদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন ইয়াং গুয়াং, দ্বিতীয় সুই সম্রাট ও পদ্য সমালোচক এবং তার একজন উপপত্নী লেডি হউ।
তথ্যসূত্রঃ
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৯
৭টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×